শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৫

ইসলামী শরিয়তের চার দলীল

(১) আল্লাহর কি 'তাব কুরআন। (২) রাসূলের সুন্নাহ বা হাদীস, (৩) উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমত, (৪) মুজতাহিদ ইমামগণের কিয়াস। এখানে হাদীস মানার অজুহাতে যারা মুজতাহিদ ইমামগণের কিয়াস বা মাযহাব মানাকে অস্বীকার করে, তারা একটা বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন উত্থাপন করে থাকে যে, হাদীস শরীফে কুরআন সুন্নাহকে আঁকড়ে থাকলেই বিপথগামী হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কাজেই যারা কুরআন সুন্নাহ ছেড়ে চার ইমামের মাযহাবকে আঁকড়ে ধরেছেন, তাদেরকে বিপথগামী বলা যাবেনা কেন??? এ প্রশ্নের দ্বারা অত্যন্ত চাতুরীর মাধ্যমে কয়েকটা সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। প্রথমতঃ পবিত্র কুরআন সুন্নাহকে ছেড়ে কোন মুজতাহিদ ইমামের মাযহাব বা মত ও পথ অবলম্বন করার প্রশ্নই আসে না। কারণ কোন মুজতাহিদ ইমামের নিজস্ব কোন মত বা পথই নাই পবিত্র কুরআন সুন্নার অনুসরণ ছাড়া। তবে অগনিত রহস্যের কারণে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল পবিত্র কুরআন সুন্নায় অনেক বিষয়ের সমাধান সুষ্পষ্ট ভাষায়, ব্যাখ্যাসহ ও অকাট্যভাবে দেননি। তাই যে সব বিষয়ের সমাধান কুরআন সুন্নায় খুজে পাওয়া যায়না। অথবা খুজে পাওয়া যায়, কিন্তু সুষ্পষ্ট মর্ম উদ্ধার হয় না। অথবা সুষ্পষ্ট মর্ম উদ্ধার হয় কিন্তু কথাও একরকম সমাধান আবার কোথাও অন্যরকম সমাধান পাওয়া যায়।
এ তিনটি ক্ষেত্রে স্বয়ং কুরআন সুন্নায়ই ইজতিহাদ বা বিশেষ গবেষনার মাধ্যমে সুষ্পষ্ট সমাধান বের করার দায়িত্ব মুজতাহিদ গণের হাতে অর্পন করা হয়েছে। (দ্রষ্টব্যঃ আল কালামুল মুফীদ ফী ইসবাবিত তাকলিদঃ আল্লামা সরফরাজ খান) যেমন পবিত্র কুরআনের সূরায়ে নিসা এর ৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন হে ঈমানদার গণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও তার রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলুল আমর তাঁদের। এখানে উলুল আমর কথার দুটি ব্যাখ্যা রয়েছে। একটি হল ইসলামী রাষ্ট্রের শাসকবর্গ, আরেকটি হল ফেকাহবিদ বা মুজতাহিদগণ। উক্ত আয়াতে আল্লাহ ইসলামী শরিয়তের পূর্বোল্লিখিত চার দলীল সনাক্ত করে দিয়েছেন। যথাঃ কোরআন সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস। (দ্রষ্টব্যঃ) তাফসীরে কাবীরঃ ইমাম ফখরুদ্দিন রায়ী রঃ) সুতরাং যে সব বিষয়ে পবিত্র কুরআন সুন্নায় সুষ্পষ্ট সমাধান পাওয়া যায় না, সেসব বিষয়ে মুজতাহিদ ইমামগণের বিশেষিত সমাধান মানাই তো কুরআনের নির্দেশ। কাজেই কুরআন সুন্নাহ ছেড়ে মুজতাহিদ ইমামগণের মাযহাব মানা হল কথায়???????? বরং পবিত্র কুরআনের নির্দেশ মতেইতো তাঁদের অনুসরণ করা হল।
অনুরূপভাবে হাদীস শরীফেও এক্ষেত্রে মুজতাহিদগণের মতামতের অনুসরণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। (দ্রষ্টব্যঃ তিরমিযি ও আবু দাউদ শরীফ) কাজেই বিশেষ ক্ষেত্রে মুজতাহিদ ইমামগণের মত ও পথ বা মাযহাব মানাইতো কুরআন সুন্নাহর নির্দেশ। তাই মাযহাব মানলে কুরআন সুন্নাহর অমান্য নয়, বরং মাযহাব না মানলেইতো কুরআন সুন্নাহর অমান্য হয়।
আল্লাহ আমাদের সবায় কে সঠিক ভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন