বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৬

নবীজি (সা) কি দুনিয়ার সকল মসজিদে হাজির? নাউযুবিল্লাহ।

নবীজি (সা) তিনি কি দুনিয়ার সকল মসজিদে হাজির?
আমাদের এক রেজভী আকিদা ওয়ালা ভ্রাতা নবীজি (সা)-কে হাজির নাজির দাবি করার পক্ষে হাদিসেপাকে কোনো দলিল প্রমাণ না দেখে উপায়ন্তর না পেয়ে ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) -এর নাম ভেঙ্গে লিখেছেন –
মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ মিরকাতে মোল্লা আলী কারী (রহঃ) বলেনঃ- ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻐَﺰَ ﺍﻟِﻰْ ﺳَﻠِّﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍِﺫَﺍ ﺩَﺧَﻠْﺖَ ﻓِﻰ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻓَﺎِﻧَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﻳَﺤْﻀُﺮُ ﻓِﻰ ﺍﻟْﻤَﺴَﺠِﺪِ (ইমাম গাযযালী (রহঃ) বলেছেন, আপনি যখন মসজিদে প্রবেশ করবেন, তখন হুযুর আলাইহিস সালামকে সশ্রদ্ধ সালাম দিবেন। কারণ তিনি মসজিদ সমূহে হাজির আছেন।)
আমাদের জবাব-
১-
প্রথমত, এটি ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)-এর বক্তব্য হতে পারে কিনা তা আমার যথেষ্ট সন্দেহ। উনার সম্পূর্ণ ইবারতটুকু উল্লেখ করলেই প্রকৃত মাসয়ালাটি পরিস্কার হতে পারে।

দ্বিতীয়ত , তাছাড়া নবীজি (সা)-এর হাদিসের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো কথা বা আকিদা গ্রহণযোগ্য হয় কিভাবে? ঊসূলে হাদিসের একটি নীতি হল- ব্যক্তি যত বড় জ্ঞানীই হোক, হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক তার এমন কোনো মত ও পথ কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।
২- হযরত আজরাইল (আ) একই সাথে সারা দুনিয়ার জীবযন্তুর রূহগুলো কব্জ করেন, তাই নয় কি? এ জন্য কেউ কি হযরত আজরাইল (আ)-কে হাজির নাজির মনে করেন? নিশ্চয়ই না। তাহলে দ্ব্যর্থহীন অর্থবোধক হাদিস পাওয়া না যাওয়া সত্ত্বেও নবীজি (সা)-কে আল্লাহ তায়ালার খাস সিফাত হাজির নাজিরের সাথে শরিক করলে তা শিরিক হবেনা কেন?
৩-
দুনিয়ার মসজিদগুলোতে হাবিবুল্লাহ হুজুরেপাক (সা) হাজির হন-এ কথা বলার দ্বারা আসলেই কি তিনি তাঁকে হাজির নাজির বলে বুঝিয়েছেন? অবশ্যই না।

যদি তাই হয়, তো উক্ত মসজিদগুলোতে কোনো ইমামের জন্যই-নবীজি (সা) হাজির থাকা মুহূর্তে নামাযের ইমামতি করা শুদ্ধ হয় কিভাবে? নবীজি উপস্থিত থাকতে উনার বিনা অনুমতিতে কোনো সাহাবী কি নামাযের ইমামতি করেছিলেন? কী জবাব দেবে?
৪-
এবার আমার জানার বিষয় হল, ইমাম গাজ্জালী রহঃ তিনি উপরিউক্ত ব্যাখ্যাটি কেন দিলেন কিংবা ঐ ধরণের ব্যাখ্যার কোনো উৎস আছে কি?

হ্যাঁ, সুনানে ইবনে মাজা কিতাবে ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀِ ﻋِﻨْﺪَ ﺩُﺧُﻮﻝِ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ (মসজিদে প্রবেশকালে দোয়া পড়ার শীর্ষক অধ্যায়) বিষয়ে আমরা একটি হাদিস পেলাম, যা মসজিদে প্রবেশকালে দোয়া পড়া সম্পর্কিত। হাদিসটি এই যে
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺑَﺸَّﺎﺭٍ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﺍﻟْﺤَﻨَﻔِﻲُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺍﻟﻀَّﺤَّﺎﻙُ ﺑْﻦُ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥَ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٌ ﺍﻟْﻤَﻘْﺒُﺮِﻱُّ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ـ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ـ ﻗَﺎﻝَ ” ﺇِﺫَﺍ ﺩَﺧَﻞَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢُ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪَ ﻓَﻠْﻴُﺴَﻠِّﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ـ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ـ ﻭَﻟْﻴَﻘُﻞِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻓْﺘَﺢْ ﻟِﻲ ﺃَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺧَﺮَﺝَ ﻓَﻠْﻴُﺴَﻠِّﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻭَﻟْﻴَﻘُﻞِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻋْﺼِﻤْﻨِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺍﻟﺮَّﺟِﻴﻢِ . ”
একটু লক্ষ্য করুন! হাদিসের ভাষ্য হল, হযরত আবূ হোরায়রা (রা) রেওয়ায়েত করেছেন, নবী করীম (সা) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্য হতে যখন কেউ মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন নবীজির উপর সালাম পাঠ করে। আর সে যেন পাঠ করে ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻓْﺘَﺢْ ﻟِﻲ ﺃَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻚ ( হে আল্লাহ! আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাগুলো খুলে দাও)।
আর মসজিদ হতে যখন বের হবে (তখনো) সে যেন নবীজির উপর সালাম পাঠ করে। আর সে যেন এও পাঠ করে যে ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻋْﺼِﻤْﻨِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺍﻟﺮَّﺟِﻴﻢِ . ”
(হে আল্লাহ! তুমি বিতাড়িত শয়তান হতে আমাকে রক্ষা কর)।”

সুতরাং উপরিউক্ত হাদিসটি আহলে বিদয়াত রেজভী বা অন্যান্য ভান্ডারী সুন্নীদের (হাজির -নাজিরী) মতের পক্ষে দলিল হয় কিভাবে-তার বিচারের ভার আপনাদের আদালতেই রইল।
৫- এবার হয়ত প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, উম্মাতের সালাত ও সালাম পাঠকালে নবী করীম (সা) যদি হাজির না হন, তাহলে সেসব সালাত ও সালামগুলো উনার নিকট পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা রয়েছে কি? এর জবাব স্বয়ং নবী করীম (সা)-এর হাদিসেই পরিস্কার ভাবে উল্লেখ রয়েছে। যেমন,
হাদিস-১ হযরত আবু হোরায়রাহ রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻭ ﻣﻦ ﺻﻠﻲ ﻋﻠﻲ ﻧﺎﺋﻴﺎ ﺍﺑﻠﻐﺘﻪ
(যে কেউ দূর থেকে আমার উপর দরূদ পড়বে, সেটি আমাকে পৌঁছিয়ে দেওয়া হবে। মেশকাত ১/৮৭।)
হাদিস-২ হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺍﻥ ﻟﻠﻪ ﻣﻼﺋﻜﺔ ﺳﻴﺎﺣﻴﻦ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﺗﺒﻠﻐﻨﻲ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻲ ﺍﻟﺴﻼﻡ
(আল্লাহপাক সমগ্র ভূপৃষ্ঠে একদল ফেরেশতাকে ভ্রমণাবস্থায় রেখেছেন। তারা আমার উম্মতের পক্ষ হতে আমার নিকট তাদের সালাম সমূহ এনে পৌঁছিয়ে দিন। নাসাঈ শরিফ ২/১৮৯, মেশকাত ২/৮৬)।
লক্ষকরুন! প্রথমোক্ত হাদিসে রয়েছে- ﻋﻠﻲ ﻧﺎﺋﻴﺎ (যে কেউ দূর থেকে আমার ওপর দরূদ পড়বে) তো আহলে বাতিল রেজভিদের মতানুসারে নবীজি (সাঃ) যদি সর্বপুরি উপস্থিত থাকতেন তাহলে উম্মতগণ তাঁর থেকে দূরে থাকল কিভাবে?
অনুরূপ দ্বিতীয় হাদিসের মর্মার্থ হল , ﺳﻴﺎﺣﻴﻦ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ (ফেরেশতাগণ পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তাঁরাই উম্মতের পক্ষ থেকে সালামগুলো নবীজির দরবারে পৌঁছিয়ে দেন।)
তো নবীজি (সাঃ) সর্বপুরি হাজির থাকলে ফেরেশতারা উম্মতীর সালাত ও সালামগুলো তাঁরই নিকট পৌঁছিয়ে দিচ্ছেন কেন? জবাব দেবেন কি?
৬-
শুনে খুব হাসবেন! আমার অনেক দিন আগের একটি ঘটনা বলছি। একদা এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসায় আমার দাওয়াত ছিল। সেখানে গিয়ে দেখি সব খয়রাতি-মীলাদী-হুজুরের সমাবেশ। যথারীতি দরূদ পড়া হল। অতপর সবাই দাঁড়িয়ে গেল। কিছুক্ষণ বাদ ফের বসে পড়ল। বিতর্ক শুরু হল। ওদের এক হুজুর কিয়ামের দলিল প্রসব করতে করতেই মাতাল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হল। কিন্তু প্রবাদ আছে, উস্তাদের মার শেষে!

এবার আমার পালা। আমি মিলাদীদের কাছ থেকে যখন জানতে চেয়ে জিজ্ঞাস করলাম, বাপু নিজে নিজে দাঁড়াইলা আবার দেখি বসিয়াও গেলা; কি কোনো মাআরেফাত প্রসব হইল কিনা? না অন্য কোনো ব্যাপার স্যাপার!!
তখন তারা আমাকে বলল, দয়াল নবী (দঃ) মৌলুদ শরীফে তাশরিফ নিয়ে আইছেন। হ্যাল্লাইগা আমরা কিয়াম (দাঁড়ালাম) ফরমাইছি।
অথচ এ মিলাদী হুজুরগুলোই কিছুক্ষণ আগে মুনাজাতের ভেতর বলেছিল-
“হে আল্লাহ! আমাদের সালাত ও সালামগুলো আপনার হাবীবের নিকট পৌঁছাইয়া দিন”।
তাই আমি স্বাধারণ জনতার উদ্দেশ্যে বললাম, এবার আপনারাই বিচার করুন, যেসব মীলাদীরা নবী (সাঃ)-কে হাজির (মিলাদে উপস্থিত) দাবি করে একটু আগে কিয়াম ফরমাইল, তারাই কিনা এখন মুনাজাতের ভেতর ‘সালাত ও সালাম’ পৌঁছাইয়া দিতে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছে।
তাহলে বুঝা গেল যে, প্রকৃতপক্ষে এ মীলাদী খয়রাতিরাও নবীজি (সাঃ) তাদের কথিত মিলাদে হাজির হন বলে স্বীকার করেনা। নচেৎ নবীজি (সা) হাজির থাকাবস্থায় (?) ‘মুনাজাতের ভেতর “তাঁর নিকট সালাত ও সালাম পৌঁছাইয়া দিন”- এরকম ভাবে বলবে কেন? তাহলে কি একথাও প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে না যে, ঐ মীলাদী লোকগুলো ভন্ড, ধোকাবাজ আর চরম পর্যায়ের মূর্খ।
বর্তমানে এ জাতীয় ভান্ডারী সুন্নীরাই তাদেরই আবিস্কৃত মীলাদী আমলের ঠিকাদার বেশে যত্রতত্র শিকড় গেড়ে বসে আছে। এরা শিক্ষিত শ্রেণির মানুষদের সাথে মিশেনা। যদি ধরা পড়ে যায়!!
৭-
আমাদের আকিদা হল, তিনি সর্বদা রওজা মুবারকে আরাম করছেন। তাঁকে সেখান থেকে কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। অতএব এখন যদি কেউ নির্দিষ্ট স্থানে রাসূলের (সাঃ) উপস্থিতির দাবি করেন, তাহলে তখন তার দাবিটা দু অবস্থার কোনো অবস্থা থেকে খালি নয়।
হয়ত রূহানীভাবে উপস্থিত থাকার দাবি করবে, নতুবা

শারিরীকভাবে উপস্থিত থাকার দাবি করবে, তাই নয় কি?

শারিরীকভাবে উপস্থিত থাকার দাবি তো গ্রহণযোগ্য হওয়াই সম্ভব নয়। কারণ তখন তাদের এরকম দাবির পক্ষে সুস্পষ্ট দলিল নেই যেমন, ঠিক তেমনি তাদের উক্ত দাবির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত নানা প্রশ্নের জন্ম নেবে। যার সঠিক কোনো জবাবই নেই।
★★ যেমন তখন প্রশ্ন আসবে যে, বর্তমানে তাবৎ দুনিয়ার মুসলিমগণ নবীজির সাহাবী হবেনা কেন?
কারণ, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি উম্মতের নিকট হাজির হন, কিংবা দরূদ ও সালাম পাঠকালে দুনিয়ার সকল উম্মাতের নিকট হাজির হন, তাহলে তো উম্মতগ্ণ উনাকে দেখতে পান বা না পান, কিন্তু উনি তো উম্মতকে দেখতে পাচ্ছেন, তাই নয় কি? যে রকমভাবে আব্দুল্লাহ বিন উম্মে মাকতুম (রাদি:) তিনি স্বীয় অন্ধত্বের কারণে নবীজিকে কখনো দেখতে পাননি। তথাপি তিনিও সাহাবী। আমাদের উপরিউক্ত প্রশ্নের অনুকূলে বেশ শক্তিশালী দলিলও রয়েছে।
আর প্রথমোক্ত দাবির পক্ষেও অসার কতেক বকাওয়াজ ছাড়া গ্রহণযোগ্য কোনো দলিল তো নাই, বরং তখন তাদের কল্পিত নির্ভর এ আকিদার ফলে রাসূল (সাঃ)-এর দেহ মুবারক রওজাপাকে প্রাণহীনভাবে পড়ে থাকার দাবি করা হবে। যা অত্যন্ত জঘন্যতম ও ন্যাক্কারজনক আকিদা বৈ কিছুনা।
আমরা রেজাখানী মতবাদীদের তথাকথিত হাজির-নাজিরী আকিদার অসারতার প্রমাণ হিসেবে সুস্পষ্ট অর্থবোধক কয়েকটি হাদিস শরীফ এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
লক্ষ্য করুন, হায়াতুন্নবী বিশ্বনবী আলাইহিস সালাম পবিত্র হাদিসে ইরশাদ করেছেন-
১- হযরত আবু হোরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন-
ﻣﺎ ﻣﻦ ﺍﺣﺪ ﻳﺴﻠﻢ ﻋﻠﻲ ﺍﻻ ﺭﺩ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻲ ﺭﻭﺣﻲ ﺣﺘﻲ ﺍﺭﺩ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ
অনুবাদ, তোমাদের যে কেউ আমার প্রতি যখন সালাম পেশ করে, তখন আল্লাহ তায়ালা আমার প্রতি আমার রূহ প্রেরণ করিয়ে দেন, ফলে আমি সালামের জবাব দিই। [ দ্রষ্টব্য, মেশকাত শরীফ পৃষ্ঠা নং ৮৬।]
২-আল্লামা ইমাম ত্বকী উদ্দিন আস-সুবকী (আলাইহির রাহমাহ) রচিত شفاء السقام নামক কিতাবে অত্যন্ত মূল্যবান একটি দলিল পেশ করেছেন। হাদিসটি হল-
ان النبي صلي الله عليه و سلم بعد ما دفن في قبره.رد الله روحه و استمرت الروح في جسده الي يوم القيامة ليرد علي من سلم عليه. هكذا في شفاء السقام للامام السبقي عليه الرحمة.

অনুবাদ, নিশ্চয়ই নবী করীম (সা)-কে তাঁর কবর দেশে দাফন করার পর মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রতি তাঁর রূহ মোবারক ফিরিয়ে দিয়েছেন। কেয়ামত পর্যন্ত তাঁর রূহ মোবারক তাঁর শরীর মোবারকে নিরবচ্ছিন্নভাবে স্থায়ী হবে (অর্থাৎ কেয়ামতের আগে তাঁর রূহ মোবারক তাঁরই শরীর মোবারক হতে কখনো আলাদা বা পৃথক হবেনা)। যাতে তাঁর প্রতি দরূদ ও সালাম প্রেরণকারী উম্মাতের সালামের জবাব দিতে পারেন।” (সুবহানাল্লাহ ছুম্মা সুবহানাল্লাহ)।
المعجم الوافي নামক অভিধান গ্রন্থের ৭৪ নং পৃষ্ঠায় استمرار ক্রিয়ামূল শব্দের কয়েকটি অর্থ রয়েছে।
১- নিরবচ্ছিন্নতা
২- চলমানতা
৩- ধারাবাহিকতা ও
৪- স্থায়িত্ব।
সে হিসেবে استمرت শব্দটির (ওয়াহিদে মুয়ান্নিসে গায়েব, বাহাস, ইসবাত ফে’লে মাজী মুতলাক মা’আরূফ) অর্থ দাঁড়াচ্ছে- নিরবচ্ছিন্নভাবে বা স্থায়ী ভাবে থাকবে।
কাজেই তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নিই যে, রাসূল (সাঃ) [আহলে বাতিল রেজভিদের আকিদা অনুসারে] সর্বত্রে রূহানীভাবে হাজির নাজির-তো তখন সে হিসেবে রাসূল (সাঃ)-এর শরীর মুবারক রওজাপাকে প্রাণহীনভাবে পড়ে থাকার দাবি করা হল কিনা? কিংবা কথিত হাজির-নাজিরী রেজভী আকিদার আড়ালে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে নবীজিকে হায়াতুন্নবী অমান্য করা হল কিনা? যা অত্যন্ত গর্হিত ও ন্যাক্কারজনক মতবাদ। আশাকরি আপনার বুঝতে পেরেছেন।
লিখক, প্রিন্সিপাল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন