যতদিন পর্যন্ত উম্মাহর মধ্যে আমীরুল মুমিনীন উমর (রা) মতো মানুষ থাকবে, নেকড়েরা কখনও কোনো মেষকে আক্রমণ করবে না’
মরুভূমিতে এক মেষপালকের নিকট এসে এক নিঃসঙ্গ-পথিক আবেদন করলেন, ‘আমি ক্ষুধার্ত, খাবার বলতে আমার কাছে কিছু নেই; আমি-কি তোমার একটি মেষ থেকে কিছু দুগ্ধ দোহন করে নিতে পারি? মেষপালক বললো, ‘ আমি-তো এই মেষের মালিক নই; সুতরাং মালিকের অনুমতি ছাড়া কাউকে দুধ দোহন করতে দিতে পারি না। মালিক নিশ্চয়ই জানতে পারবে এবং সে এটা পছন্দ করবে না।’ আসলে পথিকের মনে ছিল অন্য খেয়াল। তিনি বললেন, ‘তুমি বরং আমার কাছে একটি মেষ বিক্রয় করে দাও। মালিক যখন জানতে চাইবে, তুমি বলবে যে, একটি নেকড়ে বাঘ এসে মেষটিকে ধরে নিয়ে গেছে। নেকড়েরা-তো পশুপালগুলোতে প্রায়-সময়ই হানা দেয়। আমিও আমার ক্ষুধা নিবারণ করতে পারবো, আর তুমিও টাকা পাবে, আমাদের দু’জনেরই লাভ হবে।’ মেষপালক অত্যন্ত জোরালোভাবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলল, ‘কিন্তু আল্লাহর ব্যাপারে কী-হবে ’তিনিতো সব দেখেন? অসাধারণ! এই কথাশুনে পথিক-ব্যক্তিটি আনন্দিত হয়ে বলল, ‘যতদিন পর্যন্ত উম্মাহর মধ্যে তোমার মতো মানুষ থাকবে, নেকড়েরা কখনও কোনো মেষকে আক্রমণ করবে না’।
মেষপালকের এটা জানা ছিল-না যে, সে যার সঙ্গে কথা বলছে, তিনি আমীরুল মুমিনীন উমর (রা), যিনি মানুষের হৃৎস্পন্দন অনুভব করার জন্য সর্বদা সক্রিয় থাকতেন। আসলে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর স্মরণ হল একজন মুমিনের স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বাভাবিক জিবনের অঙ্গ। সর্বক্ষেত্রে বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরন করবে আল্লাপাকের ভয় সৃষ্টি হবে তার দ্বারা মন্দ কাজ হবেনা।
‘‘নিঃসন্দেহে, আসমান সমূহ ও যমীনের এই নিখুঁত সৃষ্টি এবং দিবারাত্রির আবর্তনের মধ্যে জ্ঞানীদের জন্য পর্যাপ্ত নিদর্শন রয়েছে। (আর এই জ্ঞানবান লোক হচ্ছে তারা) যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শায়িত অবস্থায় সর্বদা আল্লাহ পাক-কে স্মরণ করে।’’ (সূরা আল ইমরান : ১৯০-১৯১)
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতবাসীদের¬ মনে কোনো-কারণেই কোনো দুঃখ থাকবে না; দুঃখ শুধু একটা কারণেই হবে, তা হল পার্থিব জীবনের যে-মুহূর্তগুলো তারা মহা মহিমান্বিত আল্লাহ পাকের স্মরণ থেকে উদাসীন ছিল।’ (তবারানী-২০/৯৪)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন