প্রশ্ন
দারুল ইসলাম, দারুল হরব কাকে বলে? বাংলাদেশ, পাকিস্তান কি দারুল ইসলাম? ভারত কি দারুল হরব? বিস্তারিত দলীলের আলোকে জানালে ভাল হয়।
প্রশ্নকর্তা- আহমদুল্লাহ।
ঢাকা, বাংলাদেশ
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
দারুল ইসলাম কাকে বলে?
এ বিষয়টি সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হলে প্রথমেই আমাদের রাসূল সাঃ এর জমানাটি সামনে রাখতে হবে।
রাসূল সাঃ এর জমানায় মৌলিকভাবে তিনটি এলাকা ছিল। যথা-
১-মক্কা।
২-মদীনা।
৩-হাবশা বা আবিসিনিয়া।
মক্কার হালাত
মক্কার হালাত আমাদের কাছে স্পষ্ট। এখানে মুসলমানদের সামান্যতম স্বাধীনতা ছিল না। প্রকাশ্যে ইসলামের কোন বিধান পালনের সুযোগ ছিল না। তাই এটি দারুল হরব।
মদীনার হালাত
মদীনায় সর্ব প্রকার ইসলামী বিধান পালনের পরিবেশ ছিল। যদিও সেখানে বিধর্মী বেশ কিছু লোক ছিল। কিন্তু তারা সবাই মুসলমানদের অনুগত ছিল। মুসলমানদের সাথে বিদ্রোহ করার মত ক্ষমতা তাদের ছিল না। সুতরাং সুনিশ্চিতভাবে তা ছিল দারুল ইসলাম।
হাবশার হালাত
খৃষ্টান বাদশা নাজ্জাশীর শাসনাধীন হাবশা তথা আবিসিনিয়া ছিল দারুল আমান। আবিসিনিয়া যদিও খৃষ্টান বাদশার শাসনাধীন, কিন্তু সেখানে মুসলমানরা হিজরত করে স্বাধীনভাবে স্বীয় ধর্ম পালন করতে পারতো। তাদের ধর্ম পালনে কোন বাঁধা দেয়া হতো না। সেই সাথে স্বীয় ধর্ম প্রচারেও কোন বাঁধা ছিল না। তবে ইসলামী শরীয়তের নির্দিষ্ট শাস্তির বিধান প্রয়োগ করার সুযোগ ছিল না।
সুতরাং আবিসিনিয়া ছিল দারুল আমান। দারুল ইসলাম ও নয়, আবার দারুল হরবও নয়।
এবার আমরা খুব সহজেই বুঝে নিতে পারবো যে, স্বাভাবিকভাবে সমগ্র পৃথিবীতে দার তথা রাষ্ট্র তিন প্রকার। যথা-
১-দারুল ইসলাম।
২-দারুল হরব।
৩-দারুল আমান।
দারুল ইসলাম ও দারুল হরব কাকে বলে?
দারুল ইসলাম ও দারুল হরবের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সংজ্ঞা ফুক্বাহায়ে কেরাম করেছেন। কিছু মতভিন্নতাসহ প্রায় সকলের সংজ্ঞাই কাছাকাছি পর্যায়ের।
ইমাম আবু হানীফা রহঃ দারুল ইসলাম ও দারুল হরবের সংজ্ঞা করতে গিয়ে লিখেছেনঃ
قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ – رَحِمَهُ اللَّهُ – أَنَّ الْمَقْصُودَ مِنْ إضَافَةِ الدَّارِ إلَى الْإِسْلَامِ وَالْكُفْرِ لَيْسَ هُوَ عَيْنَ الْإِسْلَامِ وَالْكُفْرِ، وَإِنَّمَا الْمَقْصُودُ هُوَ الْأَمْنُ وَالْخَوْفُ.
وَمَعْنَاهُ أَنَّ الْأَمَانَ إنْ كَانَ لِلْمُسْلِمِينَ فِيهَا عَلَى الْإِطْلَاقِ، وَالْخَوْفُ لِلْكَفَرَةِ عَلَى الْإِطْلَاقِ، فَهِيَ دَارُ الْإِسْلَامِ، وَإِنْ كَانَ الْأَمَانُ فِيهَا لِلْكَفَرَةِ عَلَى الْإِطْلَاقِ، وَالْخَوْفُ لِلْمُسْلِمِينَ عَلَى الْإِطْلَاقِ، فَهِيَ دَارُ الْكُفْرِ
ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্য অনুপাতে দারুল ইসলাম ও দারুল হরবের প্রতি নিসবতের মূল উদ্দেশ্য তা পরিপূর্ণ ইসলামও পরিপূর্ণ কুফর হওয়া নয়। বরং উদ্দেশ্য হল নিরাপত্তা ও ভয় বিষয়ে। অর্থাৎ যদি সর্বদিক থেকে নিরাপত্তা থাকে মুসলমানদের আর স্বাভাবিকভাবে আতংকিত থাকে কুফরী শক্তি, তাহলে সেটি দারুল ইসলাম।
পক্ষান্তরে সর্বদিক থেকে নিরাপদ থাকে কুফরী শক্তি আর ভীত থাকে মুসলিমগণ, তাহলে উক্ত রাষ্ট্র দারুল কুফর বা দারুল হরব। {বাদায়েউস সানায়ে-৭/১৩১}
আর ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ এবং ইমাম মুহাম্মদ রহঃ দারুল ইসলাম ও দারুল কুফরের সংজ্ঞা করতে গিয়ে লিখেছেনঃ
وَقَالَ أَبُو يُوسُفَ وَمُحَمَّدٌ – رَحِمَهُمَا اللَّهُ: إنَّهَا تَصِيرُ دَارَ الْكُفْرِ بِظُهُورِ أَحْكَامِ الْكُفْرِ فِيهَا.
(وَجْهُ) قَوْلِهِمَا أَنَّ قَوْلَنَا دَارُ الْإِسْلَامِ وَدَارُ الْكُفْرِ إضَافَةُ دَارٍ إلَى الْإِسْلَامِ وَإِلَى الْكُفْرِ، وَإِنَّمَا تُضَافُ الدَّارُ إلَى الْإِسْلَامِ أَوْ إلَى الْكُفْرِ لِظُهُورِ الْإِسْلَامِ أَوْ الْكُفْرِ فِيهَا،
ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ ও ইমাম মুহাম্মদ রহঃ বলেন, দারুল হরব সাব্যস্ত হবে তাতে কুফরী বিধান প্রয়োগ হওয়া হিসেবে।
সাহাবাইনের বক্তব্যের সারমর্ম হল, দারুল ইসলাম ও দারুল কুফরের নিসবতের মৌলিকত্ব হল ইসলাম ও কুফরের দিকে নিসবত সংক্রান্ত। অর্থাৎ দারুল ইসলাম বলা হবে যাতে ইসলামী বিধান প্রয়োগ করা হয়, আর দারুল কুফর বলা হবে যাতে কুফরী বিধান প্রয়োগ হয়। {বাদায়েউস সানায়ে-৭/১৩১}
ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ ও ইমাম মুহাম্মদ রহঃ এর বক্তব্য মানলে সারা পৃথিবীতে কোথাও দারুল ইসলাম পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ ইসলামের সকল বিধান প্রয়োগ হয়, এমন কোন রাষ্ট্র অস্তিত্বে আসা এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে। বাকি অধিকাংশ বিধান প্রয়োগ করা সম্ভব। সেই হিসেবে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর সংজ্ঞাটিই সবচে’সহজতর এবং গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম।
অর্থাৎ দারুল ইসলাম ঐ রাষ্ট্রকে বলবে, যার অধিকাংশ অধিবাসী মুসলমান, সেখানে মুসলমানদের আধিপত্ব রয়েছে পূর্ণাঙ্গ। কাফেরদের আধিপত্ব কম ইসলামের শাস্তি বিধানও প্রয়োগ করতে সক্ষম। তবে সকল বিধান প্রয়োগ করতে পারে না বিভিন্ন কারণে। এরকম রাষ্ট্রকেও বলা হবে দারুল ইসলাম।
যেমন সৌদি আরব। আফগানিস্তান ছিল দারুল ইসলামের একটি প্রকৃত চিত্র। যখন মোল্লা উমরের নেতৃত্বে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কিন্তু পরবর্তী কুফরী শক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা আজ বিলীন হয়ে গেছে।
আর দারুল হরব বা দারুল কুফর হল ঐ সকল রাষ্ট্র, যেখানে মুসলমানদের বসবাস খুবই কম তথা মুসলমানগণ সংখ্যালঘু। সেই সাথে ইসলামের বিধান পালনে স্বাধীন নয়। নানাভিদ বাঁধা এবং বিপদের মাঝে দিন গোজরান হয় মুসলমানদের। কুফরী শক্তি সেখানে প্রবল এবং শাসক। তাহলে উক্ত রাষ্ট্রের নাম হবে দারুল হরব বা দারুল কুফর। যেমন বর্তমানে ইজরাঈল।
দারুল আমান কাকে বলে?
যে সকল রাষ্ট্রে মুসলিমগণ স্বাভাবিকভাবে স্বীয় ধর্ম পালনে সক্ষম। চাই তারা সংখ্যাগরিষ্ট হোক বা সংখ্যালঘিষ্ট। কিন্তু ইসলামের শাস্তির বিধান প্রয়োগ করতে সক্ষম নয়। তবে দ্বীন প্রচার ও পালনে স্বাধীন। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও স্বীয় ধর্ম পালনে স্বাধীন। কোন ধর্ম পালনেই রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কোন বিধি-নিষেধ নেই। তবে ইসলামী আইন উক্ত রাষ্ট্রে প্রচলিত নয়। আইন চলে মানবরচিত আইন বা কুফরী আইন। তাহলে উক্ত রাষ্ট্রের নাম হবে দারুল আমান। যেমন রাসূল সাঃ এর যুগে ছিল খৃষ্টান বাদশা নাজ্জাশীর দেশ আবিসিনিয়া।
বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ রাষ্ট্রই দারুল আমান। এমনকি আমেরিকা ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোও। কারণ সেখানে সকল ধর্মাবলম্বীরাই স্বীয় ধর্ম পালনে ও প্রচারে স্বাধীন। রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কোন প্রকার বিধি-নিষেধ নেই। যদিও সরকারী আইন ইসলামী নয়।
এ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ অধিকাংশ রাষ্ট্রই দারুল আমানের অন্তর্ভূক্ত।
বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।
দারুল ইসলামের হুকুম
১- দারুল ইসলামে ইসলামী শরীয়তের যাবতীয় ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় বিধান কার্যকর করা হবে।
২- দারুল হরব থেকে যারা হিজরত করে আসবে তাদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থাকরণ।
৩- দারুল হরবে আটকে যাওয়া মজলুম মুসলমানদের জন্য সহযোগিতা করা।
৪- জিহাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের পরিধি বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকরণ।
দারুল হরবের বিধান
১- এখানে ইসলামী শরীয়তের শাস্তি বিধান কার্যকর হবে না।
২- দারুল হরবে যদি দুই মুসলমানের মাঝেও কোন বিবাদ হয়ে যায়, তাহলে এর সমাধান দারুল ইসলামের বিচারক করবে না।
৩- দারুল হরবের বাসিন্দার কাছে অস্ত্র বিক্রি জায়েজ নয়।
৪- দারুল হরবের কোন বাসিন্দাকে দারুল ইসলামে এক বছরের চেয়ে বেশি সময়ের জন্য অবস্থানের জন্য অনুমতি দেয়া হবে না। তবে যদি দারুল হরবের বাসিন্দা দারুল ইসলামে অভিবাসী হওয়ার আবেদন করে থাকে তবে ভিন্ন কথা। নিরাপদ ব্যক্তি মনে হলে অনুমতি দেয়া যাবে।
৫- দারুল ইসলাম থেকে দারুল হরবে এমন কোন তথ্য বা সম্পদ রপ্তানী করা যাবে না, যার দ্বারা দারুল হরবের রাষ্ট্রের শক্তি বৃদ্ধি পায়। চাই তা টেকনোলজী বিষয়ক বা খনিজ সম্পদ হোক বা অন্য কিছু।
৬- দারুল হরবের বাসিন্দাদের উপর আবশ্যক হল, তারা সে দেশ থেকে হিজরত করে নিরাপদ দেশে চলে যাবে।
৭- দারুল হরবের আহলে কিতাব তথা ইহুদী খৃষ্টান মেয়ের সাথে বিবাহ করা মাকরূহ।
৮- মুসলিম স্বামী স্ত্রীর মাঝে যদি একজন দারুল ইসলাম ছেড়ে দারুল হরবে চলে যায়, এবং সেখানেই বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, তাহলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।
৯- দারুল হরবের মাঝে যদি কাফের স্বামী স্ত্রীর মাঝে একজন মুসলমান হয়ে যায়, তাহলে দারুল ইসলামের মত অপরজনের কাছে ইসলাম পেশ করার দরকার নেই। এমনিতেই ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে স্বামী স্ত্রী আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু দারুল ইসলামে এমনটি হলে অপরজনের কাছে ইসলাম পেশ করা হবে, যদি অপরজন ইসলাম গ্রহণ করে নেয়, তাহলে বিবাহ বহাল থাকবে, গ্রহণ না করলে বিবাহ ভেঙ্গে যাবে।
১০- ভিসা নিয়ে দারুল ইসলাম থেকে যদি কোন মুসলিম দারুল হরবে ব্যবসা করতে যায়, তাহলে তার জন্য ইসলামী ব্যবসা নীতি পরিপূর্ণ রক্ষা করা জরুরী নয়। তবে ধোঁকা ও প্রতারণা করা করা যাবে না।
১১- বুনিয়াদী ও মূলনীতিগতভাবে দারুল হরবের বাসিন্দার জান-মাল অরক্ষিত বলে সাব্যস্ত হবে। যদিও সে মুসলমান হোক না কেন। অর্থাৎ কোন কারণে মুসলমান কর্তৃক দারুল হরবের কেউ মারা গেলে এর রক্তপণ দেয়া মুসলমানের উপর আবশ্যক হবে না ইসলামী বিধান অনুপাতে।
১২- দারুল হরবে বসবাসকারী মুসলমানের জন্য অনেক বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতা উজর বলে সাব্যস্ত হবে, যা দারুল ইসলামের বাসিন্দার জন্য প্রযোজ্য নয়। যেমন হজ্ব করা ফরজ একথা যদি দারুল হরবের মুসলিম বাসিন্দা না জানে, তাহলে হজ্ব আদায় না করার গোনাহ তার হবে না। কিন্তু দারুল ইসলামের বাসিন্দা না জানার কারণেও গোনাহগার হবে। কারণ তার জন্য আবশ্যক দ্বীনের আবশ্যকীয় বিষয়গুলো জেনে নেয়া।
১৩- দারুল ইসলামে থাকা ব্যক্তির জন্য দারুল হরবে অবস্থানকারী আত্মীয়ের খোরপোষ দেয়া আবশ্যক নয়।
১৪- দারুল ইসলামের কেউ দারুল হরবের কারো জন্য ওসিয়ত করলে তা কার্যকর হবে না।
১৫- দারুল ইসলামের কোন বাসিন্দার জন্য দারুল হরবের বাসিন্দার জন্য কোন কিছু ওয়াকফ করলে তা কার্যকর হবে না।
১৬- দারুল হরবের কেউ দারুল ইসলামের বাসিন্দা কারো থেকে মিরাস তথা উত্তারাধিকার সম্পত্তি পাবে না।
উল্লেখিত বিধানের সারমর্ম হল-
১- দারুল হরবের বিধান দারুল ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত।
২- দারুল হরবের বাসিন্দারা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, যুদ্ধে লিপ্ত, তাই তাদের জান-মালের ক্ষতি সাধন করা মৌলিকভাবে জায়েজ।
৩- যেহেতু দারুল হরবের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই, তাই তাদের জন্য দ্বীনের অনেক বিষয় সম্পর্কে জানা সম্ভপর হয়ে উঠবে না। তাই তাদের জন্য না জানা উজর বলে সাব্যস্ত হবে। কিন্তু দারুল ইসলামের ক্ষেত্রে তা উজর বলে সাব্যস্ত হবে না।
দারুল আমানের বিধান
দারুল আমান সরাসরি যেমন দারুল ইসলাম নয়। আবার ইসলাম বিদ্বেষী দারুল হরবও নয়। তাই এতে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী বিধান যেমন প্রয়োগ করা যাবে না, ঠিক তেমনি দারুল হরবের কঠোরতাও এর মাঝে নেই। কারণ দারুল আমানে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় বিধান পালন করতে সক্ষম। ধর্ম প্রচারেও রয়েছে অবাধ স্বাধীনতা। তাই দারুল ইসলাম এবং দারুল হরবের বিধানের মাঝামাঝি পর্যায়ের হবে দারুল আমানের বিধান।
১- দারুল আমানে ইসলামী শরীয়তের শাস্তি-বিধান প্রয়োগ হবে না।
২- দারুল আমানের মুসলমানদের বিষয়-আশয়ের ফায়সালা দারুল ইসলামের আদালতে হবে না।
৩- দারুল আমানের বাসিন্দাদের উপর হিজরত করা আবশ্যক নয়।
৪- দারুল আমান রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির ব্যাপারে মুসলমানদের প্রচেষ্টা করা জায়েজ আছে। যেমন সাহাবায়ে কেরাম আবিসিনিয়ার বাদশাকে সাহায্য করেছেন তার দুশমনদের বিরুদ্ধে। তবে শর্ত হল, রাষ্ট্রপক্ষ যেন কোন মুসলিম রাষ্ট্র ধ্বংসের কার্যকলাপে লিপ্ত না হয়।
৫- শরয়ী বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতা যেমন দারুল হরবের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে মাজুর মনে করা হয়, তেমন দারুল আমানের বাসিন্দাদের মনে করা হবে না। অর্থাৎ শরয়ী বিধান না জানা তাদের জন্য কোন উজর বলে সাব্যস্ত হবে না। সকলের জন্য শরয়ী বিধান জানা জরুরী।
৬- স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে একজন দারুল আমান ছেড়ে দারুল ইসলামে চলে গেলে দেশ ভিন্ন হওয়ার কারণে স্বামী ও স্ত্রীর বন্ধন নষ্ট হবে না। বরং বহাল থাকবে।
৭- দারুল আমানে কোন মুসলিম বা অমুসলিমের সাথে গায়রে শরয়ী লেনদেন জায়েজ নয়। যেমন দারুল ইসলামে বৈধ নয়।
৮- দারুল আমানে বসবাসকারী ব্যক্তিগণ দারুল ইসলামের আত্মীয় থেকে মিরাস পাবে, খোরপোষ সবই পাবে। তাদের পরস্পরের জন্য ওসিয়ত করা জায়েজ আছে।
{কামুসুল ফিক্বহ-৩/৩৯৫-৪০৪}
বিস্তারিত জানতে পড়–ন- ফাতাওয়া মাহমুদিয়া-২০/৩৫৪-৩৭৩।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন