প্রথমত যা জানা দরকার।
👉নারী
পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদী নানা বিষয়ে যেমন পার্থক্য
রয়েছে, তেমনি
পার্থক্য রয়েছে ইবাদতসহ শরীয়তের অনেক বিষয়ে। যেমন-
👉১-পুরুষ ও মহিলা উভয়ের উপরই হজ্ব ফরয। কিন্তু মহিলাদের জন্য পথ খরচ ছাড়াও হজ্বের সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষের উপস্থিতি শর্ত।
👉১-পুরুষ ও মহিলা উভয়ের উপরই হজ্ব ফরয। কিন্তু মহিলাদের জন্য পথ খরচ ছাড়াও হজ্বের সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষের উপস্থিতি শর্ত।
👉২-ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য মাথা ঢাকা নিষেধ। অথচ মহিলাদের জন্য ইহরাম অবস্থায় মাথা ঢেকে রাখা ফরয।
👉৩-ইহরাম খোলার সময় পুরুষ মাথা মুন্ডায়। কিন্তু মহিলাদের মাথা মুন্ডানো নিষেধ।
👉৪-হজ্ব পালনকালে পুরুষ উচ্চ আওয়াজে তালবীয়া পাঠ করে, পক্ষান্তরে মহিলাদের জন্য নিম্ন আওয়াজে পড়া জরুরী।
👉৫-পুরুষের উপর জুমআ পড়া ফরয, মহিলাদের উপর নয়।
👉৬-নামাযে সতর্ক করার মত কোন ঘটনা ঘটলে সতর্ক করার জন্য পুরুষের তাসবীহ পড়ার হুকুম করা হয়েছে। কিন্তু মহিলাদের তাসফীক করা তথা হাতে শব্দ করার বিধান।
👉৭-ইমাম ও খতীব শুধু পুরুষই হতে পারে, কোন নারী হতে পারেনা।
👉৮-আজান শুধু পুরুষই দিবে, কোন নারীকে মুয়াজ্জিন বানানো জায়েজ নয়।
👉৯-পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামায পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। আর মহিলাদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম বলা হয়েছে।
👉১০-সতর। পুরুষের সতর হল নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত। আর পরপুরুষের সামনে নারীদের সতর হল প্রায় পুরো শারীরই ঢেকে রাখা ফরয।
নারী-পুরুষের নামাজের ভিন্নতা : সংক্ষেপে
এখানে নারী-পুরুষের নামাজের ভিন্নতাগুলো উল্লেখ করা হলো।
১.নামাজ শুরু করার পূর্বে মেয়েদেরকে নিশ্চিত
হতে হবে—চেহারা হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা ছাড়া পুরো শরীর কাপড়ে আবৃত করা হলো কি
না।
মেয়েদের কেউ কেউ এভাবে নামায পড়ে যে, তার চুল খোলা থাকে। কারও হাতের কব্জি খোলা থাকে। কেউ কান খোলা রাখে। কেউ কেউ এমন ছোট ওড়না ব্যবহার করে, যার ফলে তার কাপড়ের নীচে ঝুলে থাকা চুল দেখা যায়। এসবই নাজায়েয। নামাজের মাঝে যদি কোনো মেয়ের চেহারা হাত ও পায়ের পাতা ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গের এক চতুর্থাংশ এতটুকু সময় খোলা থাকে, যাতে তিনবার سُبْحَانَ رَبِّـيَ الْعَظِيْمِ (সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম) পড়া যায়, তাহলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি এর চেয়ে কম সময় খোলা থাকে, তাহলে নামাজ আদায় হয়ে যাবে,তবে গোনাহ হবে।
২. মেয়েদের জন্যে ঘরে নামাজ পড়া বারান্দায় নামায পড়া থেকে উত্তম। বারান্দায় নামাজ পড়া উঠানে নামাজ পড়া থেকে উত্তম।
৩. হাত তোলার সময় তারা পুরুষের মতো কান পর্যন্ত নয়, কাঁধ পর্যন্ত তুলবে। এবং তাদের হাত দুটি চাদরের ভেতরেই রাখবে। চাদরের বাইরে বের করবে না।
৪. মেয়েরা হাত বাঁধবে বুকের উপর। বাম হাতের পিঠের উপর ডান হাতের কব্জি রাখবে। পুরুষের মতো নাভির নীচে হাত বাঁধবে না।
৫. রুকুতে মেয়েদেরকে পুরুষের মতো কোমর ও পিঠ এক বরাবর করতে হবে না। বরং পুরুষের তুলনায় কম ঝুঁকবে।
৬. রুকুতে পুরুষকে তার হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে রাখতে হয়। এর বিপরীতে মেয়েরা আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে। আঙ্গুলের মাঝে ফাঁক রাখবে না।
৭. রুকুতে মেয়েরা পা সম্পূর্ণ সোজা না রেখে হাঁটুকে সামনের দিকে হালকা বাঁকা করে রাখবে।
৮. পুরুষের হুকুম—তারা রুকুতে বাহু পার্শ্বদেশ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক রাখবে। আর মেয়েরা এমনভাবে দাঁড়াবে যাতে বাহু শরীরের সাথে মিলে থাকে।
৯. রুকুতে নারীর দুই পা মিলানো থাকবে। বিশেষত দুই টাখনু থাকবে একটি অন্যটির খুব কাছাকাছি। পায়ের মাঝে ফাঁক রাখবে না।
১০. পুরুষের জন্যে বিধান হচ্ছে, তারা সেজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে হাঁটু রাখার আগে বুক সামনের দিকে ঝুঁকাবে না। মেয়েদের সেজদার পদ্ধতি এমন নয়। বরং তারা শুরুতেই বুক সামনে ঝুঁকিয়ে দিয়ে সেজদা করবে।
১১. সেজদার সময় তারা উরু পেটের সাথে, বাহু পার্শ্বদেশের সাথে মিলিয়ে রাখবে। পা দুটি খাড়া করে না রেখে ডানদিকে বের করে বিছিয়ে রাখবে।
১২. সেজদার সময় পুরুষের জন্যে কনুই মাটিতে লাগানো নিষেধ। অথচ মেয়েরা তাদের কনুইসহ পুরো হাত মাটির সাথে মিলিয়ে রাখবে।
১৩. দুই সেজদার মাঝে বসার সময় কিংবা আততাহিয়্যাতু পড়ার সময় নারীরা বাম নিতম্বের উপর বসবে। দুই পা ডানদিক দিয়ে বের করে দেবে।
১৪. পুরুষের জন্যে নিয়ম হচ্ছে—রুকুর মধ্যে আঙ্গুলগুলো ফাঁক ফাঁক করে রাখবে; সেজদার সময় মিলিয়ে রাখবে। অন্যান্য সময় আঙ্গুলগুলোকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দেবে। ইচ্ছা করে ফাঁক করেও রাখবে না, মিলিয়ে রাখবে না। পক্ষান্তরে মেয়েদের বিধান হচ্ছে—তারা সর্বাবস্থায় আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে। ফাঁক করে রাখবে না। রুকু, সেজদা, দুই সেজদার মাঝে, বৈঠকগুলোতে—সবক্ষেত্রেই তারা আঙ্গুল মিলিয়ে রাখবে।
১৫. মেয়েদের জন্যে জামাতে নামাজ পড়া মাকরুহ। তাদের জন্যে উত্তম হচ্ছে একাকী নামায পড়া। হ্যাঁ, যদি ঘরের মাহরাম পুরুষ ঘরে জামাত করে, তাহলে তারা সে জামাতে শরিক হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রেও তাদেরকে দাঁড়াতে হবে পুরুষের সম্পূর্ণ পিছনে। কখনোই তারা পুরুষের সাথে দাঁড়াবে না।
উল্লেখ্য, নারী-পুরুষের নামাজে এ ভিন্নতাগুলোর কয়েকটি তো সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকেই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। আর কয়েকটি ভিন্নতার প্রমাণ পাওয়া যায় সাহাবায়ে কেরামের বাণী ও ফতোয়াগুলোতে। কিছু কিছু ভিন্নতা মুজতাহিদ ইমামগণ কুরআন-হাদীসের বিভিন্ন মূলনীতিকে সামনে রেখে কিয়াসের মাধ্যমেও উদঘাটন করেছেন। আর এ কথা তো সর্বজনস্বীকৃত—কিয়াস ইসলামে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক দলিল, যা ছাড়া মুসলমানের জীবনের সব সমাধান সম্ভব নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস, সাহাবায়ে কেরামের বাণী ও ফতোয়া এবং মুজতাহিদ ইমামগণের কিয়াস থেকে নারীদের নামাজের যে ভিন্নতাগুলো প্রমাণিত হয়, তা সংকলিত হয়েছে পরবর্তীকালের মুহাদ্দিস ও ফকীহগণের বিভিন্ন সংকলনে। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, নারীদের নামাজের যে ভিন্নতা প্রচলিত, তা ভিত্তিহীন নয়, বরং হাদীসের আলোকে এবং শত শত বছর ধরে চলে আসা মুসলমান সমাজের অবিচ্ছিন্ন কর্মধারার মাধ্যমেই প্রমাণিত।
নারী-পুরুষের মাঝে এরকম পার্থক্যসম্বলিত ইবাদত সমূহের অন্যতম হল নামায। তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো, হাত বাঁধা, রুকু, সেজদা, প্রথম ও শেষ বৈঠক ইত্যাদী ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমাণ যেহেতো বেশি তাই যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে ক্ষেত্রগুলিতে। মুসলিম উম্মাহর প্রায় দেড় হাজার বছরের অবিচ্ছন্ন আমলের ধারা তাই প্রমাণ করে। বিষয়টি প্রমাণিত রাসূলে কারীম সাঃ এর হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের ফতোয়া ও আছারের মাধ্যমে।
মেয়েদের কেউ কেউ এভাবে নামায পড়ে যে, তার চুল খোলা থাকে। কারও হাতের কব্জি খোলা থাকে। কেউ কান খোলা রাখে। কেউ কেউ এমন ছোট ওড়না ব্যবহার করে, যার ফলে তার কাপড়ের নীচে ঝুলে থাকা চুল দেখা যায়। এসবই নাজায়েয। নামাজের মাঝে যদি কোনো মেয়ের চেহারা হাত ও পায়ের পাতা ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গের এক চতুর্থাংশ এতটুকু সময় খোলা থাকে, যাতে তিনবার سُبْحَانَ رَبِّـيَ الْعَظِيْمِ (সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম) পড়া যায়, তাহলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি এর চেয়ে কম সময় খোলা থাকে, তাহলে নামাজ আদায় হয়ে যাবে,তবে গোনাহ হবে।
২. মেয়েদের জন্যে ঘরে নামাজ পড়া বারান্দায় নামায পড়া থেকে উত্তম। বারান্দায় নামাজ পড়া উঠানে নামাজ পড়া থেকে উত্তম।
৩. হাত তোলার সময় তারা পুরুষের মতো কান পর্যন্ত নয়, কাঁধ পর্যন্ত তুলবে। এবং তাদের হাত দুটি চাদরের ভেতরেই রাখবে। চাদরের বাইরে বের করবে না।
৪. মেয়েরা হাত বাঁধবে বুকের উপর। বাম হাতের পিঠের উপর ডান হাতের কব্জি রাখবে। পুরুষের মতো নাভির নীচে হাত বাঁধবে না।
৫. রুকুতে মেয়েদেরকে পুরুষের মতো কোমর ও পিঠ এক বরাবর করতে হবে না। বরং পুরুষের তুলনায় কম ঝুঁকবে।
৬. রুকুতে পুরুষকে তার হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে রাখতে হয়। এর বিপরীতে মেয়েরা আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে। আঙ্গুলের মাঝে ফাঁক রাখবে না।
৭. রুকুতে মেয়েরা পা সম্পূর্ণ সোজা না রেখে হাঁটুকে সামনের দিকে হালকা বাঁকা করে রাখবে।
৮. পুরুষের হুকুম—তারা রুকুতে বাহু পার্শ্বদেশ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক রাখবে। আর মেয়েরা এমনভাবে দাঁড়াবে যাতে বাহু শরীরের সাথে মিলে থাকে।
৯. রুকুতে নারীর দুই পা মিলানো থাকবে। বিশেষত দুই টাখনু থাকবে একটি অন্যটির খুব কাছাকাছি। পায়ের মাঝে ফাঁক রাখবে না।
১০. পুরুষের জন্যে বিধান হচ্ছে, তারা সেজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে হাঁটু রাখার আগে বুক সামনের দিকে ঝুঁকাবে না। মেয়েদের সেজদার পদ্ধতি এমন নয়। বরং তারা শুরুতেই বুক সামনে ঝুঁকিয়ে দিয়ে সেজদা করবে।
১১. সেজদার সময় তারা উরু পেটের সাথে, বাহু পার্শ্বদেশের সাথে মিলিয়ে রাখবে। পা দুটি খাড়া করে না রেখে ডানদিকে বের করে বিছিয়ে রাখবে।
১২. সেজদার সময় পুরুষের জন্যে কনুই মাটিতে লাগানো নিষেধ। অথচ মেয়েরা তাদের কনুইসহ পুরো হাত মাটির সাথে মিলিয়ে রাখবে।
১৩. দুই সেজদার মাঝে বসার সময় কিংবা আততাহিয়্যাতু পড়ার সময় নারীরা বাম নিতম্বের উপর বসবে। দুই পা ডানদিক দিয়ে বের করে দেবে।
১৪. পুরুষের জন্যে নিয়ম হচ্ছে—রুকুর মধ্যে আঙ্গুলগুলো ফাঁক ফাঁক করে রাখবে; সেজদার সময় মিলিয়ে রাখবে। অন্যান্য সময় আঙ্গুলগুলোকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দেবে। ইচ্ছা করে ফাঁক করেও রাখবে না, মিলিয়ে রাখবে না। পক্ষান্তরে মেয়েদের বিধান হচ্ছে—তারা সর্বাবস্থায় আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে। ফাঁক করে রাখবে না। রুকু, সেজদা, দুই সেজদার মাঝে, বৈঠকগুলোতে—সবক্ষেত্রেই তারা আঙ্গুল মিলিয়ে রাখবে।
১৫. মেয়েদের জন্যে জামাতে নামাজ পড়া মাকরুহ। তাদের জন্যে উত্তম হচ্ছে একাকী নামায পড়া। হ্যাঁ, যদি ঘরের মাহরাম পুরুষ ঘরে জামাত করে, তাহলে তারা সে জামাতে শরিক হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রেও তাদেরকে দাঁড়াতে হবে পুরুষের সম্পূর্ণ পিছনে। কখনোই তারা পুরুষের সাথে দাঁড়াবে না।
উল্লেখ্য, নারী-পুরুষের নামাজে এ ভিন্নতাগুলোর কয়েকটি তো সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকেই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। আর কয়েকটি ভিন্নতার প্রমাণ পাওয়া যায় সাহাবায়ে কেরামের বাণী ও ফতোয়াগুলোতে। কিছু কিছু ভিন্নতা মুজতাহিদ ইমামগণ কুরআন-হাদীসের বিভিন্ন মূলনীতিকে সামনে রেখে কিয়াসের মাধ্যমেও উদঘাটন করেছেন। আর এ কথা তো সর্বজনস্বীকৃত—কিয়াস ইসলামে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক দলিল, যা ছাড়া মুসলমানের জীবনের সব সমাধান সম্ভব নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস, সাহাবায়ে কেরামের বাণী ও ফতোয়া এবং মুজতাহিদ ইমামগণের কিয়াস থেকে নারীদের নামাজের যে ভিন্নতাগুলো প্রমাণিত হয়, তা সংকলিত হয়েছে পরবর্তীকালের মুহাদ্দিস ও ফকীহগণের বিভিন্ন সংকলনে। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, নারীদের নামাজের যে ভিন্নতা প্রচলিত, তা ভিত্তিহীন নয়, বরং হাদীসের আলোকে এবং শত শত বছর ধরে চলে আসা মুসলমান সমাজের অবিচ্ছিন্ন কর্মধারার মাধ্যমেই প্রমাণিত।
নারী-পুরুষের মাঝে এরকম পার্থক্যসম্বলিত ইবাদত সমূহের অন্যতম হল নামায। তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো, হাত বাঁধা, রুকু, সেজদা, প্রথম ও শেষ বৈঠক ইত্যাদী ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমাণ যেহেতো বেশি তাই যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে ক্ষেত্রগুলিতে। মুসলিম উম্মাহর প্রায় দেড় হাজার বছরের অবিচ্ছন্ন আমলের ধারা তাই প্রমাণ করে। বিষয়টি প্রমাণিত রাসূলে কারীম সাঃ এর হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের ফতোয়া ও আছারের মাধ্যমে।
তাই কোন নব্য মুফতী দ্বারা প্রভাবিত হবেননা।
পর্ব :- ২
প্রথমে সহীহ হাদিস, তারপর পর্যায়ক্রমে সাহাবায়ে কিরাম ও
তাবেয়ীদের ফতোয়া ও আছার উল্লেখ করছি।
********************************************************
👉হাদিস: ১। তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব রহ.
বলেন-একবার রাসূল সা. দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের
উদ্দেশ্য) বললেন-“যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা
এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়। (সুনানুল বায়হাকী, হাদিস নং-৩০১৬, কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫, হাদিস নং-৮০)
👉প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান
খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “আওনুল বারী” (১/৫২০) তে লিখেছেন-“উল্লেখিত
হাদিসটি সকল ইমামদের উসুল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করায় যোগ্য”।
👉মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী
“সুবুলুস সালাম” শরহু বুলুগিল মারাম” গ্রন্থে (১/৩৫১-৩৫২) এই হাদিসকে দলীল হিসেবে
গ্রহণ করে পুরুষ ও মহিলার সেজদার পার্থক্য করেছেন।
👉২. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে
বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছন-“মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু
অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার
সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তায়ালা তাকে দেখে বলেন-ওহে আমার ফেরেস্তারা! তোমরা
সাক্ষী থাক। আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে বায়হাকী-২/২২৩, হাদিস নং-৩৩২
👉৩.হযরত ওয়াইল বিন হুজর রা. বলেন। আমি নবীজী
সা. এর দরবারে হাজির হলাম। তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার সাথে একথাও) বলেছিলেন যে, হে ওয়াইল বিন হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে
তখন কান বরাবর হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আল মুজামুল কাবীর, হাদিস নং-২৮)এই হাদিসটিও হাসান।
👉উল্লেখিত হাদিসগুলি থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে যায়
যে, কিছু
কিছু হুকুমের ক্ষেত্রে মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতি পুরুষের নামায আদায়ের পদ্ধতি
থেকে ভিন্ন। বিশেষত ২ নং হাদিসটি দ্বারা একথাও বুঝা গেল যে, মহিলার নামায আদায়ের শরীয়ত নির্ধারিত ভিন্ন
এই পদ্ধতির মধ্যে ওই দিকটিই বিবেচনায় রাখা হয়েছে যা তার সতরও পর্দার পক্ষে
সর্বাধিক উপপোযী।
👉উল্লেখ্য যে, এই সব হাদিসের সমর্থনে মহিলাদের নামায আদায়ের
পদ্ধতির পার্থক্য ও ভিন্নতাকে নির্দেশ করে এমন আরো কিছু হাদিস আছে। পক্ষান্তরে
এগুলির সাথে বিরোধপূর্ণ একটি হাদীসও কোথাও পাওয়া যাবেনা। যাতে বলা হয়েছে যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিতে কোন
পার্থক্য নেই। বরং উভয়ের নামাযই এক ও অভিন্ন। একথার পক্ষে একটি হাদীসও নেই।
********************************************************







এ সম্পর্কে সাহাবায়ে কিরামের ফতোয়া।
**********************************
👉১ । হযরত আলী রা. বলেছেন-মহিলা যখন সেজদা করে
তখন সে যেন খুব জড়সড় হয়ে সেজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সাথে মিলিয়ে রাখে।
(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৮, হাদিস নং-৫০৭২, মুসান্নাফে ইবনে শাইবা-২/৩০৮, হাদিস নং-২৭৯৩, সুনানে কুবরা বায়হাকী-২/২২২)
👉২.। হযরত ইবনে আব্বাস রা. কে জিজ্ঞেস করা
হল-মহিলারা কিভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন-“খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ
মিলিয়ে নামায আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৭৯৪)
👉উপরে মহিলাদের নামায সম্পর্কে দু’জন সাহাবীর
যে মত বর্ণিত হল, আমাদের জানা মতে কোন হাদীসগন্থের কোথাও একজন
সাহাবী থেকেও এর বিপরীত কিছু বিদ্যমান নেই।
👉রাসূল সা. থেকে সাহাবায়ে কিরাম যে, দ্বীন শিখেছেন তাদের কাছ থেকে তা শিখেছেন
তাবেয়ীগণ। তাঁদের ফাতওয়া থেকেও এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে,”মহিলাদের নামায পুরুষের নামায থেকে ভিন্ন।
নিম্নে তাঁদের মধ্য থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকজনের ফাতওয়া উল্লেখ করা হয়।
👉হযরত ইবনে জুরাইজ রহ. বলেন-“আমি আতা বিন আবী
রাবাহকে জিজ্ঞেস করলাম-“মহিলা তাকবীরের সময় পুরুষের সমান হাত তুলবে?” তিনি বললেন-“মহিলা পুরুষের মত হাত তুলবেনা।
এরপর তিনি তার উভয় হাত (পুরুষ অপেক্ষা) অনেক নিচুতে রেখে শরীরের সাথ খুব মিলিয়ে
রাখলেন এবং বললেন-মহিলাদের পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন। তবে এমন না করলেও অসুবিধা
নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/২৭০, হাদিস নং-২৪৮৯, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক,হাদিস নং-৫০৬৬,৬২৫১)
👉 ৩ হযরত মুজাহিদ বিন জাবর
রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি পুরুষের জন্য মহিলার মত উরুর সাথে পেট লাগিয়ে সেজদা করাকে
অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৮৯৬)
👉৪ হযরত যুহরী রহ. বলেন-“মহিলা কাঁধ পর্যন্ত
হাত উঠাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/২৭০, হাদীস নং-২৪৮৭)
👉৫.হযরত হাসান বসরী ও কাতাদা রহ. বলেন-“মহিলা
যখন সেজদা করবে তখন সে যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফাঁকা রেখে সেজদা
দিবেনা যাতে কোমড় উঁচু হয়ে না থাকে”। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৭, হাদিস নং-৫০৬৮, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০৩)
👉৬.হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহ. বলেন-মহিলা যখন
সেজদা করবে তখন যেন সে উভয় উরু মিলিয়ে রাখে এবং পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৭৯৫)
👉৭.হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহ. আরো বলেন-“মহিলাদের
আদেশ করা হত তারা যেন সেজদা অবস্থায় হাত ও পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। পুরুষের মত
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা না রাখে। যাতে কোমড় উঁচু হয়ে না থাকে। (মুসান্নাফে আব্দুর
রাজ্জাক-৩/১৩৭, হাদিস
নং-৫০৭১)
👉৮. হযরত খালেদ বিন লাজ্জাজ রহ.
বলেন-“মহিলাদেরকে আদেশ করা হত যেন নামাযে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের
উপর বসে। পুরুষদের মত না বসে। আবরণযোগ্য কোন কিছু প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশংকায়
মহিলাদেরকে এমনি করতে হয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০৩, হাদিস নং-২৭৯৯)
👉উল্লেখিত বর্ণনাগুলি ছাড়াও আয়িম্মায়ে
তাবেয়ীনের আরো কিছু বর্ণনা এমন আছে যা মহিলা-পুরুষের নামাযের পার্থক্য নির্দেশ
করে। পক্ষান্তরে একজন তাবেয়ী থেকেও এর বিপরীত বক্তব্য প্রমাণিত নয়।
চার ইমামের ফিক্বহের আলোকেঃ-
****************************
ফিক্বহে ইসলামীর চারটি সংকলন মুসলিম উম্মাহর মাঝে প্রচলিত। যথা-
১-ফিক্বহে হানাফী
২-ফিক্বহে শাফেয়ী
৩-ফিক্বহে মালেকী
৪-ফিক্বহে হাম্বলী
এবার দেখুন এই চার ফিক্বহের ইমামদের মতামত।
👉১-ফ্বিকহে হানফী
ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর অন্যতম সাগরীদ ইমাম মুহাম্মদ রহঃ বলেন-“ আমাদের নিকট পছন্দনীয় হল, মহিলারা নামাযে উভয় পা একপাশে মিলিয়ে রাখবে। পুরুষের মত এক পা দাঁড় করিয়ে রাখবেনা। {কিতাবুল আসার, ইমাম মুহাম্মদ রহঃ-১/৬০৯
আমাদের ইমামে আজম আবু হানীফা রঃ নাফে রহঃ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন-“হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ কে জিজ্ঞেস করা হল-“রাসূল সাঃ এর যুগে মহিলারা কিভাবে নামায পড়তেন?” তিনি বললেন-“আগে তারা চারজানু হয়ে বসতেন, পরে তাদেরকে জড়সড় হয়ে বসতে বলা হয়েছে”। {জামেউল মাসানিদ-১/৪০০}
উক্ত হাদিসটি এ বিষয়ে বর্ণিত সবকিছুর চেয়ে শক্তিশালী। এ কারণেই আমাদের ইমাম এর দ্বারা দলীল পেশ করেছেন। এ অনুযায়ী আমল করেছেন। এবং এটিকে নিজের মাযহাব বানিয়েছেন। {কিতাবুল আসার এর টিকা-১/৬০৭}
মহিলাদের ক্ষেত্রে পার্থক্যের বর্ণনা হানাফী ফিক্বহের কিতাবে দেখুন-
১-বাদায়িউস সানায়ে-১/৪৬৬
২-হেদায়া-১/১০০-১১০
৩-আল মাবসূত লিস সারাখসী-১/৪৬৬
৪-ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫০৪
৫-ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/৭৩-৭৫
👉২-ফিক্বহে শাফেয়ী
ইমাম শাফেয়ী রহঃ বলেন-“আল্লাহ পাক মহিলাদেরকে পুরোপুরি আবৃত থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। তার রাসূল সাঃ ও অনুরূপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দীয় হল-সেজদা অবস্থায় মহিলারা এক অঙ্গের সাথে অপর অঙ্গ মিলিয়ে রাখবে। পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখবে। আর সেজদা এমনভাবে করবে যাতে সতরের চূড়ান্ত হেফাযত হয়। অনুরূপ রুকু, বৈঠক ও গোটা নামাযে এমনভাবে থাকবে যাতে সতরের পুরোপুরি হেফাযত হয়। {কিতাবুল উম্ম-১/১৩৮)
👉৩-ফিক্বহে মালেকী
মালেকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফক্বীহ ইমাম আবুল আব্বাস আল কারাফী রঃ ইমাম মালিক রহঃ এর মত উল্লেখ করেন-নামাযে মহিলা পুরুষের মত কিনা? এ বিষয়ে ইমাম মালিক রহঃ থেকে বর্ণিত। মহিলা ডান উরু বাম উরুর উপর রাখবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে বসবে। রুকু সেজদা ও বৈঠকে কোন সময়ই ফাঁক ফাঁক হয়ে বসবেনা। পক্ষান্তরে পুরুষের পদ্ধতি হল ভিন্ন। {আয যাখীরা-২/১৯৩}
👉৪-ফিক্বহে হাম্বলী
ইমাম আহমদ রহঃ এর ফাতওয়া উল্লেখ আছে ইমাম ইবনে কুদামা রহঃ এর আল মুগীনী কিতাবে।
তাকবীরের সময় মহিলারা হাত উঠাবে কি উঠাবে না? এ বিষয়ে কাজী [আবু ইয়াজ] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ থেকে দু’টি মত উল্লেখ করেছেন। প্রথম মত হল হাত উঠাবে। কেননা খাল্লাল হযরত উম্মে দারদা এবং হযরত হাফসা বিন সীরীন থেকে সনদসহ বর্ণনা করেন যে, তারা হাত উঠাতেন। ইমাম তাউসের বক্তব্যও তাই। উপরন্তু যার ব্যাপারে তাকবীর বলার নির্দেশ রয়েছে তার ব্যাপারে হাত উঠানোরও নির্দেশ রয়েছে। যেমন পুরুষ করে থাকে। এ হিসেবে মহিলারাও হাত উঠাবে। তবে সামান্য। আহমাদ রহঃ বলেন-“তুলনামূলক কম উঠাবে”।
দ্বিতীয় মত হল-“মহিলাদের জন্য হাত উঠানোরই হুকুম নাই। কেননা হাত উঠালে কোন অঙ্গকে ফাঁক করতেই হয়, অথচ মহিলাদের জন্য এর বিধান দেওয়া হয়নি। বরং তাদের জন্য নিয়ম হল রুকু সেজদাসহ পুরো নামাযে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবে। {আল মুগনী-২/১৩৯}
👉আলোচনার এই পর্যায়ে হাদীস, আসারে সাহাবা, তাবেয়ীন ও চার মাযহাবের ইমামদের ঐক্যমত্যের
প্রমাণ পেশ করার পর আমরা দেখব আমাদের যে গায়রে মুকাল্লিদ ভাইয়েরা মহিলাদের নামাযের
ভিন্ন বিষয়টিকে উপেক্ষা করেন এবং পুরুষ ও মহিলার নামাযের অভিন্ন পদ্ধতির পক্ষে কথা
বলেন, তাদের
আলেমগণ এ বিষয়ে কি বলেন? তারা কি ফাতওয়া দিয়েছেন?
**********************************












চার ইমামের ফিক্বহের আলোকেঃ-
****************************
ফিক্বহে ইসলামীর চারটি সংকলন মুসলিম উম্মাহর মাঝে প্রচলিত। যথা-
১-ফিক্বহে হানাফী
২-ফিক্বহে শাফেয়ী
৩-ফিক্বহে মালেকী
৪-ফিক্বহে হাম্বলী
এবার দেখুন এই চার ফিক্বহের ইমামদের মতামত।

ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর অন্যতম সাগরীদ ইমাম মুহাম্মদ রহঃ বলেন-“ আমাদের নিকট পছন্দনীয় হল, মহিলারা নামাযে উভয় পা একপাশে মিলিয়ে রাখবে। পুরুষের মত এক পা দাঁড় করিয়ে রাখবেনা। {কিতাবুল আসার, ইমাম মুহাম্মদ রহঃ-১/৬০৯
আমাদের ইমামে আজম আবু হানীফা রঃ নাফে রহঃ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন-“হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ কে জিজ্ঞেস করা হল-“রাসূল সাঃ এর যুগে মহিলারা কিভাবে নামায পড়তেন?” তিনি বললেন-“আগে তারা চারজানু হয়ে বসতেন, পরে তাদেরকে জড়সড় হয়ে বসতে বলা হয়েছে”। {জামেউল মাসানিদ-১/৪০০}
উক্ত হাদিসটি এ বিষয়ে বর্ণিত সবকিছুর চেয়ে শক্তিশালী। এ কারণেই আমাদের ইমাম এর দ্বারা দলীল পেশ করেছেন। এ অনুযায়ী আমল করেছেন। এবং এটিকে নিজের মাযহাব বানিয়েছেন। {কিতাবুল আসার এর টিকা-১/৬০৭}
মহিলাদের ক্ষেত্রে পার্থক্যের বর্ণনা হানাফী ফিক্বহের কিতাবে দেখুন-
১-বাদায়িউস সানায়ে-১/৪৬৬
২-হেদায়া-১/১০০-১১০
৩-আল মাবসূত লিস সারাখসী-১/৪৬৬
৪-ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫০৪
৫-ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/৭৩-৭৫

ইমাম শাফেয়ী রহঃ বলেন-“আল্লাহ পাক মহিলাদেরকে পুরোপুরি আবৃত থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। তার রাসূল সাঃ ও অনুরূপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দীয় হল-সেজদা অবস্থায় মহিলারা এক অঙ্গের সাথে অপর অঙ্গ মিলিয়ে রাখবে। পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখবে। আর সেজদা এমনভাবে করবে যাতে সতরের চূড়ান্ত হেফাযত হয়। অনুরূপ রুকু, বৈঠক ও গোটা নামাযে এমনভাবে থাকবে যাতে সতরের পুরোপুরি হেফাযত হয়। {কিতাবুল উম্ম-১/১৩৮)

মালেকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফক্বীহ ইমাম আবুল আব্বাস আল কারাফী রঃ ইমাম মালিক রহঃ এর মত উল্লেখ করেন-নামাযে মহিলা পুরুষের মত কিনা? এ বিষয়ে ইমাম মালিক রহঃ থেকে বর্ণিত। মহিলা ডান উরু বাম উরুর উপর রাখবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে বসবে। রুকু সেজদা ও বৈঠকে কোন সময়ই ফাঁক ফাঁক হয়ে বসবেনা। পক্ষান্তরে পুরুষের পদ্ধতি হল ভিন্ন। {আয যাখীরা-২/১৯৩}

ইমাম আহমদ রহঃ এর ফাতওয়া উল্লেখ আছে ইমাম ইবনে কুদামা রহঃ এর আল মুগীনী কিতাবে।
তাকবীরের সময় মহিলারা হাত উঠাবে কি উঠাবে না? এ বিষয়ে কাজী [আবু ইয়াজ] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ থেকে দু’টি মত উল্লেখ করেছেন। প্রথম মত হল হাত উঠাবে। কেননা খাল্লাল হযরত উম্মে দারদা এবং হযরত হাফসা বিন সীরীন থেকে সনদসহ বর্ণনা করেন যে, তারা হাত উঠাতেন। ইমাম তাউসের বক্তব্যও তাই। উপরন্তু যার ব্যাপারে তাকবীর বলার নির্দেশ রয়েছে তার ব্যাপারে হাত উঠানোরও নির্দেশ রয়েছে। যেমন পুরুষ করে থাকে। এ হিসেবে মহিলারাও হাত উঠাবে। তবে সামান্য। আহমাদ রহঃ বলেন-“তুলনামূলক কম উঠাবে”।
দ্বিতীয় মত হল-“মহিলাদের জন্য হাত উঠানোরই হুকুম নাই। কেননা হাত উঠালে কোন অঙ্গকে ফাঁক করতেই হয়, অথচ মহিলাদের জন্য এর বিধান দেওয়া হয়নি। বরং তাদের জন্য নিয়ম হল রুকু সেজদাসহ পুরো নামাযে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবে। {আল মুগনী-২/১৩৯}





আলবানী সাহেবের অসার বক্তব্য:







"উম্মে দারদা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি নামাযে পুরুষের মত বসতেন”।




আপনাদের অবগতির জন্য বলছি,এই কথিত আহলে হাদিস ভাইদেরকে উলামায়ে কেরাম অনেকবার এসমস্ত বিষয় নিয়ে দলিল সহ বসার ডাক দিলেও সারা মেলেনি একটি বারও। আপনাদের পরিচিত কোন কট্টর আহলে হাদিস ভাই আলেম হলে তাকে এসব দলিলের মোকাবেলা করতে বলেন।দেখবেন কিছু না'বলে পালাবেই...।প্রমানিত...
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সত্যকে সত্য হিসেবে মেনে নেবার তৌফিক দান করুন। আমীন।
সুত্র সংগ্রহীত:- মুফতী,লুৎফুর রহমান ফারায়েজী ভাই এবং মুফতী শিব্বীর আহমদ ভাইয়ের লিখনি হতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন