'
#পর্ব ২
সাজিদ পত্রিকাটি ব্যাগে রাখতে রাখতে বললো - 'দাদা, ধরো, এই ৫জনকে কোর্টে তোলা হলো আর তুমি হলে বিচারক। এই ৫ জন যে আসল অপরাধী তার সমস্ত রকম তথ্য-প্রমাণ তোমার কাছে পেশ করা হয়েছে। এখন একজন নাবালিকার উপরে এরকম নির্মমভাবে নির্যাতন করার জন্য তুমি কি তাদের শাস্তি দিবে?।
...
দেবজিৎদা দাঁত মুখ খিচে বললেন। -'শাস্তি দিবো মানে? শূয়োরের বাচ্চাগুলোকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেবো।
সাজিদ মুচকি হাসলো। বললো - সত্যিই তাই?
-হ্যাঁ, একদম। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এদের মাংস শেয়াল-কুকুর দিয়ে খাওয়াতে পারলে আমার গা জুড়োবে। '
দেবজিৎদা'র চোখ মুখ লালাবর্ণ ধারণ করেছে। উনাকে এরকম অবস্থায় আগে কখনো দেখি নি।
সাজিদ এক গ্লাস পানি উনার দিকে বাড়িয়ে দিলো। পানিটা ঢকঢক করে পান করে উনি শার্টের হাতা দিয়ে মুখ মুছলেন। উনি তখনও প্রচন্ড রেগে আছেন বোঝা যাচ্ছে।
সাজিদ বললো- 'আমি যে দেবজিৎ দাদাকে চিনি, সে কিন্তু এতোটা হিংস্র না। আমি তাকে জানতাম।দয়ালু, ক্ষমাশীল, মহানুভব হিসেবে। সে যে কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেবার কথাও ভাবতে পারে, সেটাই বিরাট আশ্চর্য লাগছে।
দেবজিৎদা সাজিদের দিকে তাকালেন। তাকানোতে একটা তাচ্ছিল্যতা আছে।
বললেন, 'শোন সাজিদ, আমি দয়ালু, মহানুভব ঠিক আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি কোন অন্যায় দেখে চুপ করে থাকবো। আমার ক্যারেক্টারের ক্রাইটোরিয়াতে যেমন দয়ালু, মহান, উদার এসব আছে, ঠিক তেমনি আমি ন্যায়বিচারকও। অন্যায়ের কোন প্রশ্রয় আমার কাছে নেই। '
-'বিচারক হিসেবে তুমি চাইলে ঐ ৫ জন অপরাধীকে ক্ষমা করে দিতেই পারো। ' সাজিদ বললো।
-'হ্যাঁ পারি। কিন্তু তাহলে যে ঐ নিষ্পাপ মেয়েটার সাথেই অন্যায় করা হবে। অবিচার করা হবে। আমি সেটা পারবো না। '
-তাহলে কি ধরে নিবো যে তুমি পাষাণ? কঠিন হৃদয়ের? তোমার মাঝে কোনো ভালোবাসা নেই, মমতা নেই?
দেবজিৎদা উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেন, 'আশ্চর্য! তোর বুদ্বিসুদ্বি কি সব লোপ পেয়েছে রে সাজিদ? ৫ জন লোক ঘোরতর অন্যায় করেছে। তাদের অন্যায়ের জন্য আমি শাস্তি দিবো এটাই স্বাভাবিক। একজন বিচারক হিসেবে এখানে ন্যায়ের পক্ষ নেওয়াটাই আমার ধর্ম, আমার প্রেম, আমার ভালোবাসা। এটা কি প্রমাণ করে যে আমি পাষাণ?
সাজিদ আবার মুচকি হাসলো। বললো- 'দাদা, তোমাকে উত্তেজিত করার জন্য দুঃখিত। তুমি না আসলেই খুব ভালো।
আরিফ আজাদ
চলবে.... ইনশাআল্লাহ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন