রবিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৬

পাঠ্যবইয়ে কী শিখছে শিশুরা : দুইজনের সম্মতিতে যৌন অনুভূতি প্রকাশ দোষের নয়!


অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণকৃত ‘নিজেকে জানো’ বইয়ে লেখা হয়েছে-
১. "একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব দোষের কিছু নয়। একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে ভালো লাগার পরের পর্যায়ে যৌন অনুভূতি এমনকি যৌন আকর্ষণও সৃষ্টি হতে পারে। এ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বিভিন্নভাবে ঘটতে পারে, যেমন- চিঠি লিখে, দেখা করে, হাত ধরে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরেকটু কাছাকাছি এসে। যৌন অনুভূতি প্রকাশ করা দোষের কিছু নয়, তবে সেটি হতে হবে দুইজনের সম্মতিতে, মার্জিত ও শালীনভাবে।"
নিজেকে জানো বইটিতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ, প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠা, পরস্পরকে ভালো লাগা বা প্রেমের অনুভূতি প্রকাশের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে প্রথমে। এরপর ভালো লাগা পরের পর্যায় থেকে পরস্পরের প্রতি যে যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

২. এ অধ্যায়ের আরেকটি শিরোনাম ‘বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়ে পরস্পরকে এত পছন্দ করে কেন’? এখানে লেখা হয়েছে বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের সব পরিবর্তনের মূলে রয়েছে এক ধরনের রসায়ন বা হরমোন। এ হরমোনের প্রভাবেই ছেলে ও মেয়ে পরস্পরকে জানতে কৌতূহলী হয়ে ওঠে। যেহেতু এটি একটি নতুন অনুভূতি এই পর্যায়ে তোমাদের কেউ কেউ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্টও হতে পারো। বন্ধুদের মধ্যে কোনো একজনকে খুব ভালো লাগতে পারে এবং তার কাছাকাছি হতে ইচ্ছে করতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে কিছু সময় নিয়ে নিজের এই অনুভূতিকে বুঝে নেয়াটাই ভালো।
এ অধ্যায়ে আরো লেখা হয়েছে ছেলে ও মেয়েরা এ বয়স থেকে একে অন্যের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। এ ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক। ছেলেরা চায় মেয়েদের আকর্ষণ করতে আর মেয়েরা চায় ছেলেদের। এ বয়সে ছেলেমেয়েদের নিজেকে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।

৩. এ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বিভিন্নভাবে ঘটতে পারে, যেমন-চিঠি লিখে, দেখা করে, হাত ধরে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরেকটু কাছাকাছি এসে। যৌন অনুভূতি প্রকাশ করা দোষের কিছু নয়, তবে সেটি হতে হবে দুইজনের সম্মতিতে, মার্জিত ও শালীনভাবে। সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌন অনুভূতিকে যতটুকু সম্ভব সংযত করে রাখার চেষ্টা করাটাই ভালো। আরেকটা ব্যাপার মনে রাখা প্রয়োজন যে, প্রেমিক ও প্রেমিকার কথাবার্তা ও সম্পর্ক যেন নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, সেটি যেন সবার আলোচনার বিষয় না হয়।
বইয়ের এই সব অধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বলেছেন কিশোর-কিশোরীদের প্রেম শিখানো ছাড়া এর উদ্দেশ্য আর কিছু নয়। এমনিতেই সিনেমা টেলিভিশন ও ইন্টারনেট যৌন বিষয়ে অবাধ প্রচার-প্রচারণা চলছে। কিন্তু তা ‘নিষিদ্ধ’ বিষয় বলেই বিবেচিত হয় কিশোর তরুণদের কাছে। কিন্তু স্কুলের পাঠ্য বইয়ে যদি তা স্থান পায় তবে কিশোরদের তরুণদের কাছে বিষয়টি আর নিষিদ্ধ থাকে না। আলোচ্য বইটির ক্ষতিকর প্রভাব ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়েছে বলে অনেক শিক্ষক-অভিভাবক উল্লেখ করেছেন। তারা বইটিকে প্রেম যৌনতার ‘হাতে কলমে’ শিক্ষা বলে বর্ণনা করে অবিলম্বে বইটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন