শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৭

রাস্তা-ঘাটে, অলি-গলিতে চক্কর দিয়ে ঘোষক ঘোষনা করছে। ঘোষক উচ্চকন্ঠে বলে চলছে-


যে ব্যক্তি বিয়ে করতে চায়, তাকে আমরা বিয়ে করিয়ে দেবো।

যে ব্যক্তি ঘর নির্মাণ করতে চায়, তাকে আমরা ঘর নির্মাণ করে দেবো। 
যে ঋণগ্রস্থ, ঋণ পরিশোধ করতে পারছেনা; তার ঋণ আমরা পরিশোধ করে দেবো। 
যে ব্যক্তি হজ্জ বা ওমরা করতে চায়, তাকে আমাদের খরচে হজ্জ বা ওমরা করাবো।
.
দুঃখিত, এই কথাগুলো এ যুগের নয়। এই কথাগুলো এ যুগের এমন কেউ বলেনি; যে যুগে মুসলিম দেশগুলোতে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস, তেল, পেট্রল ইত্যাদি খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়। এই কথাগুলি এমন যুগের কারও নয়, যে যুগে মুসলিম বিত্তশালীরা বিলাসবহুল গগনচুম্বী অট্রালিকায় শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় আয়েশ করে। যে যুগের ধনীরা শুধু ধনী হতে থাকে, আর দরিদ্ররা আরও দরিদ্র।বরং কথাগুলো আজ থেকে প্রায় সাড়ে তেরো শত বছর পূর্বে খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রাহ. বলেছেন।
.
কথাগুলো ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রাহ. -এর কাছে যখন লোকেরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যাকাত এর মাল নিয়ে আসলো, তখন বলেছিলেন। তিনি লোকদের সম্বোধন করে বলেছিলেন- এই মাল ফকিরদের মধ্যে বিতরন করে দাও। 
 মুসলিম উম্মাহর মাঝে কোনো ফকির নেই!
তাহলে এই মাল দিয়ে মুজাহিদ বাহিনীদের রণসাজে সজ্জিত করে দাও। 
মুজাহিদ বাহিনীগুলো তো সারা পৃথিবী চষে বেড়াচ্ছে!
তাহলে এই মাল দিয়ে যুবকদের বিয়ে করিয়ে দাও। 
-বিবাহেচ্ছুকদের বিয়ে করিয়ে দিয়েছি, এরপরও মাল রয়ে গেছে! 
-তাহলে এই মাল দিয়ে ঋণগ্রস্তদের ঋণ আদায় করে দাও।
-আদায় করে নিয়েছি, কিন্তু এরপরও মাল রয়ে গেছে! 
-তাহলে দেখো কোনো ঋণগ্রস্থ ইহুদী/খৃষ্টান পাও কি না, পেলে ঋণ আদায় করে দাও।
-করে দিয়েছি, কিন্তু তারপরও মাল রয়ে গেছে! 
-তাহলে এই মাল আহলে ইলমদের দিয়ে দাও।
-দিয়ে দিয়েছি, কিন্তু তারপরও মাল রয়ে গেছে! 
.
.
এবার ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রাহ. বললেন- তাহলে এই মাল দিয়ে গম কিনে পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় ছিটিয়ে দাও, যাতে এই কথা বলা না হয় যে, মুসলমানদের দেশে পাখ-পাখালিরা উপোষ রয়েছে!!! 
.
.
.
সূত্র- (কিতাবুল আমওয়াল, ৬২৫-৬৩৬। ইমাম আবু উবাইদ ক্বাসিম ইবনে সাল্লাম রাহ.)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন