আজ দারুল উলূম করাচীতে সকল ঘরানার আলেমদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ছিলেন মুফতী মুহাম্মদ তাকী উসমানী দা.বা.।
টেলিফোনে সংযুক্ত হয়ে একাত্মতা ঘোষণা করেন জমিয়ত আমীর মাওলানা ফজলুর রহমান।
মজলিসে জামাতে ইসলামী, আহলে হাদীসসহ সব ঘরানার আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। মসজিদে জামাতে নামাজ বিশেষ করে রমযান উপলক্ষে তারাবিহের নামাজ এসব বিষয়কে জরুরী আখ্যায়িত করে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। নামাজ এই কঠিন পরীক্ষার সময়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে তাই মজলিসে সিদ্ধান্ত হয় নামাজ চালু রাখার।
সিদ্ধান্তগুলে সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করা হলো :
১. সতর্কতামুলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মসজিদসমূহ খোলা থাকবে। জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায এবং জুমআ জারি থাকবে। তিন বা পাঁচজন মুসল্লির বাধ্যবাধকতার ওপর শরয়ী গ্রহণযোগ্যতা নেই।
২. অসুস্থ, ভাইরাসে আক্রান্ত বা তাদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা মসজিদে আসবেন না। ঘরে নামায পড়লেই জামাতের সওয়াব পাওয়া যাবে, ইনশাআল্লাহ।
৩. বয়স্ক হযরতরা মসজিদে আসার ক্ষেত্রে নিজেকে মাযুর(অপারগ) মনে করবেন। অর্থাৎ মসজিদে আসবেন না।
৪. প্রত্যেক নামাযের পর মসজিদের কার্পেট উঠিয়ে যথাসম্ভব জীবাণুনাশক ওষুধ দিয়ে ধৌত করবেন।
৫. মসজিদের গেইটে যথাসাধ্য
সেনিটাইজার এর ব্যবস্থা করতে হবে।
মহল্লাবাসী এটাকে দায়িত্ব মনে করে করবেন।
৬. দুই কাতারের মাঝখানে এক কাতার পরিমাণ ফাঁকা রাখতে হবে। এক কাতারে মুক্তাদিরা প্রয়োজনীয় দূরত্বে থাকবে। সাধারণ অবস্থায় যদিও এমনটি মাকরূহ, কিন্তু ওযরের কারণে কারাহাত হবে না, ইনশাআল্লাহ।
৭. সবাই ঘর হতে ওযু করে আসবেন।
৮. মুক্তাদীরা গুরুত্বের সাথে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে যথাসম্ভব মাস্ক পরে আসবেন।
৯. সুন্নত ঘর থেকে পড়ে আসবেন,বাকি সুন্নত, নফলও ঘরে গিয়ে পড়বেন।
১০. জুমআর পূর্বের উর্দু (বাংলা) বয়ান বন্ধ রাখুন। একান্ত প্রয়োজনে পাঁচ মিনিটে সতর্কতামুলক ব্যবস্থা সম্পর্কে মুসল্লিদেরকে সচেতন করুন।
১১. জুমআর খুতবা প্রয়োজনীয় হামদ-সালাত, তাকওয়ার একটি আয়াত এবং মুসলমানদের জন্য বিপদ থেকে মুক্তির দুআর মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত করবেন।
১২. নামাযের পর ভিড় না করে সবাই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বাড়ি যাবেন।
১৩. মসজিদের ইমামগণ জনসাধারণকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করবেন। তবে এগুলো কার্যকর করার দায়িত্ব প্রশাসনের। তাই এসবের জন্য ইমামদেরকে যিম্মাদার বানানো যাবে না।
--জাকারিয়া নোমান
...
পাকিস্তানের আলেমরা সরকারের কাছে মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণে বিধিনিষেধ শিথিল করার দাবী জানিয়েছেন। দেওবন্দি, আহলে হাদিস, জামায়াত, শিয়া ও বেরলবিসহ সব পক্ষের আলেমরা এতে অংশগ্রহণ করেছেন। মসজিদে সংক্রমণ ঘটবে না, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিংসহ সব রকমের সতর্কতা অবলম্বন করার অঙ্গীকার করে দায়িত্বগ্রহণ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে দাবী জানালেও সরকার যা সিদ্ধান্ত নিবে, তারা সেটা মেনে নিবেন বলেও মন্তব্য করেছেন।
কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয় :
ক) আলেমরা নিজেরাই কমিটি গঠন করেছেন।
খ) সবপক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ও মত নিশ্চিত করেছেন।
গ) নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেরা গ্রহণ করেছেন।
ঘ) সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। আসলে ঐক্য ও সচেতনতা থাকলে অনেক কিছু করা সম্ভব। অনৈক্য তৈরি হলে রাষ্ট্র বিগ বসের মতো চেপে বসে। তাতে সিদ্ধান্ত-দায়িত্বহীনতা তৈরি হয়।
--ইফতেখার জামিল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন