মুহিউদ্দীন কাসেমী (হাফি:)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মলাভের সময় পৃথিবীতে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়; তন্মধ্যে একটি ছিল :
وخمدت النار التي يعبدها المجوس
অগ্নি উপাসকরা যে আগুনকে পূজা করত তা নির্বাপিত হয়ে যায়। (আর-রাহীকুল মাখতুম : পৃ. ৩৫)
এর দ্বারা স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে যে, দীর্ঘদিন ধরে অগ্নিকে অবিরত প্রজ্জ্বলিত রেখে পূজা করা অগ্নি উপাসকদেরই কাজ। মহান আল্লাহকে বাদ দিয়ে আগুনের সাথে এই আচরণ মূলত শিরকের দিকেই মানুষকে নিয়ে যাচ্ছে। শিরকের মূল উৎপাটন করে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্যেই রাসুলকে এ ধরাধামে প্রেরণ করা হয়েছে। তাই তাঁর জন্মের বার্তাস্বরূপ হাজার বছরে ধরে প্রজ্বলিত আগুন নিভিয়ে ইঙ্গিত করা হয় যে, তিনি আগুনের পূজার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করবেন। বস্তুপূজার পরিবর্তে আল্লাহর পূজা (ইবাদত) চালু করবেন।
শিখা চিরন্তন শিখা অনির্বাণ নামে যে অগ্নি-সংস্কৃতির উদ্ভব হয়েছে, তা মূলত অগ্নি-উপাসকদের পক্ষ থেকে আগুনের প্রতি যে আচরণ করা হতো, তারই আপডেট ভার্সন; হুবহু একই জিনিসের ভিন্ন নাম। উল্লেখ্য যে, ‘চিরন্তন’ শব্দটিও শুধুমাত্র মহান আল্লাহর ক্ষেত্রেই ব্যবহার হতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে মহান আল্লাহই চিরন্তন, অন্যকিছু কখনো চিরন্তন নয়। ইরশাদ হচ্ছে :
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ (২৬) وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
অর্থ : পৃথিবীর প্রতিটি জিনিসই ধ্বংসশীল এবং শুধুমাত্র তোমার মহিমাময় মহানুভব রবের সত্তাই অবশিষ্ট থাকবে। (সূরা আর-রাহমান : ২৬, ২৭)
আল্লাহর জন্য নির্ধারিত কোনো গুণকে তাঁরই সৃষ্ট কোনো কিছুর সঙ্গে গুণান্বিত করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। সেই প্রেক্ষিতে অগ্নিশিখাকে চিরন্তন নামকরণও প্রকাশ্য শিরক। সন্ধ্যাবাতি জ্বালানো, জন্মদিন উদযাপনে মোমবাতির আগুন, বিয়ের হলুদেও বাতির ব্যবহার, কবর-দরগাহ-মাজার প্রভৃতি স্থানে আগুন বা মোমবাতি জ্বালানো, এগুলো বিদআত ও হারাম হওয়ার সাথে সাথে শিরকের দিকে মানুষদের পরিচালিত করছে। কোনো কোনো জায়গায় মৃত ব্যক্তির গোসলের স্থানেও রাত্রিতে দীর্ঘদিন বাতি জ্বালিয়ে রাখাও এই অপসংস্কৃতিরই অন্তর্ভুক্ত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন