বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

তাহিয়্যাতুল অজু ও তাহিয়্যাতুল মসজিদ কেবল জুমুআর দিন!

Mohiuddin Kasemi
তাহিয়্যাতুল অজু হল- যখনই অজু করা হয়, তখন দু’রাকাত নামায পড়া। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, তাহিয়্যাতুল মসজিদ কেবল জুমুআর দিনে পড়তে হয়। ধারণাটি ভুল।
একটি হাদিসে এসেছে : 
عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَا يَسْهُو فِيهِمَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
-হযরত যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাত নামায পড়ে, যে নামাযে কোনো ভুল হয় না- তাহলে তার যাপিত জীবনের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। [মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং-১৭০৫৪; সুনানে আবি দাউদ, হাদিস নং- ৯০৫।]

মাসআলা : অজু করার পর স্বাভাবিকভাবে অঙ্গ শুকানোর পূর্বেই তাহিয়্যাতুল অজু পড়তে হয়, এটাই হচ্ছে এর সময়।
দুখুলুল মসজিদ/তাহিয়্যাতুল মসজিদ
তাহিয়্যাতুল মসজিদ হল, মসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দু’রাকাত নামায পড়া। দুখুলুল মসজিদ ও তাহিয়্যাতুল মসজিদ- একই নামাযের দুই নাম। কেউ কেউ মনে করেন, কেবল জুমুআর দিলে এ নামায পড়তে হয়। তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। 
সহিহ বুখারি শরিফের একটি হাদিস : 
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ السَّلَمِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ
الكتاب : الجامع المسند الصحيح المختصر من أمور رسول الله صلى الله عليه وسلم وسننه وأيامه.
-হযরত কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে তার জন্য উচিত হল, বসার পূর্বে দু’রাকাত নামায পড়া। [বুখারি- ১/৬৩, হাদিস নং- ৪৪৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ১৬৮৭; সুনানে তিরমিযি, হাদিস নং- ৩১৬, ইমাম তিরমিযি হাদিসটি বর্ণনা করার পর বলেন : حديث حسن صحيح মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদিস নং- ২৭৫]

মাসআলা : যদি অল্পক্ষণের ভিতর বারবার মসজিদে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে একবারই তাহিয়্যাতুল মসজিদ যথেষ্ট।
মাসআলা : যদি কেউ মসজিদের অজুখানায় গিয়ে অজু করে এবং মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়্যাতুল অজু পড়ে, তবে এক্ষেত্রে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ার প্রয়োজন নেই।
মাসআলা : যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করার পরপরই সুন্নত নামায পড়তে শুরু করে কিংবা জামাতে শরিক হয়ে যায়, তাহলে তার তাহিয়্যাতুল মসজিদ সেই সুন্নত বা ফরজের মধ্যেই আদায় হয়ে যাবে। পৃথকভাবে পড়ার প্রয়োজন নেই।
.
আমার জানার বিষয় হল, জুমুআবারে খুতবার সময় মসজিদে প্রবেশ করলে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়তে হবে কিনা?
যদি পড়তে হয়, তাহলে খুতবা শুনাও তো ওয়াজিব।
ওয়াজিব রেখে নফল পড়া কি ঠিক?

আচ্ছা ঠিক আছে, যারা খুতবার সময় তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়াকে ওয়াজিব মনে করেন ও আমলও করেন, তারা কি সবসময় মসজিদে প্রবেশ করেই তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়েন?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন