আমাদের জীবনে সুবিধা-অসুবিধা থাকেই। বিপদাপদে সবর করে থাকাই ঈমানের দাবি। কিন্তু কেউ কেউ বিপদে পড়লে হা-হুতাশ শুরু করে দেয়। নিস্তার পাওয়ার জন্যে মৃত্যুকামনা করে বসে। মনে করে, মরে গেলেই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যাবে। মনে মনে চাইলেও, মুখে মুখে হলেও মওত কামনা করে। এটা এক ধরনের পলায়নপর মনোবৃত্তি।
لاَ يَتَمَنَّى أَحَدُكُمُ المَوْتَ إِمَّا مُحْسِنًا فَلَعَلَّهُ يَزْدَادُ، وَإِمَّا مُسِيئًا فَلَعَلَّهُ يَسْتَعْتِبُ...
তোমরা মৃত্যু কামনা করবে না। নেককার মানুষ হলে, সে বেঁচে থাকলে আরও বেশি নেককাজ করতে পারবে। বদকার হলে, পরে বদকাজ থেকে ফিরে আসার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না (বুখারী)।
-
অন্য হাদীসে মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে বলা হয়েছে। মৃত্যু কামনা করতে বলা হয়নি। বিশেষ করে বিপদে পড়লে। বেঁচে থাকলে একসময় বিপদ কেটে যাবে। সুদিন ফিরবে। আরও ভাল ভাল কাজ করা যাবে। আগে ভাল কাজ কম করা হয়ে থাকলে, ভবিষ্যতে তাওবার সুযোগ মিলতে পারে। আর মৃত্যু আল্লাহর আওতায়। সেটা নিয়ে বান্দার ব্যতিব্যস্ত হওয়া কাম্য নয়।
-
তারপরও মাঝেমধ্যে কিছু সময় আসে, টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। বাঁচামরা সমান হয়ে যায়। বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াকেই বেশি সহজ মনে হয়। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে? নবীজি সা.-এর সমাধান দিয়ে গেছেন:
لاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ المَوْتَ مِنْ ضُرٍّ أَصَابَهُ، فَإِنْ كَانَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً، فَلْيَقُلْ: اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الحَيَاةُ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الوَفَاةُ خَيْرًا لِي
তোমরা বিপদে পড়লে, মৃত্যু কামনা করবে না। যদি একান্তই এমন কিছু করতে হয়, তাহলে বেশির চেয়ে বেশি এটুকু বলতে পারো: হে আল্লাহ! যতদিন আমার বেঁচে থাকাটা কল্যাণকর, ততদিন আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন! আর যদি মুত্যই আমার জন্যে কল্যাণবহ হয়, তবে মৃত্যুই দিয়ে দিন (মুত্তাফাক)।
-
সাথে সাথে এটাও মনে রাখতে হবে: মৃত্যু কামনা করা কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থা নয়। মৃত্যুকামনা না করাই স্বাভাবিক প্রবণতা। মনকে এভাবেই গড়ে তুলতে হবে। বিপদ এলে আল্লাহর দিকে মনকে ফেরাতে হবে। সাহায্য চাইতে হবে! সবর করার তাওফীক কামনা করতে হবে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন