মুহিউদ্দীন কাসেমী (হাফি:)
আমাদের সমাজে অদ্ভুৎ অদ্ভুৎ কসম প্রচলিত। কেউ মায়ের নামে, বাপের নামে, মসজিদের নামে, কুরআনের নামে, মাটির নামে-- বিভিন্ন বস্তুর নামে কসম করে। অথচ আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করা বা শপথ করা হারাম। সাধারণত মানুষ যাকে অলৌকিক ক্ষমতা ও পরম পবিত্র সত্তা বলে বিশ্বাস করে তার নামে মিথ্যা বলতে সম্মত হয় না। কারণ, সে মনে করে, তার নামে মিথ্যা বললে তার আক্রোশ ও অভিশাপ তার ওপর পতিত হবে। তাই প্রাচীনকাল থেকে সকল ধর্মের মানুষই নিজ নিজ বিশ্বাস মোতাবেক এমন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারীর নামে কসম করে আসছে।
একজন মুমিন আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করতে পারে না। কারণ, মুমিনের আকিদা হচ্ছে, সকল ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ তাআলা।
সুতরাং ইসলামি শরিয়ার নির্দেশ হচ্ছে, কসম করার প্রয়োজন হলে কেবল আল্লাহ তাআলার নামে কসম করবে। অন্য কারো নামে কসম করা যাবে না। হারাম। না কোনো নবী-রাসুলের নামে, না পিতা-মাতার নামে, না পীর-মাশায়েখের নামে, না কোনো বস্তুর নামে। কুরআনের নামেও না। কুরআন মাথায় নিয়েও না। কোনোকিছুর নামেই না।
একটি হাদিসে এসেছে, একবার হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. নিজ পিতার নামে কসম করলেন। তখন রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :
أَلاَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ فَمَنْ كَانَ حَالِفًا فَلْيَحْلِفْ بِاللَّهِ أَوْ لِيَصْمُتْ.
অর্থ : স্মরণ রেখো, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতার নামে কসম করতে বারণ করেছেন। কারো কসম করার প্রয়োজন হলে আল্লাহর নামে কসম করবে। অন্যথায় চুপ থাকবে। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ২৫৩৩, অধ্যায় : باب كيف يستحلف]
সাদ ইবনে উবাদা রা. হতে বর্ণিত, একবার আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. একব্যক্তিকে لاَ وَالْكَعْبَةِ বলে কসম করতে শুনলেন। তখন ইবনে উমর রা. তাকে বললেন, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কারো নামে কসম করো না। কারণ, আমি রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি :
مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ أَشْرَكَ
অর্থ : যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করল, সে যেন শিরক করল। [সুনানে তিরমিয, হাদিস নং- ১৫৩৫, অধ্যায় : باب ما جاء في كراهية الحلف بغير الله; সুনানে আবী দাউদ, হাদিস নং- ৩২৫৩, অধ্যায় : باب فِى كَرَاهِيَةِ الْحَلِفِ بِالآبَاءِ]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন