তারিক রামাদান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক, গবেষক, আলোচক ও বিশ্লেষক। মিশরীয় বংশোদ্ভূত এই লেখকের জন্ম ১৯৬২ সালের ২৬ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। তারিকের বাবার নাম সাঈদ রামাদান ও মায়ের নাম ওয়াফা আল বান্না। তারিকের নানা ছিলেন মিসরের বিখ্যাত দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ হাসান আল বান্না, যিনি ১৯২৮ সালে মুসলিম ব্রাদারহুড প্রতিষ্ঠা করেন। দর্শন ও ফরাসি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পর তারিক জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর লেখাপড়া ও গবেষণার জন্য তিনি কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর। বর্তমানে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক ইসলামী শিক্ষা ও প্রাচ্য অনুষদের অধ্যাপক। পাশাপাশি কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শিক্ষা অনুষদের অতিথি শিক্ষক হিসেবেও পাঠদান করে থাকেন। মুসলিম বিশ্বের স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে কঠিন ও কঠোর বক্তব্য রাখায় ২০০৯ সালে তাকে মিশর, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, সিরিয়া ও সৌদি আরবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।‘ইসলাম অ্যান্ড দি আরব এওয়েকেনিং’ বইয়ের এই লেখককে ২০০০ সালে টাইম ম্যাগাজিন পৃথিবীর সেরা ১০০ জন বুদ্ধিজীবীর অন্যতম হিসেবে মনোনীত করেছে। ২০০৯ ও ২০১০ সালে আমেরিকার ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের জরিপে তারিক রামাদান পৃথিবীর সেরা ১০০ জন চিন্তাবিদের মধ্যে ৪৯তম স্থান অধিকার করেছেন।
বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বারবার রাজনৈতিক ইসলামের সমাপ্তি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। ইরানি শাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে আলজেরিয়া, মিশর ও অন্যান্য জায়গার সংকটের পথ পরিক্রমা অনুসরণ করে অলিভার রায় এ ব্যাপারে একটি উপসংহার টেনেছেন। গিলেস কেপেল তাকে সমর্থন দিয়েছেন। অলিভার রায়ের মতে, ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ ইতিমধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে এবং এর অনিবার্য পতন প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। তবে বিদগ্ধজন ও বিশ্লেষকদের কাছে এটা এখনো স্পষ্ট নয় যে ঠিক কিভাবে ‘ইসলামপন্থা’ ও ‘রাজনৈতিক ইসলাম’-কে তারা সংজ্ঞায়িত করবেন বা এ সম্পর্কে ধারণাগত রূপরেখা উপস্থাপন করবেন।’
শব্দবিজ্ঞানের সীমা-পরিসীমা অনুযায়ী ঠিক কোন জায়গায় ‘রাজনৈতিক ইসলাম’-এর পরিসমাপ্তি টানা যায় তা জানা খুব জরুরি। বলার মত সংগঠিত কাঠামোবিহীন, সুস্পষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য ছাড়াই, সহিংস চরমপন্থীর ছোট কোন দল যদি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে নিষ্পাপ মানুষ হত্যা করে বেড়ায় তবে কি তাকে ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ বলা চলে? আবার এর সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে নাজিমউদ্দিন আরবাকান থেকে শুরু করে রজব তৈয়ব এরদোগান ও তার জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (সংক্ষেপে একেপি) চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া পর্যন্ত তুরস্কের যে মডেল ক্রমবিকাশমান তা কি নিজেকে ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে বলা যায়? একইভাবে বিশ শতক ও একুশ শতকের গোড়ার দিকে ইসলামী আন্দোলনসমূহ কোন কোন পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে পার হয়েছে তা জানাও জরুরি। তারা কি এখনো রাজনৈতিক ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে? কিছু কিছু রাজতন্ত্রের চাপিয়ে দেয়া মতাদর্শ অনুযায়ী গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের মূলনীতিকে ইসলামের নামে প্রত্যাখান করতে হবে। একে ঠিক কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? এটাও কি এক ধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শ নয় যা পরিবেশ-পরিস্থিতির আলোকে ইসলামের সুনির্দিষ্ট বোঝাপড়া হাজির করতে চায়? কখনো কখনো আপসে রাজি না হয়ে পশ্চিম বিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলনে অবস্থান নিতে অনেকেই ইসলামের সাহায্য নেয়। এটা তাদের্ গায়ে ‘ইসলামপন্থী’ পরিচয় জুড়ে দেয়ার জন্য প্রলুব্দকর নয় কি?
‘রাজনৈতিক ইসলামের’ পরিসমাপ্তি ঘোষণা করার আগে এর সুস্পষ্ট সংজ্ঞা নিরূপন করাটাই সর্বপ্রথম জরুরি কাজ। এই পরিভাষার মধ্যে আসলে কি কি বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত সে ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। বিদগ্ধজন ও বিশ্লেষকরা এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে বার কয়েকই ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে যেমন আছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, তেমনি আছেন সমাজতাত্ত্বিকও। বিশ শতক ও একুশ শতকের গোড়ার দিকে সব ইসলামী সংগঠন বা আন্দোলনগুলো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে সময় পার করেছে। এ ব্যাপারে কি কারো সন্দেহ থাকতে পারে? উপনিবেশবাদ বিরোধিতায় নেতৃত্বদানকারী আল আফগানি ও আবদুহু এবং সমসাময়িক ইসলামপন্থীদের ব্যবহৃত যুক্তিতর্কের সহজ তুলনা করলেই দেখা যায়, সময়ের পরিক্রমায় তাদের কৌশল ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিধি বহুগুণে বিস্তৃতি লাভ করেছে। ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার আলোকেই এই বিস্তৃতি ঘটেছে এবং তা হয়েছে সফলতা-ব্যর্থতা দুই ক্ষেত্রেই। প্রায় এক শতাব্দীকাল ধরে গণতন্ত্র, নারী, রাজনৈতিক বহুত্ববাদ ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা ইত্যাদি প্রশ্নে মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের দাপ্তরিক নেতৃত্বের (অভিভাবক পরিষদ বা মাকতাব আল ইরশাদ) মধ্যে উল্লেখযোগ্যে উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। নেতৃত্ব বদলের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে সংগঠনের আভ্যন্তরীণ পরিবেশ বারবার উত্তেজিত হয়েছে। এসব সংঘাতের মূলে ছিল পরস্পরবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত। মুসলিম ব্রাদারহুডের নতুন প্রজন্ম কি তাদের পূর্বসূরিদের পথ পরিত্যাগ করেছেন? তারা কি আর ‘ইসলামপন্থী’ নন? এ ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়তো ঠিক হবে না। তবে এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, রাজনৈতিক ইসলামের আইনগত প্রতিমূর্তির রূপান্তর ঘটে গেছে। শুধুমাত্র এর ব্যবহৃত পরিভাষাতেই নয়। বরং এর মতাদর্শিক উপাদান ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অন্তর্ভুক্ত অগ্রগণ্য বিষয়াদির ক্ষেত্রেও।
মরক্কো থেকে মিশর, তিউনিশিয়া থেকে আলজেরিয়া হয়ে লিবিয়া, সিরিয়া এবং আরো পূর্বে পাকিস্তান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া সবখানেই একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রায় এক শতাব্দীকাল সময় ব্যবধানে এর চাইতে ভিন্ন আর কি হতে পারত? যখন সময়টা ছিল বিপদসংকুল ও প্রতিবন্ধকতায় ভরা।
একই আলোতে দেখা যায়, ইরানি অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আবদুল করিম সরোশ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মীর হুসেইন মুসাভির মত প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবকে সমর্থন করেছিলেন। তারা তা করেছিলেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আগেই। বিপ্লবের অনেক পরে তারা শাসন ব্যবস্থার ভিতর থেকেই এর প্রতি সমালোচনামূলক অবস্থান নেন ও অপরিহার্য সংস্কারের পক্ষে ডাক দেন। নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচনা করে অনেকেই ইসলামের রাজনৈতিক চরিত্রকে অস্বীকার করেন। অন্যদিকে মুসাভি, মেহদি কারুভি, নবনির্বাচিত সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির মত অনেকে এবং বেশিরভাগ সংস্কারপন্থীদের দাবি তারা এখনো বুনিয়াদি মতাদর্শের প্রতি অনুগত। তবে গত শাসন ব্যবস্থার অধীনে এই বুনিয়াদি চেতনার যে বিরুদ্ধাচরণ ঘটেছে তারা তার বিরোধী। ধর্মীয় কর্তৃত্বশালীদের ছোট একটা অংশ সব ধরনের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের অধিকারী হবে এটা তারা মানতে নারাজ। তাদের আরেকটি লক্ষ্য আছে যা ইসলামী প্রজাতন্ত্রের থাকা উচিত বলে তারা মনে করে। তারা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কোন উপায়েই ইসলামী ধারণাকে বাদ দেয়ার পক্ষপাতি নয়। আসলে তারা শাসন ব্যবস্থার আরো স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং স্বেচ্ছাচারী আটকাদেশ, গোপন নজরদারি ও পুরোহিততান্ত্রিক মাজহাবনির্ভর স্বজনপ্রীতির সমাপ্তির জন্যই এটা চেয়েছিলেন।
তাদের কাছে এগুলো ছিল ধর্মীয় নৈতিকতার বিরোধী এবং ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের মূলনীতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। তাদের মতে সেই বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল ইসলামের ভিত্তিতে রাজনীতিতে নৈতিক মানদণ্ডের প্রতিষ্ঠা করা। একে একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা নয়। এই অবস্থায় রয়টার্স ও ইসরাইলি দৈনিক হারের্টজ-এর খবর হচ্ছে আহমাদিনেজাদ ও মুসাভির নীতিতে বারাক ওবামা খুব সামান্যই পরিবর্তন দেখছেন। দুইজনের যেই আসুক না কেন প্রতিশ্রুত ভবিষ্যত সম্পর্ক হবে উত্তেজনাপূর্ণ। ইরানি শাসন ব্যবস্থা এখন আর নড়বড়ে নয়। তাই সামনের বছরগুলোতে এই অঞ্চলের বিশেষ করে তাদের লেবাননের মিত্র হিজবুল্লাহ এবং অবশ্যই সিরিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা তারা করতেই পারেন।
তুরস্কের উদাহরণও এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রোসেফ তায়েপ এরদোগান ও তার দীর্ঘদিনের গুরু সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিমউদ্দিন আরবাকানের মধ্যকার ব্যবধান একেবারে সুস্পষ্ট এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৈপ্লবিকও। পেশাগতভাবে আরবাকান ছিলেন অর্থনীতিবিদ। দায়িত্ব গ্রহণের পরেই তিনি জি-৮ এর বিপরীতে ভারসাম্যপূর্ণ কিছু একটা করতে চাইলেন। বিশ শতকের গোড়ার দিকের ইসলামী মতাদর্শ ও প্যান-ইসলামী চিন্তাধারা এর পিছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। ১৯৯৬ সালের বসন্তে তিনি মিশর, ইরান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং নাইজেরিয়াকে ডি-৮ (ডেভেলপিং এইট বা উন্নয়নশীল আট)–এ যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। এর মাধ্যমে তিনি তুরস্কের বিদেশ নীতি ও অর্থনীতিকে দক্ষিণমুখী ও পূর্বমূখী করে নিলেন। অংশগ্রহণকারী সবগুলো দেশই ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। প্রত্যাশা ছিল নিজেদের অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভরকেন্দ্র পরিবর্তনে তারা সবাই একত্রে কাজ করবে। সেই সময়ে আরবাকান তার আলোচনায় বলেছিলেন, ‘ইউরোপীয় দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যের হার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। অথচ মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে তা মাত্র ৭ শতাংশ। আমাদের অবশ্যই এই অনুপাত বাড়াতে হবে’। তার উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার। আর তা হচ্ছে, নিজ দেশে ইসলামীকরণ নীতি অনুসরণের পাশাপাশি বিরাজমান বিশ্ব ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক উপায়ে একটি নতুন ‘ইসলামী’ ক্ষমতা বলয় তৈরি করা। যদিও প্রকল্পটি ব্যর্থ হয়েছে। তবে তা এরদোগানের সাথে তার সাবেক গুরুর তফাতটা সুনির্দিষ্ট করেছে। মতাদর্শ হিসেবে আরবাকান ইসলামকেই গ্রহণ করেছিলেন। যা ছিল তার দিক থেকে ছিল পুরোপুরি পুঁজিবাদবিরোধী। তবে তা কমিউনিজম নয়। বরং তার মতে অন্য কোন উপায়। কিন্তু এরদোগানের অগ্রগণ্য বিষয়াদি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি পশ্চিমা বিশ্ব ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। তুরস্ককে এমন একটি ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছেন যা হবে প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক।
ইহজাগতিকতাবাদকে মেনে নিয়ে, সাংবিধানিক সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান রেখে এবং পুরনো ইসলামপন্থী স্লোগানগুলো থেকে দূরে সরে এসে তিনি তার অগ্রগণ্য বিষয়গুলোকে বিপরীত পথে পরিচালিত করছেন এই বলে যে, আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে তুরস্ককে শক্তিশালী অবস্থান নিতে হবে। অপরিহার্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে দুনিয়াব্যাপী গ্রহণযোগ্য নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে চলতে হবে। অতএব ‘প্রতিবেশীদের সাথে শূন্য সমস্যা’ নীতির অনুসরণ করতে হবে।
দেশের আভ্যন্তরীণ নীতি নির্ধারণে একেপি পুরোপুরি রক্ষণশীল একটি দল। ইসলামের ধর্মীয় ও নৈতিক অনুশাসনের প্রতি অনুগত থাকতে তারা সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। এরা কোনভাবেই সৌদি আরবে বিরাজমান ধর্মের পুঁথিগত পাঠ প্রচারের পক্ষে নয়। একেপি সংস্কারবাদী ইসলামের সমর্থক। কিন্তু এরা উভয়েই প্রায় একই ধরনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানের অধিকারী এবং তা আলাদা করে শনাক্ত করাও সম্ভব নয়। ইসলামের একটি জোরালো আদর্শিক সম্পর্ক (তুরস্কের সংস্কারবাদী ও সৌদির পুঁথিবাদপন্থী) নয়া উদারবাদী পুঁজিতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় গ্রহণযোগ্য হিসেবে পরস্পরের সহগামী। দেখা যায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কোন রাষ্ট্রে এই পরিস্থিতির উদ্ভব হলে একে ইসলামপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করতে পশ্চিমের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে। অনেকটা এরকম যে পুঁজিবাদবিরোধী স্বল্প আচরণ একটি দেশকে সামান্যই ইসলামপন্থী বানায়। অন্যভাবে বলা যায় ইসলামকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মর্যাদাপূর্ণ বিষয় শ্রেণীতে গ্রহণযোগ্য বিষয় হিসেবে আত্তীকরণ করা হতে পারে এই শর্তে যে তা বাজার ব্যবস্থার আইন-কানুন মনে নিবে।
অনুবাদ: শাহ্ মোহাম্মদ ফাহিম
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষা
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন