উমাইয়া খিলাফতকালে মিসর ছিল একটা প্রদেশ। সুলতান আইয়ুবি রহ.-এর সময়কাল বাদ দিয়ে, আব্বাসী যুগ ও উমাইয়া যুগকে মেলালে, মিসরে সবচেয়ে সুন্দর সময় ছিল: আবদুল আযীয বিন মারওয়ানের শাসনকাল। তিনি ছিলেন উমার বিন আবদুল আযীয রহ,-এর পিতা।
তিনি মিসরের গভর্নর ছিলেন প্রায় বিশ বছর। ৬৫ হিজরী থেকে ৮৬ হিজরী পর্যন্ত। তিনি মিসরকে ইলম-তাকওয়া-শিল্পে-অর্থনীতিতে অনেকদূর নিয়ে গিয়েছিলেন।
তার বাবা, উমাইয়া খলীফা মারওয়ান ইবনুল হাকামই ছেলেকে মিসরের গভর্নরের পদে নিয়োগ দেন। পরবর্তীতে ভাই আবদুল মালিক বিন মারওয়ান খলীফা হলে, ভাইকে নিজ পদেই বহাল রাখের।
.
বাবা মারওয়ান কিন্তু বড় ছেলে আবদুল মালেকের পর, আবদুল আযীযকেই ‘ওলী আহদ’ যুবরাজ নির্ধারণ করে গিয়েছিলেন। আবদুল মালিক খলীফা হয়ে, ভাইয়ের কাছে আবেদন করলেন, যেন যুবরাজের দাবি ছেড়ে দেয়। ভাতিজা ওলীদই পরে খলীফা হবে। কিন্তু আবদুল আযীয বড় ভাইয়ের দাবিতে সাড়া দেননি। হিশেব মতো তিনিই ছিলেন পরবর্তী খলীফা। সেভাবেই প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু তার দ্বারপ্রান্তে কড়া নাড়ে। আল্লাহরই ইচ্ছা। আবদুল আযীয খলীফা হলে, উমাইয়া বংশের ইতিহাস অন্য রকম হতে পারতো।
.
মুসলিম জাহানে সর্বপ্রথম নিজস্ব মুদ্রা চালু হয় খলীফা আবদুল মালেক বিন মারওয়ানের আমলে। এর আগে রোমান মুদ্রাই প্রচলিত ছিল। স্বতন্ত্র ইসলামি মুদ্রা চালু করার এই গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা কিন্তু আবদুল আযীয বিন মারওয়ানেরই ছিল। তার পরামর্শ ধরেই বড় ভাই আবদুল মালিক মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করেন। অর্থনীতি নিয়ে আবদুল আযীযের সুদূরপ্রসারী এমন আরও অনেক চিন্তা যে ছিল, সেটা তার শাসনামলে মিসরে গৃহীত অনেক সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করলে ধরা পড়ে। বাবার প্রভাব ছেলেও ওপরও পড়েছে। উমার বিন আবদুল আযীযের আমলেও মুসলিম জাহান সর্বোচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল।
১৭/০৩/১৬
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন