আল্লামা ইবনে আবদুল বার কুরতুবি রহ. বলেন : ইলমের আদব ও বরকতসমূহের মধ্যে এটাও গরিগণিত যে, মানুষ ইনসাফপূর্ণ মেজাজ-স্বভাবের অধিকারী হবে। কারণ, যে ব্যক্তির মধ্যে ইনসাফ থাকবে না, সে নিজেও বুঝতে পারবে না, অন্য কেউ তাকে বোঝাতেও অক্ষম হবে। [মুখতাসার জামে বয়ানুল ইলম : ১১৯]
ইমাম মুহাম্মদ ইবনে উমর ওয়াকেদি রহ. বলেন, আমি নিজে ইমাম মালেক রহ. থেকে শুনেছি : আব্বাসীয় খলিফা আবু জাফর মনসুর হজে এসে আমাকে ডেকে নিয়ে প্রস্তাব দিল, আমার আকাঙ্ক্ষা হল, আপনার লিখিত ‘মুআত্তা’ কিতাব কয়েকটি কপি তৈরি করে ইসলামি বিশ্বের বড় বড় শহরে প্রেরণ করব, আর সেখানকার লোকদেরকে বলে দিব, তারা যেন সব বিষয়ে কেবল এ কিতাবের অনুসরণ করে এবং এর পরিপন্থী যত মতামত আছে সব যেন পরিহার করে। কেননা, এ কিতাবের সব বিষয় মদিনাবাসী থেকে বর্ণিত- যা অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য।
ইমাম মালেক রহ. বলেন : এ প্রস্তাব শুনে আমি তাকে উত্তরে বললাম, আমিরুল মুমিনিন! আপনি কখনো এমন ইচ্ছা পোষণ করবেন না। কারণ, বিভিন্ন অঞ্চলে সাহাবায়ে কেরাম এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য আলেমদের কথা ও মতামত পূর্বেই পৌঁছে গেছে; এবং প্রত্যেক এলাকাবাসী দীর্ঘদিন যাবৎ সে অনুপাতে আমল করে আসছে। এখন তাদেরকে নিজস্ব আকিদা-বিশ্বাস থেকে সরানো বিরাট কঠিন ব্যাপার। তাই মানুষদেরকে নিজেদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দিন। যে মতামতের ওপর সে আমল করে আসছে এর ওপরই তাকে আমল করতে দিন।’
এ কথা শুনে খলিফা মনসুর বলল, আল্লাহর কসম! আপনি আমার প্রস্তাব মেনে নিলে আমি অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করতাম। [মুখতাসার জামে বয়ানুল ইলম : ১২১]
আমরা হলে কী করতাম?
বলতাম, জ্বি জনাব, বড়ই উত্তম কাজ। এ কাজ করলে আপনার জান্নাত নিশ্চিত! যেভাবেই হোক নিজের পছন্দনীয় মতবাদ প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করতাম। ইমাম মালেকের মতো আজও যদি হানাফি ও আহলে হাদিসের ভাইয়েরা বিসয়টি উপলব্ধি করত!
এ দেশে যুগ যুগ ধরে হানাফি মাযহাব অনুযায়ী আমল চলে আসছে; তাই এখানকার মানুষকে বিভ্রান্ত করার অধিকার কে দিয়েছে?
হা, কোনো এলাকায় যদি কোনো বিষয় সরাসরি কুরআন-সুন্নাহর বিরোধী প্রচলন ঘটে থাকে, তাহলে হিকমতের সঙ্গে সংশোধন করা ভালো কাজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন