গতকাল মাওনা
থেকে আমার এক বোন ফোন করেছেন, ভাই! আমার পাশে
একজন ভাড়াটিয়া মহিলা এসেছেন। তিনি বলছেন, মহিলারা পুরুষের
মতো নামায পড়বে। তিনি বুখারি শরিফ হতে দলিল দিয়েছেন। এতকাল যেভাবে পড়েছি সেভাবে
নামাযই নাকি হয়নি!
বিষয়টি নিয়ে কিছু লোক বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছেন। তাই একটি পুরনো পোস্ট আবার দিলাম।
বিষয়টি নিয়ে কিছু লোক বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছেন। তাই একটি পুরনো পোস্ট আবার দিলাম।
ইসলামের অনেক
বিধানের ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষের ভিন্নতা সুস্পষ্ট। তদ্রূপ নারীদের নামায পুরুষের
নামাযের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। শক্তিশালী দলিল-প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত। চার মাযহাবের
ইমামগণই তা বলেছেন। তবুও কিছু লোক বলে বেড়ায়,
নারী-পুরুষের
নামাযে কোনো পার্থক্য নেই। বিষয়টি এ পর্যন্ত থাকলেও সমস্যা ছিল না; সমস্যা হল যেসব নারী পার্থক্য বজায় রেখে
নামায পড়ছে, তাদেরকে বলছে
এতকাল যেসব নামায পড়েছেন তা ভুল ছিল!
অজ্ঞতা আর মূর্খতার একটা সীমানা থাকা দরকার। আহলে হাদিসের অনেক বিষয় আমার কাছে ভালো লাগে কিন্তু এসব কিছু বিষয়ে মাত্রাতিরিক্তি বাড়াবাড়ি দেখলে সত্যিই অনেক কষ্ট পাই। তখন তাদেরকে ফেতনা না বলে আর কোনো উপায় থাকে না। একটি বিষয় দেখবেন, আমাদের দেশের অনেক আহলে হাদিস আরবিই জানে না। হাদিস ও হাদিসের ব্যাখ্যার আরবিগ্রন্থগুলো পড়ার মুরোদ নেই। তাছাড়া আহলে হাদিসের ইমামদের কিতাব সম্পর্কেও কোনো ধারণা নেই। তারা জানেই না তারা কাদের ব্যাখ্যার অনুসরণ করছে। অনেক আহলে হাদিস আলেমকে জিজ্ঞেস করেছি, নবাব সিদ্দিক হাসান খান রহ. এর আউনুল বারী পড়েছেন? মুবারকপুরী রহ. এর তুহফাতুল আহওয়াযী দেখেছেন? বলে, এরা আবার কারা? তখন হাসব না কাঁদব- ভেবে পাই না। যাক, আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। দলিল-প্রমাণভিত্তিক আলোচনা স্বাগতম। বিশেষত একটি মুস্তাহাব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিন না। আহলে হাদিসের যেসব বোন পুরুষের মতো নামায পড়ে তাদেরকে কি আমরা বলেছি আপনাদের নামায হয়নি। তাহলে তারা হানাফি সমাজে ফেতনা ছড়াচ্ছে কেন?
এ বিষয়ে লেখার অনেক অনুরোধ ছিল। অনুরোধ রাখতে পেরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।
.
নারী-পুরুষ মানুষ হিসেবে সমান হলেও শরিয়তের বিধানের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে, যা সর্বজনস্বীকৃত। তদ্রƒপ নামাযেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন :
১. পুরুষের জন্যে নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ, এতটুকু ঢেকে নামায পড়লেই পুরুষের নামায হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে নারীর চেহারা ও হাত-পা ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হয়। নামাযেও তাই।
২. পুরুষ ইমাম হতে পারে, নারী ইমাম হতে পারে না।
৩. মহিলা আযান দিতে পারে না, কেবল পুরুষই আযান দেয়।
৪. ইকামত শুধু পুরুষ দিতে পারে, নারী নয়।
৫. পুরুষের জন্যে জামাতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা; কিন্তু নারীর জন্যে ঘরের কোণে নামায পড়াকে উত্তম বলা হয়েছে।
৬. জুমুআ ও ঈদের নামায পুরুষের ওপর ফরজ ও ওয়াজিব; মহিলাদের ওপর ফরজ বা ওয়াজিব নয়।
৭. নামাযে সতর্ক করার মতো কোনো ঘটনা ঘটলে পুরুষকে তাসবিহ পড়ার হুকুম এসেছে; অথচ এক্ষেত্রে নারীদের হুকুম হচ্ছে তাসফিক অর্থাৎ হাতে শব্দ করা।
নারী-পুরুষের এসব পার্থক্য অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত- যা সকলেই গ্রহণ করেছেন। তদ্রƒপ নারী-পুরুষের মধ্যে নামায আদায়ের পদ্ধতির মাঝেও কিছু পার্থক্য রয়েছে; যেন নারীর সতর ও পর্দার প্রতি বিশেষ বিবেচনা করা হয়েছে।
নারী-পুরুষের নামাযের মাঝে পদ্ধতিগত যেসব পার্থক্য রয়েছে :
১. পুরুষ তাকবিরে তাহরিমার সময় উভয় হাত কানের লতি পর্যন্ত উত্তোলন করবে; আর নারী হাত তুলবে কাঁধ পর্যন্ত।
২. পুরুষ হাত নাভীর নিচে বাঁধবে, আর নারী বাঁধবে বুকের ওপর।
৩. পুরুষ রুকুর সময় পূর্ণ ঝুঁকে রুকু করবে, আর নারী অল্প ঝুঁকবে।
৪. পুরুষ সেজদার করার সময় উভয় হাত পেট ও উরু থেকে দূরে থাকবে; পক্ষান্তরে নারী জড়োসড়ো হয়ে পেট উরুর সঙ্গে মিলিয়ে সেজদা করবে।
৫. পুরুষ উভয় বৈঠকে বাম পায়ের ওপর ভর দিয়ে ডান পা খাড়া করে বসবে; আর নারী উভয় পা বাম দিকে বের করে দিবে তখন বাম রানের ওপর ডান রান থাকবে।
দলিল দ্বারা এসব পার্থক্য প্রমাণিত। তবে কোনো মহিলা যদি এসব পার্থক্য বজায় না রেখে নামায পড়ে তাহলে তার নামায হয়ে যাবে। কারণ, তা সুন্নত ও মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত।
এবার হাদিসগুলো লক্ষ্য করুন :
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :্র إِذَا جَلَسْتِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا গ্ধ.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর ওপর রাখে। আর যখন রুকু করে তখন যেন পেট উরুর সঙ্গে মিলিয়ে রাখে; যা তার সতরের জন্যে অধিক উপযোগী। আল্লাহ তাআলা তাকে দেখে (ফেরেশতাদের প্রতি সম্বোধন করে) বলেন : হে আমার ফেরেশতারা! তোমরা সাক্ষী থাক আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস নং- ৩৩৩২৪; জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ১৭৫৯; কানযুল উম্মাল, হাদিস নং- ২০২০৩)।
عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِى حَبِيبٍ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- مَرَّ عَلَى امْرَأَتَيْنِ تُصَلِّيَانِ فَقَالَ :্র إِذَا سَجَدْتُمَا فَضُمَّا بَعْضَ اللَّحْمِ إِلَى الأَرْضِ ، فَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَيْسَتْ فِى ذَلِكَ كَالرَّجُلِ গ্ধ.
ইয়াযিদ ইবনে আবি হাবিব রহ. বলেন : একবার রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন; তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশে) বললেন : সেজদা করার সময় শরীর জমিনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখবে। কেননা, মহিলারা এক্ষেত্রে পুরুষের মতো নয়। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস নং- ৩৩২৫; কানযুল উম্মাল, হাদিস নং- ১৯৭৮৭; জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ২১১০)।
عن وائل بن حجر قال : جئت النبي صلى الله عليه و سلم فقال ...: يا وائل بن حجر إذا صليت فاجعل يديك حذاء أذنيك والمرأة تجعل يديها حذاء ثدييها
হযরত ওয়াইল ইবনে ওজর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আগমন করলাম, তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার মধ্যে এটাও) বললেন : হে ওয়াইল ইবনে হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে তখন কান বরাার হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আল-মুজামুল কাবির, হাদিস নং- ২৮; জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ২৬৩৭৭; কানযুল উম্মাল, হাদিস নং- ১৯৬৪০)।
.
উল্লিখিত হাদিসগুলো দ্বারা স্পষ্ট অনুমেয় যে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের নামাযে পার্থক্য রয়েছে। কারণ, এর দ্বারা নারীদের সতর ও পর্দা সুরক্ষিত থাকে সুন্দরভাবে। তাছাড়া এই হাদিসগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বিরোধপূর্ণ অন্য কোনো হাদিস নেই, যাতে বলা হয়েছে যে, নারী-পুরুষের নামাযে কোনো পার্থক্য নেই। তবে একটি সহিহ হাদিসে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :
عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ - رضي الله عنه - قَالَ : قَالَ رَسُولُ اَللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - - صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي
হযরত মালেক ইবনে হুয়াইরিস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : তোমরা ওইভাবে নামায পড় যেভাবে আমাকে নামায পড়তে দেখ। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ৫৬৬২)।
এই হাদিসে বাহ্যিক অর্থ গ্রহণ করে যদি বলা হয় যে, ‘হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নামায পড়েছেন, হুবহু সেভাবেই সকলকে নামায পড়তে হবে এবং হুজুর সা. যেহেতু পুরুষ ছিলেন তাই নারীগণও হুুজরের মতো নামায পড়বে।’ তাহলে আমরা বলব, এই হাদিসে তো সতরের পার্থক্য নেই, এবার বলা শুরু করুন যে, নারীদের পর্দা ছাড়াই নামায হয়ে যাবে!। এটা কেউই বলতে পারেব না।
মূলত এই হাদিসের প্রেক্ষাপট বুঝতে হবে। খন্দকের যুদ্ধের সময় ধারাাবহিকভাবে চার ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে যায়। ওই কাযা নামায পড়ার সময় রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন : ‘তোমরা আমার মতো নামায আদায় কর।’ অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে কাযা নামাযগুলো পড়। অথবা তাদিলে আরকান অর্থাৎ নামাযের প্রত্যেকটি রুকন ধীরস্থিরে আদায় করার জন্যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আদেশ দিয়েছেন। (তুহফাতুল আহওয়াজি : ১/৪৫২)।
তাছাড়া এই হাদিস দ্বারা যদি নারী-পুরুষের নামারে পদ্ধতিগত পার্থক্য নিষেধ করা সম্পর্কে বর্ণিত হতো, তাহলে হাদিসের যে-কোনো একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থে এ বিষয়ে আলোচনা থাকত। কিন্তু কোনো ব্যাখ্যাগ্রন্থেই তা আলোচিত হয়নি।
উপরন্তু হাদিসের মর্ম, রহস্য ও ব্যাখ্যা সাহাবায়ে কেরাম ভালোভাবে জানতেন। এবার দেখা যাক সাহাবায়ে কেরাম নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্যের ব্যাপারে কী বলেন?
অজ্ঞতা আর মূর্খতার একটা সীমানা থাকা দরকার। আহলে হাদিসের অনেক বিষয় আমার কাছে ভালো লাগে কিন্তু এসব কিছু বিষয়ে মাত্রাতিরিক্তি বাড়াবাড়ি দেখলে সত্যিই অনেক কষ্ট পাই। তখন তাদেরকে ফেতনা না বলে আর কোনো উপায় থাকে না। একটি বিষয় দেখবেন, আমাদের দেশের অনেক আহলে হাদিস আরবিই জানে না। হাদিস ও হাদিসের ব্যাখ্যার আরবিগ্রন্থগুলো পড়ার মুরোদ নেই। তাছাড়া আহলে হাদিসের ইমামদের কিতাব সম্পর্কেও কোনো ধারণা নেই। তারা জানেই না তারা কাদের ব্যাখ্যার অনুসরণ করছে। অনেক আহলে হাদিস আলেমকে জিজ্ঞেস করেছি, নবাব সিদ্দিক হাসান খান রহ. এর আউনুল বারী পড়েছেন? মুবারকপুরী রহ. এর তুহফাতুল আহওয়াযী দেখেছেন? বলে, এরা আবার কারা? তখন হাসব না কাঁদব- ভেবে পাই না। যাক, আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। দলিল-প্রমাণভিত্তিক আলোচনা স্বাগতম। বিশেষত একটি মুস্তাহাব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিন না। আহলে হাদিসের যেসব বোন পুরুষের মতো নামায পড়ে তাদেরকে কি আমরা বলেছি আপনাদের নামায হয়নি। তাহলে তারা হানাফি সমাজে ফেতনা ছড়াচ্ছে কেন?
এ বিষয়ে লেখার অনেক অনুরোধ ছিল। অনুরোধ রাখতে পেরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।
.
নারী-পুরুষ মানুষ হিসেবে সমান হলেও শরিয়তের বিধানের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে, যা সর্বজনস্বীকৃত। তদ্রƒপ নামাযেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন :
১. পুরুষের জন্যে নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ, এতটুকু ঢেকে নামায পড়লেই পুরুষের নামায হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে নারীর চেহারা ও হাত-পা ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হয়। নামাযেও তাই।
২. পুরুষ ইমাম হতে পারে, নারী ইমাম হতে পারে না।
৩. মহিলা আযান দিতে পারে না, কেবল পুরুষই আযান দেয়।
৪. ইকামত শুধু পুরুষ দিতে পারে, নারী নয়।
৫. পুরুষের জন্যে জামাতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা; কিন্তু নারীর জন্যে ঘরের কোণে নামায পড়াকে উত্তম বলা হয়েছে।
৬. জুমুআ ও ঈদের নামায পুরুষের ওপর ফরজ ও ওয়াজিব; মহিলাদের ওপর ফরজ বা ওয়াজিব নয়।
৭. নামাযে সতর্ক করার মতো কোনো ঘটনা ঘটলে পুরুষকে তাসবিহ পড়ার হুকুম এসেছে; অথচ এক্ষেত্রে নারীদের হুকুম হচ্ছে তাসফিক অর্থাৎ হাতে শব্দ করা।
নারী-পুরুষের এসব পার্থক্য অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত- যা সকলেই গ্রহণ করেছেন। তদ্রƒপ নারী-পুরুষের মধ্যে নামায আদায়ের পদ্ধতির মাঝেও কিছু পার্থক্য রয়েছে; যেন নারীর সতর ও পর্দার প্রতি বিশেষ বিবেচনা করা হয়েছে।
নারী-পুরুষের নামাযের মাঝে পদ্ধতিগত যেসব পার্থক্য রয়েছে :
১. পুরুষ তাকবিরে তাহরিমার সময় উভয় হাত কানের লতি পর্যন্ত উত্তোলন করবে; আর নারী হাত তুলবে কাঁধ পর্যন্ত।
২. পুরুষ হাত নাভীর নিচে বাঁধবে, আর নারী বাঁধবে বুকের ওপর।
৩. পুরুষ রুকুর সময় পূর্ণ ঝুঁকে রুকু করবে, আর নারী অল্প ঝুঁকবে।
৪. পুরুষ সেজদার করার সময় উভয় হাত পেট ও উরু থেকে দূরে থাকবে; পক্ষান্তরে নারী জড়োসড়ো হয়ে পেট উরুর সঙ্গে মিলিয়ে সেজদা করবে।
৫. পুরুষ উভয় বৈঠকে বাম পায়ের ওপর ভর দিয়ে ডান পা খাড়া করে বসবে; আর নারী উভয় পা বাম দিকে বের করে দিবে তখন বাম রানের ওপর ডান রান থাকবে।
দলিল দ্বারা এসব পার্থক্য প্রমাণিত। তবে কোনো মহিলা যদি এসব পার্থক্য বজায় না রেখে নামায পড়ে তাহলে তার নামায হয়ে যাবে। কারণ, তা সুন্নত ও মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত।
এবার হাদিসগুলো লক্ষ্য করুন :
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :্র إِذَا جَلَسْتِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا গ্ধ.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর ওপর রাখে। আর যখন রুকু করে তখন যেন পেট উরুর সঙ্গে মিলিয়ে রাখে; যা তার সতরের জন্যে অধিক উপযোগী। আল্লাহ তাআলা তাকে দেখে (ফেরেশতাদের প্রতি সম্বোধন করে) বলেন : হে আমার ফেরেশতারা! তোমরা সাক্ষী থাক আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস নং- ৩৩৩২৪; জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ১৭৫৯; কানযুল উম্মাল, হাদিস নং- ২০২০৩)।
عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِى حَبِيبٍ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- مَرَّ عَلَى امْرَأَتَيْنِ تُصَلِّيَانِ فَقَالَ :্র إِذَا سَجَدْتُمَا فَضُمَّا بَعْضَ اللَّحْمِ إِلَى الأَرْضِ ، فَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَيْسَتْ فِى ذَلِكَ كَالرَّجُلِ গ্ধ.
ইয়াযিদ ইবনে আবি হাবিব রহ. বলেন : একবার রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন; তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশে) বললেন : সেজদা করার সময় শরীর জমিনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখবে। কেননা, মহিলারা এক্ষেত্রে পুরুষের মতো নয়। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস নং- ৩৩২৫; কানযুল উম্মাল, হাদিস নং- ১৯৭৮৭; জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ২১১০)।
عن وائل بن حجر قال : جئت النبي صلى الله عليه و سلم فقال ...: يا وائل بن حجر إذا صليت فاجعل يديك حذاء أذنيك والمرأة تجعل يديها حذاء ثدييها
হযরত ওয়াইল ইবনে ওজর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আগমন করলাম, তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার মধ্যে এটাও) বললেন : হে ওয়াইল ইবনে হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে তখন কান বরাার হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আল-মুজামুল কাবির, হাদিস নং- ২৮; জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ২৬৩৭৭; কানযুল উম্মাল, হাদিস নং- ১৯৬৪০)।
.
উল্লিখিত হাদিসগুলো দ্বারা স্পষ্ট অনুমেয় যে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের নামাযে পার্থক্য রয়েছে। কারণ, এর দ্বারা নারীদের সতর ও পর্দা সুরক্ষিত থাকে সুন্দরভাবে। তাছাড়া এই হাদিসগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বিরোধপূর্ণ অন্য কোনো হাদিস নেই, যাতে বলা হয়েছে যে, নারী-পুরুষের নামাযে কোনো পার্থক্য নেই। তবে একটি সহিহ হাদিসে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :
عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ - رضي الله عنه - قَالَ : قَالَ رَسُولُ اَللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - - صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي
হযরত মালেক ইবনে হুয়াইরিস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : তোমরা ওইভাবে নামায পড় যেভাবে আমাকে নামায পড়তে দেখ। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ৫৬৬২)।
এই হাদিসে বাহ্যিক অর্থ গ্রহণ করে যদি বলা হয় যে, ‘হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নামায পড়েছেন, হুবহু সেভাবেই সকলকে নামায পড়তে হবে এবং হুজুর সা. যেহেতু পুরুষ ছিলেন তাই নারীগণও হুুজরের মতো নামায পড়বে।’ তাহলে আমরা বলব, এই হাদিসে তো সতরের পার্থক্য নেই, এবার বলা শুরু করুন যে, নারীদের পর্দা ছাড়াই নামায হয়ে যাবে!। এটা কেউই বলতে পারেব না।
মূলত এই হাদিসের প্রেক্ষাপট বুঝতে হবে। খন্দকের যুদ্ধের সময় ধারাাবহিকভাবে চার ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে যায়। ওই কাযা নামায পড়ার সময় রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন : ‘তোমরা আমার মতো নামায আদায় কর।’ অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে কাযা নামাযগুলো পড়। অথবা তাদিলে আরকান অর্থাৎ নামাযের প্রত্যেকটি রুকন ধীরস্থিরে আদায় করার জন্যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আদেশ দিয়েছেন। (তুহফাতুল আহওয়াজি : ১/৪৫২)।
তাছাড়া এই হাদিস দ্বারা যদি নারী-পুরুষের নামারে পদ্ধতিগত পার্থক্য নিষেধ করা সম্পর্কে বর্ণিত হতো, তাহলে হাদিসের যে-কোনো একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থে এ বিষয়ে আলোচনা থাকত। কিন্তু কোনো ব্যাখ্যাগ্রন্থেই তা আলোচিত হয়নি।
উপরন্তু হাদিসের মর্ম, রহস্য ও ব্যাখ্যা সাহাবায়ে কেরাম ভালোভাবে জানতেন। এবার দেখা যাক সাহাবায়ে কেরাম নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্যের ব্যাপারে কী বলেন?
সাহাবায়ে
কেরামের অভিমত
عَنْ عَلِيٍّ ، قَالَ : إذَا سَجَدَتِ الْمَرْأَةُ فَلْتَحْتَفِز ، وَلْتَضُمَّ فَخِذَيْهَا.
হযরত আলি রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : মহিলা যখন সেজদা করে তখন যেন জড়সড় হয়ে সেজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সঙ্গে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৭৯৩; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস নং- ৫০৭২)।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَلاَةِ الْمَرْأَةِ ؟ فَقَالَ : تَجْتَمِعُ وَتَحْتَفِزُ.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, মহিলা কীভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন : খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সঙ্গে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৭৯৪)।
এই হাদিস দ্বারা বুঝা গেল, মহিলাদের জন্যে জড়সড় হয়ে নামায পড়ার হুকুম কেবল সেজদার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং পুরো নামাযেই এর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা বাঞ্ছনীয়।
عَنْ عَلِيٍّ ، قَالَ : إذَا سَجَدَتِ الْمَرْأَةُ فَلْتَحْتَفِز ، وَلْتَضُمَّ فَخِذَيْهَا.
হযরত আলি রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : মহিলা যখন সেজদা করে তখন যেন জড়সড় হয়ে সেজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সঙ্গে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৭৯৩; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস নং- ৫০৭২)।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَلاَةِ الْمَرْأَةِ ؟ فَقَالَ : تَجْتَمِعُ وَتَحْتَفِزُ.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, মহিলা কীভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন : খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সঙ্গে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৭৯৪)।
এই হাদিস দ্বারা বুঝা গেল, মহিলাদের জন্যে জড়সড় হয়ে নামায পড়ার হুকুম কেবল সেজদার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং পুরো নামাযেই এর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা বাঞ্ছনীয়।
তাবেয়িদের অভিমত
حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا شَيْخٌ لَنَا ، قَالَ : سَمِعْتُ عَطَاءً ؛ سُئِلَ عَنِ الْمَرْأَةِ كَيْفَ تَرْفَعُ يَدَيْهَا فِي الصَّلاَةِ ؟ قَالَ : حَذْوَ ثَدْيَيْهَا.
হুশাইম বর্ণনা করেন, আমাদের একজন উস্তাদ বলেছেন. আমি বিখ্যাত তাবেয়ি আতা ইবনে রাবাহ রহ. -কে বলতে শুনেছি যখন তার কাছে জিজ্ঞেস করা হল, মহিলা নামাযে কীভাবে হাত উঠাবে? তখন তিনি বলেন : বুক বরাবর। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৬)।
حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ ، قَالَ : أَخْبَرَنَا شَيْخٌ لَنَا ، قَالَ : سَمِعْتُ عَطَاءً ؛ سُئِلَ عَنِ الْمَرْأَةِ كَيْفَ تَرْفَعُ يَدَيْهَا فِي الصَّلاَةِ ؟ قَالَ : حَذْوَ ثَدْيَيْهَا.
হুশাইম বর্ণনা করেন, আমাদের একজন উস্তাদ বলেছেন. আমি বিখ্যাত তাবেয়ি আতা ইবনে রাবাহ রহ. -কে বলতে শুনেছি যখন তার কাছে জিজ্ঞেস করা হল, মহিলা নামাযে কীভাবে হাত উঠাবে? তখন তিনি বলেন : বুক বরাবর। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৬)।
حَدَّثَنَا رَوَّادُ بْنُ
جَرَّاحِ ، عَنِ
الأَوْزَاعِيِّ ، عَنِ
الزُّهْرِيِّ ، قَالَ
: تَرْفَعُ يَدَيْهَا حَذْوَ
مَنْكِبَيْهَا.
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম যুহরি রহ. বলেন : মহিলা কাঁধ বরাবর হাত তুলবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৭)।
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম যুহরি রহ. বলেন : মহিলা কাঁধ বরাবর হাত তুলবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৭)।
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ
حَيَّانَ ، عَنْ
عِيسَى بْنِ كَثِيرٍ
، عَنْ حَمَّادٍ
؛ أَنَّهُ كَانَ
يَقُولُ فِي الْمَرْأَةِ
إذَا اسْتَفْتَحَتِ الصَّلاَةَ
، تَرْفَعُ يَدَيْهَا
إلَى ثَدْيَيْهَا.
তাবেয়ি হাম্মাদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন : মহিলা নামায শুরু করলে উভয় হাত বুক বরাবর উঠাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৮)।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ ، قَالَ : قُلْتُ لِعَطَاءٍ : تُشِيرُ الْمَرْأَةُ بِيَدَيْهَا بِالتَّكْبِيرِ كَالرَّجُلِ ؟ قَالَ : لاَ تَرْفَعُ بِذَلِكَ يَدَيْهَا كَالرَّجُلِ ، وَأَشَارَ فَخَفَضَ يَدَيْهِ جِدًّا ، وَجَمَعَهُمَا إلَيْهِ جِدًّا ، وَقَالَ : إنَّ لِلْمَرْأَةِ هَيْئَةً لَيْسَتْ لِلرَّجُلِ ، وَإِنْ تَرَكَتْ ذَلِكَ فَلاَ حَرَجَ.
ইবনে জুরাইজ বলেন, আমি তাবেয়ি আতা ইবনে আবি রাবাহকে জিজ্ঞেস করলাম, মহিলা তাকবিরের সময় পুরুষের মতো হাত উঠাবে? তিনি বললেন, মহিলা পুরুষের মতো হাত উঠাবে না। এরপর তিনি (মহিলাদের হাত তোলার ভঙ্গি দেখালেন এবং) তার উভয় হাত (পুরুষের চেয়ে) অনেক নিচুতে রেখে শরীরের সঙ্গে খুব মিলিয়ে রাখলেন এবং বললেন, মহিলাদের পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন। তবে এমন না করলেও সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৯)।
তাবেয়ি হাম্মাদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন : মহিলা নামায শুরু করলে উভয় হাত বুক বরাবর উঠাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৮)।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ ، قَالَ : قُلْتُ لِعَطَاءٍ : تُشِيرُ الْمَرْأَةُ بِيَدَيْهَا بِالتَّكْبِيرِ كَالرَّجُلِ ؟ قَالَ : لاَ تَرْفَعُ بِذَلِكَ يَدَيْهَا كَالرَّجُلِ ، وَأَشَارَ فَخَفَضَ يَدَيْهِ جِدًّا ، وَجَمَعَهُمَا إلَيْهِ جِدًّا ، وَقَالَ : إنَّ لِلْمَرْأَةِ هَيْئَةً لَيْسَتْ لِلرَّجُلِ ، وَإِنْ تَرَكَتْ ذَلِكَ فَلاَ حَرَجَ.
ইবনে জুরাইজ বলেন, আমি তাবেয়ি আতা ইবনে আবি রাবাহকে জিজ্ঞেস করলাম, মহিলা তাকবিরের সময় পুরুষের মতো হাত উঠাবে? তিনি বললেন, মহিলা পুরুষের মতো হাত উঠাবে না। এরপর তিনি (মহিলাদের হাত তোলার ভঙ্গি দেখালেন এবং) তার উভয় হাত (পুরুষের চেয়ে) অনেক নিচুতে রেখে শরীরের সঙ্গে খুব মিলিয়ে রাখলেন এবং বললেন, মহিলাদের পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন। তবে এমন না করলেও সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৯)।
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ
مُحَمَّدٍ ، قَالَ
: حدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ
مَيْمُونٍ ، قَالَ
: حَدَّثَنِي عَاصِمٌ الأَحْوَلُ
، قَالَ : رَأَيْتُ حَفْصَةَ بِنْتَ
سِيرِينَ كَبَّرَتْ فِي الصَّلاَةِ ، وَأَوْمَأَتْ حَذْوَ
ثَدْيَيْهَا
আসেম আহওয়াল বলেন, আমি হাফসা বিতে সিরিনকে দেখেছি, তিনি নামাযে তাকবির বলার সময় বুক বরাবর হাত উঠিয়েছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৯)।
حَدَّثَنَا ابْنُ مُبَارَكٍ ، عَنْ هِشَامٍ ، عَنِ الْحَسَنِ ، قَالَ : الْمَرْأَةُ تَضْطَمُّ فِي السُّجُودِ
বিখ্যাত তাবেয়ি হাসান বসরি রহ. বলেন : মহিলা জড়সড় হয়ে গুটিয়ে সেজদা করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৭৯৭)।
আসেম আহওয়াল বলেন, আমি হাফসা বিতে সিরিনকে দেখেছি, তিনি নামাযে তাকবির বলার সময় বুক বরাবর হাত উঠিয়েছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৪৮৯)।
حَدَّثَنَا ابْنُ مُبَارَكٍ ، عَنْ هِشَامٍ ، عَنِ الْحَسَنِ ، قَالَ : الْمَرْأَةُ تَضْطَمُّ فِي السُّجُودِ
বিখ্যাত তাবেয়ি হাসান বসরি রহ. বলেন : মহিলা জড়সড় হয়ে গুটিয়ে সেজদা করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং- ২৭৯৭)।
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنْ
سُفْيَانَ ، عَنْ
مَنْصُورٍ ، عَنْ
إبْرَاهِيمَ ، قَالَ
: إذَا سَجَدَتِ الْمَرْأَةُ
فَلْتَلْزَقْ بَطْنَهَا بِفَخِذَيْهَا
، وَلاَ تَرْفَعْ
عَجِيزَتَهَا ، وَلاَ
تُجَافِي كَمَا يُجَافِي
الرَّجُلُ.
প্রখ্যাত তাবেয়ি
হযরত ইবরামি নাখয়ি রহ. বলেন : মহিলা সেজদা করার সময় পেটকে উরুর সঙ্গে মিলিয়ে
রাখবে। তার নিতম্বকে উঁচু করে রাখবে না এবং পুরুষের মতো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ফাঁকা রাখবে
না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা,
হাদিস
নং- ২৭৯৭)।
এমন অনেক
তাবেয়ির উদ্ধৃতি দেওয়া যাবে, যারা
নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতিগত পার্থকের অভিমত দিয়েছেন, ফতোয়া দিতেন।
হাদিসের বিশাল সঙ্কলন মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বার মধ্যে ৪৩ নং অনুচ্ছেদ হচ্ছে : المرأة كيف تَكُونُ فِي سُجُودِهَا ؟ : অর্থাৎ ‘মহিলার সেজদা করার পদ্ধতি।’ এই শিরোনামের অধীনে তিনি ছয়জন সাহাবি ও তাবেয়ির ফতোয়া উল্লেখ করেচেন। একই কিতাবের ৪৪ নং অনুচ্ছেদ হচ্ছে :
في المرأة كَيْفَ تَجْلِسُ فِي الصَّلاَةِ : ‘মহিলার বৈঠকের পদ্ধতি।’ এই অনুচ্ছেদের অধীনে তিনি দশজন সাহাবি ও তাবেয়ির অভিমত উল্লেখ করেছেন। যার দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, নামাযের পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের ভিন্নতা অবশ্যই রয়েছে। যদিও তা সুন্নত বা মুস্তাহাব হোক। কারণ, তা পরিত্যাগ করলে নারীর নাাময ভঙ্গ হবে না।
হাদিসের বিশাল সঙ্কলন মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বার মধ্যে ৪৩ নং অনুচ্ছেদ হচ্ছে : المرأة كيف تَكُونُ فِي سُجُودِهَا ؟ : অর্থাৎ ‘মহিলার সেজদা করার পদ্ধতি।’ এই শিরোনামের অধীনে তিনি ছয়জন সাহাবি ও তাবেয়ির ফতোয়া উল্লেখ করেচেন। একই কিতাবের ৪৪ নং অনুচ্ছেদ হচ্ছে :
في المرأة كَيْفَ تَجْلِسُ فِي الصَّلاَةِ : ‘মহিলার বৈঠকের পদ্ধতি।’ এই অনুচ্ছেদের অধীনে তিনি দশজন সাহাবি ও তাবেয়ির অভিমত উল্লেখ করেছেন। যার দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, নামাযের পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের ভিন্নতা অবশ্যই রয়েছে। যদিও তা সুন্নত বা মুস্তাহাব হোক। কারণ, তা পরিত্যাগ করলে নারীর নাাময ভঙ্গ হবে না।
চার ইমামের
বক্তব্য
কুরআন-সুন্নাহর সংক্ষিপ্ত ও অবিন্যস্ত বিধান ফিকহের মধ্যে সুন্দর ও গোছালোভাবে বিধৃত হয়েছে। ফিকহের ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম চার ইমামেরই অনুসারী। মুসলমানগণ কুরআন-হাদিসের প্রায়েগিক ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে চার ইমামেরই অনুসরণ করে থাকে। অনেক মাসআলায় চার ইমাম ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেছেন ইজতিহাদের ভিত্তিতে। এর সবগুলোই সঠিক; তবে কোনো একটি অধিক সঠিক হতে পারে। এই মতভিন্নতার পেছনে অবশ্যই দলিল রয়েছে; হতে পারে কারো দলিল একটু দুর্বল। মনে রাখতে হবে, কোনো বিষয়ে যদি চার ইমাম অর্থাৎ ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. ঐকমত্য পোষণ করেন তখন বিষয়টির গুরুত্ব অনেকাংশে বেড়ে যায়। চার ইমাম এক হয়ে যাওয়া কোনো চাট্টিখানি কথা নয়। তখন বিষয়টি ইজমা’র পর্যায়ে চলে যায়, যার বিরোধিতা করা কোনো মুসলিমেরই উচিত নয়। যাক, আমাদের আলোচিত মাসআলায়ও চার ইমামের ফিকহ একই মত পোষণ করেছেন। অর্থাৎ নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্যের ব্যাপারে তারা স্পষ্ট অভিমত দিয়েছেন।
কুরআন-সুন্নাহর সংক্ষিপ্ত ও অবিন্যস্ত বিধান ফিকহের মধ্যে সুন্দর ও গোছালোভাবে বিধৃত হয়েছে। ফিকহের ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম চার ইমামেরই অনুসারী। মুসলমানগণ কুরআন-হাদিসের প্রায়েগিক ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে চার ইমামেরই অনুসরণ করে থাকে। অনেক মাসআলায় চার ইমাম ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেছেন ইজতিহাদের ভিত্তিতে। এর সবগুলোই সঠিক; তবে কোনো একটি অধিক সঠিক হতে পারে। এই মতভিন্নতার পেছনে অবশ্যই দলিল রয়েছে; হতে পারে কারো দলিল একটু দুর্বল। মনে রাখতে হবে, কোনো বিষয়ে যদি চার ইমাম অর্থাৎ ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. ঐকমত্য পোষণ করেন তখন বিষয়টির গুরুত্ব অনেকাংশে বেড়ে যায়। চার ইমাম এক হয়ে যাওয়া কোনো চাট্টিখানি কথা নয়। তখন বিষয়টি ইজমা’র পর্যায়ে চলে যায়, যার বিরোধিতা করা কোনো মুসলিমেরই উচিত নয়। যাক, আমাদের আলোচিত মাসআলায়ও চার ইমামের ফিকহ একই মত পোষণ করেছেন। অর্থাৎ নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্যের ব্যাপারে তারা স্পষ্ট অভিমত দিয়েছেন।
ফিকহে হানাফি
احب الينا ان تجمع رجليها في جانب ولا تنتصب انتصاب الرجل
আমাদের মতে মহিলাদের নামাযে বসার মুস্তাহাব তরিকা হল, উভয় পা একপাশে মিলিয়ে রাখবে, পুরুষের মতো এক পা দাঁড় করিয়ে রাখবে না। (ইমাম মুহাম্মদ রহ. প্রণীত, কিতাবুল আসার : ১/২৮১)।
বিষয়টি হানাফি ফিকহের যে কোনো কিতাবে সবিস্তারে উল্লেখ হয়েছে। যেমন ফাতাওয়া শামি, বাদায়েউস সানায়ে, ফাতাওয়া আলমগিরি, ফাতহুল কাদির ইত্যাদি।
ফিকহে মালেকি
মালেকি মাযহাবের বিখ্যাত ইমাম ও সুলেখক আল্লামা আবুল আ¦বাস আল-কারাফি রহ. বলেন :
وأما مساواة النساء للرجال ففي النوادر عن مالك تضع فخذها اليمنى على اليسرى وتنضم قدر طاقتها ولا تفرج في ركوع ولا سجود ولا جلوس بخلاف الرجل
পুরুষ ও মহিলাদের নামারে পদ্ধতি এক কি-না? এ বিষয়ে ইমাম মালেক রহ. থেকে নাওয়াদেরে বর্ণিত আছে, (বসার সময়) মহিলা ডান উরু বাম উরুর ওপর রাখবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে বসবে। রুকু, সেজদা ও বৈঠক কোনো সময়ই ফাঁক ফাঁক হয়ে বসবে না; পক্ষান্তরে পুরুষের পদ্ধতি ভিন্ন। (আয-যাখিরা : ২/১৯৩)।
( قال الشَّافِعِيُّ ) وقد أَدَّبَ اللَّهُ تَعَالَى النِّسَاءَ بِالِاسْتِتَارِ وَأَدَّبَهُنَّ بِذَلِكَ رَسُولُهُ صلى اللَّهُ عليه وسلم وَأُحِبُّ لِلْمَرْأَةِ في السُّجُودِ أَنْ تَضُمَّ بَعْضَهَا إلَى بَعْضٍ وَتُلْصِقَ بَطْنَهَا بِفَخِذَيْهَا وَتَسْجُدَ كَأَسْتَرِ ما يَكُونُ لها وَهَكَذَا أُحِبُّ لها في الرُّكُوعِ وَالْجُلُوسِ وَجَمِيعِ الصَّلَاةِ أَنْ تَكُونَ فيها كَأَسْتَرِ ما يَكُونُ لها
আল্লাহ তাআলা মহিলাদেরকে পুরোপুরি আবৃত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আর রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও অনুরূপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দনীয় হল, সেজদা করার সময় মহিলারা এক অঙ্গের সঙ্গে আরেক অঙ্গ মিলিয়ে রাখবে, পেট উরুর সঙ্গে সংযুক্ত রাখবে এবং এমনভাবে সেজদা করবে যেন সতরের পুরোপুরি সরক্ষণ হয়। ঠিক তেমনিভাবে রুকু, বৈঠক ও পুরো নামায এমনভাবে আদায় করবে যেন সতরের পুরোপুরি হেফাজত থাকে। (কিতাবুল উম্ম : ১/১১৫)।
احب الينا ان تجمع رجليها في جانب ولا تنتصب انتصاب الرجل
আমাদের মতে মহিলাদের নামাযে বসার মুস্তাহাব তরিকা হল, উভয় পা একপাশে মিলিয়ে রাখবে, পুরুষের মতো এক পা দাঁড় করিয়ে রাখবে না। (ইমাম মুহাম্মদ রহ. প্রণীত, কিতাবুল আসার : ১/২৮১)।
বিষয়টি হানাফি ফিকহের যে কোনো কিতাবে সবিস্তারে উল্লেখ হয়েছে। যেমন ফাতাওয়া শামি, বাদায়েউস সানায়ে, ফাতাওয়া আলমগিরি, ফাতহুল কাদির ইত্যাদি।
ফিকহে মালেকি
মালেকি মাযহাবের বিখ্যাত ইমাম ও সুলেখক আল্লামা আবুল আ¦বাস আল-কারাফি রহ. বলেন :
وأما مساواة النساء للرجال ففي النوادر عن مالك تضع فخذها اليمنى على اليسرى وتنضم قدر طاقتها ولا تفرج في ركوع ولا سجود ولا جلوس بخلاف الرجل
পুরুষ ও মহিলাদের নামারে পদ্ধতি এক কি-না? এ বিষয়ে ইমাম মালেক রহ. থেকে নাওয়াদেরে বর্ণিত আছে, (বসার সময়) মহিলা ডান উরু বাম উরুর ওপর রাখবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে বসবে। রুকু, সেজদা ও বৈঠক কোনো সময়ই ফাঁক ফাঁক হয়ে বসবে না; পক্ষান্তরে পুরুষের পদ্ধতি ভিন্ন। (আয-যাখিরা : ২/১৯৩)।
( قال الشَّافِعِيُّ ) وقد أَدَّبَ اللَّهُ تَعَالَى النِّسَاءَ بِالِاسْتِتَارِ وَأَدَّبَهُنَّ بِذَلِكَ رَسُولُهُ صلى اللَّهُ عليه وسلم وَأُحِبُّ لِلْمَرْأَةِ في السُّجُودِ أَنْ تَضُمَّ بَعْضَهَا إلَى بَعْضٍ وَتُلْصِقَ بَطْنَهَا بِفَخِذَيْهَا وَتَسْجُدَ كَأَسْتَرِ ما يَكُونُ لها وَهَكَذَا أُحِبُّ لها في الرُّكُوعِ وَالْجُلُوسِ وَجَمِيعِ الصَّلَاةِ أَنْ تَكُونَ فيها كَأَسْتَرِ ما يَكُونُ لها
আল্লাহ তাআলা মহিলাদেরকে পুরোপুরি আবৃত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আর রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও অনুরূপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দনীয় হল, সেজদা করার সময় মহিলারা এক অঙ্গের সঙ্গে আরেক অঙ্গ মিলিয়ে রাখবে, পেট উরুর সঙ্গে সংযুক্ত রাখবে এবং এমনভাবে সেজদা করবে যেন সতরের পুরোপুরি সরক্ষণ হয়। ঠিক তেমনিভাবে রুকু, বৈঠক ও পুরো নামায এমনভাবে আদায় করবে যেন সতরের পুরোপুরি হেফাজত থাকে। (কিতাবুল উম্ম : ১/১১৫)।
ফিকহে হাম্বলি
فأما المرأة فذكر القاضي فيها روايتين عن أحمد إحداهما ترفع لما روى الخلال بإسناده عن أم الدرداء وحفصة بنت سيرين أنهما كانتا ترفعان أيديهما وهو قول طاوس ولأن من شرع في حقه التكبير شرع في حقه الرفع كالرجل فعلى هذا ترفع قليلا قال أحمد رفع دون الرفع والثانية لا يشرع لأنه في معنى التجافي ولا يشرع ذلك لها بل تجع نفسها في الركوع والسجود وسائر صلاتها
তাকবিরের সময় মহিলারা হাত তুলবে কি-না? এ ব্যাপারে কাজী ইয়াজ ইমাম আহমদ রহ. থেকে দুটি মত উল্লেখ করেছেন। প্রথম অভিমত অনুযায়ী হাত তুলবে। কেননা, খাল্লাল স্বীয় সনদে উম্মে দারদা ও হাফসা বিনতে সিরিন থেকে বর্ণনা করেন যে, তারা নামাযে হাত উঠাতেন। ইমাম তাউসও তা-ই বলেন। তাছাড়া যার ব্যাপারে তাকবির বলার নির্দেশ রয়েছে তার জন্যে হাত উঠানোর নির্দেশ আছে। যেমন পুরুষ করে থাকে; এ হিসেবে মহিলারা হাত উঠাবে, তবে সামান্য। ইমাম আহমদ বলেন, মহিলা পুরুষের তুলনায় নিচে হাত উঠাবে।
দ্বিতীয় মত হচ্ছে, মহিলাদের জন্যে হাত উঠানোররই বিধান নেই। কেননা, হাত উঠালে কোনো অঙ্গকে ফাঁক করতেই হয়; অথচ মহিলাদের জন্যে এর বিধান দেওয়া হয়নি। বরং তাদের নিয়ম হল, রুকু-সেজদাসহ পুরো নামাযে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবে। (আল-মুগনি : ১/৫৪৭)।
فأما المرأة فذكر القاضي فيها روايتين عن أحمد إحداهما ترفع لما روى الخلال بإسناده عن أم الدرداء وحفصة بنت سيرين أنهما كانتا ترفعان أيديهما وهو قول طاوس ولأن من شرع في حقه التكبير شرع في حقه الرفع كالرجل فعلى هذا ترفع قليلا قال أحمد رفع دون الرفع والثانية لا يشرع لأنه في معنى التجافي ولا يشرع ذلك لها بل تجع نفسها في الركوع والسجود وسائر صلاتها
তাকবিরের সময় মহিলারা হাত তুলবে কি-না? এ ব্যাপারে কাজী ইয়াজ ইমাম আহমদ রহ. থেকে দুটি মত উল্লেখ করেছেন। প্রথম অভিমত অনুযায়ী হাত তুলবে। কেননা, খাল্লাল স্বীয় সনদে উম্মে দারদা ও হাফসা বিনতে সিরিন থেকে বর্ণনা করেন যে, তারা নামাযে হাত উঠাতেন। ইমাম তাউসও তা-ই বলেন। তাছাড়া যার ব্যাপারে তাকবির বলার নির্দেশ রয়েছে তার জন্যে হাত উঠানোর নির্দেশ আছে। যেমন পুরুষ করে থাকে; এ হিসেবে মহিলারা হাত উঠাবে, তবে সামান্য। ইমাম আহমদ বলেন, মহিলা পুরুষের তুলনায় নিচে হাত উঠাবে।
দ্বিতীয় মত হচ্ছে, মহিলাদের জন্যে হাত উঠানোররই বিধান নেই। কেননা, হাত উঠালে কোনো অঙ্গকে ফাঁক করতেই হয়; অথচ মহিলাদের জন্যে এর বিধান দেওয়া হয়নি। বরং তাদের নিয়ম হল, রুকু-সেজদাসহ পুরো নামাযে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবে। (আল-মুগনি : ১/৫৪৭)।
গায়রে মুকাল্লিদ
আলেমদের অভিমত
এসব হাদিস থাকার কারণে গায়রে মুকাল্লিদ আলেমগণও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস, প্রখ্যাত আহলে হাদিস আলেম নবাব সিদ্দিক হাসান খান রহ. ‘আউনুল বারি’তে তা স্বীকার করেছেন। আহলে হাদিসের ফতোয়া দেখা যেতে পারে : ফাতাওয়া গযনবিয়্যা : ২৭-২৮; ফাতাওয়া উলামায়ে আহলে হাদিস : ৩/১৪৮-১৪৯)।
এসব হাদিস থাকার কারণে গায়রে মুকাল্লিদ আলেমগণও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস, প্রখ্যাত আহলে হাদিস আলেম নবাব সিদ্দিক হাসান খান রহ. ‘আউনুল বারি’তে তা স্বীকার করেছেন। আহলে হাদিসের ফতোয়া দেখা যেতে পারে : ফাতাওয়া গযনবিয়্যা : ২৭-২৮; ফাতাওয়া উলামায়ে আহলে হাদিস : ৩/১৪৮-১৪৯)।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন