ভারতের আজমগড়ে স্থানীয় একটি মন্দিরে গরুর মাংস খণ্ড ছুড়তে
গিয়ে আটক হয়েছে সারদেশাই রাজদীপ নামের এক হিন্দু যুবক । বোরখা পরিহিত অবস্থায়
মন্দিরে গরুর মাংস ছুড়তে গিয়ে ধরা পরা ঐ যুবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস)
একজন সক্রিয় কর্মী বলে দাবী করেছে স্থানীয়রা। আটকের পর যুবককে নিয়ে আজমগড়ের রাস্তায়
মিছিলও বের
করা হয় ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নির্জন ঐ মন্দিরের ভেতর গরুর
মাংসখণ্ড ছুঁড়ে পালানোর সময় ধরা স্থানীয়দের কাছে ধরা পড়ে বোরখা পরা একজন । আবরণ উন্মোচনের পর পোশাকের
আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে এক যুবক । স্থানীয়দের দাবী উগ্র হিন্দু মৌলবাদি গোষ্ঠি
আরএসএসসংঘের কর্মীরা বেশ
কিছুদিন ধরেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃস্টির জন্য বিভিন্ন মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট
করে মুসলিমদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে হিন্দু-মুসলিম সংঘর্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতে পারে।
সমির গুপ্তা নামের একজন টুইটে
দাবি করে , ওই
ব্যক্তি কট্টর আরএসএস সমর্থক ও কর্মী। বেশকিছুদিন ধরেই হিন্দুদের পবিত্র স্থান কলুষিত করার চেষ্টার
পেছনে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে দাবি করা হয় ।
কিছুক্ষনের মধ্যেই সামাজিক
যোগাযোগের মাধ্যম টুইটার ও ফেসবুকে সেই ছবি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়ে
যায়। মুহূর্তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে বিভিন্ন মন্তব্যে – মন্তব্যকারী অনেকের মতেই ‘ ভারতের গরুর মাংস নিষিদ্ধ
হওয়ার পর হিন্দু মন্দির চত্বরে গোমাংস ছুঁড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেয়ার
ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটছে। উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে এমন ঘটনা ঘটার পেছনেও এমন কোন রহস্য থাকতে পারে’ ।
‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়া
অভিযোগের জেরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর জন্য হিন্দু মৌলবাদীদের সমালোচনা এবং
প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনেক হিন্দু
ধর্ম্যালম্বীদেরও মন্তব্য
করতে দেখা যায় ।
প্রসঙ্গত, বাড়িতে গো-হত্যা করেছেন, এমন অভিযোগের জেরে গত সোমবার
রাতে উগ্র হিন্দুদের গণপিটুনিতে
নিহত হন বিসরাখা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ ইকলাক (৫৮)।
তদন্তে জানা গেছে, স্থানীয় মন্দিরের ঘোষণার
জেরেই ইকলাখের বাড়িতে চড়াও হয় উন্মত্ত জনতা। পুলিশের দাবি, জেরায় মন্দিরের পুরোহিত
স্বীকার করেছেন যে তাকে ওই ঘোষণা দিতে বাধ্য করেছিল দুই যুবক।
জানা যায়, গণপিটুনি ও তার জেরে হত্যার
অভিযোগে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাতে গোমাংসের
উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশের দাবি, খুনের পেছনে গো-হত্যার কারণ দর্শিয়েছিল
মারমুখি জনতা। ঘটনায় মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার
এর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন