১৮ বছরের আগে একটি মেয়ে কখনও পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ লাভ করে না। ১৮ বছরের আগে বিয়ে হলে তার উপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ তৈরি হয়। পরিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ব নেওয়ার মতো মানসিক শক্তি, সাহস ও দৃঢ়তা অর্জন করতে পারে না সে।
যুক্তির সত্যতা কতটুকু ?
মানসিক পরিপূর্ণতা লাভের বিষয়টি সম্পূর্ণ আপেক্ষিক। অনেক সময় দেখা যায়, গ্রামের ১২ বছরের একটি মেয়ে যতটুকু মানসিকভাবে শক্ত, যতটুকু সাংসারিক দায়িত্ববান, শহরের একটা ২৫ বছরের মেয়েও ততটুকু দায়িত্ববান বা ম্যাচিউর নয়। দেখা যাচ্ছে, গ্রামের ঐ মেয়েটি পুরো সংসার ভার বহন করে চালাচ্ছে, অপরদিকে শহরের ২৫ বছরের মেয়েকে হাতে তুলে ভাত খাওয়ায় দিতে হচ্ছে। গ্রামেগঞ্জে এখনও একটা কথা প্রচলিত- “পোলাপাইন উড়নচণ্ডি (দায়িত্বহীন) হইলে বিয়া করায় দাও, ভালা (দায়িত্বশীল) হইয়া যাইবো ।” অর্থাৎ সমাজে অনেক দায়িত্বহীন লোককে বিয়ের মাধ্যমে দায়িত্বশীল করানো হয়।
একটা সমাজের তরুণরা যত তাড়াতাড়ি দায়িত্বশীল হবে, সেই সমাজ তত তাড়াতাড়ি উন্নত হবে। এক্ষেত্রে কারো কারো ১৮ বছরের আগে বিয়ের প্রয়োজন হতে পারে, এবং এটা সমাজের জন্য মঙ্গলজনকই বটে। এবং হ্যা, সেটার সিদ্ধান্ত নিতে হবে অবশ্যই গার্জিয়ানকে, সরকারকে নয়। গার্জিয়ানই বুঝতে পারবে তার সন্তানকে কখন বিয়ে দিতে হবে, এক্ষেত্রে কোন আইনী বাধা থাকলে চলবে না।
১৮ বছরের নিচে বিয়ে করে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে, এমন কয়টা উদাহরণ দিতে পারবেন ? ১৮ বছরের পর বিয়ে করেও তো অনেক মেয়ে সংসারের ভার বহনে অক্ষম থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের বড় বড় অনেক নেতা আছেন, যারা কম বয়সে বিয়ে করেছেন। যেমন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিয়ের সময় তার বয়স ছিলো ১০, স্ত্রীর বয়স মাত্র ৩ বছর (তারমানে বাল্যবিয়ে করা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা !)। এই মানে কিন্তু এই নয় বঙ্গবন্ধু কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন ?
তাই যারা বলে- ‘১৮ বছরের আগে পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ হয় না’ কিংবা ‘১৮ বছরের নিচে বিয়ে হলে প্রচণ্ড মানসিক চাপ পড়ে’ এটা একটা ভুয়া তত্ত্ব। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে হলে মানসিক বিকাশ দ্রুত হয় এবং এটাই বাস্তবতা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন