সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

বৈধ ভালবাসা বনাম নিষিদ্ধ প্রেম



চারটি অক্ষরের সমন্বয় খুব ছোট একটি শব্দ ভালবাসা যাকে আরবী ভাষায় মুহাব্বত ও ইংরেজী ভাষায় Love বলে। যার অর্থ হচ্ছে, অনুভূতি, আকর্ষণ, হৃদয়ের টান; যা মানুষের অন্তরে আল্লাহপাক সৃষ্টিগতভাবে দিয়ে দেন। সাধারণত ভালবাসা দুই ধরনের (১) বৈধ ও পবিত্র (২) অবৈধ ও অপবিত্র । বিবাহের পূর্বে আধুনিক যুবক-যুবতীরা যে সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকেই অবৈধ ও অপবিত্র ভালবাসা বলে। আর পবিত্র ভালবাসা বলতে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি ভালবাসা, সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার ভালবাসা,স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা ইত্যাদিকে বুঝায়। আল্লাহপাক আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা মাখলুক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। অন্য কোন জীব জন্তুকে আমাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেননি। এমনকি সর্ব শ্রেষ্ঠ আখেরী নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মত আমাদেরকে বানিয়েছেন। তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত সর্ব প্রথম এই নিখিল বিশ্বের স্রষ্টা মহান আল্লাহ তাআলাকে ভালবাসা এবং আমাদের সর্বশেষ নবী ও হাবীবে রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালবাসা। আল্লাহপাক কুরআন শরীফে এরশাদ করেন:
وَالَّذِينَ آَمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ
যারা ঈমানদার মুমিন, তাদের অন্তরে আল্লাহর মহব্বত ভালবাসা হবে সর্বাধিক প্রগাঢ়। সূরা আল বাকারা। (আয়াত সূরা আল বাকারা: ১৬৫) 
আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: 
কোন লোক পূর্ণ মুমিন হবে না যতক্ষণ না সে নিজের জীবন এবং পরিবার পরিজনের চেয়ে আমাকে বেশী ভালবাসবে।

এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তার রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালবাসা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য তথা ফরয। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালবাসার অর্থ হচ্ছে তার সুন্নত ও আদর্শের অনুসরণ করা। আর যে ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নতের বেশী অনুসরণ করবে তাতে বুঝা যাবে তার অন্তরের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি প্রেম-ভালবাসা অধিক গাঢ় এবং যারা নবীজির সুন্নতের অনুসরণ করেনা, তাঁর শরীয়ত মানে না শুধু লোক সমাজে মুখে আশিকে রাসূল, আশিকে নবী তথা নবী প্রেমিক বলে দাবী করে প্রকৃত পক্ষে তারা আশিকে রাসূল নয়। তারা শয়তান-ধোকাবাজ। 
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, 
যে ব্যক্তি আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরায়, সে আমার উম্মত নয়।
অন্যথায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 
যে আমার সুন্নাতকে ভালবাসল, সে যেন আমাকে ভালবাসল, আর যে আমাকে ভালবাসল সে আমার সাথে বেহেশতে থাকবে।

আল্লাহ ও রাসূলের পরেই রয়েছে মাতা-পিতার প্রতি মহব্বতের ফযিলত। 
প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 
সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সাহাবারা আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ!  সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, মাতা-পিতাকে জীবিত পেয়েও তাদের সেবা-যত্ন করে যে জান্নাত খরিদ করেনি। 
এ ছাড়া মাতা-পিতার দুআ সন্তানের জন্য অনিবার্যভাবে কবুল হয়।

স্বামী-স্ত্রীকে ভালবাসার ফযিলত : 
হাদীস শরীফে আছে, 
স্বামী-স্ত্রী মহব্বতের সাথে আলাপ আলোচনা করা কথা-বার্তা বলা নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। 
অন্যথায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 
যে মহিলা (স্ত্রী) তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় সে অবশ্যই বেহেশতে প্রবেশ করবে।

সন্তানকে ভালবাসার ফযিলত : 
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ সন্তান ফাতিমাকে অত্যাধিক ভালবাসতেন। তিনি স্বীয় জবানে এরশাদ করেন, 
ফাতিমা আমার কলিজার টুকরা, তাকে কেউ কষ্ট দিলে আমাকেই কষ্ট দেয়া হবে। 
নবীজির পাক জবানের বর্ণনায় ফুটে উঠে যে সন্তানকে ভালবাসা ছাওয়াবের কাজ।

পক্ষান্তরে আমাদের সমাজে বেগানা যুবক-যুবতীর প্রেম-ভালবাসার নামে যে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি উত্তাল সাগরের উর্মিমালার মত বহমান রয়েছে তা সম্পূর্ণ রূপে অবৈধ ও হারাম। বিবাহের পূর্বে এরূপ প্রেম-ভালবাসা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয়, অবৈধ। ইসলামের বিধি-বিধান অনুযায়ী কোন যুবতী কোন অবস্থায় কোন যুবকের সান্নিধ্যে থাকতে পারেনা। 
উমর (রা:) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 
কোন পুরুষ যখন কোন নারীর সাথে একান্তে থাকে, তখন তাদের মাঝে তৃতীয় জন হিসেবে উপস্থিত হয় স্বয়ং শয়তান তাদের মাঝে ভাবাবেগকে উৎসাহিত করে এবং উভয়ের মাঝে খারাপ কুমন্ত্রণা দিতে থাকে এবং সর্বশেষে লজ্জাকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। 
এতে তারা নিজেরা যেমনি কঠিন গোনাগার হবে, তেমনি তাদেরকে এই মেলামেশার সুযোগ দেয়ার কারণে তাদের পিতা-মাতা ও অভিভাকদেরকে হাদীস শরীফে দাইয়ুস বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে যে, 
দাইয়ুস জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। 
তাই এইসব ব্যাপারে সকলের কঠোরভাবে সাবধান হওয়া জরুরী এবং তা ঈমানের দাবী। আর এই অবৈধ ভালবাসার প্রতিরোধের জন্যই আল্লাহ নর-নারীকে দিয়েছেন পর্দার বিধান। এই বিধান নারী-পুরুষ উভয়ে পরিপূর্ণ রূপে পালন করলে সমাজে ঐ রকম অবৈধ ভালবাসার কোন অবকাশই থাকবে না। আমাদের সমাজের অনেকের আবার মন্তব্য যে, প্রেম-ভালবাসা নাকি বৈধ, তাদের উক্তি হল যে, প্রেম পবিত্র, ভালবাসা পবিত্র। তাদের এই সব কথা সম্পূর্ণ ভুল, নাজায়িয, অবৈধ, অপবিত্র এবং ইসলাম বিরোধী। ভালবাসা কখনও বৈধ হতে পারে না। বস্তুত: এ ধরনের প্রেম ভালবাসা সম্পর্ক ইসলাম সাপোর্ট করে না। তবে হ্যা যে কেউ তার মনের মত জীবন সঙ্গীনী পছন্দ করে রাখতে পারে বটে। কিন্তু তাই বলে তার সাথে বিবাহের পূর্বে কোন রকম প্রেম-প্রেম খেলা শুরু করতে পারবে না। কেননা বিবাহের ইচ্ছা থাকলেও বিবাহ না করা পর্যন্ত এভাবে প্রেম-ভালবাসা করা গুনাহে কবিরা ও হারাম। এমন কি বিবাহের কথা পাকাপাকি হয়ে গেলেও আকদ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন প্রেম-ভালবাসা জায়িজ নয়। বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী হওয়ার পরই কেবল প্রেম ভালবাসা করতে পারে এবং তা পবিত্র ও ছাওয়াবের কাজ।

কিছুদিন আগে একজন মেয়ে, তার এক ক্লাসমিটের গল্প বললো এভাবে - তার সাথে দেখা হয়। ভাল-মন্দ আলাপের এক পর্যায়ে সে আমাকে এভাবে বলতে শুরু করল- জানিস সারিরা কিছুদিন আগে আমি নানার বাড়িতে গিয়েছিলাম, ওখানে আমার কয়েকজন খালাতো বোনের সাথে দেখা হয়। তাদেরকে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠি। এই সেই অনেক গল্প হয়। তাদের মাঝে একজনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম কিরে মোহনা! বর কি তোকে দেখছে? তখন সে বলল, দেখছে মানে! আমাদের প্রতিদিনই ফোনে কথা হয়। আমি বললাম, এটা ঠিক হয়নি। জাননা- বিবাহের পূর্বে প্রেম করা নাজায়িজ, হারাম। তখন তারা সবাই হেসে উঠল, তাদের এই হাসির কারণ কি আমি বুঝতে পারলাম না। মোহনা বলল, আরে আমাদের বিয়ের সব কিছু ঠিক, এখানে আবার গুনাহের কি আছে। তাছাড়া যদি বিয়ের আগে প্রেম না করি, তাহলে একে অপরকে জানব কেমন করে। হঠাৎ অপরিচিত একজনের সাথে সংসার করব কেমন করে। তাছাড়া প্রেম-ভালবাসা পবিত্র, তখন সবাই এক সাথে বলল হ্যা। প্রেম ভালবাসা পবিত্র তাদের যুক্তি হল- ইউসুফ-জুলাইখা প্রেম করছেন। তিনি নবী হয়ে যখন প্রেম করলেন তাহলে অবশ্যই অবশ্যই প্রেম পবিত্র। আমি তাদেরকে অনেক বুঝালাম, তারা বলল, যদি সঠিক ও স্পষ্ট যুক্তি দেখাতে পারিস তাহলে আমরা তোর কথা মেনে নেব।

দেখলেন তো তাদের যুক্তি, তাদের ধর্মীয় জ্ঞান না থাকার কারণে তারা ইউসুফ-জুলাইখাকে দিয়ে যুক্তি ধরেছে। অথচ তারা জানেনা, ইউসুফ (আ:) এই ঘটনায় জড়িত কি না, জুলাইখার এই ভালবাসার রহস্য কি? কত বছর আগে জুলাইখা ইউসুফ (আ:) কে স্বপ্নের মধ্যে সান্নিধ্য লাভ করেছেন? তার ভালবাসা বর্তমান যুগের যুবক-যুবতীর প্রেম ভালবাসার মত কি না। আর এই না জানার জন্যই তারা প্রেম ভালবাসা পবিত্র বলে অবৈধ প্রেম করে বেড়াচ্ছে। এ ধরনের অবৈধ প্রেম-ভালবাসায় জড়িত হয়ে অনেক তরুণ-তরুণীর জীবন অকালে ঝড়ে পড়ছে। তাদের লেখা-পড়ার ক্ষতি হচ্ছে, সময়ের অপচয় হচ্ছে। স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে, সাজানো সংসার ভেঙ্গে চুরমান হচ্ছে, সবচেয়ে বড় কথা হল- ঈমানের জ্যোতি নিভে যাচ্ছে, দীনদারিত্ব নষ্ট হচ্ছে। আসলে ভালবাসা বলতে যা বুঝায়-বর্তমান যুবক-যুবতীর এই ভালবাসা সেই ভালবাসা নয়। তাদের ভালবাসার মূল মিনিং হচ্ছে অনেক সময় দেখা যায় তাদের এই ভালবাসায় অভিভাবকদের সম্মতি থাকে না বিধায় তাদের মুখে চুনকালি দিয়ে পালিয়ে যায়। আবার কিছু দিন পরে যখন প্রেমের আবেগ নিশা টুটে যায়, তখন কালো মেঘের ছায়ার মত নেমে আসে নানাবিধ অস্বস্তি ও যন্ত্রণা। তখন তড়িৎ গতিতে বিচ্ছেদ ঘটে যায়। তারা সর্বনাশা প্রেমে একুল-অকুল সবি হারায়।

তারা কি জানেনা! প্রেম কি? ভালবাসা কি? তার প্রতিফল কি? কেন জানবে না, হ্যা তারা জানে, প্রেম এক মরণাত্বক যন্ত্রণার নাম। একটি হৃদয় বিদারক সংক্রামক রোগ, যা অত্যন্ত ছোয়াছে বড়ই মারাত্মক এ প্রেম। যে একবার এ পথে পা বাড়িয়েছে সে কখনও সুখের ছায়া দেখেনি। কেননা তাতে রয়েছে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নারাজী। প্রেমের প্রধান উৎস হচ্ছে আবেগ আর প্রচন্ড এই আবেগই হচ্ছে প্রেমের চালিকা শক্তি। কিন্তু গভীর এই আবেগকৃত প্রেমের গভীরতা যখন থেমে যায়, তখন প্রেমের বদলে জন্ম নেয় মোহ। কচুপাতার পানির মত এক সময় এই মোহও ঝড়ে পড়ে। তখন স্বপ্ন সাধ, আশা, ভালবাসা সবই হয়ে যায় চুর্ণ। কেউ কেউ আবার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রতিক্রিয়া দেখায়। কেউ প্রতিশোধ নেয় (এসিড, খুন বা যুবতীর বিবাহ ভঙ্গন) কেউ চিরকুমার থেকে যায়, কেউ করে আত্মহত্যা। আরে বাবা এত ভয়ক্ষর রাস্তার নামই কি ভালবাসা! তারপরও বুঝে আসে না কি করে যে বিনা বিবেচনায় আজকের তরুণ-তরুণীরা তা বরণ করে নেয়। যারা অবৈধ প্রেমের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে তাদেরকে বলছি এ হারাম পথে কেন নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চান? খোদার পথে জীবন পরিচালিত হয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ কর। যেখানে থাকবে না কোন অশান্তি, কোন কষ্ট, শুধু থাকবে সুখ আর সুখ, শান্তি আর শান্তি, বর্তমান আধুনিক বিশ্বে ভালবাসা বলতে যা পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে ইসলাম বিরোধী। কিন্তু শত আফসোস হলেও সত্য যে, বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী বিশেষ করে আধুনিক শিক্ষিত ও সচেতন স্কুল, কলেজ ও ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা এই ভালবাসা নামক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত। যার ফলে অকালে ঝড়ে যাচ্ছে হাজারো জীবন। প্রতিনিয়ত এসিডে দগ্ধ হচ্ছে হাজারো নারী। আধুনিক বিশ্বে আধুনিক প্রেমের বেলায় এটি কি সত্য। তাই বলতে হয় এটা ভালবাসা নয় এটা মরণ নেশা।

ভালবাসার নামে দেশের ভবিষ্যত সম্ভাবনাময় যুব সমাজকে ধ্বংস ও নিঃশেষ এর দিকে টেলে দিচ্ছে। যার ফলে পরিবার, সমাজ সবই হচ্ছে কলংকিত, অধ:পতিত। যার জলন্ত প্রমাণ প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় চোখ ভুলালেই দেখতে পাই। তারপরও কি আমরা সে পথ থেকে ফিরে আসতে পারি না? সময় থাকতে তা থেকে শিক্ষা নিতে পারি না? হ্যা ভালবাসা বড় মহৎ একটি গুণ। মহান আল্লাহপাক এই ভালবাসাকে একশত ভাগ করে নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রেখে মাত্র একভাগ সারা বিশ্বে সকল প্রাণী জগতে দান করে দিয়েছেন। যার দ্বারা মা সন্তানদেরকে ভালবাসে, স্বামী-স্ত্রীকে ভালবাসে, আত্মীয় স্বজন একে অপরকে ভালবাসে। বাকি নিরানব্বই ভাগ ভালবাসা মহান আল্লাহ নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। কিয়ামতের দিন তা দ্বারা তিনি স্বীয় বান্দাদের প্রতি করুণা প্রদর্শন করবেন। মহান আল্লাহ প্রেম-ভালবাসা নামক ধ্বংসাত্বক রোগের প্রতিরোধের জন্য পর্দাপ্রথা দিয়েছেন। এরই মাধ্যমে বাচানো সম্ভব হবে ব্যক্তি, পরিবার সমাজ এবং দেশকে রক্ষা করা। আল্লাহপাক নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন-
وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
তোমরা জাহেলী যুগের ন্যায় নিজেদের প্রদর্শন করে বাহিরে বের হয়ো না। (আল-কুরআন) 
যারা অবৈধ ভালবাসাকে পবিত্র বলতে দুঃসাহস দেখান এবং বলেন প্রেম পবিত্র। শালিনতার সাথে প্রেম করলে তা নাজায়িয হবে কেন? তাদেরকে আবারও বলছি, এটা আপনাদের নিছক মুর্খতা ও সম্পূর্ণ অমূলক ভুল এবং ভুল ধারণা। অবৈধ ভালবাসা কখনো পবিত্র হতে পারে না এবং পবিত্র হবার কোন পথও নেই। যুবক ও যুবতীর ভালবাসা সম্পূর্ণ নাজায়িয ও হারাম। এক মাত্র বৈবাহিক সম্পর্কের পর পরই প্রেম-ভালবাসা পবিত্র হতে পারে। বিয়ের আগে তা পবিত্র নয়, হারাম ও কবিরা গুনাহ। যদি বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েও যায় তবুও এ কাজে লিপ্ত হতে পারবে না যতক্ষণ না আকদ হয়েছে। এমন কি আকদের পূর্ব পর্যন্ত প্রেম সংক্রান্ত গোপন চিঠি আদান প্রদান, দেখা-সাক্ষাত, ফোনে কথা-বার্তা বলা সবই নিষিদ্ধ, কবীরা গুনাহ।

তাই আমাদেরকে সঠিকভাবে বাচতে হলে দেশ, জাতি ও পরিবারকে বাঁচাতে হলে এই অবৈধ প্রেম ভালবাসার পথ চিরতরে বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানদের সতর্ক হওয়া অতীব জরুরী। পরিশেষে বলব, যদি আমরা যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের শরীয়ত সম্মতভাবে বৈবাহিক বন্ধনের ভিত রচনা করি তাহলে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতে সুখী হতে পারব। দেশ ও সমাজকে পাপাচার থেকে মুক্তি দিতে পারব এবং সামনে আগত প্রত্যেক শিশুকে সুন্দর ভবিষ্যত এবং কাঙ্খিত দেশ সমাজ ও পরিবেশ উপহার দিতে পারব। তাই আসুন, আমরা সবাই সচেতন হই এবং যুবসমাজকে সঠিকভাবে বাঁচার জন্য সুন্দর পথ দেখাই।

সমাপ্ত

লেখক: কামাল উদ্দিন মোল্লা
সম্পাদক: চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ
সূত্র: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব

রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭

সিরাতের গুরুত্বপূর্ণ বইসমূহ

১) যারা প্রথম সিরাত পড়া শুরু করেছেন, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো বই সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া। নবী জীবনের মূল মূল ঘটনা এই বইয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষিপ্তভাবে।লেখেছেন তাকি উছমানি সাহেবের বাবা মুফতি শফি রাহিমাহুল্লাহু। বইটির উর্দু ও বাংলা সংস্করণ আছে।
২) সিরাত অবশ্যই বুঝার বিষয়। কেচ্ছা-কাহিনী না।নিছক ঐতিহাসিক ঘটনা না।সিরাত থেকে আমাদের উপকৃত না হবার একটা বড় কারণ হচ্ছে, আমাদের বুঝাবুঝির তরিকাগত ভুল ও বুঝাবুঝির চর্চার অভাব। এই সমস্যা দূর করতে সবচেয়ে ভালো বই হচ্ছে, শায়েখ রামাদান আল বুতি রাহিমাহুল্লহুর ফিকহুস সিরাহ। বইটির আরবি ও ইংরেজি সংস্করণ আছে।
৩) ছোট আকারের মধ্যে সবচেয়ে সাজানো গুছানো ও শুদ্ধ বর্ণনার প্রতি যত্নবান বই আর রাহিকুল মাখতুম। আধুনিক ভাষা, বর্ণনাশৈলী ও দৃষ্টিভঙ্গী। এই বইটা সবসময় হাতের কাছে রাখার মত বই। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মুজাকারা, বন্ধুদের মধ্যে হালাকাহ বা রাতে ঘুমানোর আগে দশ মিনিট চোখ বোলানোর মত বই। লেখেছেন ছফিউর রহমান মোবারকপুরী হাফিজাহুল্লাহু। বইটির আরবি,ইংরেজি, উর্দু, বাংলাসহ নানা ভাষিক সংস্করণ আছে। বাংলায় খাদিজা আখতার রেজায়ীর অনুবাদ সবচেয়ে ভালো অনুবাদ। তবে, আরও ভালো অনুবাদ হওয়া দরকার।এই অনুবাদে একাডেমিক মান রক্ষা হয়নি।
৪) আর রহিকুল মাখতুমের প্রায় সমমানের বই হচ্ছে, নবীয়ে রহমত। লিখেছেন আলি নাদাবি রাহিমাহুল্লহু। গত শতকের প্রভাবশালী আলেমদের মধ্যে একজন।তবে পার্থক্য হচ্ছে, তৎকালীন আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিষয়ে বিস্তৃত বর্ণনা আছে বইটির শুরুতে। আছে লেখকের ব্যক্তিগত সিরাত পাঠের অভিজ্ঞতার গল্প।শামায়েল সংকলনের প্রতি গুরুত্ব আছে। আছে আবেগ ও রুহানিয়াত।এই বইটির সাথে শামায়েলে তিরমিজি মিলিয়ে পড়তে পারেন। তাহলে, ব্যাপক উপকার হবে।বইটির উর্দু, আরবি, বাংলা, ইংরেজিসহ নানা ভাষিক সংস্করণ আছে।
৫) গত শতকের সবচেয়ে বিখ্যাত দুটি সিরাত গ্রন্থ হচ্ছে, শিবলি নুমানি ও সুলাইমান নাদাবি রাহিমাহুমাল্লাহুর সিরাতুন নবী ও আলি সাল্লাবি হাফিজাহুল্লাহুর আস সিরাতুন নাবাবিয়াহ। এই দুইটি বই সম্পর্কে কথা বলা খুব কঠিন। তারচে বরং বলা ভালো, এর মধ্যে সব আছে। প্রথম বইটির উর্দু,বাংলা, ইংরেজি সংস্করণ আছে। দ্বিতীয়টির আরবি ও ইংরেজি। বাংলা নেই। তবে, শুনেছি, সালাফি ঘরানার কে যেন অনুবাদের উদ্যোগ নিয়েছেন।
৬)যারা ট্র্যাডিশনাল পাঠে অভ্যস্ত, ট্র্যাডিশনাল লেখাজোখার গুরুত্ব বুঝেন, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো বই সিরাতে মুস্তাফা। লিখেছেন ইদ্রিস কন্ধলবি রাহিমাহুল্লহ। সাথে সাথে সিরাতে ইবনে হিশাম ও জাদুল মাআদ লিইবনিল কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ।প্রথম বইদুটিতে সিরাত সংশ্লিষ্ট সব ঘটনা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তৃতীয় বইটিতে সিরাতের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা আছে। অসাধারণ একটা বই। প্রেম করার পর ব্যর্থ হলে কি করতে হবে_ সিরাতের আলোকে এর ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বইটা সবসময় শিথানের কাছে রেখে পড়ার মত বই। এই বই তিনটার বাংলা অনুবাদ আছে।
৭) যারা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সিরাত পাঠ করতে চান, তারা মুনির গাদবানের আল মানহাজুল হারাকি পাঠ করতে পারেন।এই বইয়ে নবীজির জীবনের আন্দোলনী তরিকা ও নীতির কথা বুঝার চেষ্টা করা হয়েছে। সাইয়েদ কুতুব মরহুমের মাইলস্টোনের আলোকে লেখা হয়েছে।
একইসাথে হামিদুল্লাহ খানের নবীজির রাজনৈতিক নথির সংকলন পাঠ আপনার সামনে নবীজির রাজনৈতিক কর্ম-তরিকা বুঝার ক্ষেত্রে ভালো সহায়ক হবে।
তেমনি নবীজির সরকার ব্যবস্থা বুঝতে সাহায্য করবে আব্দুল হাই কাত্তানি রাহিমাহুল্লাহুর বিশাল বই আত তারাতিবুল ইদারিয়াহ।
৮) যারা দার্শনিকভাবে সিরাত পাঠ করতে চান, তাদের জন্য শিবলি নুমানির সিরাতুন নবীই সবচেয়ে ভালো। এর পাশাপাশি শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবি রাহিমাহুল্লাহুর হুজ্জাতুলাহিল বালিগার দ্বিতীয় অংশ থেকে পড়তে পারেন। বাংলা অনুবাদ আছে।
#আমার_নবী

ট্রাম্প তোমায় সু-স্বাগতম”


ট্রাম্পীয় যুগ শুরু হয়ে গেছে। মুসলমানদের আমেরিকায় যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৭টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের গ্রহন করবে না বলে আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে। আমেরিকার ইসলামিক সেন্টারগুলোতে আগুন লাগা শুরু হয়ে গেছে। মসজিদে আগুন দেওয়া হচ্ছে। মনের আগুন এখন মসজিদে মসজিদে ছড়িয়ে পড়েছে। 

আমি মনে করি এটা একটি ভালো লক্ষণ। মুসলমানরা কে জুব্বা পড়লো, কে প্যান্ট শার্ট পড়লো, এটা এখন দেখার বিষয় থাকবে না। মুনাফিক মুসলিমরা এতদিন কোন ইসলামী রাষ্ট্রকে দাঁড়াতে দেয়নি, সেই মুনাফিক মুসলিমরা এখন আমেরিকা গিয়েও দাঁড়াতে পারবে না। পদে পদে লাঞ্ছিত হবে। আজ মুসলমানদের কাছে খুব পরিস্কার হয়ে যাবে যে, আসলে আমেরিকা কখনোই মুসলমানদের বন্ধু ছিল না। ওরা আফগান জালিয়েছে, ইরাক জ্বালিয়েছে, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন সব জ্বালিয়েছে। এখন নিজ দেশেও আগুন জ্বালাচ্ছে। ওদের মনের ভেতরে যে আগুন ছিল তা এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এ আগুনে মুনাফিক মুসলিমদের পরিচয় পরিস্কার হয়ে যাবে। 

আজ এটা খুব পরিস্কার যে, সকল কুফফার শক্তি মুসলমানদের দুশমন। প্রকাশ্য শত্রু। ওরা মুনাফিক মুসলমানদের সাথে নিয়ে এতদিন সন্ত্রাস দমনের নামে প্রকৃত মুসলমানদের হত্যা করেছে, গৃহহারা করেছে, স্বজনহারা করেছে। ভিটেমাটি হারা করেছে। এখন নিজের দেশেই ওরা আগুন লাগাচ্ছে। 

সময় এসেছে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। একই পতাকাতলে আসার। একই নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার। বিভাজন মুসলমানদের আরো দুর্বল করবে। হীন করবে। আজ কুফফার শক্তি এটা দেখবে না কে হানাফি, কে আহলে হাদীস, কে সুন্নী, কে ওয়াহাবী, কে তাবলীগি, কে চরমোনাই, কে জামাত, কে জিহাদী। ওদের কাছে শতভাগ আনুগত্যহীন সকল মুসলমানই শত্রু। তাই মসজিদে আগুন লাগাও। ভিসা বন্ধ করে দাও। 

এগুলো আজ মুসলমানদের এই শিক্ষা দিবে যে, মুসলিম দেশ থেকেও ওদের বিদায়ের আওয়াজ উঠার। আজ মধ্যপ্রাচ্য থেকে যদি ওদের বিদায়ের আওয়াজ ওঠে, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ইনশাআল্লাহ, গোটা মধ্যপ্রাচ্য থেকে ওদের বিদায়ের দিন ঘনিয়ে আসছে। বিশ্বের সকল মুসলমানকে একনেতার পতাকাতলে সংঘবদ্ধ হতে হবে। তাহলেই ওদের ক্রুসেডীয় উম্মাদনা নিয়ন্ত্রন সম্ভব। 

ট্রাম্প মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পথকেই সুগম করবে। তাই তাকে সুস্বাগতম জানাচ্ছি। 


বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭

আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ


۞ ﺍﻟﻠﻪ ۞ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ۞ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ ۞ ﺍﻟﻤﻠﻚ ۞ ﺍﻟﻘﺪﻭﺱ ۞ ﺍﻟﺴﻼم ۞ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ۞ ﺍﻟﻤﻬﻴﻤﻦ ۞ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ۞ ﺍﻟﺠﺒﺎﺭ ۞ ﺍﻟﻤﺘﻜﺒﺮ ۞ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ ۞ ﺍﻟﺒﺎﺭﺉ ۞ ﺍﻟﻤﺼﻮﺭ ۞ ﺍﻟﻐﻔﺎﺭ ۞ ﺍﻟﻘﻬﺎﺭ ۞ ﺍﻟﻮﻫﺎﺏ ۞ ﺍﻟﺮﺯﺍﻕ ۞ ﺍﻟﻔﺘﺎﺡ ۞ ﺍﻟﻌﻠﻴﻢ ۞ ﺍﻟﻘﺎﺑﺾ ۞ ﺍﻟﺒﺎﺳﻂ ۞ ﺍﻟﺨﺎﻓﺾ ۞ ﺍﻟﺮﺍﻓﻊ ۞ ﺍﻟﻤﻌﺰ ۞ ﺍﻟﻤﺬﻝ ۞ ﺍﻟﺴﻤﻴﻊ ۞ﺍﻟﺒﺼﻴﺮ ۞ ﺍﻟﺤﻜﻢ ۞ ﺍﻟﻌﺪﻝ ﺍﻟﻠﻄﻴﻒ ۞ﺍﻟﺨﺒﻴﺮ ۞ ﺍﻟﺤﻠﻴﻢ ۞ ﺍﻟﻌﻈﻴﻢ ۞ ﺍﻟﻐﻔﻮﺭ ۞ ﺍﻟﺸﻜﻮﺭ ۞ ﺍﻟﻌﻠﻲ ۞ ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ ۞ ﺍﻟﺤﻔﻴﻆ ۞ ﺍﻟﻤﻘﻴﺖ ۞ ﺍﻟﺤﺴﻴﺐ ۞ ﺍﻟﺠﻠﻴﻞ ۞ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ ۞ ﺍﻟﺮﻗﻴﺐ ۞ ﺍﻟﻤﺠﻴﺐ ۞ ﺍﻟﻮﺍﺳﻊ ۞ ﺍﻟﺤﻜﻴﻢ ۞ ﺍﻟﻮﺩﻭﺩ۞ ﺍﻟﻤﺠﻴﺪ ۞ﺍﻟﺒﺎﻋﺚ ۞ ﺍﻟﺸﻬﻴﺪ ۞ ﺍﻟﺤﻖ ۞ ﺍﻟﻮﻛﻴﻞ ۞ ﺍﻟﻘﻮﻱ ۞ ﺍﻟﻤﺘﻴﻦ ۞ ﺍﻟﻮﻟﻲ ۞ ﺍﻟﺤﻤﻴﺪ ۞ ﺍﻟﻤﺤﺼﻲ ۞ ﺍﻟﻤﺒﺪﺉ۞ ﺍﻟﻤﻌﻴﺪ ۞ ﺍﻟﻤﺤﻴﻲ ۞ ﺍﻟﻤﻤﻴﺖ ۞ ﺍﻟﺤﻲ ۞ ﺍﻟﻘﻴﻮﻡ ۞ ﺍﻟﻮﺍﺟﺪ ۞ ﺍﻟﻤﺎﺟﺪ ۞ ﺍﻟﻮﺍﺣﺪ ۞ ﺍﻷﺣﺪ ۞ ﺍﻟﺼﻤﺪ ۞ ﺍﻟﻘﺎﺩﺭ ۞ ﺍﻟﻤﻘﺘﺪﺭ ۞ ﺍﻟﻤﻘﺪﻡ ۞ ﺍﻟﻤﺆﺧﺮ ۞ ﺍﻷﻭﻝ ۞ ﺍﻵﺧﺮ ۞ ﺍﻟﻈﺎﻫﺮ ۞ ﺍﻟﺒﺎﻃﻦ ۞ ﺍﻟﻮﺍﻟﻲ ﺍﻟﻤﺘﻌﺎﻟﻲ ۞ ﺍﻟﺒﺮ ۞ ﺍﻟﺘﻮﺍﺏ ۞ ﺍﻟﻤﻨﺘﻘﻢ ۞ ﺍﻟﻌﻔﻮ ۞ ﺍﻟﺮﺀﻭﻑ ۞ ﻣﺎﻟﻚ ۞ ﺍﻟﻤﻠﻚ ۞ ﺫﻭ ۞ ﺍﻟﺠﻼﻝ ۞ ﻭﺍﻹﻛﺮﺍﻡ ۞ ﺍﻟﻤﻘﺴﻂ ۞ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ۞ ﺍﻟﻐﻨﻲ ۞ ﺍﻟﻤﻐﻨﻲ۞ ﺍﻟﻤﺎﻧﻊ ۞ ﺍﻟﻀﺎﺭ ۞ ﺍﻟﻨﺎﻓﻊ ۞ ﺍﻟﻨﻮﺭ ۞ ﺍﻟﻬﺎﺩﻱ ۞ ﺍﻟﺒﺪﻳﻊ ۞ ﺍﻟﺒﺎﻗﻲ ۞ ﺍﻟﻮﺍﺭﺙ ۞ ﺍﻟﺮﺷﻴﺪ ۞ ﺍﻟﺼﺒﻮﺭﺍﻟﻠﻬﻢ ﺍﺭﺯﻗﻤﻦ ﻧﺸﺮﻫﺎ ﺍﻟﻔﺮﺩﻭﺳﺊ ﺍﻻﻋﻠﻰ.

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

ওহে বোন,

Emran Hossain Adib

,
তুমি আজ তার পুত্রকে তোমার প্রতি দুর্বল করে তোমার শাশুড়ির উপর নির্যাতন করে চলছ। তাহলে সেদিন বেশি দুরে নয় তোমার পুত্রবধূরাও তোমার সাথে ঐরুপ আচরণ করবে।যেমনটি তুমি আজ তোমার শাশুড়ির সাথে করছ। 
,
আর শাশুড়ি যদি তার পুত্রবধূকে মেয়ের মর্যাদায় স্থান দিয়ে আগলে রাখে।নিজ মেয়ের ন্যয় তার ত্রুটি না ধরে ক্ষমা করে শুধরিয়ে দেয়। তাহলে আশা করা যায় সেই সংসারে শান্তি আসবে।অন্যথয় আপনার পুত্র বধূ যদি আপনার সন্তান কে তার প্রতি দুর্বল করে ফেলে,তাহলে বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন।কারন আপনার পুত্রবধূ আপনার পুত্রকে ফুঁসলিয়ে আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা বানিয়ে দিবে। 
 ,
আর পুত্র বধূদের উচিত শাশুড়িকে নিজ মায়ের মর্যাদায় স্থান দিয়ে তার দেখবাল করা।কেননা সে তো আপনার স্বামীর মা, তার অমর্যাদা করা মানে তার পুত্রকে অবমূল্যায়ন করা।তাই তার যথাযথ মূল্যায়ন করা চাই। 
,
তাই এখন থেকে হিন্দি সিরিয়ালের সেই ঝগড়ার প্রাকটিস বাদ দিয়ে সুন্দর জীবন গড়ে তুলুন।

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

আব্দুল হাফিজ মক্কী রহ. –এর সংক্ষিপ্ত জীবনী


মাওলানা আব্দুল হাফিজ মাক্কী রহ. ছিলেন মুজাদ্দিদে ইসলাম শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া কান্দলভী রহ. –এর উল্লেখযোগ্য ছাত্র ও খলীফা। তিনি অখণ্ড হিন্দুস্তান থাকাকালীন পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরে ১৯৪৬ খৃস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
পারিবারিকভাবে মূলত তাঁরা কাশ্মীরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষ ‘আব্দুস সালাম মালিক’ কাশ্মীরের কুলিগাম অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তিনি ১৪০০ শতকের প্রসিদ্ধ সূফী-সাধক সায়্যিদ আলী আল হামদানি’র হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন।
দেশভাগের সময় শায়খ আব্দুল হাফিজ মাক্কী রহ. –এর পরিবার হিজরত করে পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে চলে আসেন। এখানে তিনি তাঁর দাদির নিকট কুরআন শরীফ অধ্যয়ন শুরু করেন। দেশবিভাগের ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার কারণে তাঁর পিতা ১৯৫৩ খৃস্টাব্দে পবিত্র মক্কা মুকাররামায় হিজরত করেন। ১৯৬০ খৃস্টাব্দে তাঁরা স্থায়ীভাবে সৌদি আরবে বসবাসের অনুমতি পান।
মক্কা মুকাররামায় ক্বারী আব্দুর রউফ রহ. –এর কাছে তিনি পুনরায় কুরআনে কারীম তাজভীদ –সহ অধ্যয়ন শুরু করেন। অতঃপর ১৯৫৪ খৃস্টাব্দে মক্কা মুকাররামার মাদরাসায়ে সাদিয়া’য় দ্বীনী ও সাধারণ শিক্ষা অর্জনের উদ্দেশ্যে তিনি ভর্তি হন। পবিত্র মক্কা নগরীর আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও মাওলানা আব্দুল হাফিজ মাক্কী পড়ালেখা করেন।
১৯৬৪ খৃস্টাব্দে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর তাঁর মুহতারাম পিতা, পবিত্র মক্কা নগরীর তাবলীগ জামাতের অন্যতম জিম্মাদার ‘হাজি মালিক আব্দুল হক’ রহ. –এর নির্দেশে তৎকালীন দাওয়াত ও তাবলীগের আমীর হযরতজী ইউসুফ রহ. –এর সাথে পুরো একবছর তাবলীগের সফর করেন। তাবলীগের সফরে থাকাকালীন দাওয়াত ও তাবলীগের তৃতীয় আমীর হযরত ইনামুল হাসান রহ. –এর সাথে তাঁর সুসম্পর্ক তৈরি হয়।
১৩৮৫ হিজরি/১৯৬৫ খৃস্টাব্দে মাওলানা আব্দুল হাফিজ মাক্কী রহ. তাঁর পিতার অনুমতি ও হজরত ইনামুল হাসান রহ. –এর নির্দেশনায় শায়খুল হাদীস মাওলানা যাকারিয়া কান্দলভী রহ. –এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। অতঃপর মক্কা মুকাররামায় প্রত্যাবর্তন করে তাবলীগের মেহনতে জড়িয়ে পড়েন। পাশাপাশি তিনি দারসে নেযামির কিতাবাদি অধ্যয়ন শুরু করেন।
২ বছর পর ১৯৬৭ খৃস্টাব্দে তিনি ভারতের বিখ্যাত দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুরে আগমন করে ‘মাওক্বুফ আলাইহি’(মিশকাতুল মাসাবিহ -জামাত) –এ ভর্তি হন। কিছুদিন অধ্যয়নের পর তিনি পুনরায় মক্কা নগরীতে ফিরে গিয়ে দ্বীনী ইলম অর্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। পরবর্তী বছর তিনি পুনরায় মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুরে দাওরায়ে হাদিসে ভর্তি হন। সেখানে শায়খুল হাদীস যাকারিয়া কান্দলভী রহ. –এর কাছে সহীহ বুখারী শরীফ অধ্যয়নের সৌভাগ্য তাঁর অর্জিত হয়। তিনি মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুরের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থানও অধিকার করেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সে ২৭ রমযান ১৯৬৬ খৃস্টাব্দে তিনি শায়খুল হাদীস রহ. –এর কাছ থেকে ইজাযতপ্রাপ্ত হন। মাওলানা যাকারিয়া কান্দলভী রহ. স্বহস্তে তাঁর মাথায় পাগড়ি পরিয়ে চার তরীক্বায় খিলাফত প্রদান করেন।
শায়খুল হাদীস রহ. –এর ইন্তেকালের (১৯৮২ খৃস্টাব্দ) পূর্ব পর্যন্ত মাওলানা আব্দুল হাফিজ মাক্কী ব্যবসা-বাণিজ্য, দারস-তাদরীস, পরিবার-পরিজনের মোহ ত্যাগ করে স্বহস্তে শায়খের যাবতীয় খিদমাতের দায়িত্ব আঞ্জাম দেন।
শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রহ. জীবিত থাকাকালীন ‘আল মাদরাসাহ আল সাওলাতিয়্যাহ’ –তে হাদিসের দারস প্রদান, দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ –সহ যাবতীয় কাজ তিনি শায়খ রহ. –এর দোয়া ও নির্দেশনায় পরিচালনা করতেন। শায়খুল হাদীস রহ. পরামর্শে তিনি ‘আল মাকতাবা আল ইমদাদিয়্যা’ নামে পবিত্র মক্কা নগরীতে লাইব্রেরী ও ‘আল রাশীদ প্রিন্টিং’ নামে পবিত্র মদীনা নগরীতে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
শায়খুল হাদীস রহ. –এর লিখিত মুয়াত্তা মালিক –এর বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আওজাযুল মাসালিক’ ও হযরত মাওলানা খলিল আহমদ সাহারানপুরী রহ. –এর ‘বাযলুল মাজহুদ’ প্রকাশনার কাজে তিনি দীর্ঘদিন মিশরে অবস্থান করেন। শায়খ যাকারিয়া রহ. –এর ইন্তেকালের পর তাঁর কিতাবাদি আরবি ও উর্দু ভাষায় প্রকাশনার মহান দায়িত্বও তিনি আঞ্জাম দেন।
শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রহ. –এর প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও তাঁর প্রতি যাকারিয়া রহ. –এর মমতার কারণে শায়খের আত্মজীবনী ‘আপবিতি’ এবং মুফাক্কিরে ইসলাম সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. –এর লিখিত ‘শায়খুল হাদীস রহ.’ –এর জীবনীতে একাধিকবার (আব্দুল হাফিজ মাক্কী রহ.) –তাঁর নাম উল্লিখিত হয়েছে।
মক্কায় অবস্থানের সুবাদে মাওলানা আব্দুল হাফিজ মাক্কী রহ. আরব বিশ্বকে উলামায়ে দেওবন্দের দ্বীনী খিদমাত সম্বন্ধে অবগত করেন। আকাবিরে দেওবন্দের তাসাউফের মেহনত সম্বন্ধে আরব ভাষাভাষীদের সঠিক ধারণা প্রদান করেন।
মাওলানা আব্দুল হাফিজ মাক্কী রহ. ছিলেন দীর্ঘদিন যাবত মাদরাসায়ে সাওলাতিয়া মক্কায় বুখারী শরীফের দারস প্রদান করেন। পাশাপাশি দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে বিশ্বব্যাপী সফর করেন। তাসাউফের মেহনতেও তাঁর অবদান অপরিসীম। পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নেপাল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সৌদি আরব –সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর খলীফাদের অবস্থান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফরের পাশাপাশি তিনি নিয়মিত পাকিস্তান ও সাউথ আফ্রিকায় সফর করতেন।

তাঁর খলীফাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হচ্ছেন, হাফিজ প্যাটেল রহ. (ব্রিটেন), হযরত মাওলানা ইব্রাহীম আদম (সাউথ আফ্রিকা), মাওলানা জুনাইদ হাশিম (সাউথ আফ্রিকা), মাওলানা আসআদ মাহমুদ (মক্কা মুকাররামা), মাওলানা মাসুদ আজহার (পাকিস্তান), মাওলানা ইলিয়াস ঘুম্মান (পাকিস্তান), মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াক্বুব (ভারত)।
বাংলাদেশেও উনার ২৮জন খুলাফা রয়েছেন।

গত১৬ জানুয়ারি ২০১৭ সোমবার সাউথ আফ্রিকায় সফর করাকালীন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন!
আল্লাহ্‌ তায়ালা শায়েখের ক্ববরকে জান্নাতের আলোয় আলোকিত করুন। তাঁর মর্যাদাকে বৃদ্ধি করুন।
ইয়া আল্লাহ রব্বুল কারীম শায়েখকে জান্নাতের উচুঁ মাকাম দান করুন,আমিন,,।
শায়েখের জন্য সকলের নিকট দোয়ার দরখাস্ত,
আবু আব্দুল্লাহ মাহমুদী,,
সৌদি আরব প্রবাসী,,

বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৭

তাবলীগ জামাতে অশনি সংকেত: সুমতি দাও মালিক !

১৯শে জানুয়ারী'১৭
হযরত মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক

বিশ্বব্যপি দাওয়াতের মহান মিশন পরিচালনাকারী তাবলীগ জামাত এক কঠিন সময় পার করছে ৷ সমস্যার কেন্দ্রমূলে অবস্থান করছেন জামাতের বর্তমান শীর্ষ মুরব্বী মাওলানা সা'দ কান্ধলভী হাফিজাহুল্লাহ ৷ দুটি বিষয়কে নিয়ে ঘনিভূত চলমান সমস্যা ৷ 
প্রথমটি হল কিছু দৃষ্টিভঙ্গি ও বক্তব্য, যা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে ৷ জামাতের সাথীদের মধ্যকার তো বটেই, এমন কি স্বয়ং সা'দ সাহেবের বেশ কিছু বক্তব্য বিতর্কের ঝড় তুলেছে ৷ উপমহাদেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ থেকে দৃষ্টি আকর্ষণের প্রেক্ষিতে দারুল উলূম দেওবন্দ দীর্ঘ সময় ধরে চুল-চেরা বিশ্লেষনের পর এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একটি ঘোষনাপত্র জনসম্মুখে প্রকাশ করেছে ৷
চলমান সংকটের দ্বিতীয় বিষয় হল, বিশ্বব্যপি পরিচালিত তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাঠামোগত মতপার্থক্য ৷ মাওলানা সা'দ সাহেবের অনুসারীগণ সা'দ সাহেবকে বর্তমানে তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় আমীর মনে করেন ৷ অপর দিকে জামাতের বয়জৈষ্ঠ অধিকাংশ মুরব্বীগণ মনে করেন একক ব্যক্তির এমরত নয়, বরং গঠিত আলমী শূরা বা আন্তর্জাতিক পরামর্শ পরিষদের মাধ্যমেই তাবলীগ জামাতের কাজ পরিচালিত হতে হবে ৷ কিন্তু সা'দ সাহেব এই শূরা মানেন না ৷ 
শূরা এবং এমারতের টানা-পড়েনে নেযামুদ্দীনের কেন্দ্রীয় মারকাযে হট্টগোল, গণ্ডগোল হয়ে থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে ৷ এরপর নেযামুদ্দীনে সা'দ সাহেবের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে হযরত ওমর পালনপুরী রহঃ, মুফতী জয়নুল আবেদীন রহঃ প্রমূখ বুযুর্গ মুরব্বীদের পর বর্তমানে বিশ্ব তাবলীগের সবচেয়ে বড় ইলমী মুরব্বী আহমদ লাট সাহেবসহ নেযামুদ্দীনের মুকীম অনেক মুরব্বীগণ নেযামুদ্দীন ছেড়ে চলে গেছেন ৷ রায়বেণ্ড মারকাজ ইতিমধ্যে নেযামুদ্দীন থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ৷ তারা শূরার অধিনেই কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন ৷

দুই
তাবলীগ জামাতে চলমান এই অস্থিরতার মধ্যে বিষয়টিকে বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম অতীব গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় আনেন ৷ দেশের একক শীর্ষ মুরব্বী আল্লামা আহমদ শফী হাফিজাহুল্লাহ অন্যান্য ওলামায়ে কেরামকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে দ্বীনের এই আযীম মেহনতকে তার সঠিক ধারায় রক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহন করেন ৷ হযরতের পক্ষ থেকে দেশের শীর্ষ ওলামাদের বড় একটি প্রতিনিধি দল আল্লামা আশরাফ আলী সাহেবের নেতৃত্বে কাকরাইলে যান এবং কাকরাইলের মুরব্বীদের সাথে আলোচনা করেন ৷ কাকরাইলকে রায়বেণ্ডের পথ ধরে আলমী শূরার অধীনে চলার পরামর্শ দেন এবং দেওবন্দের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে দেওবন্দকে আস্থায় না আনা পর্যন্ত সা'দ সাহেবকে বাংলাদেশের এজতেমায় না আনার জন্য ওলামায়ে কেরাম সাফ কথা জানিয়ে দেন ৷ 
এহেন প্রেক্ষিতে দূর থেকে অনুমান করা যায় যে, কাকরাইলের মুরব্বীরাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন ৷ কাকরাইলের অধিকাংশ আলেম মুরব্বীগণ ওলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ মেনে নেন ৷ কিন্তু গায়রে আলেমরা ভিন্ন পথেই হাটতে থাকেন ৷ তারা ওলামায়ে কেরামকে উপেক্ষা করে চলার নীতি গ্রহন করেন এবং যে কোনো মূল্যে সা'দ সাহেবকে এজতেমায় আনার চেষ্টা করতে থাকেন ৷ এ পর্যায়ে ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে সবরকম চেষ্টা করা হয় যেন, সা'দ সাহেব সমস্যা সমাধানের আগে বাংলাদেশে না আসেন ৷

তিন,
দারুল উলূম দেওবন্দের মত এলমী নেতৃত্বের প্রধান মারকাজ তার সকল মুরব্বীদের সর্বসম্মত মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিল একজন ব্যক্তির ব্যপারে ৷ আর এব্যপারে দারুল উলূম একাই নয়, বরং তাবলীগের সবচেয়ে বড় এলমী মারকাজ মাযাহেরুল উলূম সাহারানপুর এবং নদওয়াতুল উলামাও একই চিন্তার ধারক ৷ ওদিকে শায়খুল ইসলাম তাকী উসমানীসহ শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের বড় আরেক জামাত ৷ এদিকে বাংলাদেশের শীর্ষ আলেম খলীফায়ে মাদানী আল্লামা আহমদ শফীসহ ওলামায়ে কেরাম ৷ এ তো এজমায়ে উম্মতের মত অবস্থা! এটাকে মামুলি বিষয় ভাববার কী কোনই অবকাশ আছে? কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এগুলোকে থোড়াই কেয়ার করছেন অভিযুক্ত মহল ৷

চার,
তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে বিগত প্রায় শতাব্দীকাল যাবৎ দ্বীনের যে ব্যপক খেদমত হয়েছে তা অন্য কোনো জামাতের দ্বারা হয় নি, একথা বলা যায় অনেকটা নির্দ্বিধায় ৷ তবে এ খেদমত আর অবদানের পিছনে আল্লাহর রহমত তো ছিলই ৷ আল্লাহর নুসরত আসার পিছনে বাহ্যিক যে সকল বিষয় নিয়ামকের ভূমিকা পালন করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল, ওলামায়ে দেওবন্দের সর্বাত্মক সমর্থন, সহযোগিতা ও অংশগ্রহন ৷
তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইলিয়াস রহঃ জামাতের কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, তা হল- কোনো কারণে কখনো এই কাজে ওলামায়ে কেরামের ব্যপক অংশ গ্রহন ও নেতৃত্বের পথ যেন রুদ্ধ না হয়ে যায় ৷ তিনি উপলব্ধি করতেন, ওলামায়ে কেরামের নেগরানী দুর্বল হয়ে গেলে জামাত ভুল পথে ধাবিত হবে ৷
 প্রকৃত অর্থেই মাদারিসে দ্বীনিয়া ও ওলামায়ে কেরামের সাথে তাবলীগ জামাতের কাজের সম্পর্ক হল তেমন, রেলগাড়ীর ইঞ্জিনের সাথে ডাব্বা বা বগির যেমন সম্পর্ক ৷ ইঞ্জিন খুব বড় থাকে না ৷ সেই তুলনায় বগির সিরিয়াল অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে ৷ পিছনের বগিগুলো থেকে তো ইঞ্জিনের অস্তিত্বই টের পাওয়া যায় না ৷ মনে হতে পারে যে, বগিগুলো নিজ শক্তিতে চলছে ৷ আর কোনো কোনো অপরিণামদর্শী অর্বাচীন মনে করতেই পারে, ইঞ্জিনের সাথে সম্পর্ক রেখে চলার কী দরকার? বগি তো অনেক দ্রূতগতিতেই চলছে! আজ তাবলীগ জামাতের অবস্থাও অনেকটা সে দশা! নেযামুদ্দীনকে দেওবন্দ-সাহারানপুর-নদওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে ৷ আর কাকরাইলকেও হাটহাজারী ও মাদারিসগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করার আয়োজন সম্পন্নের পথে ৷

পাঁচ,
হযরত মাওলানা সা'দ কান্ধলভী হাফিজাহুল্লাহকে কেন্দ্র করে দেওবন্দ থেকে বাংলাদেশের এজতেমা পর্যন্ত যা হয়ে গেল তাকে তাবলীগ জামাতের জন্য এক ভয়ংকর অশনি সংকেত ছাড়া বলার কিছু নেই ৷ একজন ব্যক্তির এমারতকে কেন্দ্র করে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া খুবই অনভিপ্রেত ৷ 
যার এমারত নিয়ে এত তুলকালাম, তাকে যদি বিতর্কিত বলা হয়, সামান্যও বাড়িয়ে বলা হবে না ৷ তার দৃষ্টিভঙ্গী ও অব্যাহত বক্তব্যের উপর পাক-ভারতের শীর্ষ প্রায় সকল ওলামায়ে কেরাম সরল পথ থেকে বিচ্যুতির অভিযোগ এনেছেন ৷ এর চেয়েও বড় আক্ষেপের বিষয় হল, তার দৃষ্টিআকর্ষনের পরও কোনো সুরাহা হয় নি ৷ শেষ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক ঘোষনা দিতে হয়েছে দারুল উলূম দেওবন্দকে ৷ এমন ঘটনা তো একজন প্রতিষ্ঠিত আমীরের অবস্থানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার কথা ৷
এহেন প্রেক্ষিতে দেওবন্দের সাথে সুরাহা ছাড়া এজতেমায় না আসতে অনুরোধ জানানো হল বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ৷ কিন্তু খুবই দুঃখ ও ক্ষোভের বিষয় হল, বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করলেন তিনি এবং তার অনুসারীরা ৷ তিনি এলেন বাংলাদেশে ৷ তার আগমনকে কেন্দ্র করে মানুষ দেখল তাবলীগ জামাতের শতবর্ষের ঐতিহ্য লংঘণের সমারোহ ৷ রাজনৈতিক নেতাদের মত মোটর শোভাযাত্রার শোডাউন হল বিমানবন্দর থেকে ৷ আর ওনার স্টেইজে যাওয়ার জন্য সারিবদ্ধ বাহিনী দাড় করিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হল ৷ স্টেইজেও থাকল নিরাপত্তার দৃষ্টিকটু আয়োজন ৷ এভাবেই তাবলীগ জামাতের বিনীত ফকিরী হালতের কাজকে ক্যাডার বাহিনীর দৌরাত্মে গ্রাস করে নিল ৷ 
দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম এজতেমায় গেলেন না ৷ এতে মনে হয় তারা খুশিই হলেন ৷ আলেমদের এ জঞ্জাল না থাকলেই যেন তারা আরো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন! দারুল উলূম দেওবন্দের মুফতী সাহেব এজতেমায় গিয়ে তাচ্ছিল্যের শিকার হলেন ৷ ওলামাদের উদ্দেশ্যে সা'দ সাহেবের বয়ানের ফয়সালা করে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের আলেম সমাজকে এক হাত নেয়া হল ৷ কাকরাইলের মুরব্বী ওলামায়ে কেরামের অসহায় হয়ে তামাশা দেখা ছাড়া উপায় রইল না ৷ তাদের কেউ কেউ রাগে-ক্ষোভে এজতেমার ময়দান ছেড়ে চলে গেলেন ৷ কেউ কেউ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হাসপাতালে ভর্তি হলেন ৷

ছয়,
জানিনা এখন কাকরাইলের লোকজন হাটহাজারী যাবেন কোন মুখে?
প্রতি বছর হাটহাজারীসহ মাদরাসাগুলো থেকে যে ফারেগীনদের তাশকীল হয় সেটারই বা কী হবে? 
সকল মুরব্বী ওলামাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে ময়দান দখলের এ লড়াই তাবলীগ জামাতের কাজকে কোথায় নিয়ে দাড় করাবে? 
 ওলামায়ে কেরামকে দূরে সরিয়ে দিয়ে তাবলীগ জামাত কি সঠিক পথে চলতে পারবে? 
এক ব্যক্তির এমারতের কি এত প্রয়োজন?
সব ধ্বংসের বিনিময়ে কী হবে এই এমারত দিয়ে?

পুনশ্চ:
বিষয়গুলো জনসম্মুখে আলোচনার উদ্দেশ্য হল, সমস্যা সমাধানে সকলকে যারযার জায়গা থেকে এবং তাবলীগের কাজের মেযাজ ঠিক রেখে ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানানো ৷ দ্বীনের এ মহান খেদমত যেন তার স্বকীয় ধারায় চলতে পারে সেজন্য দোয়া ও মেহনত জারি রাখা চাই ৷ 
বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে কাকরাইলকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে দওবন্দের সাথে সুরাহা ছাড়া মাওলানা সা'দ সাহেবকে বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম গ্রহন করবেন না ৷ সেইসাথে আলমী শূরাকেও মেনে নিতে হবে, এছাড়া সমঝোতার আর কোনো পথ নেই ৷

ডেল কার্নেগীর উক্তি



যার কথার চেয়ে কাজের পরিমান বেশী, সাফল্য তার কাছেই এসে ধরা দেয়,কারন যে নদী যত গভীর তার বয়ে যাওয়ার শব্দ ততো কম।
✪ মনে রাখবেন, আপনি কে বা আপনার কি আছে তার উপর আপনার সুখ নির্ভর করেনা, আপনার সুখ নির্ভর করে আপনি কেমন চিন্তা করেন তার উপর।
✪ অনুকরন নয়, অনুসরন নয়, নিজেকে খুঁজুন, নিজেকে জানুন, নিজের পথে চলুন।
✪ অস্পষ্টতায় ভরা দুরের কিছুর চেয়ে কাছের স্পষ্ট কিছু দেখাই আমাদের দরকার।
✪ আত্মসম্মান, আত্মজ্ঞান, আত্ম নিয়ন্ত্রন- এই তিনটিই শুধু মানুষকে সর্বশক্তিমান করে তুলতে পারে। সঠিক জীবন যাপন নির্ভর করে এদের উপরে।
✪ আপনি ভাল মানুষ হলেই পুরো জগৎবাসী আপনার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে এমনটা আশা করা ঠিক নয়। আপনি নিরামিষভোজী হলে কি কোন ষাঁড় আপনাকে তাড়া করবে না?"
✪ আমরা যখন আমাদের কর্তব্য - কর্মে অবহেলা দেখাই, কোন দায়িত্বকে নিষ্ঠার সঙ্গে গ্রহন করিনা, তখনই অকৃতকার্যতা আসে।
✪ আমি চাইতাম বিখ্যাত ব্যক্তিদের মতো সফল হতে; এর জন্য আমি অনেক পরিশ্রমও করেছি কিন্তু আমি কোনভাবেই সফল হইনি,অবশেষে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম- অন্যের মতো নয়- বরং আমি হবো আমার মতো।
✪ একটি সুন্দর মুখের কুৎসিত কথার চেয়ে, একটি কুৎসিত মুখের মধুর কথা অধিকতর শ্রেয়।
✪ কি কাজ করতে চলেছেন সে সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকার অর্থ,আপনি অন্ধকারের যাত্রী কোন অন্ধের মত।
✪ জীবনে পাওয়ার হিসাব করুন, না পাওয়ার দুঃখ থাকবেনা।
✪ দক্ষতা অর্জনের পথ হল- ১) অপরের অভিজ্ঞতা মনে রাখুন ২) নিজের উদ্দেশ্য সামনে রাখুন ৩) সাফল্যের জন্য মন কে তৈরি করুন ৪) যতটা সম্ভব অভ্যেস করুন।
✪ দাম্পত্য জীবনে সুখি হতে চাও? 
তাহলে-পরস্পরকে অবিশ্বাস করবেনা আর ঘ্যানর ঘ্যানর করবে না।
✪ দুশ্চিন্তা দূর করার এক নম্বর উপায় হল- ব্যস্ত থাকুন।
✪ নিজের কাজকে ভালোবাসুন। আমাদের কাজের পিছনে যখন অনুভুতি কাজ করে আমরা তখনই সবচেয়ে সেরা হয়ে উঠি।
✪ পৃথিবীতে ভালবাসার একটি মাত্র ঊপায় আছে, সেটা হল প্রতিদান পাওয়ার আশা না করে শুধু ভালবেসে যাওয়া।
✪ ভদ্র আচরন করতে শিক্ষা লাগে, অভদ্র আচরন করতে অজ্ঞতাই যথেষ্ট।
✪ মনে রাখবেন অন্যায় সমালোচনা অনেক ক্ষেত্রেই আড়াল করা প্রশংসাই: মনে রাখবেন মরা কুকুরকে কেউ লাথি মারেনা।
✪ মনে রাখবেন আজকের দিনটি গতকাল আপনার কাছে আগামীকাল ছিল। যেটার কথা ভেবে গতকাল আপনি চিন্তিত ছিলেন আজ নয়।
✪ মনে রাখা প্রয়োজন যে, একজন হতাশা গ্রস্থ মানুষের চেয়ে একজন সুখী মানুষ হাজার গুন বেশী কর্মক্ষম।
✪ মানুষ যখন রাগান্বিত অবস্থায়,তখন তাকে কোনভাবে বিরক্ত করা উচিত নয় । কেননা তা থেকে চরম ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে।
✪ মানুষের গুণ নিয়ে প্রতিযোগিতা করুন দোষ নিয়ে নয়।
✪ যা আপনাকে পীড়া দেয়, এমন বিষয় নিয়ে এক মিনিটের বেশি ভাববেন না।
✪ যিনি নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন তিনিই সফলতা লাভ করেছেন।
✪ যে অবস্হায়ই পড়ুন না কেন- অবস্থার ভালো মন্দ না দেখে বিচার করা উচিত নয়।
✪ যে স্ত্রীরা স্বামীকে সুখী করতে পারেন, তারা নিজেরাও তারি সঙ্গে সুখী হন। তারা অতি সহজেই বলতে পারেন যে স্বামীর সহযোগিতায় আমাদের জীবন কানায় কানায় পূর্ণ।
✪ সব সময়-ই অপর ব্যাক্তিকে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধি করার সুযোগ দিন
✪ সাফল্য হল আপনি যা চান তা হাসিল করা। আনন্দ হল আপনি যা চান তা পাওয়া।
✪ অনুকরণ নয়, অনুসরণ নয়, নিজেকে খুঁজুন, নিজেকে জানুন, নিজের পথে চলুন।
✪ মন্দ সহচর্যের চেয়ে নিঃসঙ্গতা অনেক ভালো।
✪ সবসময় হাসতে হবে। হাসির মাধ্যমে আমরা জীবনের অনেক সমস্যাকেই দূর আকাশে পাঠাতে পারি।

বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৭

সুলতান সুলেমান টিভি সিরিজ একজন মুসলমান ন্যায় পরায়ন শাসকের বিরুদ্ধে কাফিরদের ইতিহাস বিকৃতি---

বাংলাদেশে একটি টিভি চ্যানেলে তুরস্কের ইতিহাসে সবছেয়ে শক্তিশালী এবং ধার্মিক শাসক সুলতান সুলেমানের ইতিহাসকে নোংরা এবং বিকৃতভাবে দেখানো হচ্ছে যা নিয়ে খোদ তুরস্কে প্রতিবাদ চলছে।
অবশ্য এমন ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। কারন ইতিহাস সাক্ষী দেয় কাফির মুশরিকেরা মুসলিম ন্যায়পরায়ন শাসকদের বিরুদ্ধে যুগ যুগ ধরেই ইতিহাস বিকৃত করেছে।কারন যত মুসলমান ন্যায়পরায়ন শাসক ছিলেন তাদের আমলে কাফিরেরা নিজেদের ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সুলতান সুলেমানের কাছে খৃষ্টানদের পরাজয় এবং ইউরোপে ইসলাম সালতানাতের বিস্তার আজো কাফিরদের রিদয় পোড়ায়।https://goo.gl/19qoEn যার কারনে কাফির-মুশরিকেরা একজন ধার্মিক , ন্যায়পরায়ন শাসককে নারী লোভী আর অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করেছে।

বাস্তবে বা ইতিহাসের সুলেমান-১ হেরেমের নায়ক নন। ইতিহাসের কালজয়ী এক মহানায়ক। প্রথম সুলেমান অটোমান বা তুর্কি খলিফাদের মধ্যে সেই বিরল ব্যক্তিত্ব, যিনি একটানা ৪৬ বছর (১৫২০-১৫৬৬) সাম্রাজ্য শাসন করেছেন। তিনি সময় মেপে পথ চলেননি, সময় যেন তাকে অনুসরণ করেছে। ইউরোপীয় ইতিহাসবেত্তারা তাকে ‘গ্রেট’ এবং ‘ম্যাগনিফিসেন্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা মিলিয়ে অটোমান সাম্রাজ্যের তখনকার বিস্তৃতি ছিল তিন মহাদেশের বিরাট অংশজুড়ে।
সুলেমান-১ জন্ম নিয়েছিলেন ১৪৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল।তার নেতৃত্বের যোগ্যতা, সততা, বুদ্ধি, জ্ঞান ও প্রতিভার গুণে মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুলেমান গভর্নর নিযুক্ত হন। পিতা সুলতান সেলিম-১ মারা গেলে সুলেমান ১৫২০ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে সর্বসম্মতভাবে অটোমান সাম্রাজ্যের খলিফা বা সুলতান মনোনীত হন। 
সুলেমানের খলিফা বা সুলতান হওয়ার বিষয়টি কিংবদন্তি হয়ে আছে। তার নামের প্রস্তাব আসে সাধারণ মানুষ, অমাত্য এবং সব ‘পাশা’র কাছ থেকে। সে সময় একজন লোকও খুঁজে পাওয়া যায়নি- যিনি তার নামে প্রস্তাব আসার পর দ্বিমত পোষণ করেছেন। পৃথিবীর কম শাসকই এতটা বিতর্কহীন ও সর্বসম্মতভাবে মনোনীত হতে পেরেছেন।
সুলেমান একজন প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, দৃঢ়চেতা, আত্মপ্রত্যয়ী ও ধার্মিক মানুষ। তিনি কখনো তার কমান্ড নষ্ট হতে দিতেন না। সুলতান সুলেমান তার জনগণের কাছ থেকে বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য পাওয়ার ব্যাপারে দ্বিধাহীন ছিলেন। সুলতান এতটাই ধীমান ছিলেন, তার প্রতিটি বক্তব্য হতো শিক্ষণীয় ও নির্দেশনামূলক। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভাবতেন; শৈথিল্য মানতেন না। ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে এবং ক্রান্তিকালে কখনো ধৈর্য হারাতেন না।
ইতিহাসে সুলেমান আইনপ্রণেতা বা ‘কানুনি’ হিসেবে বিশেষভাবে ছিলেন পরিচিত। সুলেমানের আইন গবেষণার ফসল তিন শ’ বছর ধরে কার্যকর ছিল। ইউরোপও এর মাধ্যমে লাভবান হয়েছে। তিনি ছিলেন অটোমান সাম্রাজ্যের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল সৎ এবং সাহসী শাসক। সেটা ছিল সাম্রাজ্যের সোনালি যুগ, তখন সৌভাগ্যের সূর্য ছিল মধ্যগগনে। কখনো তার বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতা ও প্রজা নিপীড়নের কোনো অভিযোগ ওঠেনি।
 ইসলাম নিয়ে সুলতান সুলেমানের কবিতা বিশ্বের উৎকৃষ্ট কবিতাগুলোর কাতারে স্থান পেয়েছে। সুলেমান তার পরামর্শকদের মধ্যে শিল্পী, চিন্তাবিদ, ধর্মবেত্তা ও দার্শনিকদের বেশি ঠাঁই দিয়েছিলেন এবং তাদের কদর করতেন। এ কারণে ইউরোপের তুলনায় তার বিচারব্যবস্থা, আদালত ও শাসনব্যবস্থা ছিল অনেক বেশি উন্নত, নিরপেক্ষ, মানবিক, ন্যায়ানুগ এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। সুলতান মিথ্যা বলা পছন্দ করতেন না। কর্তব্যে অবহেলা মেনে নিতেন না, বাহুল্য কথা বর্জন করতেন, হালাল হারাম মেনে চলতেন। 
তার নির্দেশনা ও বক্তব্য হতো নীতিবাক্যের মতো। সহজেই শত্রু-মিত্র চিনতে পারতেন। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার ব্যাপারে সুলতান এতটাই আমানতদার ছিলেন যে, তার ওপর নির্ভরতায় কারো কোনো সন্দেহ ছিল না। কিন্তু দৃঢ়তা ও ব্যক্তিত্বের ছাপ কখনো ম্লান হতো না। অপরাধী কোনোভাবেই পেত না প্রশ্রয়।পুরো ইউরোপ সুলতান সুলেমানকে সমীহ করে চলত। আমাদের পূর্বপুরুষেরা শ্রদ্ধাভরে তার আনুগত্য করাকে দায়িত্ব ভেবেছেন। সেই দিনগুলোতে অটোমান সাম্রাজ্যের শাসকেরা ধর্মীয় নেতা এবং উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতেন। 
১৫৬৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ৭১ বছর বয়সে সুলতান সুলেমান অভিযানে থাকা অবস্থায় হাঙ্গেরির সিগেতভার শহরে নিজ তাঁবুতে ইন্তেকাল করেন। তার এই মৃত্যু ছিল স্বাভাবিক এবং বার্ধক্যজনিত। তাকে দাফন করা হয়েছিল অটোমান তুর্কি সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল বা আজকের ইস্তাম্বুলে। তার সমাধিস্থলেই বিখ্যাত সুলেমানি মসজিদ নির্মিত হয়েছে।

অথচ আজ এমন একজন মহান ব্যক্তিত্বের বিপক্ষে খোদ মুসলিম এই দেশে সিরিয়াল চলছে। জাতি যখন ইতিহাস বিমুখ হয়ে, নিজ জাতির অবমাননা সহ্য করে নেয় সেই জাতির জন্যই বড়ই আফসোস।ইতিহাস জানুন, নিজেকে চিনুন। প্রতিবাদ যানান এহেন অপকর্মের।

ইসলাম বিদ্বেষী কাজে ফান্ড দেয় কারা ?

৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রতিনিয়ত ব্যয় হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকান্ডের জন্যে এবং টাকার বিনিময়ে নাস্তিকতা নামে ইসলাম বিদ্বেষী ভারাটে সন্ত্রাসী তৈরী করা হয়েছে।
Center For American Progress সংগঠনটি গত ছয় মাস ধরে আমেরিকায় ইনভেস্টিগেশন চালায়। তারা Fear, Inc. The Roots of the Islamophobia Network in America শিরোনামে ১৩৮ পৃষ্ঠাব্যাপী ওদের রিপোর্ট প্রকাশ করে। ওদের রিপোর্ট মতে আমেরিকায় অনেকগুলো সংগঠন মিলে গত দশ বছরে প্রায় ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যায় করে মুসলিম ও ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকান্ডের জন্যে।
সংগঠন গুলো হলো :
* Donors Capital Fund
* Richard Mellon Scaife foundations
* Lynde and Harry Bradley Foundation
* Newton D. & Rochelle F. Becker foundations and charitable trust
* Russell Berrie Foundation
* Anchorage Charitable Fund and William Rosenwald Family Fund
* Fairbrook Foundation
এই টাকা গুলো ব্যয় কারা হয় ইসলাম বিদ্বেষী বই , আর্টিকল, ম্যাগজিন, ওয়েব সাইট ও ব্লগ লিখালেখির জন্যে। এদের শীর্ষে আছেন এটলাস সার্গ ব্লগের লেখিকা পাম গেলার, জিহাদ ওয়াচ সাইটের রবার্ট স্পেন্চার, মিডল ইস্ট ফোরামের ডেনিয়েল পাইপ, টেরোরিসম ইনভেস্টিগেট সাইটের স্টিভ এরসন সহ আরো সো কলড এক্সপার্ট যাদের ফক্স নিউজে সবসময় দেখা যায়।এদের ফান্ডিং এবং প্রোপাগান্ডা এতই বিশাল যে এদের তত্বাবোধানে ইন্টারনেটে হাজার হাজার ওয়েবসাইট, ব্লগ, আর্টিকল ও বই লিখে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারোনা চালায়। এরা রাইট উইং কনজারভেটিভ ইহুদী জায়োনিস্ট এবং খ্রিষ্টান এভেন্জালিস্ট। এজন্যেই আপনি দেখবেন যে , ইন্টারনেটে ইসলাম/মুসলিম বিরুধী ম্যাটেরিয়াল অনেক বিশাল।
এদের সাথে বিভিন্ন মিটিংয়ে ও কর্মকান্ডে যোগ দেয় সো কলড মুসলিম নামধারী লোকজন ডলারের লোভে। বলতে থাকেন উনারা আগে মুসলিম ছিলেন বা মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েছেন এবং দেখেছেন ইসলাম কত্তো খারাপ!!! নাউযুবিল্লাহ (১৩০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট)
Center For American Progress এর রিপোর্ট অনুযায়ী,ইসলামের বিরুদ্ধে conspiracy ছাড়াও, একটি শক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে যারা পুরো আমেরিকার মানুষের কাছে পৌছানোর ক্ষমতা রাখে,কিছু influential মানুষের মাধ্যমে,মিডিয়া পার্টনার এবং রুট লেভেলের কিছু সংস্থার মাধ্যমে।তাদের কাজ ছিল ভুল তথ্য প্রদান করা,মিস গাইড করা মুসলিমদের এবং Give a rise to Islamophobia।এই ভুল তথ্য প্রদান করা,মিস গাইড শুরু হয় ৫জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং তাদের সংস্থার মাধ্যমে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে খাছ সুন্নত অল্প বয়সে বিবাহের বিরুদ্ধাচরন করা অপপ্রচার মাত্র।

মুসলিম সমাজে অশ্লীলতা ,বেহায়াপনা,নোংরামী , অনৈতিকতা ছড়িয়ে দেওয়াই যার মুল লক্ষ্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অল্প বয়সে বিবাহ ক্ষতিকর নয় ,বরং উপকারী। 
অল্প বয়সে বিবাহ ব্যাপারে পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষ এখন যেন দায়ভার ইসলামের উপর চাপিয়ে দেবার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আর এই অসুস্থ প্রচারণার শিকার হয়ে আজ এমনকি মুসলিমরাও এর বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেছে অথবা নানাভাবে একে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছে।নাউযুবিল্লাহ। আধুনিক বিজ্ঞান এবং মেডিক্যাল সাইন্স এবং আজকে থেকে হাজার বছর পরের বিজ্ঞান ও মেডিক্যাল সাইন্স একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনিই জানেন। সুতরাং মহান আল্লাহ পাক যেটা হালাল করেছেন, সেটা উনার অসীম ইলমে গইব থেকেই হালাল করেছেন এবং মহান আল্লাহ পাক যেটা হারাম করেছেন সেটা উনার অসীম ইলমে গইব থেকেই হারাম করেছেন।
সম্মানিত ইসলামে চিকিৎসা নেয়ার ব্যাপারে কোন বাধা-নিষেধ নেই ।চিকিৎসা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে অল্প বয়সে বিবাহ এর বিরুদ্ধে বলা অপপ্রচার মাত্র। 
সাধারনত মেয়েদের প্রাপ্তবয়স্কতা প্রকাশ পায় ৮ বছর বয়সে আর ছেলেদের ৯.৫ বছর বয়সে ইহা মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৩ আর ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৩.৫ ও হতে পারে। তাহলে দেখা যাচ্ছে এই বয়সেই একটি ছেলে বা মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহনে ভুমিকা রাখতে পারে ।
এবার আসা যাক বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে বলা সকল মেডিক্যাল সমস্যাগুলোর ব্যাপারে।
১. অল্প বয়সে গর্ভধারণ বিষয়ক প্রধান যে সমস্যাগুলো সম্পর্কে বলা হয় তা হলো- রক্ত স্বল্পতা, অধিক সময় ধরে ডেলিভারী, ইঊটেরাস বা গর্ভাশয় ফেটে যাওয়া, গর্ভে বাচ্চার ডিস্ট্রেস ইত্যাদি। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই সকল গর্ভজনিত কমপ্লিকেশন বা সমস্যা যে শুধু অল্পবয়সী মায়ের ক্ষেত্রেই হবে তা নয়, বরং এগুলো যে কোন বয়সের মায়েদেরই হতে পারে এবং এমন কোন কমপ্লিকেশন নেই যা কেবল অল্পবয়সী মায়েদেরই হয়।যারা এসকল দোহাই দিয়ে অল্প বয়সে বিবাহের বিরুদ্ধ বলা , চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে তাদের অজ্ঞতাই প্রমান পায়। 
 ২. মেডিক্যাল সাইন্সের অবসট্রেটিকস বা ধাত্রীবিদ্যায় প্রায় সবকটি রোগের প্রথম ভুক্তভোগীর নাম হলো 'এলডারলি প্রাইমি' বা 'বেশী বয়সে প্রথম গর্ভধারণ'। এমনকি আমাদের দেশে (যে দেশ সম্বন্ধে অমুসলিমরা বলে থাকে যে বাল্য বিবাহের হার অনেক বেশী) হাসপাতালগুলোতেও গর্ভজনিত রোগের প্রধান ভুক্তভোগীরা হলো এলডারলি প্রাইমি বা বেশী বয়সে প্রথম বাচ্চা নেয়া মা। তবে, কম বা বেশী বয়সী মা যাই হোকনা কেন, সকল রোগই এখন চিকিৎসা যোগ্য। বয়স কম হোক কিংবা বেশি সঠিক পুষ্টিমান আর যত্ন নিরাপদ প্রসবের অন্যতম শর্ত । এখন কেউ যদি এ শর্ত মেনে না চলার কারনে কোন সমস্যা হয় তাহলে তার দায় একান্ত তার, অল্প বয়সে বিয়ের উপর নয়। 
৩. আরেকটি ব্যাপার হলো এই যে, মেডিক্যাল সাইন্সেই অল্পবয়সে গর্ভধারণ নারীর অনেক জটিল রোগের কার্যকর প্রতিরোধোক বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন- জরায়ুর টিউমার ও ক্যান্সার, ব্রেস্ট টিউমার, হরমোনাল অনেক সমস্যা, ঋতুজনিত সমস্যা ইত্যাদি।
৪. অল্প বয়সে বিয়ে হলে মানষিক সমস্যার কথা বলে অল্প বয়সে বিবাহের অপপ্রচারকারীরা। অথচ গবেষনায় এসেছে অল্প বয়সে বিয়ের মানষিক দিকগত সুবিধা অনেক । যেমন- 
 ক. সার্থক দম্পত্তি হনঃ একে অন্যকে জানার সুযোগ পায়, পরষ্পরের প্রতি মুহব্বত বৃদ্ধি পায় , সহনশীল হন
খ. পারষ্পরিক সহযোগীতা করার মনোভাব বৃদ্ধি পায়ঃ এরা সক্রিয় এবং একে অন্যকে সহযোগিতা করার প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। 
গ.একসাথে অনেক বছর জীবন কাটানোর সুযোগ পায়।
ঘ.মানষিক সক্ষমতা বৃদ্ধি- আহাল রুজির জন্য বাহিরে যান এবং আহলিয়া সংসার ও বাচ্ছাদের দেখভাল করেন। ফলে এ দম্পত্তি তাদের সন্তানদের যথেষ্ট সময় দিতে পারেন এবং সন্তানদের পিছনে সময় দেয়ার যে শক্তি প্রয়োজন তা পুরন করতে পারেন। 
ঙ. সন্তান জন্মদানে বেশি সক্ষম থাকে । 
৫. কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে ফিস্টুলা হওয়ার দোহাই দেয় অল্প বয়সে বিবাহের অপপ্রচারকারীরা। অথচ কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে ফিস্টুলা হওয়ার কারণ নয়। ফিস্টুলা হল দুই বা তার অধিক আবরণী স্তরের মধ্যে অস্বাভাবিক যোগাযোগ।প্রধান কারণ হল-বাচ্চা প্রসবের সময় যদি বাধা পায় যাকে obstructed (বাধাগ্রস্থ) labour বলে। ফিস্টুলা হওয়ার সাথে বয়সের কোন সম্পর্ক নেই। মেয়েদের বিভিন্ন আকার আকৃতির পেলভিস দেখা যায়। কিছু পেলভিস আছে যেখানে Obstructed labour হয়। বাংলাদেশে ফিস্টুলা কেন বেশি হয়?
১. বাচ্চা পেটে থাকার সময় যত্ন না নেয়া ২. জন্মের সময় যত্ন না নেয়া ৩. জন্মের পর থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত যত্ন না নেয়া ৪. চিকিৎসকদের অদক্ষতা ৫. অপারেশনের সময় যত্ন না নেওয়া (Ref-prof.Nurjahan/5th/106) এখানেও বয়সের সাথে বিন্দুমাত্র কোন সম্পর্ক নেই। যারা ফিস্টুলা ক্ষেত্রে কম বয়সে বাচ্চা নেয়া কে দায়ী করে তাদের কথার কোন ভিত্তি নেই।

অর্থাৎ অল্প বয়সে বিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ক্ষতিকর তো নয়-ই , বরং অনেক উপকারী। 
দুঃখজনক হলেও সত্যি, আজ যারা অল্প বয়সে বিয়ের ধোঁয়া তুলে সম্মানিত ইসলাম উনার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডায় নেমেছে, তারাই সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে শিশু পর্নোগ্রাফির মতো সাঙ্ঘাতিক অনৈতিকতা। এদের মুখের মিষ্টি কথা দিয়ে এরা নিজেদের শিশুদের মহান রক্ষক হিসাবে তুলে ধরে, অথচ এরাই আজ বাঝে জায়গায় গিয়ে গিয়ে শিশু নির্যাতন করে।নিজ ঘরে গিয়ে এরা দেখে তার ছোট্ট শিশু সন্তানটি বল্গাহীন জীবন-যাপন করছে ।বাল্য বিবাহ বিরোধী সমাজে আজ আর পারিবারিক বন্ধন বলে কিছু নেই। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে আর বিশ্বাস নেই, সন্তানেরা বাবা-মাকে মানেনা আর বাবা-মাও সমাজ ও তাদের নিজেদের তৈরী করা আইনের ফাঁদে পড়ে সন্তানদের কিছু বলতে ভয় পায়। যে চিত্রটি পাশ্চাত্য সমাজে মহামারী আকারে দেখা যায়। বাল্য বিবাহ বিরোধীরা তা-ই চায় যাতে মুসলিম সমাজ ও পাশ্চাত্যের মত অনৈতিকতায় ডুবে যাক। মুসলিম বিশ্বকে কাফিরদের বাল্য বিবাহ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন হয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে এদের বিষদাত সমুলে উপড়ে ফেলতে হবে।

কাউকে হত্যা করার শাস্তি যদি মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহলে শত শত প্রানহরনকারী ভারতীয় চ্যানেল বাংলাদেশ নিষিদ্ধ করা হচ্ছেনা কেন?

ভারতীয় বস্তাপচা সিরিয়ালে উদ্ভট সব কাহিনী দেখানো হয়॥ সিরিয়ালে যে সব দৃশ্য সচরাচর দেখতে পাওয়া তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-অসম প্রেম, স্বামী-স্ত্রীর পরকীয়া, পারিবারিক ভাঙ্গন, বহু বিবাহ, বউ-শ্বাশুড়ীর ঝগড়া, সম্পত্তির কারণে ভাই-ভাই ঝগড়া, স্ত্রীর কূটনৈতিক চাল, ভুল বোঝাবুঝি, হিংসা, সন্দেহ, অশ্লীলতা, আত্মীয়দের ছোট করা, অন্যকে বিপদে ফেলা।
যার কুপ্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। শুধুমাত্র কিরণমালা আর পাখি ড্রেস এর জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশে বহু প্রান অকালে হারিয়ে যায়। 
১. কিরণমালা জামা কিনে না দেওয়ায় গৃহবধূর আত্বহত্যা - https://goo.gl/XHn2KS
২. স্টার জলসা দেখতে না দেয়ায় অভিমানী কিশোরীর আত্বহত্যা ।https://goo.gl/chRixt
৩. ‘কিরণমালা’ দেখতে না পেরে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা https://goo.gl/oE7xNp
৪. 'কিরণমালা' দেখা নিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা! https://goo.gl/Qgy4zb
৫. পাখির জন্য আত্বহত্যা ১০ , কিরণমালায় ৩ https://goo.gl/rqoMtE
৬. পাখি ড্রেস পড়ে ঈদে ঘুরতে না পেরে আত্বহত্যার চেষ্টা https://goo.gl/9jnCW5
৭. এনায়েতপুরে পাখি জামা না পেয়ে আত্বহত্যা https://goo.gl/F2nYcq
৮. পাখি জামার পর এবার কিরণমালার জামার জন্য আত্বহত্যা https://goo.gl/X5Q9pL
৯. কপালে জুটলো না কিরণমালা, তাই যুবতী শেষমেষ বেছে নিল মৃত্যু https://goo.gl/Ir7Jow
১০. কিরণমালার জন্য কিশোরীর গলায় ফাঁস
১১. ‘কিরণমালা’ দেখতে না দেয়ায় শিশুর আত্মহত্যা https://goo.gl/eMzgOP

দেখা যাচ্ছে ভারতীয় অশ্লীল, নগ্ন সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে বাংলাদেশের সমাজ ভয়াবহ ক্ষতির সামনে। অথচ এত ভয়াবহ অবস্থা হবার পরেও সরকার নির্বিকার!
কেউ যখন কাউকে হত্যা করে তখন তা প্রমাণিত হলে কোর্ট তাকে ফাসি দেয়। তাহলে ভারতীয় অশ্লীল অশালীন চ্যানেলের কারণে যে বাংলাদেশে শত শত প্রান যাচ্ছে তার জন্য কেন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা ?
অবিলম্বে ভারতীয় সকল চ্যানেল বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।

যে ভারতীয় চ্যানেলে মুসলমান শাসকদের ভিলেন হিসেবে দেখানো হয় তা মুসলিম এই দেশে প্রচারিত হয় কি করে ?


হিন্দি সিরিয়াল প্রযোজকরা যেসব সিরিয়াল তৈরি করে, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ঐতিহাসিক তথা মিথ্যা ইতিহাসে ভরপুর কিছু সাম্প্রদায়িক নাটক। এ ভারতবর্ষে ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল পৃথ্বীরাজ, শিবাজী, মারাঠা, রাজপুতরা। তারা হলো হিন্দুদের নায়ক। তাদের নামানুসারে তারা পৃথ্বিরাজ, চৌহান, ছত্রপতি শিবাজী, মারাঠা দ্যা গ্রেট- এ ধরনের টাইটেলধারী টিভি সিরিয়াল তৈরি করে। সে সবের নায়ক যদি পৃথ্বিরাজ শিবাজীর ন্যায় চরিত্ররা হয়, খলনায়ক তথা ভিলেনটা কে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
একসময় প্রচারিত স্টার প্লাস এ "পৃথ্বীরাজ চৌহান" সিরিয়ালেরৃ ভিলেন হিসেবে দাঁড় করানো
হয়েছে মুসলিম বীর খোদ শিহাবুদ্দীন ঘোরি কে! “ছত্রপতি শিবাজী” সিরিয়ালে ভিলেন হিসাবে দেখানো হয়েছে বুযূর্গ ওলী এবং গোটা ভারতের বাদশাহ হযরত আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহিকে। হিন্দুরা তাদের জন্ম থেকে উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে আসছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ভারতের ইতিহাসে বিশেষত মুঘল ভারতের ইতিহাসে শিবাজী একজন ধূর্ত, শঠ, বিশ্বাস ভঙ্গকারী, চতুর সন্ত্রাসী মারাঠা আঞ্চলিক নেতা হিসাবে খ্যাত। তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল ন্যায়পরায়ণ মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে। 
“শিবাজির দস্যুতার দাপট ও ক্রুরতার হিংস্র প্রকাশ উপমহাদেশেরই এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলেও কি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল, তার চিত্র মেলে মারঠী বর্গিয় লুণ্ঠন বৃত্তিতে।” (তথ্যসূত্রঃ মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ সংস্কৃতির রূপান্তর, পৃষ্ঠা ৩৭)॥
মুসলমানদের ঘরে যেসব শিশুরা আছে, তারা যদি এসব দেখে, শিশুদের কথা বাদই দিলাম, মুসলমানরাই যেখানে ইতিহাস জানে না, সেখানে এসব দেখে তারা কি শিখবে? তারা তাদের অস্তিত্বের শত্রুকে ভালোবাসতে শিখবে। নাঊযুবিল্লাহ! 
বিপরীতে তারা যাদের কারণে মুসলমান হতে পেরেছে, উনাদের ঘৃণা করবে। এটাই হিন্দুত্ববাদীদের কাম্য। কারণ তারা চায়, কোনো মুসলমান যেন ভারতবর্ষের মাটিতে টিকে না থাকে। যদি মুসলমানদেরকে তাদের মূল থেকে বিচ্যুত করা যায়, তাহলে তাদের এ উদ্দেশ্য সাধন করাটা কঠিন কিছু হবে না। এখন মুসলমানদেরকেই ঠিক করতে হবে যে, তারা কি মুসলমান হিসেবে টিকে থাকবে, না স্পেনের মুসলমানদের ন্যায় ধ্বংস হয়ে যাবে।

ভারতীয় টিভি চ্যানেল দেখে আপনার সন্তান হিন্দুপ্রীতি আর ইসলামবিদ্বেষিতাই শিখছে !!!



অর্ধনগ্ন ও অশ্লীল বিজ্ঞাপনে ভরপুর ভারতের টিভি চ্যানেলসমুহ হিন্দু প্রধান দেশের হওয়ায় এর মূল বিষয়বস্তু হলো হিন্দুদের ধর্মীয় কালচার। সঙ্গে যোগ হয়েছে আধুনিক যুগের অসুস্থ সেকুলার ধ্যান-ধারণা। অপরদিকে কাগজে-কলমে হলেও বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। হিন্দি সিরিয়াল যাই প্রচার করুক না কেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো হিন্দুত্ববাদী চেতনাকে হিন্দু তো বটেই, মুসলমানদের মন ও মস্তিস্কে গ্রথিত করা। হিন্দি ও বাংলা সিরিয়ালগুলো শুরু হয় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোসহ ব্যাকগ্রাউন্ডে হিন্দু শ্লোক বা ধর্মসংগীত দিয়ে। আবহসঙ্গীতে থাকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, মন্দিরের ঘণ্টা, ঢোলবাদ্য, পূজার সঙ্গীত ইত্যাদি। আনুমানিক ২০-২৫ মিনিটের একটি কাহিনীবিহীন সিরিয়ালে অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট বিভিন্ন ধরনের পূজা-অর্চনার ‘আকর্ষণীয়’ কর্মকাণ্ডসহ হরেকরকম মূর্তির চেহারার সামনে ক্যামেরা ধরে থাকে।
শিশুদের উপর পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, শিশুরা টিভিতে যা দেখে তাই সত্য বলে মনে করে। হিন্দু ধর্মগ্রন্থের বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে তৈরি শিশুতোষ কার্টুন, এনিমেশন এবং সিরিয়ালগুলো থেকে একটি মুসলিম পরিবারের শিশু কি শিখতে পারে, সেটা বোধহয় আর বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নাই।
ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে পরিবেশিত অনুষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছে হিন্দুত্ববাদ প্রচার ও প্রসারের মাধ্যম, তথা মুসলিমবিদ্বেষী প্রচারযন্ত্রের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।মুসলিম শিশুদের অন্তরে শিরক ও কুফর বীজ বপনে এই অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে এক একটা মাস্টারপিস।
আর এখনকার ‘মুসলিম’ বাবা-মায়েরা নিস্পাপ সন্তানের জীবনটাই শুরু করে এইসব ঈমান ধ্বংসকারী অনুষ্ঠান দেখিয়ে! কার্টুন দিলে আপনার শিশুটি শান্ত হয়ে থাকছে, তাকে খাওয়ানো যাচ্ছে, আপনাকে অযথা বিরক্ত করছে না, কান্নাকাটি করছে না, ইত্যাদি। বিষয়টিকে ‘মুসলিম’ বাবা-মা তেমন পাত্তা না দিলেও, এই অনুষ্ঠানগুলো মূলত আমাদের কোমলমতি সন্তানদের ঈমান ধ্বংস করছে। দিনের পর দিন এইসব বিষাক্ত মতবাদ আমাদের অনুভুতিকে অবশ করে ফেলছে। এর ফলে, এসব অনুষ্ঠানে দেখানো শিরকগুলো আমাদের কাছে সাধারন মনে হচ্ছে; বরং মূর্তিপূজার প্রতি, শিরকের প্রতি মুসলমানদের যে সহজাত ঘৃণা থাকা উচিত, তা এখন উধাও হয়ে গিয়েছে! 
হিন্দু ধর্মের অনেক কিছুই মুসলমানরা অজ্ঞতাবশত নিজেদের মধ্যে আত্মীকরণ করে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমাদের চলনে-বলনে, আচার-আচরনে, উৎসব-অনুষ্ঠানে হিন্দুধর্মের প্রভাব দিন দিন প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। একজন মা তার সন্তানের সবচেয়ে প্রথম শিক্ষক। দুঃখের বিষয়, সেই মায়ের সাথে তাদের শিশুরা এসব দেখছে এবং মা ও সন্তান উভয়ই অনুকরণ করছে।আর শিখছে ইসলামবিদ্বেষীতা। 
হে মুসলিম বাবা-মা, একদিন জবাবদিহির জন্য মহান আল্লাহতালার সামনে আমাদের সবাইকে দাঁড়াতে হবে! আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম বাবা-মায়েদের সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করুন, দ্বীনের পথে থেকে নিজ সন্তানদের দ্বীনের পথে রাখার তৌফিক দান করুন।