বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭

জেরুজালেমকে অফিশিয়ালি ইসরাইলের রাজধানী ঘোষনা দিল মাথা মোটা ডোনাল্ড ট্রাম্প।




অারব বিশ্বের পশ্চিমাদের গোলামি, ট্রাম্পের হাতে তলোয়ার ধরিয়ে নাচানো, তার মেয়ের জন্য মূল্যবান উপহার পাঠানো, এই কাজগুলো মুসলমানদের জন্য কতটা উপকার বয়ে অানছে.....? মুসলমানদের প্রথম কেবলা কি তবে শেষ পর্যন্ত ইহুদিদের দখলেই চলে যাবে......?

বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত সোয়া ১২টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশেষ করে বলতে গেলে গোটা মুসলিমজাতিকে অারও একবার উত্তাল করে তুলল । পবিত্র জেরুজালেম শহরকে শেষ পর্যন্ত ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েই দিল জানোয়ারটা। দীর্ঘদিন ধরেই টালবাহানা চলছিল, অার ট্রাম্পের ক্ষমতায় অাসাটা যে মুসলমানদের জন্য ছিল প্রাথমিকভাবে হুমকি তার উপযুক্ত প্রমানটা সে দিয়েই যাচ্ছে।

একতরফা এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার ক্ষেত্রে ট্রাম্প জাতিসংঘ, আরব ও মুসলমান-অধ্যুষিত দেশ, এমনকি তাদের মিত্রদের আপত্তিও মানেনি এই মাধামোটা ট্রাম্প। শেষপর্যন্ত নিজের একগুঁয়েমি সিদ্ধান্তেই অনড় রইল। নিজের নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যেই বলেছিল যে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিবে, অার এবার তার প্রতিফলনটাও হল।
এই ঘোষণায় সব কুলাঙ্গারের গুষ্টিগুলো লোক দেখানো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফ্রান্স,চীন এছাড়াও খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু পোপ ফ্রান্সিস। জাতিসংঘও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তবে এসব যে মুসলমানদের সাথে কৌতুক ছাড়া অার কিছুই না সেটা অার বলার অপেক্ষা রাখে না। জাতিসংঘ এখানে বলেছে, ফিলিস্তিন সংকটে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। মানে ব্যাপারটা এমন যে, অামার বাড়িতে কাউকে কিছুদিন থাকার জন্য অাশ্রয় দিলাম, পরে সে অামার ঘরটাই দাবি করে বসল অার অামার প্রতিবেশীরা অামাকে বলছে "দেন ভাই, থাকতে যখন দিয়েছেন এবার ঘরটাই ছেড়ে দেন।"
গতকাল হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প বলে, "এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।" অার মি.ট্রাম্প তাঁর এমন উদ্যোগকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিপ্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা পদক্ষেপ’ বলেও মন্তব্য করে। 
হায়! অাফসোস! অসংখ্য নবীদের স্মৃতি বিজড়িত প্রানের প্রথম কেবলাকে নাকি জালিমের করতলে দেখতে হবে।

আমার একজন উস্তাদের জবান থেকে শুনেছিলাম অাল্লাহ পাক ক্বাবা শরীফের জিম্মাদারি নিজেই নিয়েছেন, তবে বায়তুল মুকাদ্দাস তথা প্রথম কেবলা রক্ষা করার দায়িত্বটা মুসলমানদের হাতে ন্যস্ত করেছেন, যদি বায়তুল মুকাদ্দাস রক্ষায় কোনো ত্রুটি হয় তবে মুসলমানদের উপর অাযাব নেমে অাসবে। তাহলে সে সময়টা কি এসেই গেল যে, বায়তুল মুকাদ্দাস তথা মুসলমানদের প্রথম কেবলা ইহুদীদের করতলে চলে যাবে.....?
ইতিপূর্বে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের নীতি ছিল তারা উভয় পক্ষের মাঝে সমঝোতা করে এই বিষয়টার সুরাহা করত, সরাসরি ইসরাইলের রাজধানী জেরুজালেমে হবে এই ঘোষনা কেউ করেনি। তবে তলে তলে মার্কিন দূতাবাসকে বর্তমান রাজধানী তেলঅাবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেম এ স্থানান্তর করার ষড়যন্ত্র ১৯৯৫ থেকেই চলে অাসছিল। এবার সুধু সুযোগে বদ ব্যবহারটা করল।
মূলত ট্রাম্প ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকতেই জেরুজালেমের উপর খড়গটা ব্যবহার করল, আর তার জন্য এই অাচরন করাটা খুব স্বাভাবিকই ছিল, কেননা নির্যাতিত অামরা মুসলিমরা বহু অাগ থেকেই। এবার রোহিঙ্গাদের উপর এধরনের অমানবিক নির্যাতনের পরও যখন অাং সং সূচির কিছুই হয়নি, দেশে দেশে এতো মিছিল-মিটিং, এতো সভা সমাবেশ দিনশেষে ফলাফলটা শূন্যের কোটায়ই রয়ে গেল। তখনই ট্রাম্প বুঝতে পারল যে এটাই মোক্ষম সময়, অার তাই হয়ত সে তার ক্ষমতার বলটা নিপীড়িত জেরুজালেমের মুসলমানদের উপর প্রয়োগ করল। তবে সব ক্ষমতার উৎস অাল্লাহর কাছেই অামরা এই জালিমের দুঃশাষন থেকে মুক্তি চাই।
গত সাপ্তাহেই এক জায়গায় দেখেছিলাম, অারব বিশ্বে যারা আমেরিকার দোসর তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বলছিল যে, এই দ্বিরাষ্টভিত্তিক সমস্যা নিরসনের চেষ্টা মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির সৃষ্টি করবে, কই তাদের এতো পা-চাটা মনেভাব তো ঐ ট্রাম্পের অবস্থানকে পরিবর্তন করতে পারেনি। তবে কেন শুধু শুধু এই গোলামী। তবুও কি মনে হয় ওদের সাহায্য অামাদের প্রয়োজন অাছে......?
জানিনা কি প্রয়োজনে অারব বিশ্ব তারা পশ্চিমাদের গোলামি করছে, কারো কাছে স্পষ্ট ধারনা থাকলে জানাবার অনুরোধ রইল।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন