বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭

'স্রটা যদি দয়ালুই হবেন তাহলে জাহান্নাম কেন? '


সৃষ্টিকর্তা যেমন পরম দয়ালু, ক্ষমাশীল, ঠিক তেমনি তিনি একজন ন্যায়বিচারকও। তিনি কারো সাথে বিন্দু পরিমানও অন্যায় হতে দেন না। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট রুলস তৈরি করে দিয়েছেন। এখন কিছু লোক এই রুলস ফলো করে যদি তার দেওয়া বিধান মতো জীবনযাপন করে, তাদের তিনি পুরুস্কার হিসেবে জান্নাত দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এখন একদল লোক নামাজ-কালাম পড়ে, মিথ্যে কথা বলে না, লোক ঠকায় না, চুরি রাহাজানি করে না, ...সুদ-ঘুষ খায় না, মানুষ খুন করে না, মোদ্দাকথা, সকল প্রকার অন্যায় থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখে কেবল স্রষ্টার সান্নিধ্যে লাভ এবং তাঁর প্রতিশ্রুত জান্নাতের জন্য।
অপরদিকে আরেকদল লোক এসব থোড়াই কেয়ার করে যদি ভোগ বিলাসে মেতে উঠে, সকল অন্যায় কাজ করে, স্রষ্টার অবাধ্য হয়, তাহলে স্রষ্টা যদি দয়াপরবশ হয়ে তাদের আগের দলের সাথে জান্নাতে পাঠিয়ে দেয়, তাহলে এটা কি ন্যায় হলো? প্রথম দলকে ঠকানো হলোই, সাথে কি পরের দলের সকল অন্যায় কি মনে নেওয়া হলো না? প্রশ্রয় দেওয়া হলো না? তুমি যেভাবে বিচারকের আসনে বসে ক্ষমতা পরও ঐ ৫ জনকে ক্ষমা করে দিতে পারো না কেবল ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য, স্রষ্টাও কি সেটা পারে না?'
দেবজিৎদা কিছু বললেন না। সাজিদ আবার বললো- 'এটা হলো স্রষ্টার ক্রাইটোরিয়া। তিনি যেমন পরম দয়ালু, ঠিক সেরকম ন্যায় বিচারকও।
আরেকটু পরিস্কার করি। ধরো, একজন বাবার দুটি সন্তান। দুই সন্তানের প্রথমজন দ্বিতীয়জনকে বিনা কারণেই ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো। যাকে ধাক্কা দিলো সে মাটিতে পড়ে খুব ব্যথা পেলো এবং চিৎকার করে কেঁদে উঠলো।
এখন বাবা এসে যদি প্রথমজনকে তার অন্যায়ের জন্য কোন শাস্তি না দেয়, তাহলে সেটা তার দ্বিতীয় সন্তান, যে নিষ্পাপ, তার প্রতি কি অন্যায় করা হবে না?
-'হু'- দেবজিৎদা বললেন।
- 'স্রষ্টা এরকম নন। এজন্যই তিনি জান্নাত আর জাহান্নাম দু'টোই তৈরি করে রেখেছেন। আমাদের কর্মফলই নির্ধারণ করে দেবে আমাদের গন্তব্যস্থল। এতে কোনো দুই নাম্বারি হবে না। কারো সাথে চুল পরিমানও অন্যায় হবে না। '
দেবজিৎদা বললেন - 'তা বুঝলাম। কিন্তু তিনি যেহেতু স্রষ্টা, তিনি আমাদের চেয়ে হাজার গুণ দয়ালু হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই তিনিই আবার আমাদের কর্ম পরিচালনা করছেন, আবার তিনিই আমাদের ধরে ধরে জাহান্নামে পাঠাচ্ছেন। ব্যাপারটা কেমন না সাজিদ? '
সাজিদ বললো- 'দাদা ' স্রষ্টা আমাদের একটা স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সাথে পাঠিয়েছেন একটা গাইডবুক। এখন এই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করেই আমরা সিদ্বান্ত নিই যে আমরা কি তাঁর দেখানো পথে চলবো, কি চলবো না। যদি চলি, আমরা জান্নাতে যাবো। যদি না চলি, আমরা জাহান্নামে যাবো। মোদ্দাকথা, আমরা কোথায় যাবো তা আমরাই নির্ধারণ করি আমাদের কর্মের মাধ্যমে। তবে দাদা, ব্যাপার হলো, আমাদের কর্মের ব্যাপারে উনি ওয়াকিবহাল। কারণ উনি সর্বজ্ঞাত। তিনি আলিমুল গায়েব। তাই, তিনি আগ থেকেই জানেন বলেই তা আমাদের ভাগ্যলিপি হিসেবে লিখে রেখেছেন। '
আরিফ আজাদ
চলবে.... ইনশাআল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন