সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদে তাবলিগ জামাত নিয়ে উত্তেজনা


এহসান বিন মুজাহির, সিলেটের ধ্বনি ডটকম: শ্রীমঙ্গলের কলেজ রোডস্থ শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদে তাবলিগ জামাতের প্রবেশ নিয়ে মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় তাবলিগ বিরোধী সুন্নি জনতার মাঝে চরম ক্ষোভ, অসন্তুষ ও টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তাবলিগ জামাতের ৩ দিনের এক জামাত শ্রীমঙ্গল কলেজ রোডস্থ জামে মসজিদে প্রবেশ করে। এসময় মসজিদ কমিটি ও তাবলিগ বিরোধীরা তাবলিগ জামাতের লোকদেরকে তাৎক্ষণিক মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কড়া নির্দেশ দেন। এসময় তাবলিগ জামাতের লোকেরা বলেন মুরব্বিদের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ৩ দিনের আগে মসজিদ থেকে বের হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এতে স্থানীয় তাবলিগ বিরোধীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জামাতের লোকদের উপর এবং তাদেরকে সুন্নি প্রতিরোধ কওে দেয়ার চেষ্ঠা করেন। এসময় মুহুর্তে শান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ধীরে ধীরে শহরের আশপাশের লোকজন, ব্যবসায়ী, আলেম-ওলামা ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যয়ের লোকজন জমায়েত হোন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল হক, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা মসজিদে আসেন।

দুপুর ২টায় স্থানীয় প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মবর্তা ও শ্রীমঙ্গল থানা ওসি মহোদয় মসজিদ কমিটির লোকজনের সাথে বৈঠকে বসে তাবলিগ জামাত ৩ দিনের জন্য মসজিদে থাকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেন। এসময় মসজিদ কমিটির মুতাওয়াল্ল্,ি ইমামসহ কমিটির অন্যান্য ব্যক্তিরাও প্রশাসনের দেয়া রায় মেনে নেন। প্রশাসন মসজিদে আসা তাবলিগ জামাতকে মসজিদে থাকার জন্য দুটি শর্ত দেন। শর্তদ্বয় হলো মসজিদেও ২য় তলায় বিশ্রাম এবং মসজিদের নিচ তলার বারেন্দায় তা’লীম ও বয়ান করার। তাবলিগ জামাতের লোকজন সন্তুষ্টচিত্তে প্রশাসনের দেয়া সিদ্ধান্ত মেনে নেন। তখন বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা দেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এদিকে বাদ মাগরিব মসজিদে আচমকা মিলাদে কিয়ামের আয়োজন করা হয়। মাগরিবের ফরজ নামাজ শেষে তাবলিগীরা বয়ানের ঘোণষা দেন। তাবলিগ জামাতের ঘোষণা শেষ হওয়া পর সুন্নত শেষ হতে না হতেই মিলাদের আয়োজকরদে পক্ষে একজন দাঁড়িয়ে ছাহেব কিবলাহর স্মৃতিচারণ, জামে মসজিদে তার অবদান আলোচনা করেই মিলাদে কিয়াম শুরু করেন। মিলাদ শেষে হঠাৎ করেই তাবলিগ বিরোধী বিভিন্ন মাসলাকের লোকজনের সরব উপস্থিতিতে তাবলিগ জামাতে আসা সাথীদের বিছানা, মালপত্র, লবন, পিয়াজ, চালসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র মসজিদের বাহিরে ছুড়ে ফেলে। এসময় মসজিদে আবার চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক শ্রীমঙ্গল থানা ওসি পুলিশের কয়েকটি ভ্যান সরেজমিনে পাঠান। পুলিশ ঘটনাস্থণে আসার পর মসজিদের অশান্ত পরিস্থিতি ও থমথমে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ওসি  ও উপজেলা নির্বাহী
সন্ধা ৭টায় দ্বিতীয়বার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান আসেন। অবশেষে ২য় দফা বৈঠকে বসে রাত পৌনে ১০টায় স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জামে মসজিদের ২য় তলা ও মসজিদের বারান্দায় মঙ্গলবার পর্যন্ত দাওয়াত ও তাবলিগ জামাতের আগতদের তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনার করার অনুমতি দেওয়া হয়। গতকাল রাত ৬ জন পুলিশ শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদে তাবলিগ জামাতিদের নিরাপত্তায় ছিলেন। আজ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জামে মসজিদে পুলিশী নিরাপত্তা অব্যাহত রয়েছে। প্রসঙ্গত দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় ধরে এ মসজিদে তাবলিগ প্রবেশ করতে পারেনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন