মনে করুন, প্রচণ্ড ঝড় হচ্ছে, ঝড়ে টিনের চালগুলো খুলে যাচ্ছে প্রায়। নারকেল গাছগুলো বাঁকা হয়ে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। একটা কলাগাছ মাঝখান থেকে ভেঙ্গেই গেছে। এরকম একটি দৃশ্যকে বর্ণনা করতে আপনি বললেন, "প্রচণ্ড ঝড়ে সমস্ত কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে"। প্রচণ্ড ঝড়ে/ঝড়ের প্রচণ্ডতায় ব্যাবহার না করে, আপনি যদি 'বিক্ষুব্ধ ঝঞ্ঝার তান্ডবে' phrase ইউজ করেন, তবে Expression আগের চেয়ে greater এবং perfect হয়। বিক্ষুব্ধ ঝঞ্ঝা শব্দগুচ্ছ দ্বারা ঝড়ের রাগান্বিত রুপটি পরিষ্কারভাবে ধরা পড়ে যা তাণ্ডব শব্দটির মাধ্যমে স্বৈরাচারী আচরণের বহি:প্রকাশ ঘটায়। তার মানে অন্য শব্দগুচ্ছ ব্যাবহার করে আমরা প্রথম বাক্যের অর্থপ্রকাশকে আরও মাধুর্যতা এবং নিখুঁতত্ব দান করলাম।
.
ইজাজ আল ক্বুরাণ বা ক্বুরাণের অলৌকিকত্ব নিয়ে লিখতে গেলে তা কখনই শেষ হওয়ার নয়। সাহিত্যের উৎকর্ষতা পরিমাপে অনেকগুলো দিক আছে, যা বেশিরভাগ সময়ই সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার বাইরে থাকে। তবে ক্বুরাণের প্রদত্ত চ্যালেঞ্জ অনুধাবনে কেউ যদি সাহিত্যের ব্যাপারে অল্প একটু পড়াশুনা করে, তবে ক্বুরাণের অলৌকিকত্ব অনুধাবন করা মোটেও কঠিন কিছু নয়। আমরা উপরোক্ত উদাহরনটির অবতারনা এ জন্যেই করলাম যে তা যেন সাধারন মানুষের বোধগম্য হয়। তারা যেন কিছুটা হলেও তাদের চিন্তার গন্ডির মাঝে থেকেই তুলনামূলক পর্যালোচনার মাধ্যমে ক্বুরাণের উৎকর্ষতার দিক গুলো হৃদয়ংগম করতে পারে। উপরে আমরা কিছু শব্দের পরিবর্তন, কিভাবে একই বাক্যের অর্থ ঠিক রেখে তার সাহিত্যিক ও ভাষাগত মান কিভাবে বৃদ্ধি করে তা দেখলাম এবার আমরা যদি ক্বুরাণের দিকে তাকাই তবে দেখব-
.
ক্বুরাণে অর্থপ্রকাশে যে শব্দ/শব্দগুচ্ছ ব্যাবহৃত হয়েছে, অন্য কোন শব্দ দ্বারা তাকে প্রতিস্থাপন করলে অর্থের প্রকাশভঙ্গীর মান কমে যায়, একারণে ক্বুরাণের প্রত্যেকটি আয়াত, ভাবপ্রকাশে সর্বোচ্চ। ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জ হল, "পারলে এর মত একটি সূরা রচনা করতে", সবচেয়ে ছোট সূরা, আল কাউসারের উদাহরণ দিয়েই দেখা যাক।
.
এই সূরায়, আল্লাহ সুওতা. রাসূল সা.কে 'কাউসার' প্রদান করেছেন, বিষয়টি বুঝাতে 'আঅত্বইনা' শব্দটি ব্যাবহার করেছেন, যা দ্বারা 'কোন কিছু নিজের হাতে অন্য কাউকে হস্তান্তর করা' বুঝায়। অর্থাৎ, দাতা আর গ্রহীতার মাঝে তৃতীয় কোন পক্ষ নেই। অর্থাৎ, For sure, আল্লাহ নিজেই রাসূল সা.কে কাউসার দান করেছেন, Without any via, যা কাউসার প্রদানকে নিশ্চিত করে। এছাড়া এখানে Verb ব্যাবহৃত হয়েছে Past Tense. Future এ কোন কিছু প্রদানে অনিশ্চয়তা থাকে, Past Tense ব্যাবহারের ফলে এটা নিশ্চিত হয় যে, 'আপনাকে কাউসার প্রদান করা হয়ে গেছে, It has been done, এর আর পরিবর্তন হবেনা', উপরন্তু, এটা ইসলামী Concept এর সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ লওহে মাহফুজে অনেক আগেই লেখা হয়ে গেছে যে, আপনাকে কাউসার আমি নিজের হাতে প্রদান করেছি। অর্থটা, যেকোন সন্দেহকে নিরসন করে দেয়। এইরূপ অর্থ বুঝাতে, আরবী ভাষায় এই শব্দটির বিকল্প কোন শব্দ নেই। তাই আঅত্বইনাকে অন্য কোন শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করলে, ভাষাগত উৎকর্ষতার অবনমন হয়।
.
আরেকটি শব্দ হচ্ছে 'ওয়ানহার', যার অর্থ হল, 'কোন প্রাণীকে তার Jugular vein কেটে হত্যা করা (যা মুসলিমদের কর্তৃক কুরবানীর সঠিক প্রতিচ্ছবি)। এর আরেকটি অর্থ হল, নামাজের জন্য ক্বিবলামুখী হওয়া, অন্য আরেকটি অর্থ হল, তাকবীর দেয়ার সময় হাত তুলা। বেশিরভাগ অনুবাদেই কুরবানীর অর্থ গ্রহণ করা হলেও অন্য দুইটি অর্থ দ্বারাও সমভাবেই আল্লাহর মহত্বকে স্বীকার করে নেয়া হয়। অর্থাৎ আল্লাহ আপনাকে কাউসার প্রদান করেছেন, যা আপনার গ্রহণ করা উচিৎ আল্লাহর জন্য কুরবানি করার মাধ্যমে/তার নিকট কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সালাত আদায়ের মাধ্যমে/তার মহত্ব প্রকাশের মাধ্যমে। 'ওয়ানহার' এর সমরূপ অন্য কোন শব্দ আরবী ভাষায় খুজে পাওয়া যায়না, আর তাই এই শব্দটিকে প্রতিস্থাপিত করলে তার linguistic value এর মান কমে যায়।
.
আর এ কারণেই, ক্বুরাণের কোন শব্দকেই সাহাবীরা প্রতিশব্দ দ্বারা বর্ণনা করেননি, কিন্তু হাদীসকে বিভিন্ন শব্দের প্রতিশব্দ দিয়েও বর্ণনা করেছেন।
.
কেউ যদি ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চায়, তবে তাকে এমন রচনা নিয়ে আসতে হবে, যাতে ব্যাবহৃত শব্দ সর্বোচ্চ অর্থ বহন করে। কিন্তু কেউই আজ পর্যন্ত তা পারেনি। সামনের কোন পোষ্টে বর্তমান সময়ের কিছু আরব খৃষ্টান কর্তৃক ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের প্রচেষ্টার বিশ্লেষণমূলক কিছু তথ্য তুলে ধরব, যা মুক্তমনার অভিজিৎ (তার উপর আল্লাহর লানৎ) তার একটি আর্টিকেলে 'ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জের জবাব দেয়া হয়েছে' বলে দাবী করেছিল।
.
ইজাজ আল ক্বুরাণ বা ক্বুরাণের অলৌকিকত্ব নিয়ে লিখতে গেলে তা কখনই শেষ হওয়ার নয়। সাহিত্যের উৎকর্ষতা পরিমাপে অনেকগুলো দিক আছে, যা বেশিরভাগ সময়ই সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার বাইরে থাকে। তবে ক্বুরাণের প্রদত্ত চ্যালেঞ্জ অনুধাবনে কেউ যদি সাহিত্যের ব্যাপারে অল্প একটু পড়াশুনা করে, তবে ক্বুরাণের অলৌকিকত্ব অনুধাবন করা মোটেও কঠিন কিছু নয়। আমরা উপরোক্ত উদাহরনটির অবতারনা এ জন্যেই করলাম যে তা যেন সাধারন মানুষের বোধগম্য হয়। তারা যেন কিছুটা হলেও তাদের চিন্তার গন্ডির মাঝে থেকেই তুলনামূলক পর্যালোচনার মাধ্যমে ক্বুরাণের উৎকর্ষতার দিক গুলো হৃদয়ংগম করতে পারে। উপরে আমরা কিছু শব্দের পরিবর্তন, কিভাবে একই বাক্যের অর্থ ঠিক রেখে তার সাহিত্যিক ও ভাষাগত মান কিভাবে বৃদ্ধি করে তা দেখলাম এবার আমরা যদি ক্বুরাণের দিকে তাকাই তবে দেখব-
.
ক্বুরাণে অর্থপ্রকাশে যে শব্দ/শব্দগুচ্ছ ব্যাবহৃত হয়েছে, অন্য কোন শব্দ দ্বারা তাকে প্রতিস্থাপন করলে অর্থের প্রকাশভঙ্গীর মান কমে যায়, একারণে ক্বুরাণের প্রত্যেকটি আয়াত, ভাবপ্রকাশে সর্বোচ্চ। ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জ হল, "পারলে এর মত একটি সূরা রচনা করতে", সবচেয়ে ছোট সূরা, আল কাউসারের উদাহরণ দিয়েই দেখা যাক।
.
এই সূরায়, আল্লাহ সুওতা. রাসূল সা.কে 'কাউসার' প্রদান করেছেন, বিষয়টি বুঝাতে 'আঅত্বইনা' শব্দটি ব্যাবহার করেছেন, যা দ্বারা 'কোন কিছু নিজের হাতে অন্য কাউকে হস্তান্তর করা' বুঝায়। অর্থাৎ, দাতা আর গ্রহীতার মাঝে তৃতীয় কোন পক্ষ নেই। অর্থাৎ, For sure, আল্লাহ নিজেই রাসূল সা.কে কাউসার দান করেছেন, Without any via, যা কাউসার প্রদানকে নিশ্চিত করে। এছাড়া এখানে Verb ব্যাবহৃত হয়েছে Past Tense. Future এ কোন কিছু প্রদানে অনিশ্চয়তা থাকে, Past Tense ব্যাবহারের ফলে এটা নিশ্চিত হয় যে, 'আপনাকে কাউসার প্রদান করা হয়ে গেছে, It has been done, এর আর পরিবর্তন হবেনা', উপরন্তু, এটা ইসলামী Concept এর সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ লওহে মাহফুজে অনেক আগেই লেখা হয়ে গেছে যে, আপনাকে কাউসার আমি নিজের হাতে প্রদান করেছি। অর্থটা, যেকোন সন্দেহকে নিরসন করে দেয়। এইরূপ অর্থ বুঝাতে, আরবী ভাষায় এই শব্দটির বিকল্প কোন শব্দ নেই। তাই আঅত্বইনাকে অন্য কোন শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করলে, ভাষাগত উৎকর্ষতার অবনমন হয়।
.
আরেকটি শব্দ হচ্ছে 'ওয়ানহার', যার অর্থ হল, 'কোন প্রাণীকে তার Jugular vein কেটে হত্যা করা (যা মুসলিমদের কর্তৃক কুরবানীর সঠিক প্রতিচ্ছবি)। এর আরেকটি অর্থ হল, নামাজের জন্য ক্বিবলামুখী হওয়া, অন্য আরেকটি অর্থ হল, তাকবীর দেয়ার সময় হাত তুলা। বেশিরভাগ অনুবাদেই কুরবানীর অর্থ গ্রহণ করা হলেও অন্য দুইটি অর্থ দ্বারাও সমভাবেই আল্লাহর মহত্বকে স্বীকার করে নেয়া হয়। অর্থাৎ আল্লাহ আপনাকে কাউসার প্রদান করেছেন, যা আপনার গ্রহণ করা উচিৎ আল্লাহর জন্য কুরবানি করার মাধ্যমে/তার নিকট কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সালাত আদায়ের মাধ্যমে/তার মহত্ব প্রকাশের মাধ্যমে। 'ওয়ানহার' এর সমরূপ অন্য কোন শব্দ আরবী ভাষায় খুজে পাওয়া যায়না, আর তাই এই শব্দটিকে প্রতিস্থাপিত করলে তার linguistic value এর মান কমে যায়।
.
আর এ কারণেই, ক্বুরাণের কোন শব্দকেই সাহাবীরা প্রতিশব্দ দ্বারা বর্ণনা করেননি, কিন্তু হাদীসকে বিভিন্ন শব্দের প্রতিশব্দ দিয়েও বর্ণনা করেছেন।
.
কেউ যদি ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চায়, তবে তাকে এমন রচনা নিয়ে আসতে হবে, যাতে ব্যাবহৃত শব্দ সর্বোচ্চ অর্থ বহন করে। কিন্তু কেউই আজ পর্যন্ত তা পারেনি। সামনের কোন পোষ্টে বর্তমান সময়ের কিছু আরব খৃষ্টান কর্তৃক ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের প্রচেষ্টার বিশ্লেষণমূলক কিছু তথ্য তুলে ধরব, যা মুক্তমনার অভিজিৎ (তার উপর আল্লাহর লানৎ) তার একটি আর্টিকেলে 'ক্বুরাণের চ্যালেঞ্জের জবাব দেয়া হয়েছে' বলে দাবী করেছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন