বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫

এক বীরাঙনা মহিলার গল্প..

বীরাঙনা…
হ্যাঁ বীরাঙনা।
যিনি অনেক দিক থেকেই সম্মানীতা মহিলা। যিনি ছিলেন হযরত আরাবী(সা.) এর ফুফু। ছিলেন হযরত আব্বাস ও হামযা (রা.) এর বোন।
যার ছেলে ও স্বামী ছিলেন রাসুল(সা.)এর সাহাবা। তিনি আর কেউ নয়। তিনি হলেন হযরত সাফিয়্যা(রা.)।
হযরত সাফিয়্যা(রা.) অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন মহিলা হওয়া সত্বেও। কখনো তিনি পিছ পা হননি। যিনি নিজের স্বামী ও ছেলে  ইসলামের জন্যে শহীদ হওয়ার পরেও ভেঙে পরেননি বরং নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেছেন। নিজেকে শহীদের স্ত্রী ও শহীদের মা মনে করে আত্মগর্ভ প্রকাশ করেছেন।
হা আজ এমন একজন সাহসিনী মহিলা সাহাবি (রা.)এর একটি ছোট্ট ঘটনা নিয়ে উপস্থিত হলাম। লিখলাম নিজের ভাষায়।
খন্দকের যুদ্ধ।
মক্কার কুরাইশ কাফেররা দশ হাজার সৈন্য নিয়ে প্রস্তুত রাসুল(সা.)ও তার সংগীদের উপর হামলা করার জন্যে।
রাসুল(সা.)তিন হাজার সাহাবিদের নিয়ে খন্দক খনন করার কাজে ব্যস্ত।
এ যুদ্ধেও  হযরত সাফিয়্যা(রা.) ও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু রাসুল(সা.) সকল মহিলাদেরকে হযরত হাসান ইবনে সাবেত(রা.)এর কেল্লার ভিতর থাকার আদেশ দিলেন। অনিচ্ছা সত্বেও সাফিয়্যা(রা.) কেল্লায় চলে গেলেন।
অন্যদিকে মদিনার ইহুদীরা ছিলো মক্কার কুরাইশ কাফেরদের মিত্র। তারাও মুসলমাদের পরাজয়ের জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করছিলো। ইহুদীরা কাফেরদের মত সামনা সামনি কিছু করতে পারছিলোনা তাই গোপনে গোপনে চেষ্টা করছিলো।
রাসুল(সা.) হযরত হাসান ইবনে সাবেত(রা.) এর কেল্লায় সকল মহিলাদের থাকতে বলে হাসান (রা.) কে তাদের পাহারায় নিযুক্ত করলেন।
হাসান(রা.) যদিও তরবারি চালাতে পারতেন না তবে তিনি কবি হিসেবে খুব পাকা ছিলেন। তার সাথে কথায় পারা মুশকিল ছিলো।
অন্যদিকে ইহুদিরা পরামর্শ করে একজন ইহুদীকে কেল্লার নিকট পাঠালেন তাদের এখানে কোন পুরুষ মানুষ আছে কিনা জানতে? ইহুদী এখানে এসে কেল্লার আশে পাশে ঘুর ঘুর করে তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।
হযরত সাফিয়্যা(রা.) ইহুদীকে দেখলেন এবং তার সম্পর্কে হাসান(রা.) কে জানালেন। কিন্তু হাসান(রা.) তাকে হত্যা করতে সংকোচবোধ করতে লাগলেন। সাফিয়্যা(রা.) তখন নিজেই মুগুর নিয়ে কেল্লার দরজার নিকট লুকিয়ে রইলেন। কিচ্ছুক্ষণ পর যখন ঐ ইহুদী ভিতরের অবস্থা জানার জন্যে মাথা ভিতরে এনে উকি দিলো ওমনি সাফিয়্যা(রা.) মুগুর দিয়ে মারলেন তার মাথায়। জ্ঞান হাড়িয়ে মাটিতে পরে গেলো। তিনি আবার তার মাথায় আঘাত করলেন। অতঃপর একটি তরবারি এনে ওর দেহ থেকে মাথাটি কে আলাদা করে মাথাটি হাতে করে নিয়ে এলো কেল্লার ভিতরে। তারপর কেল্লার দেয়ালের নিকট এসে মাথাটিকে দেয়ালের এপাশ থেকে ওপাশে ইহুদীদের শিবিরে ছুরে মারলো। ইহুদীরা ভয়ে এই স্থান ছেড়ে পালালো।
খন্দক যুদ্ধে মুসলমাদের বিজয়ের পর যখন রাসুল(সা.) এই ঘটনা শুনলেন তখন খুশীতে এই পরিমাণ হেসে ছিলেন যে,রাসুল(সা.)এর দাত দেখা গিয়ে ছিলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন