আলহামদুলিল্লাহ! এর আগে প্রথম পর্বে বিশ্বনবী সাঃ এর ছায়া মুবারক কখনো কখনো মাটিতে না পড়া কিংবা কাহারো দৃষ্টিগোচর না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তথ্যভিত্তিক আলোচনা করেছিলাম।
এবার দ্বিতীয় পর্বে বিশ্বনবী সাঃ এর ছায়া মুবারক কখনো কখনো মাটিতে না পড়ারআরো কিছু কারণ আপনাদেরকে জানিয়ে দেব, ইনশাআল্লাহ।
“মাওয়াহিব” কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘নশরুত্তিব’ কিতাবের অষ্টম অধ্যায়ের ৪৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে যে, ইবনে সা’আদ, আবু নাঈম এবং ইবনে আসাকির হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন-
ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺽ ﺳﮯ ﺭﻭﺍﯾﺖ ﮨﮯ ﮐﮧ ﺣﻀﺮﺕ ﺣﻠﯿﻤۃﺭﺽ ﺁﭖ ﺻﻠﻌﻢ ﮐﻮ ﺩﻭﺭ ﻧﮧ ﺟﺎﻧﮯ ﺩﯾﺎ ﮐﺮﺗﯿﻦ ﺗﮭﯿﮟ.
ﺍﯾﮏ ﺑﺎﺭ ﺍﻥ ﮐﻮ ﻣﻌﻠﻮﻡ ﻧﮧ ﮨﻮﺍ ﺍﻭﺭ ﺁﭖ ﺻﻠﻌﻢ ﺍﭘﻨﯽ(ﺭﺿﺎﻋﯽ ) ﺑﮩﻦ ﺷﯿﻤﺎﺀ ﮐﮯ ﺳﺎﺗﮫ ﻋﯿﻦ ﺩﻭﭘﮩﺮ ﮐﮯ ﻭﻗﺖ ﻣﻮﯾﺸﯽ ﮐﯽ ﻃﺮﻑ ﭼﻠﮯ ﮔﮱ. ﺣﻀﺮﺕ ﺣﻠﯿﻤۃ ﺁﭖ ﮐﯽ ﺗﻼﺵ ﻣﯿﮟ ﻧﮑﻠﯿﮟ . ﯾﮩﺎﮞ ﺗﮏ ﮐﮧ ﺁﭘﮑﻮ ﺑﮩﻦ ﮐﮯ ﺳﺎﺗﮫ ﭘﺎﯾﺎ . ﮐﮩﻨﮯ ﻟﮕﯿﮟ: ﺍﺱ ﮔﺮﻣﯽ ﻣﯿﮟ (ﺍﻥ ﮐﻮ ﻻﺉ ﮨﻮ ) ﺑﮩﻦ ﻧﮯ ﮐﮩﺎ : ﺍﻣﺎﮞ ﺟﺎﻥ ﻣﯿﺮﮮ ﺑﮩﺎﺉ ﮐﻮﮔﺮﻣﯽ ﮨﯽ ﻧﮩﯿﮟ ﻟﮕﯽ
. ﻣﯿﮟ ﻧﮯ ﺍﯾﮏ ﺑﺎﺩﻝ ﮐﺎ ﭨﮑﺮﺍ ﺩﯾﮑﮩﺎ ﺟﻮ ﺍﻥ ﭘﺮ ﺳﺎﯾﮧ ﮐﮱ ﮨﻮﮰ ﺗﮩﺎ. ﺟﺐ ﯾﮧ ﭨﮩﺮ ﺟﺎﺗﮯ ﺗﮩﮯ ، ﻭﮦ ﺑﮩﯽ ﭨﮩﺮ ﺟﺎﺗﺎ ﺗﮩﺎ ﺍﻭﺭ ﺟﺐ ﯾﮧ ﭼﻠﻨﮯ ﻟﮕﺘﮯ، ﻭﮦ ﺑﮩﯽ ﭼﻠﻨﮯ ﻟﮕﺘﺎ ﺗﮩﺎ . ﺍﺱ ﺟﮕﮧ ﺗﮏ ﮨﻢ ﺍﺳﯽ ﻃﺮﺡ ﭘﮩﻨﭽﮯ ﮨﯿﮟ. ﮐﺬﺍ ﻓﯽ ﺍﻟﻤﻮﺍﮬﺐ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺽ .
অর্থাৎ হযরত হালিমা হুজুর সাঃ -কে সর্বদা নিজের কাছাকাছিই রাখতেন, দূরে কোথাও যেতে দিতেন না। একদিন তাঁর অজান্তে হুজুর সাঃ তাঁর দুধবোন শীমা’র সঙ্গে দ্বীপ্রহরের সময় বকরি চড়াতে মাঠের দিকে তাশরিফ নিয়ে গেলেন। হযরত হালিমা হুজুরের খোঁজে বের হলেন। খুঁজতে খুঁজতে যখন শীমা’র সঙ্গে হুজুর সাঃ-কে দেখতে পেলেন তখন তিনি তাঁকে বললেন: এত গরমের মধ্যে তাঁকে কেন এনেছ?
শীমা বলল আম্মা! “আমার এ ভাইয়ের কোনো প্রকার গরমই লাগে না; কারণ, আমি একটা মেঘের টুকরা দেখেছি যা তাঁর মাথার উপরে ছায়াপাত করেছে। যখন তিনি কোথাও স্থীর হতেন, তখন সেটিও স্থীর হয়ে যেত এবং পুনরায় যখন চলতেন তখন ঐ মেঘমালাও সঙ্গে সঙ্গে চলত। এভাবে আমরা এপর্যন্ত পৌঁছলাম।
পরিশেষে বলা যায় যে, দয়াল নবী সাঃ যখনে সূর্যের আলোকে কোথাও বের হতেন তখনি ঐ মেঘমালা দয়াল নবীর
সাঃ মাথার উপর সর্বদা ছায়াপাত করত। আর যখন তিনি কোথাও অপেক্ষা করতেন সে মেঘমালাও স্থীর অপেক্ষা করত। পুনরায় যখন তিনি চলতেন তখন ঐ এক খন্ড মেঘমালাও তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চলত। যার ফলে তাঁকে একদিকে রৌদ্রের তীব্র উষ্ণতা যেমন স্পর্শ করত না, অপরদিকে তেমনি তাঁর ছায়া মুবারকও কেউ দেখতে পেত না, কিংবা দেখার সুযোগ হত না। আর সে জন্য তাঁর প্রতি এরূপ বদগুমন (মন্দ ধারণা) রেখে আকিদা রাখা ঠিক হবেনা যে, বোধ হয় দয়াল নবীর ছায়া মুবারকই ছিল না! নাউযুবিল্লাহ।
√ খুব খেয়াল রাখতে হবে যে, দয়াল নবী একজন মানুষই ছিলেন। আর মানুষের ছায়া থাকবে এমনটাই স্বাভাবিক। ছায়া থাকা সত্তেও তাঁর ছায়া মাটিতে না পড়া কিংবা কাহারো দৃষ্টিগোচর না হওয়াই হল তাঁর বিশেষ একটি মুজিজা বা অলৌকিক।
উল্লেখ্য, ফেরেশতা এবং জ্বীন জাতির ছায়া নেই।
মজার ব্যাপার হল, কতিপয় সরলমনা লোকজন এ সমস্ত পয়েন্ট না বুঝেই আবেগে বশিভুত হয়ে বলে থাকে যে, “দয়াল নবীর ছায়া ছিল না।” -এ কথা বলিয়া তারা দয়াল নবী সাঃ-কে নিজেদের অজান্তেই ফেরেশতা এবং জ্বীন জাতির সমকক্ষ বানিয়ে পেলে। যা স্পষ্টই দয়াল নবীর সাঃ অবমাননার শামিল। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
লেখক, প্রিন্সিপাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন