বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬

জাদু : ইসলাম কী বলে?

 মুহিউদ্দীন কাসেমী (হাফি:)

পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষের কল্যাণেই সবকিছুর নিয়মনীতি নির্ধারণ করেছেন। আগুন পোড়ানোর কাজে ব্যবহার হয়। পানি সবকিছু ভিজিয়ে দেয়, বাতাস গাছপালাকে দোলা দেয়, এগুলো আল্লাহরই নির্ধারিত নিয়মনীতি। এক্ষেত্রে কোনোকিছুর ব্যতিক্রম হলেই মানুষের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। যেমন- আগুন ছাড়াই কোনো কিছু পুড়তে দেখলে মনের ভেতর প্রশ্ন আসাই স্বাভাবিক। তখন পোড়ার কারণ নিয়েই তোলপাড় শুরু হয়। আল্লাহ আগুনকে পোড়ানোর গুণ ও ক্ষমতা দিলেও আগুন ছাড়াই কোনো কিছু পোড়ানোর একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু তিনিই।
সাধারণ নিয়মের বাইরে কিছু ঘটলেই তা অলৌকিক বিষয়। অলৌকিক বিষয় নবী-রাসুলদের থেকে প্রকাশ পেলে মোজেজা হয়। আর সাধারণ মুসলিম থেকে প্রকাশ পেলে কারামত হয়। এর বাইরে জাদুবিদ্যা ও ভেল্কিবাজির মাধ্যমেও অলৌকিক বিষয় ঘটানো সম্ভব। জাদুবিদ্যা, তন্ত্রমন্ত্র বা অন্য কোনো উপায়ে এসব করা হারাম। তাদের কাছে যাওয়া ও বিশ্বাস করাও হারাম। এগুলোতে লিপ্ত থাকলে ঈমানহারা হওয়া আশঙ্কা থাকে। তাই নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে এ বিষয়ে সতর্ক করে গেছেন।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : مَنْ أَتَى سَاحِرًا أَوْ كَاهِنًا أَوْ عَرَّافًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم.
অর্থ : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. হতে বর্ণিত, (তিনি রাসুল সা. থেকে নকল করে বলেছেন) : যে ব্যক্তি জাদুকর, জ্যোতিষ বা ভাগ্য গণনাকারী কাছে আসল এবং তার কথা বিশ্বাস করল, তাহলে সে মুহাম্মদের ওপর অবতীর্ণ দীনকে অস্বীকার কর। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদিস নং- ১৬৯৩৯)
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ ্র اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ. قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا هُنَّ قَالَ ্র الشِّرْكُ بِاللَّهِ وَالسِّحْرُ وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِى حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ وَأَكْلُ الرِّبَا وَالتَّوَلِّى يَوْمَ الزَّحْفِ وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلاَتِ الْمُؤْمِنَاتِ.
অর্থ : হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : সাতটি ধ্বংসাত্মক গোনাহ থেকে বিরত থাক। রাসুলকে জিজ্ঞেস করা হল সেগুলো কী? তিনি বললেন : আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা। জাদু করা। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা। এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা। সুদ খাওয়া। যুদ্ধ হতে পলায়ন করা এবং সাধাসিধে সতী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করা। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ৬৪৬৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৭২)
আমাদের দেশে জাদু শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পত্রিকায়. টেলিভিশনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়। প্রচার করা হয়, জাদু দ্বারা অসংখ্য সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। সবই মিথ্যা ও ধোঁকাবাজি। এসব প্রতারণা ও শরিয়তবিরোধী কাজ থেকে সমাজকে মুক্ত করা দরকার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন