বুধবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৬

এক সময় নাস্তিকতার আদর্শ লালনকারী কবি আল মাহমুদ হঠাৎ করে কিভাবে ইসলামপন্থী হয়ে গেলেন?


এক সময় নাস্তিকতার আদর্শ লালনকারী কবি আল মাহমুদ হঠাৎ করে কিভাবে ইসলামপন্থী হয়ে গেলেন? বিস্ময় জাগানিয়া এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে একটি ইতিহাস। কবির নিজের ভাষায়-
"আমি এক বছর কারাগারে আটক থাকার সময় আমার স্ত্রী জেলখানায় আমাকে একখানা কুরআন দিয়ে এলে আমি তা অর্থসহ আদ্যোপ্রান্ত পাঠ করা শুরু করি। আর প্রথম পাঠেই আমার শরীর কেঁপে ওঠে। এর আগে কোনো গ্রন্থ পাঠে আমার মধ্যে এমন আলোড়ন সৃষ্টি হয়নি। যেন এক অলৌকিক নির্দেশে আমার মস্তক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।' 
মূলত এরপরই কবি মার্ক্সবাদী দর্শন ত্যাগ করে ইসলামী জীবনদর্শনে উদ্বুদ্ধ হন। দীর্ঘ কয়েক যুগ যে বামপন্থী চিন্তাচেতনা আকড়ে ধরে ছিলেন সেটা ত্যাগ করে হয়ে গেলেন পুরোদস্তুর ডানপন্থী! অকল্পনীয় পরিবর্তনই বটে। তবে তার এই পরিবর্তন দেশের সেক্যুলার সমাজ স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তারা আল মাহমুদকে বর্জন করতে লাগল। আর বামপন্থীদের বিরাদভাজন হয়ে কোন কবি-সাহিত্যিকই টিকে থাকতে পারেন না। অধিকাংশ সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেল বামপন্থী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী হওয়ার কারনে মিডিয়াতে কবিকে দীর্ঘদিন ধরে ব্ল্যাকলিস্টেড করে রাখা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম যাতে তার সম্পর্কে জানতে না পারে সেজন্য পাঠ্যবই থেকেও তার কবিতা অপসারন করা হয়েছে। 
.
এক সময় সেক্যুলারপন্থী হওয়ার কারনেই সম্ভবত তার অধিকাংশ সাহিত্য অশ্লীলতা দোষে দুষ্ট। আর এগুলো লিখেই এক সময় তিনি নাস্তিকদের কাছে প্রচন্ড জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র বামপন্থা থেকে ডানপন্থায় কনভার্ট করার কারনে আজ তাকে বাতিলের খাতায় ছুড়ে ফেলা হয়েছে। আজ তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে, কিন্তু মিডিয়া দেখেও না দেখার ভান করছে। সচেতনভাবে তাকে বর্জন করা হচ্ছে, অযত্ন আর অবহেলায় ফেলে রাখা হয়েছে। হয়তো এটাই তার প্রথম জীবনের ভুলের শাস্তি। তবে এটাও সত্য, শেষ ভাল যার, সব ভাল তার! ইসলামও অনেকটা এই নীতিতেই বিশ্বাসী। আর তাই জীবনেও শেষ মুহুর্তেও যদি কেউ সত্য পথের অনুসারী হয়ে মারা যায় তবে তাকে সফল বলা যায়। ইসলামপন্থীরা পৃথিবীতে অবহেলিত হবে, লাঞ্ছনার শিকার হবে, কষ্ট ভোগ করবে- অন্যদিকে অবিশ্বারীরা অর্থ-বিত্ত-খ্যাতি নিয়ে সুখ ও সাচ্ছ্বন্দের জীবন অতিবাহিত করবে এটা খোদ কুরআনের ভবিষ্যদ্বানী- যা সত্যে পরিণত হতে বাধ্য। আর তাই আল মাহমুদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তিনি যদি প্রকৃত ঈমানদার হন, তবে তার ভাল কাজের প্রতিদান পরকালে অবশ্যই পাবেন। (সংগৃহিত)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন