অর্ধনগ্ন ও অশ্লীল বিজ্ঞাপনে ভরপুর ভারতের টিভি চ্যানেলসমুহ হিন্দু প্রধান দেশের হওয়ায় এর মূল বিষয়বস্তু হলো হিন্দুদের ধর্মীয় কালচার। সঙ্গে যোগ হয়েছে আধুনিক যুগের অসুস্থ সেকুলার ধ্যান-ধারণা। অপরদিকে কাগজে-কলমে হলেও বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। হিন্দি সিরিয়াল যাই প্রচার করুক না কেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো হিন্দুত্ববাদী চেতনাকে হিন্দু তো বটেই, মুসলমানদের মন ও মস্তিস্কে গ্রথিত করা। হিন্দি ও বাংলা সিরিয়ালগুলো শুরু হয় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোসহ ব্যাকগ্রাউন্ডে হিন্দু শ্লোক বা ধর্মসংগীত দিয়ে। আবহসঙ্গীতে থাকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, মন্দিরের ঘণ্টা, ঢোলবাদ্য, পূজার সঙ্গীত ইত্যাদি। আনুমানিক ২০-২৫ মিনিটের একটি কাহিনীবিহীন সিরিয়ালে অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট বিভিন্ন ধরনের পূজা-অর্চনার ‘আকর্ষণীয়’ কর্মকাণ্ডসহ হরেকরকম মূর্তির চেহারার সামনে ক্যামেরা ধরে থাকে।
শিশুদের উপর পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, শিশুরা টিভিতে যা দেখে তাই সত্য বলে মনে করে। হিন্দু ধর্মগ্রন্থের বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে তৈরি শিশুতোষ কার্টুন, এনিমেশন এবং সিরিয়ালগুলো থেকে একটি মুসলিম পরিবারের শিশু কি শিখতে পারে, সেটা বোধহয় আর বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নাই।
ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে পরিবেশিত অনুষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছে হিন্দুত্ববাদ প্রচার ও প্রসারের মাধ্যম, তথা মুসলিমবিদ্বেষী প্রচারযন্ত্রের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।মুসলিম শিশুদের অন্তরে শিরক ও কুফর বীজ বপনে এই অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে এক একটা মাস্টারপিস।
আর এখনকার ‘মুসলিম’ বাবা-মায়েরা নিস্পাপ সন্তানের জীবনটাই শুরু করে এইসব ঈমান ধ্বংসকারী অনুষ্ঠান দেখিয়ে! কার্টুন দিলে আপনার শিশুটি শান্ত হয়ে থাকছে, তাকে খাওয়ানো যাচ্ছে, আপনাকে অযথা বিরক্ত করছে না, কান্নাকাটি করছে না, ইত্যাদি। বিষয়টিকে ‘মুসলিম’ বাবা-মা তেমন পাত্তা না দিলেও, এই অনুষ্ঠানগুলো মূলত আমাদের কোমলমতি সন্তানদের ঈমান ধ্বংস করছে। দিনের পর দিন এইসব বিষাক্ত মতবাদ আমাদের অনুভুতিকে অবশ করে ফেলছে। এর ফলে, এসব অনুষ্ঠানে দেখানো শিরকগুলো আমাদের কাছে সাধারন মনে হচ্ছে; বরং মূর্তিপূজার প্রতি, শিরকের প্রতি মুসলমানদের যে সহজাত ঘৃণা থাকা উচিত, তা এখন উধাও হয়ে গিয়েছে!
হিন্দু ধর্মের অনেক কিছুই মুসলমানরা অজ্ঞতাবশত নিজেদের মধ্যে আত্মীকরণ করে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমাদের চলনে-বলনে, আচার-আচরনে, উৎসব-অনুষ্ঠানে হিন্দুধর্মের প্রভাব দিন দিন প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। একজন মা তার সন্তানের সবচেয়ে প্রথম শিক্ষক। দুঃখের বিষয়, সেই মায়ের সাথে তাদের শিশুরা এসব দেখছে এবং মা ও সন্তান উভয়ই অনুকরণ করছে।আর শিখছে ইসলামবিদ্বেষীতা।
হে মুসলিম বাবা-মা, একদিন জবাবদিহির জন্য মহান আল্লাহতালার সামনে আমাদের সবাইকে দাঁড়াতে হবে! আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম বাবা-মায়েদের সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করুন, দ্বীনের পথে থেকে নিজ সন্তানদের দ্বীনের পথে রাখার তৌফিক দান করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন