রবিবার, ২২ মে, ২০১৬

আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মিরি রহ. বলেন, নবীদের কাছে ওহি প্রেরণ হিসেবে তা তিন প্রকার :

Mohiuddin Kasemi

ওহি তিন প্রকার 
----------------
আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মিরি রহ. বলেন, নবীদের কাছে ওহি প্রেরণ হিসেবে তা তিন প্রকার :

১. وحى قَلْبِىْ (অন্তরে প্রবিষ্ট ওহি) : কোনোরূপ মাধ্যম ছাড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীর অন্তরে প্রবিষ্ট ওহি। তাতে কোনো আওয়াজ থাকে না। যা জাগ্রত কিংবা ঘুমেও হতে পারে। এজন্যই নবীদের স্বপ্নও ওহি হয়ে থাকে। হযরত ইবরাহিম আ. স্বীয় পুত্রধন ইসমাইলকে কুরবানি করার ঐতিহাসিক হুকুম স্বপ্নেই পেয়েছিলেন।
২. كَلَام اِلهِى (সরাসরি কথোপকথন) : আল্লাহ তাআলা স্বয়ং নবীর সাথে কথা বলার মাধ্যমে যে হুকুম-আহকাম দিয়ে থাকেন। এতে কোনো ফেরেশতার মধ্যস্থতা থাকে না; তবে নবী এক ধরনের বিশেষ আওয়াজ শুনতে পান; যেই আওয়াজ কোনো মাখলুকের আওয়াজের সদৃশ নয়। যা সে নবীই অনুধাবন করতে পারেন অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়। ওহির এ প্রকার সর্বোত্তম ও সবচেয়ে মর্যাদাশীল। তাই তো পবিত্র কুরআনে হযরত মুসা আ. এর ফজিলত বর্ণিত হচ্ছে-
وَكَلَّمَ اللَّهُ مُوسَى تَكْلِيمًا 
‘আর আল্লাহ মুসার সাথে অনেক কথা বলেছেন।’ (সূরা নিসা : ১৬৪)

৩. وحى مَلَكِى (ফেরেশতাদের মাধ্যমে প্রেরিত ওহি) : আল্লাহ তাআলা স্বীয় পয়গাম কোনো ফেরেশতার মাধ্যমে নবীর কাছে পৌঁছে দেন। কখনো ফেরেশতার আকৃতি দেখা যেত না, শুধু আওয়াজ শুনা যেত। আবার কখনো ফেরেশতা মানুষের আকৃতি ধারণ করে আসত। আবার কখনো ফেরেশতা নিজের প্রকৃত সুরত নিয়ে আত্মপ্রকাশ করত।
এ তিন প্রকার ওহির দিকে ইঙ্গিত হচ্ছে একটি আয়াতে :
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ
কোনো মানুষের জন্য সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তাআলা (সরাসরি) তার সাথে কথা বলবেন; কিন্তু ওহির মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে নতুবা তিনি কোনো দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দিবে। (সূরা শুরা : ৫১)

এই আয়াতের মধ্যে وَحْياً অর্থাৎ ওহির মাধ্যমে’ দ্বারা ওহির প্রথম প্রকার এবং مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ‘পর্দার অন্তরাল থেকে’ দ্বারা ওহির দ্বিতীয় প্রকার এবং يُرْسِلَ رَسُولًا ‘দূত প্রেরণ করে’ দ্বারা ওহির তৃতীয় প্রকার উদ্দেশ্য নেওয়া হয়েছে।
বি. দ্র. কুরআনে কারিম পুরোটাই নাযিল হয়েছে ওহির তৃতীয় প্রকারের মাধ্যমে অর্থাৎ ফেরেশতা হযরত জিবরাইল আ. এর মাধ্যমে। (উলুমুল কুরআন-৩১)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন