শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫

অর্থের প্রলোভনে নারীর ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি : সৈয়দা সুফিয়া খাতুন

এ জগতে বেঁচে থাকতে হলে অর্থের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য, তাই বলে অর্থকে ময়লার ড্রেন থেকে কামড় দিয়ে তুলে আনা যায় না। কোন বিবেকবানের পক্ষে তা সম্ভব হয় না । এর চেয়ে অসম্ভব হল অর্থের জন্য নিজের মহামূল্যবান সম্পদ ঈমান ও সতীত্ব কে বিকিয়ে দিয়ে ময়লার স্তুপ থেকে অর্থ কুড়িয়ে নেওয়া। তার চাইতেও নিকৃষ্টতর হল সুদ-ঘুষের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা। আল্লাহ তা‘আলা কালামে পাকে ইরশাদ করেন- তোমরা সুদ খেও না। আল্লাহ ক্রয় বিক্রয় হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। অরো বলেন- আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করেন। নবীজি সুদ, ঘুষ ভক্ষণকারী, প্রদানকারী তার সাক্ষীদ্বয় এবং তা লিপিবদ্ধকারীর উপর অভিসম্পাত করেছেন। [আবূ দাউদ শরীফ]
এ সকল আয়াত ও হাদীসের দ্বারা সুদ, ঘুষকে হারাম করেছেন। বিবেকের দাবীতেও ইজ্জতের বিনিময়ে অথবা সুদ, ঘুষ এর মাধ্যমে অর্থ জমা করাটা অবৈধ। আর এই হারাম-অবৈধ ও নিষিদ্ধ-ঘৃণিত কাজটির আমাদের সমাজে এত ব্যাপক প্রচলন ঘটেছে যেন তা শুধু বৈধই নয়, প্রশংসনীয়!! নাউযুবিল্লাহ।
আল্লাহ বলেন, হে নারীসমাজ! তোমরা তোমাদের ঘরে পর্দা রক্ষা করে অবস্থান কর এবং জাহেলী যুগের নারীদের ন্যায় উলঙ্গ হয়ে বের হয়ো না। অতি-আধুনিক প্রজন্ম এ আয়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে! অথচ দরজা জানালার-পর্দা যেমন ঘর-বাড়ি সুরক্ষা করে ধূলো বালি থেকে তেমনি মেয়েদেরকে পর্দা সুরক্ষা করে থাকে ইভ-টিজিংসহ নানাবিধ বিপদ-আপদ থেকে। পর্দা যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি মেয়েদের সৌন্দর্য ও সম্মান বাড়ায়। একজন পর্দানশীন রমণী ও একজন বে-পর্দা মহিলা যদি একসাথে কোথাও যায় তাহলে পর্দানশীন মহিলাকে বেশি সম্মানিতা হতে দেখা যায় । পর্দাটা মহিলার জন্য অহংকার বা প্রতিরক্ষক।
কিছু নামধারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান নারীদেরকে সুদের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনে বাধ্য করছে। ১০০/-টাকা ঋণ দিয়ে ১৩৮/১৪০ টাকা তার থেকে সুদ নেয়। এভাবে নারীদেরকে নিঃস্ব থেকে আরো নিঃস্ব বানিয়ে দিশেহারা করে দিচ্ছে। ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে অফিস কক্ষে আটকে রেখে তাদের সতীত্ব টুকুও ছিনিয়ে নিচ্ছে। অবশেষে এ লজ্জার গ্লানি সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে ঐ তরুণীরা। এসব প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে তাদেরকে অবশ্যই সুশিক্ষা গ্রহণ করে সচেতন হতে হবে। সচেতন হতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন ইসলামী আদর্শ শিক্ষা গ্রহণ করা। কুশিক্ষা পরিহার করতে হবে। কুশিক্ষা গ্রহণ করলে দেশ জারজ সন্তানে ভরে যাবে। জারজরা আদর্শবান হয়েছে এমন নজির পৃথিবীতে কেউ কোথাও দেখেনি। তাই সবার কাছে আমার অনুরোধ যে, আমাদের দেশে কোরআন এবং হাদীসের আলোকে সুশিক্ষা বিস্তারে আমরা এগিয়ে আসি।
আল্লাহ তা’আলা বলেন-
‘অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।  [সুরা বাকারা আয়াত ১৫৫]
অন্যত্র ইরশাদ করেন-
‘তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরুস্কার।’ [সূরা তাগাবুন : ১৫]
‘তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।’
[সূরা আশ-শূআরা : ৩০]
আরো ইরশাদ করেন-
‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে। [সূরা আররূম : ৪১]
লেখিকা কর্তৃক ‘বিশ্ব নারী মুক্তির উপায়’ বই হতে সংগৃহিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন