সোমবার, ২৯ জুন, ২০১৫

সুফিয়ান আস সাওরী রহিমাহুল্লাহ এর একটি চিঠি.


kiki emotico"হে আমার ভাই, ঊষা থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়কে পূর্ববর্তী দিনে তোমার কাজগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য ব্যয় করো।
গতকাল তুমি যে সকল ভালো কাজ করেছো, সেগুলোর প্রতি দৃঢ় থাকো এবং আল্লাহ'র অবাধ্য হয়ে যাই-ই করে ফেলেছো, সেগুলো ত্যাগ করো। একই ভুল বারবার করো না, কেননা তুমি তো জানো না যে, আদৌ তুমি সারাটাদিন বেঁচে থাকবে কি না! যতক্ষণ তুমি বেঁচে আছো, তাওবাহ করার রাস্তা তোমার জন্য উন্মুক্ত আছে। কিন্তু, মনে রেখো, যেকারোও জন্য খাঁটিরূপে তাওবাহ করার চেয়ে; গুনাহ থেকে দূরে থাকা অনেক সহজ। কারণ, প্রকৃত তাওবাহ হচ্ছে পাপকর্মের জন্য প্রচন্ড অনুতাপ এবং উক্ত পাপাচারে পুনরায় লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সংকল্পের সমষ্টি।
তুমি যেখানেই থাকো না কেন, আল্লাহ'কে ভয় করো। তুমি যদি গোপনে কোন গুনাহ করে ফেলো, তবে আল্লাহ'র কাছে গোপনে তাওবাহ করো। এবং তুমি যদি প্রকাশ্যে পাপ করে ফেলো, তাহলে প্রকাশ্যে আল্লাহ'র কাছে তাওবাহ করো। একটি পাপ কাজকে অপর পাপকর্মে লিপ্ত হবার সোপান হতে দিও না। যতটা সম্ভব হয় আল্লাহ'র কাছে প্রায়শই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার চেষ্টা করো এবং পরিমাণে অল্প হাসো কেননা তোমাকে উদ্দেশ্যবিহীনভাবে সৃষ্টি করা হয় নি। তোমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, ভাইদের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করো এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহশীল হও।
যখনি তোমার ইচ্ছা হবে অনুগ্রহশীল হবার, দরিদ্র, এতিম, দুর্বলদের প্রতি অনুগ্রহশীল হও। অথবা, যখনি তোমার দান করার ইচ্ছা জাগ্রত হবে কিংবা কোন ভালো কাজ করার ইচ্ছা হবে, শাইতান তোমার এবং তুমি যা করার ইচ্ছা পোষণ করেছো তা সম্পাদনের মাঝে এসে পড়ার পূর্বেই তা সম্পাদন করে ফেলো। সবসময় ভালো নিয়াহ অনুযায়ী কাজ করো। আহার করো ভালো নিয়াহ-তে, পান করো ভালো নিয়াহ-তে।
কৃপণ হয়ো না, কেননা কৃপণতা মানুষের দ্বীনকে কলুষিত করে ফেলে। কারোও কাছে কোন ওয়াদা করো না, আবার ওয়াদা করে সেই ওয়াদাপূর্ণ করা থেকে নিবৃত হয়ো না, কারণ, ওয়াদা করার জন্য তুমি যে ভালোবাসা অর্জন করেছিলে, ওয়াদা পালনে ব্যর্থ হওয়ায় তা ঘৃণায় পরিণত হবে। তোমার মুসলিম ভাই-এর প্রতি অন্তরে ঘৃণা পোষণ করো না, কারণ কারোও যদি তার অপর মুসলিম ভাই-এর সাথে হিংসা-বিদ্বেষ ভাব থাকে, তবে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করেন না।
রাগান্বিত হয়ো না; রাগ অনেকটা ক্ষুরের ন্যায়। ক্ষুর যেভাবে দেহ থেকে পশম সরিয়ে ফেলে, রাগও তেমনিভাবে একজনের ভালোকাজগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে।
মুসলিম ভাইদের সালাম দেওয়া ও কুশল বিনিময়ের অভ্যাস তৈরি করো। তুমি যদি এটা করো, তাহলে তোমার অন্তর থেকে ঘৃণা, বিদ্বেষ, ছলচাতুরির মনোভাব দূরীভূত হবে। তাদের সাথে করমর্দন করো, এর ফলে তাদের মনে তোমার জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। সবসময় পবিত্র (ওজু করা অবস্থায়) থাকার চেষ্টা করো, এতে আল-হাফাযাহ (যে ফেরেশতা আমাদের কৃতকর্মগুলো লিপিবদ্ধ করে) তোমাকে ভালোবাসবে।
ভালোবাসলে, কাউকে একমাত্র আল্লাহ'র জন্যই ভালোবাসো, এবং ঘৃণা করলে একমাত্র আল্লাহ'র জন্যই ঘৃণা করো। যদি তোমার মধ্যে এই দু'টি গুণ না থাকে, তার অর্থ হলো তোমার মধ্যে মুনাফেকির চিহ্ন বিদ্যমান।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন