Mohiuddin Kasemi
ওয়াজ-নহিসতের মধ্যে আরেকটি বড় খারাবি হল, হাদিস ও ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হয় না। অধিকাংশ বক্তারই খেয়াল থাকে কিভাবে শ্রোতাদের মন আকর্ষণ করা যাবে। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যে অনেক ওয়ায়েজ জাল হাদিস, ভিত্তিহীন রেওয়ায়াত, মিথ্যা ঘটনা কিংবা অনির্ভরযোগ্য ইসরাইলি রেওয়ায়াত ইত্যাদির আশ্রয় গ্রহণ করে।
কথা বলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা কাম্য। অনির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবের ঘটনা বা বিষয় পূর্ণ তাহকীক না করে বলা কোনোক্রমেই উচিত নয়। পূর্বসূরিগণ ওয়াজের ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতেন। ইমাম গাজালি রহ. বলেন :
ما ترى أكثر الوعاظ في هذا الزمان يواظبون عليه وهو القصص والأشعار والشطح والطامات أما القصص فهي بدعة وقد ورد نهي السلف عن الجلوس إلى القصاص وقالوا لم يكن ذلك في زمن رسول الله صلى الله عليه و سلم . حديث : لم تكن القصص في زمن رسول الله صلى الله عليه و سلم رواه ابن ماجه من حديث عمر بإسناد حسن . ولا في زمن أبي بكر ولا عمر رضي الله عنهما حتى ظهرت الفتنة وظهر القصاص وروى أن ابن عمر رضي الله عنهما خرج من المسجد فقال ما أخرجني إلا القاص ولولاه لما خرجت.
(এহইয়াউ উলুমুদ্দীন : খ. ১, পৃ. ৩৪)
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. বলেন :
أَكْذَبُ النَّاسِ الْقُصَّاصُ ، وَالسُّؤَالُ
অর্থ : মানুষের মাঝে সবচেয়ে বড় মিথ্যবাদী হল কাহিনীকার ওয়ায়েজ ও ভিক্ষাপ্রার্থী। (ইবনুল হাজ মালেকী রহ. রচিত আল-মাদখাল : পৃ. ২, পৃ. ১৪৬)
সুতরাং কোনো ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কোনো কাহিনী যদি মিথ্যার কালিমামুক্ত ও বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয় এবং তা কুরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়; উপরন্তু তা ঈমান ও আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে ও তা শিক্ষামূলক হয়, তাহলে এমন কাহিনী বর্ণনা করতে কোনো দোষ নেই। পবিত্র কুরআন ও হাদিসেও অনেক ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। হাসান বসরি, সাঈদ ইবনে যুবায়ের, উবায়েদ ইবনে উমায়ের, কাব আহবার, মুহাম্মদ ইবনে কাব আল-কুরাযি রহ. প্রমুখ তাবেয়ি ওয়াজ-নসিহতে ঘটনা বর্ণনা করতেন বলে জানা যায়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা : খ. ৬, পৃ. ১৯৫)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন