বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫

শোন তরুণী তোমাকে বলছি : মুহা. ইউসুফ আহমাদ

কাযী শুরাইহ ইবনে হারিস আল-কিন্দী রহ. ইসলামী বিচারব্যবস্থায় অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব। তাঁকে ইসলামের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারপতি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তিনি সাহাবী ছিলেন না তারপরও খলিফা উমর রাদিআল্লাহু আনহু উনাকে কুফার প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সাহাবাদের সে সময়ের প্রেক্ষাপটে একজন তাবেঈর এমন একটি পদ প্রাপ্তি বিরল গঠনা। তার যোগ্যতার এটাই প্রধান প্রমাণ। তার এই নিয়োগ হয়েছিল এক বিচারিক বিচক্ষণতার পথ ধরে। খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব একদিন কোনো এক বেদুইনের কাছ থেকে নগদমূল্যে একটি ঘোড়া খরিদ করেন।
ঘোড়ায় চড়ে কিছুদূর যেতেই তিনি দেখলেন, ঘোড়াটি খোঁড়াচ্ছে। তিনি ফিরে এলেন। বিক্রেতাকে বললেন, ভাই, তোমার ঘোড়াতো দৌঁড়াতে পারে না, তুমি ফিরিয়ে নিয়ে আমার টাকাগুলো ফেরত দাও। লোকটি বলল, ‘আমিরুল মুমিনীন, আমি তো এখন এ ঘোড়া ফিরিয়ে নেব না। আমি আপনার কাছে ভালো অবস্থায় ঘোড়া বিক্রি করলাম, আর আপনি অসুস্থ অবস্থায় ফেরত দেবেন, তা তো হয় না।’ উমর রা. বললেন, নেব না বললেই তো আর হলো না। আমি এই খোঁড়া ঘোড়া দিয়ে কী করব? তাহলে চলো, আমরা কারো মধ্যস্থতায় বিষয়টির মীমাংসা করে নিই।  বেদুইন বলল, ‘তাহলে চলুন কাজী শুরাইহ এর কাছেই যাওয়া যাক।’ দুজন গেলেন তাঁর কাছে। কাজি দুজনের বক্তব্য শুনলেন। তারপর ওমর রা. কে বললেন, আমীরুল মুমিনীন আপনি কি ঘোড়াটিকে সবল ও সুস্থ অবস্থায় কিনেছিলেন? ওমর রা. বললেন, জি হ্যাঁ। ন্যায়পরায়ণতার মূর্তপ্রতীক কাযী শুরাইহ ঘোষণা করলেন, হে আমীরুল মুমিনীন!
আপনি যা ক্রয় করেছেন তা গ্রহণ করে সন্তুষ্ট হোন অথবা যে অবস্থায় ঘোড়াটিকে গ্রহণ করেছিলেন সে অবস্থায় ফেরত প্রদান করুন। খলীফা মুগ্ধ দৃষ্টিতে কাযী শুরাইহের দিকে তাকিয়ে বললেন, হ্যাঁ! এটাই তো ন্যায়বিচার। হে কাজী! আপনি কুফায় গমন করুন। আমি আপনাকে কুফার প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দান করলাম। সেই থেকে বিরতিহীন ষাট বছর কাযী শুরাইহ রহ. বিচারক পদে আসীন ছিলেন। তিনি একাধারে ওমর রা. ওসমান রা. আলী রা. ও মু‘আবিয়া রা.-এর শাসনামলে বিচারপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ৬০ বছর যাবৎ বিচারকার্য পরিচালনার পর ৭৮ হিজরী সনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।  আলী রা. তখন মুসলিম জাহানের খলিফা। একদিন তিনি দেখলেন মদিনার বাজারে এক ইহুদি তার সেই লৌহবর্মটি বিক্রির জন্য এনেছে, যেটি তিনি সিফ্ফিনের যুদ্ধের সময় হারিয়ে ফেলেছিলেন।
তিনি এগিয়ে গিয়ে বললেন, এ যে আমার বর্ম, এটি তুমি কোথায় পেলে? ইহুদি বলল, এটি তো আমারই, আমার দখলেই রয়েছে। আলী রা. বললেন, তা কী করে হয়! এটি আমার বর্ম, আমি কোনো দিন বিক্রিও করিনি, কাউকে দানও করিনি। তাহলে তোমার কিভাবে হলো?
শেষ পর্যন্ত মোকদ্দমা উঠল কাজি শুরাইহর এজলাসে। ইহুদি লোকটির একই দাবি, বর্ম আমার, আমার দখলেই সেটা আছে। কাজি আলীর বক্তব্য শুনতে চাইলে তিনি বললেন, আমি দীর্ঘদিন এটি ব্যবহার করেছি, কিছু বিশেষ চিহ্ন দেখে আমি চিনতে পারছি এটি আমার। কাজি বললেন, আমিরুল মুমিনীন, আমার দৃঢ়বিশ্বাস, এটি আপনারই, কিন্তু আপনি আপনার বক্তব্যের স্বপক্ষে সাক্ষী হাজির করুন। আলী রা. বললেন, আমার ছেলে হাসান ও ক্রীতদাস কাম্বল সাক্ষী দেবে। কাজি বললেন, কিন্তু পিতার পক্ষে ছেলের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। আলী রা. আর কোন বক্তব্যই গ্রহণ না করে কাজি ইহুদির পক্ষে রায় প্রদান করলেন।
আলী ফয়সালা মেনে নিলেন। পরে ইহুদি লোকটি ইসলামী ন্যায়বিচারের মহত্ত্ব দেখে নিজের মিথ্যা স্বীকার করে ইসলাম গ্রহণ করে হযরত আলী রা. কে বর্মটি ফিরিয়ে দিলেন। হযরত আলী রা. সেটি তাকে উপহার হিসেবে ফেরত দিলেন। [ইবনে কাসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া]
বিখ্যাত তাবেঈ ইমাম শাবী রহ. কাযী শুরাইহ রহ. -এর বন্ধু ছিলেন। একবার ইমাম শাবী কাযী শুরাইহ রহ. -এর নিকট গেলে তিনি বন্ধুকে পরামর্শ দিলেন, শাবী! তুমি বনু তামীম গোত্রের রমণী বিবাহ কর। কেননা আমি তাদেরকে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমতি দেখেছি। শাবী জানতে চাইলেন: এটা কিভাবে? শুরাইহ বললেন: আমি এক দুপুরে জনৈক” ব্যক্তির জানাযা শেষে এক বাড়ীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। বাড়ীর দরজায় দেখলাম এক বৃদ্ধা ও তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক বালিকা। মেয়েটি ছিল অতি সুন্দরী। এটা দেখে আমি তাদের দিকে এগিয়ে গেলাম এবং পানি পান করতে চাইলাম। বৃদ্ধা বললেন: কোন ধরনের পানীয়। আমি বললাম: সহজলভ্য যে কোন পানীয়। বৃদ্ধা মেয়েটিকে বললেন: একে দুধ পান করাও। আমি বৃদ্ধাকে প্রশ্ন করলাম: মেয়েটি কে? তিনি বললেন: তার নাম যয়নাব বিনতে জারীর। হানযালা পরিবারের এক মেয়ে। আমি বললাম: বিবাহিতা না কুমারী?
তিনি বললেন: কুমারী।
আমি বললাম: তার সাথে আমার বিবাহের ব্যবস্থা করে দিন।
তিনি বললেন: তুমি যদি তার যোগ্য হও তবে হতে পারে। আমি একথা শুনে ঘরে ফিরলাম। যোহর আদায় করে আমার বন্ধু সম্মানিত ক্বারী সাহেবদের সাথে নিলাম। তাদের মধ্যে আলকামা, আসওয়াদ, মুসাইয়্যেব ও মূসা বিন আরফাতা রহ. প্রমুখ ছিলেন। আমরা মেয়েটির চাচার নিকট পৌঁছলাম। কুশল বিনিময়ের পর আমি বললাম: আপনার ভাতিজী যায়নাবকে বিবাহ করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। তিনি জবাবে বললেন: সেও আপনার ব্যাপারে অনাগ্রহী নয়।
তারপর তিনি তার সাথে আমার বিবাহ  দিয়ে দিলেন। বিবাহের পর তামীম গোত্রের মেয়েদের অন্তরের রূঢ়তার কথা আমার মনে পরলো। তখন চিন্তা করলাম, যা হওয়ার হয়েছে। যদি মর্জিমত চলে তবে ভাল, নতুবা পথতো খোলাই রয়েছে। তারপর তামীম গোত্রের মেয়েরা তাকে আমার কামড়ায় প্রবেশ করিয়ে দিল। আমি বাসর ঘরে প্রবেশ করে দেখলাম আমার ¯্রী অপূর্ব সুন্দরী। বয়স ১৮/১৯ হবে যৌবন জোয়ার কানায় কানায় ভরা। শিশিরে নাওয়া ফুটন্ত গোলাপের মতো চেহারা। অর্ধফোঁটা রাঙা কুসুমের মতো তার পাতলা ঠোঁটে আঁধার রাতে বিদ্যুত চমকানোর মতো হাসি। কপাল জুড়ে আচরে পরে আছে লতার মতো সোনালী চুল। কাজল কালো চোখ দেখে মনে হয় যেন মায়াবী হরিণীর নিকট থেকে চোখ দুটি ধার এনেছে। আমি মনে মনে ভাবলাম, এটি কোন মানবী না বেহেশতের হূর। যাই হোক কল্পনাতীত সুন্দরী  স্ত্রী পেয়ে শুকরিয়া স্বরূপ সুন্নাত অনুযায়ী আমি দুই রাকাত সালাত আদায় করলাম।
সালাম ফিরিয়ে দেখলাম, সেও আমার পিছনে সালাত আদায় করেছে। অতপর আমি তার নিকটবর্তী হলাম ও তার দিকে
হাত বাড়ালাম; কিন্তু সে আমাকে বাধা দিয়ে বলল- জনাব একটু থামুন। প্রশান্তি ও ধৈর্যের সাথে নিজ স্থানে অবস্থান করুন। আমি তো আপনারই। তারপর বলল, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য নিবেদিত। আমি তাঁর প্রশংসা করছি এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। দরুদ ও সালাম পেশ করছি মুহাম্মদ সা. ও তাঁর পরিবারের প্রতি। হে আমার জান! নিঃসন্দেহে আমি আপনার নিকট একজন অপরিচিত অবলা নারী। আমি আপনার আচরণ, অভ্যাস ও রীতি-নীতি সম্পর্কে অবগত নই। দয়া করে বলুন আপনি আমার কাছে কেমন আচরণ প্রত্যাশা করেন। যাতে করে আমি আপনার পছন্দমতো চলতে পারি। আর আপনি যা অপছন্দ করেন তা থেকে বিরত থাকতে পারি। সে আরো বললো: সন্দেহ নেই যে আপনার গোত্রে আপনার উপযুক্ত মেয়ে ছিল। আর আমার গোত্রেও আমার জন্য উপযুক্ত পুরুষ ছিল। কিন্তু আল্লাহ যা ফায়সালা রেখেছিলেন তাই হয়েছে। আল্লাহর যা নির্দেশ হয় মানুষ সেটাই করে। অতএব আপনি যার মালিক হয়েছেন তার সাথে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক আচরণ করবেন। অর্থাৎ সৎভাবে জীবন পরিচালনা করা অথবা ভালভাবে পৃথক করে দেয়া। আমার কথা এটুকুই। আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য ও আমার জন্য মাগফিরাত কামনা করছি।
শুরাইহ বললেন: শাবী! তার এই কথা শুনে আমিও একটি বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করলাম।
আমি হামদ ও দরূদ-সালামের পর বললাম: নিঃসন্দেহে তুমি এমন কিছু কথা বলেছ যদি তুমি তার উপর দৃঢ়পদ থাক তবে উপকৃত হবে। কিন্তু যদি এর বিপরীত হয় তবে এগুলো তোমার বিপক্ষে দলীল হবে। আমি অমুক অমুক জিনিস, কথা, কাজ ও খাদ্যকে পছন্দ করি। আর অমুক অমুক জিনিস, কথা, কাজ ও খাদ্যকে অপছন্দ করি। আমরা দুজন একই সূত্রে গাঁথা। তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না। ভাল কিছু দেখলে তা প্রচার করবে। আর মন্দ কিছু দেখলে তা গোপন করবে।
সে বলল: আরো কিছু কথা ছিল যা বলা হয়নি। আমার পরিবারের লোকদের বেড়াতে আসা আপনি কি পছন্দ করবেন?
আমি বললাম: আমি চাই না যে আমার শশুরবাড়ীর লোকেরা আমার পেরেশানী ও ক্লান্তির কারণ হোক।
সে বলল: আপনার কোন কোন প্রতিবেশীদের আপনি পছন্দ করেন আর কাদের আপনি অপছন্দ করেন আমাকে বলুন, সুতরাং সে অনুযায়ী আমিও পছন্দ ও অপছন্দ করবো।  আমি তাকে আমার প্রতিবেশীদের সম্পর্কে বলে দিলাম।
শুরাইহ বললেন: শাবী! আমি তার সাথে একটি রাত আনন্দের সাগরে ভেসে কাটালাম। তিন দিন তার সাথে থেকে তারপর কাজে গেলাম। এরপর থেকে এমন কোন দিন পাইনি যে দিনটা আমার কাছে আগের দিনের চেয়ে উত্তম ছিল না। এভাবে এক বছর অতিবাহিত হলো। এর মধ্যে আমার অপছন্দনীয় কোন কিছু আমি তার মধ্যে পাই নি।
একদিন আমি বাড়ি ফিরে দেখি এক ভদ্রমহিলা গৃহে তদারকি করছে। আমি জানতে চাইলাম ইনি কে? উত্তর পেলাম, আপনার শাশুড়ী। আমি উনাকে দেখে আনন্দিত হলাম। তিনি আমার নিকট এলেন এবং বললেন: আস্সালামু আলাইকুম আবু উমাইয়া। আমি সালামের জবাব দিয়ে বললাম: আল্লাহ আপনাকে আমাদের আরো নিকটবর্তী করে দিন।
তিনি আমার নিকট জানতে চাইলেন: আপনার স্ত্রীকে কেমন পেলেন?
আমি বললাম: আলহামদুলিল্লাহ, আমি তাকে অত্যন্ত উত্তম স্ত্রীরূপে পেয়েছি। তাকে পেয়েছি জীবনের উত্তম সংগীনী হিসেবে। তিনি আমাকে বললেন: আবু উমাইয়া! কোন নারী শুধুমাত্র দু’টি অবস্থায় বাঁকা হয়। (১) পুত্রসন্তান প্রসব করলে। (২) অতিরিক্ত স্বামী সোহাগ লাভ করলে।
কোন কিছু আপনার অপছন্দনীয় হলে লাঠি ব্যবহার করবেন। আল্লাহর শপথ, পুরুষেরা খারাপ নারীর চাইতে নিকৃষ্ট কোন জিনিস গৃহে রাখে না। আমি বললাম: আল্লাহর শপথ, আপনিতো তাকে শ্রেষ্ঠ আচরণ ও উত্তম ভদ্রতা শিখিয়েছেন।
তিনি জানতে চাইলেন: আপনার শশুড় বাড়ীর লোকেরা আপনাদের কাছে বেড়াতে আসুক, আপনি কি তা পছন্দ করবেন?
উত্তর দিলাম: তারা যখন চাইবেন। তারপর থেকে তিনি প্রতি বছর একবার আমার গৃহে আসতেন এবং আমাকে একইরূপ নসীহত করতেন। আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমি ২০ বছর সংসার করছি, এর মাঝে অপ্রিতিকর কোন কিছু আমি তার কাছ থেকে পাইনি। তার কাছ থেকে আমি কখনও এমন কিছু পাইনি, যা আমার ক্রোধের কারণ হয়। ফলে আমি সর্বদাই তার উপর খুশি থাকতে পেরেছি। শুধুমাত্র একদিন আমি তার উপর রাগান্বিত হয়েছিলাম। তবে, সেদিনকার পরিস্থিতির জন্য আমিই দোষী ছিলাম; বরং, আমিই তার উপর জুলুম করেছিলাম। বাস্তবে তার কোন দোষ ছিল না।
ঘঠনাটা এরূপ: একদিন ঘরে আমি ফজরের সুন্নাত আদায় করলাম। মুয়াজ্জিনের একামত আমি শুনতে পেলাম। আমি ছিলাম ইমাম। এমন সময় একটি বিষধর বিচ্ছু আমি ঘরে দেখলাম। আমি বিচ্ছুটিকে একটি পাত্র দিয়ে ঢেকে আমার স্ত্রীকে একথা বলতে বলতে মসজিদের দিকে দাবিত হলাম যে, যায়নাব! আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না।
এইফাঁকে বিচ্ছুটি বের হয়ে তাকে দংশন করলো কিন্তু সে আমার নির্দেশ লংঘন করে সে স্থান ত্যাগ করলো না। আমি এসে এরূপ দেখে তার উপর রাগ করলাম, কেন সে সে স্থান ত্যাগ করলো না। সে ছিল স্বামীর আদেশের আনুগত্যকারী অথচ আমি তাকে এই আদেশ দিয়ে কত বড় ভুলইনা করেছিলাম। [ত্বাবায়েউন নেসা, ইবনু আবদে রাব্বেহী আন্দালুসী, পৃষ্ঠা: ৪৪-৪৬]
হে তরুণী, শোনলে তো তোমারই মতো  অন্য এক মহয়সী তরুণীর হৃদয় ছোঁয়া গল্প! আমি চাই তুমিও এমন হও। তাই শোন তরুণী তোমাকে বলছি, তুমি যখন স্বামীর ঘরে আগমন করবে, তখন তোমার জন্য করণীয় হল মধুর ব্যবহার করে স্বামীকে চরম তৃপ্তি দান করা। তোমার উঠা-বসা, চলাফেরা, হাসি-কান্না, মান-অভিমান সবই যেন তার মর্জি মোয়াফেক হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। স্বামীর ‘হ্যাঁ’ তে হ্যাঁ এবং ‘না’ তে ‘না’ এই নীতির উপর চলা এবং দু’চার দিনের মধ্যেই স্বামীর নিকট থেকে তার পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া এবং সে অনুযায়ী জীবন যাপন করা। অবশ্য স্বামীর পছন্দরে বিষয়টি যেন শরীয়ত বিরোধী না হয় সেদিকে সচেতন থাকতে হবে। আরেকটি কথা মনে রাখবে, তুমি নারী, তুমি সুন্দর, তুমি স্নীগ্ধ, বিধাতা অপরূপ মাধুর্য্যে তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমার চোখে আছে বিষ্ময়ের ফুল ঝুড়ি, তোমার চলনে বলনে কাজে-কর্মে রয়েছে মায়া-মমতা। তোমার বুকে আছে ভালবাসার জলে ভাসা পদ্মা, শিশিরে ভেজা গোলাপ। তোমাকে দিয়েই পৃথিবী এত সুন্দর এত মায়াময়। তাই তোমার মায়া ও ভালবাসা দিয়ে সবার মনকে জয় করতে হবে তবেই তুমি বিজয়নী হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন