গত শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দৈনিক যুগান্তরের ‘ইসলাম ও জীবন’ পাতার একটি লেখা পড়ে বিস্মিত হয়েছি।‘কোরআনের পর্দাকে বোরকায় ঢাকল কারা’ শীর্ষক লেখাটিতে ইসলামের পর্দা বিধানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ-‘বোরকা’ ও ‘পরপুরুষের সামনে নারীর চেহারা আবৃত রাখা’র বিষয়ে কিছু অশালীন ও অমার্জিত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে এবং কিছু অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে! নিবন্ধের বাক্যব্যবহার সম্পর্কে কিছু বলার নেই, শুধু তথ্যবিকৃতির কিছু নমুনা তুলে ধরছি।
‘বোরকা ইসলামী বিধান নয়’ প্রমাণ করার জন্য বলা হয়েছে, ‘... কোরআনে সর্বমোট চারটি স্থানে ব্যাপক পর্দার কথা বলা হয়েছে।’ এরপর সূরা আরাফের (৭) : ২৬ নং আয়াত ও সূরা নূরের (২৪) : ৩০, ৩১, ৬০ নং আয়াতের তরজমা উদ্ধৃত করা হয়েছে।
পর্দার বিষয়ে কোরআনে শুধু ঐ চার স্থানেই বলা হয়েছে-এই তথ্য সঠিক নয়। সূরা আহযাবের (৩৩) ৫৩ ও ৫৯ নং আয়াতেও পর্দার বিধান আছে, যা নিবন্ধে সম্পূর্ণ গোপন করা হয়েছে। সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াত দ্বারা বোরকার বিধান প্রমাণিত হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের, আপনার কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের একাংশ নিজেদের (মুখের) উপর নামিয়ে দেয়।’-সূরা আহযাব : ৫৯
‘জিলবাব’ অর্থ বড় চাদর, যা দ্বারা মুখমন্ডল ও পূর্ণ দেহ আবৃত করা যায়।-আলজামি লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী ১৪/২৪৩
শত শত বছর যাবৎ মুসলিমজাহানের সর্বত্র যে দ্বীনদার নারীগণ নেকাব ও বোরকা পরিধান করে আসছেন তাঁরা এই জিলবাব ধারণের বিধানই পালন করছেন।
এরপর বোরকার বিরুদ্ধে ‘যুক্তি’ প্রদর্শন করতে গিয়ে এমন কিছু যুক্তিহীন কথা বলা হয়েছে, যা সত্যিই দুঃখজনক। বলা হয়েছে, ‘এখন বাজারে যেসব বোরকা পাওয়া যায় তা এমনভাবে তৈরি যে, বোরকা পরিহিত কোনো নারীর দিকে তাকালে যৌন সুড়সুড়ি বৃদ্ধি পায়।’ আরো বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সময়ে বোরকাকে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধকর্মে। ...’
এসব যে সম্পূর্ণ বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না, তাছাড়া কোথাও কারো দ্বারা বোরকার ভুল ব্যবহার হয়ে থাকলে শরীয়তসম্মত বোরকা কেন নিষিদ্ধ হবে? এ তো শিরপীড়ার চিকিৎসায় শিরশ্চ্ছেদের
প্রস্তাব!
আর এসব অন্যায় তাদের মাঝেই দেখা যায় যারা ইসলামের পর্দা বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ, কিংবা ইসলামের নির্দেশ ও নির্দেশনাকেও পশ্চিমা ছাঁচে ঢালাই করে নিতে বদ্ধপরিকর।
দ্বিতীয় বিষয়, ‘পরপুরুষের সামনে নারীর মুখমন্ডল আবৃত রাখা।’ এটিও কুরআন-সুন্নাহর বিধান। সূরা আহযাবের (৩৩) ৩৩, ৫৩ ও ৫৯ নম্বর আয়াত ছাড়াও সূরা নূরের (২৪) ৩১ নম্বর আয়াত এবং বুখারী-মুসলিমসহ অন্যান্য হাদীসের কিতাবের সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা মুমিনদের নারীদের আদেশ করেছেন তারা যেন কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মাথা থেকে চাদর টেনে সম্পূর্ণ মুখমন্ডল আবৃত করে, শুধু (চলার জন্য) এক চোখ খোলা রাখে।’
ইসমাঈল ইবনে উলাইয়্যা রাহ. এ আয়াতের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি চাদর নিলেন এবং ঘোমটার মতো পরে মাথা-মুখ ঢেকে ফেললেন। কপাল, নাক ও বাম চোখও ঢাকলেন, ডান চোখ খোলা রাখলেন। এরপর বললেন, ‘এভাবে আমাদেরকে চাদর পরে দেখিয়েছেন আবদুল্লাহ ইবনে আওন, তাঁকে দেখিয়েছেন (বিখ্যাত তাবেয়ী) মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন, আর তাঁকে দেখিয়েছেন আবীদা ইবনে আম্র সালমানী রাহ. (যিনি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর শাগরিদ ও শীর্ষস্থানীয় তাবেয়ী)’।-জামিউল বায়ান, তাবারী ১০/৩৩২; তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ইবনে কাছীর ৩/৮২৫
ইমাম আবু বকর রাযী আলজাসসাস রাহ. লিখেছেন-‘এই আয়াত থেকে প্রমাণ হয়, বাইরে বের হওয়ার সময় পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে নারীর মুখমন্ডল আবৃত রাখা এবং পর্দানশীন পবিত্র নারীর বেশ গ্রহণ করা অপরিহার্য, যাতে দুষ্ট লোকেরা তাদের প্রতি উৎসাহী না হয়।’-আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৭২; আরো দেখুন : আলকাশশাফ, যামাখশারী ৩/৩৭৪; তাফসীরে বায়যাবী ২/২৮০; তাফসীরে জালালাইন ৫৬০; তাফসীরে গারাইবুল কুরআন ওয়া রাগাইবুল ফুরকান ৫/৪৭৬; আযওয়াউল বয়ান, মুহাম্মাদ আলআমীন আশশানকীতী ৬/৫৮৬
মুখমন্ডল আবৃত রাখার বিধান সহীহ হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নেকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে।’-সহীহ বুখারী ৪/৬৩, হাদীস : ১৮৩৮
এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে মেয়েরা তাদের হাত ও মুখমন্ডল আবৃত রাখতেন। এ কারণে ইহরামের সময় নেকাব ও দস্তানা না পরার আদেশ করতে হয়েছে।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাঁর হজ্বের বিবরণে বলেছেন, ‘ইহরামের কারণে তারা নেকাব খোলা রাখতেন, কিন্তু যখন পুরুষেরা নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তখন তারা মুখমন্ডল আবৃত করে ফেলতেন। তারা চলে যাওয়ার পর নেকাব তুলে ফেলতেন।’-মুসনাদে আহমদ ৬/৩০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৭৫৭
আসমা বিনতে আবু বকর রা. বলেন, ‘আমরা পুরুষদের সামনে মুখমন্ডল আবৃত রাখতাম।...’-আলমুসতাদরাক, হাকিম ১/৪৫৪
ফাতিমা বিনতুল মুনযির রাহ. বলেন, ‘আমরা আসমা বিনতে আবু বকর রা.-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের মুখমন্ডল ঢেকে রাখতাম।’-আলমুয়াত্তা, ইমাম মালেক ১/৩২৮; আলমুসতাদরাক, হাকিম ১/৪৫৪
হযরত আয়েশা রা. ইফ্কের দীর্ঘ হাদীসে বলেছেন-‘আমি আমার স্থানে বসে ছিলাম। একসময় আমি ঘুমিয়ে পড়ি। সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আসসুলামী ছিল বাহিনীর পিছনে। সে যখন এখানে পৌঁছল তখন একজন ঘুমন্ত মানুষের আকৃতি দেখতে পেল। এরপর সে আমার নিকট এলে আমাকে চিনে ফেলল। কারণ পর্দা বিধান অবতীর্ণ হওয়ার আগে সে আমাকে দেখেছিল। তখন সে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলে ওঠে, যার দরুণ আমি ঘুম থেকে জেগে উঠি এবং ওড়না দিয়ে নিজেকে আবৃত করে ফেলি।
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, ‘আমি ওড়না দিয়ে আমার চেহারা ঢেকে ফেলি।’-সহীহ বুখারী ৫/৩২০; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৭৭০; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩১৭৯
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন-‘সঠিকতর সিদ্ধান্ত এই যে, নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে দুই হাত, দুই পা ও মুখমন্ডল খোলা রাখার অবকাশ নেই।’-মাজমুউল ফাতাওয়া ২২/১১৪
ইবনুল কাইয়িম রাহ. বলেন, ‘নারী নামায আদায়ের সময় দুই হাত ও মুখমন্ডল খোলা রাখতে পারেন, কিন্তু এভাবে বাজারে ও লোকের সমাগমস্থলে যাওয়ার অবকাশ নেই।’-ই’লামুল মুয়াক্কিয়ীন ২/৪৭
শায়খ ইবনে বায রাহ., শায়খ ইবনে উছাইমীন ও শায়খ ইবনে জিবরীনও একই ফতোয়া দিয়েছেন। দেখুন : রিসালাতুন ফিলহিজাবি ওয়াসসুফূর, পৃ.১৯; ফাতাওয়া উলামাইল বালাদিল হারাম পৃ. ১১৬৯
কুরআন-সুন্নাহর উপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলোর আলোকে নিবন্ধের এই বক্তব্য মূল্যায়ন করুন- ‘সমাজে চেহারা ঢাকার জঘন্য প্রথাটাও চালু করেছে ধর্মের চক্রান্তকারীরা। ইসলামে এর কোনো স্থান নেই।’
পরপুরুষকে মুখমন্ডল ‘প্রদর্শন করা যাবে’ প্রমাণের জন্য সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতের তরজমা উদ্ধৃত করা হয়েছে। (উল্লেখ্য, তরজমায় ‘সাধারণত প্রকাশমান সৌন্দর্য’ কথাটা মূল আরবী পাঠের নিখুঁত তরজমা নয়) এরপর ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘‘এ দ্বারা করতল ও চেহারা উদ্দেশ্য’’। আরো বলা হয়েছে, ‘ইবনে মাসুদ রা., ইবনে মাখরামা রা. এরপর ইবনে জুবাইর, ইবনে আবী রাবিহা (?), হাসান বসরি, কাতাদা, ইবনে জাইদ, আওযায়ী আরও অনেক বিজ্ঞজন থেকে ইবনে আববাসের সপর্কে বক্তব্য রয়েছে। সবার এক কথা, চেহারা পর্দার বিধানের আওতায় পড়ে না।’
অথচ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ আলাদা। আর আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা.-এর উদ্ধৃত উক্তি আলোচ্য দাবির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।
একাধিক সহীহ সনদে ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, আয়াতের আলোচ্য অংশ-‘ইল্লা মা যাহারা মিনহা’ অর্থ‘কাপড়’। (দ্র. জামিউল বায়ান, তাবারী ১৭/২৫৬-২৫৮; আল-মুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা ৯/২৮০)
বিখ্যাত তাফসীরকার ইবনে কাছীর রাহ. বলেন, ‘আয়াতের অর্থ, পরপুরুষের সামনে নারী তার কোনো প্রকারের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না। তবে যা আবৃত রাখা সম্ভব নয় তার কথা আলাদা। এর দৃষ্টান্ত দিয়ে ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন, ‘চাদর ও কাপড়।’ অর্থাৎ আরবের নারীগণ যে বড় চাদরে তাদের পরনের কাপড় ঢেকে বের হতেন এবং কাপড়ের নীচের অংশ, যা চলার সময় চাদরের নীচ দিয়ে প্রকাশিত হয়ে যেত তা যেহেতু ঢেকে রাখা সম্ভব নয় তাই এতে কোনো দোষ নেই।
‘হাসান (বসরী), (মুহাম্মাদ) ইবনে সীরীন, আবুল জাওযা, ইবরাহীম নাখায়ী প্রমুখ মনীষীও অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন।’-তাফসীরুল কুরআনিল আজীম ৩/৩১২
কুরআন মাজীদের শব্দ ও বাক্য, আলোচ্য বিষয়ের হাদীস ও আছার এবং উসূলুল ফিকহের নীতি ও বিধান ইত্যাদি বিবেচনায় ইবনে মাসউদ রা.-এর ব্যাখ্যাই অগ্রগণ্য। কিছু বিষয় লক্ষ করুন :
এক. আলোচ্য ক্ষেত্রে কুরআনের শব্দ হচ্ছে ‘যীনাত’। শব্দটি কুরআন মাজীদে সাধারণত ‘আলাদা সৌন্দর্য’অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন সূরা আরাফে (৭ : ৩১) বলা হয়েছে, ‘‘তোমরা প্রতি নামাযের সময় ‘তোমাদের যীনত’ গ্রহণ করবে।’’ এখানে ‘তোমাদের যীনত’ অর্থ পোষাক, দেহের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নয়। বিস্তারিত দেখুন : জামিউল বায়ান, তাবারী ১৭/২৫৭; আযওয়াউল বায়ান, শানকীতী ৬/১৩৫-১৩৬; আদ্দালালাতুল মুহকামা, ড. লুৎফুল্লাহ খাওজা পৃ. ৯৪
দুই. আয়াতের আলোচ্য অংশের মূল পাঠ হল-‘ইল্লা মা যাহারা মিনহা’। ‘যাহারা’ অর্থ খুলে গেল, প্রকাশিত হল। ‘খুলল বা প্রকাশ করল’ নয়। সুতরাং ‘যাহারা’ শব্দটিও ‘ঢেকে রাখা অসম্ভব কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশিত সৌন্দর্য’ নির্দেশ করে। ঐ সৌন্দর্য নয় যা ঢেকে রাখা সম্ভব, কিন্তু কেউ কেউ ইচ্ছা করে তা খোলা রাখছে। বিস্তারিত : আল মুহাররারুল ওয়াজীয, ইবনে আতিয়্যাহ ১০/৪৮৮, ৪৮৯; হিজাবুল মারআতি ফিল ইসলাম, ড. ফুয়াদ মুহাম্মাদ-আদিল্লাতুল হিজাব পৃ. ৩০৮-৩০৯
তিন. সূরা আহযাবের ৫৯ নম্বর আয়াতে জিলবাবের একাংশ চেহারার উপর নামিয়ে মুখমন্ডল আবৃত রাখার আদেশ করা হয়েছে। তা-ও সূরা নূরের আলোচ্য আয়াতে ইবনে মাসউদ রা.-এর ব্যাখ্যাকেই প্রতিষ্ঠিত করে।
চার. সহীহ হাদীসে নারীদের মুখমন্ডল আবৃত রাখার যে নির্দেশ ও বিবরণ আছে তা-ও ইবনে মাসউদ রা. এর ব্যাখ্যার সাথেই সঙ্গতিপূর্ণ।
পাঁচ. উসুলুল ফিকহ ও কাওয়াইদুশ শরীয়া অনুসারেও ইবনে মাসউদ রা.-এর ব্যাখ্যা অগ্রগণ্য। দেখুন : আলমুহাররারুল ওয়াজীয, ইবনে আতিয়্যাহ ১০/৪৮৯; আযওয়াউল বায়ান ৬/১৩৬ রিসালাতুল হিজাব, শায়খ ইবনে উসাইমীন
ছয়. স্বয়ং আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকেও সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় নির্ভরযোগ্য সনদে নারীর মুখমন্ডল আবৃত রাখার বিধান বর্ণিত হয়েছে। দেখুন : জামেউল বায়ান, তাবারী ১৯/১৮১; আলজামি লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী ১৪/২৪৩; আল ইতকান, সুয়ূতী ৪/২০৭
তদ্রূপ শক্তিশালী সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, ইহরাম গ্রহণকারী নারীর বিষয়ে ইবনে আববাস রা. সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, ‘তাঁরা চেহারার উপর জিলবাব ঝুলিয়ে দিবে, পেঁচিয়ে বাঁধবে না।’ (পেঁচিয়ে বাঁধবে না কারণ, ইহরাম অবস'ায় মেয়েদের মুখে কাপড় লাগানো নিষেধ)- সুল্লামুল আমানী, ড. আকীল ইবনে আহমদ পৃ. ১৭৪
তাহলে ইবনে আববাস রা. সম্পর্কে এ দাবি কীভাবে সত্য হতে পারে যে, তিনি পরপুরুষের সামনে নারীগণকে চেহারা খোলা রাখতে বলেছেন?
প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে ইবনে আববাস রা.-এর ঐ উক্তির ব্যাখ্যা কী।
ব্যাখ্যার আগে দেখতে হবে ইবনে আববাস রা. সত্যিই ঐ উক্তি করেছেন কি না। অনেক গবেষক আলিমের মতে, এই উক্তি ইবনে আববাস রা. থেকে সহীহ সনদে প্রমাণিত নয়। সহীহ ও নির্ভরযোগ্য সনদে যা পাওয়া যায় তা এই প্রসিদ্ধ উক্তির সম্পূর্ণ বিপরীত। দেখুন : আদিল্লাতুল হিজাব, শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে আহমদ পৃ. ২৮৬; সুল্লামুল আমানী, ড. আকীল ইবনে আহমদ পৃ. ১৭১-১৭৩; আততাফসীরুস সহীহ, ড. হিকমত ইবনে বাশীর ৩/৪৬৩-৪৬৪
নিবন্ধে মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবার উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। ইবনে আবী শাইবার সনদ গ্রহণযোগ্য, কিন্তু তাতে তো চেহারা ও করতল আবৃত রাখবার কথা পাওয়া যায়। এ বর্ণনা তো ঐ সম্ভাবনাকেই শক্তিশালী করে, যা বিখ্যাত তাফসীরকার ইবনে কাছীর রাহ. উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সম্ভাবনা আছে, ইবনে আববাস রা. ও অন্যরা চেহারা ও করতল দ্বারা ‘প্রকাশিত সৌন্দর্য’ নয় ‘আবরণীয় সৌন্দর্যের’ ব্যাখ্যা করেছেন।’-তাফসীরুল কুরআনিল আজীম ৩/৩১২
আবরণীয় সৌন্দর্যের মাঝে চেহারা ও করতল বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ বিভ্রান্তি ও শিথিলতার আশঙ্কা। যেহেতু এ দুটি অঙ্গ নামাযে ঢাকতে হয় না এবং হজ্বের সময়ও চেহারায় কাপড় লাগানো নিষেধ তাই কারো বিভ্রান্তি হতে পারে যে, পরপুরুষের সামনেও তা খোলা রাখা যাবে। দেখুন : আল মুসান্নাফ, ইবনে আবি শাইবা ৯/২৮০, হাদীস : ১৭২৮১; তাফসীরুল কুরআনিল আজীম, ইবনে কাছীর ৩/৩১২; সুল্লামুল আমানী, ড. আকীল ইবনে আহমদ পৃ. ১৭৬
যদি ধরেও নেওয়া হয় যে, ইবনে আববাস রা. ‘প্রকাশিত সৌন্দর্যের’ ব্যাখ্যায় ঐ উক্তি করেছেন তবুও নিবন্ধের দাবি প্রমাণিত হয় না। কারণ এখানে অন্যান্য গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন :
এক. পর্দা শরীয়তের ঐসব বিধানের অন্যতম, যা ক্রমান্বয়ে পরিণতি লাভ করেছে। সুতরাং এসংক্রান্ত আয়াত-হাদীস একত্র করলে স্বভাবতই তাতে চূড়ান্ত বিধানের পাশাপাশি প্রাথমিক বিধানও পাওয়া যাবে। তেমনি পরবর্তী সময়ে কোনো আয়াতের ব্যাখ্যাগত আলোচনায় সে আয়াতের প্রাথমিক বা এ সংক্রান্ত অন্যান্য আয়াত নাযিল হওয়ার আগের অর্থ আলোচিত হতেও বাধা নেই। তবে তা হবে প্রাথমিক অবস্থার বিবরণ, চূড়ান্ত বিধান নয়। ইবনে আববাস রা.-এর আলোচিত উক্তি সম্পর্কে ইবনে তাইমিয়া, ইবনে রজব হাম্বলী প্রমুখ মনীষীগণ এ সম্ভাবনাই গ্রহণ করেছেন। তারা একে প্রাথমিক বিধান আর ইবনে মাসউদ রা.-এর ব্যাখ্যাকে চূড়ান্ত ব্যাখা ও চূড়ান্ত বিধান হিসেবে গ্রহণ করেছেন। দেখুন : মাজমূউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া ২২/১১০-১১১; ফাতহুল বারী, ইবনে রজব ২/১৩৮; আন নাকদুল বান্না, আবু মুয়ায তারিক ইবনে আউযুল্লাহ ১৮০-১৮০; সুল্লামুল আমানী, ড. আকীল ইবনে আহমদ পৃ. ১৭৭, ১৭৮-১৮০
দুই. তাবারীর একটি নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় আছে, ইবনে আববাস রা. আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যা করেছেন, নারীর মুখমন্ডল এবং হাত ও মুখে ব্যবহৃত সৌন্দর্য, যেমন কাজল, মেহেদী, আংটি ইত্যাদি তার কাছে ঘরে আগমনকারী (মাহরাম) পুরুষের সামনে প্রকাশিত হলে দোষ নেই। দেখুন : জামিউল বায়ান, তবারী ১৭/২৫৯; আদ্দালালাতুল মুহকামা, ড. লুৎফুল্লাহ খাওজা পৃ. ৯৭; আততাফসীরুস সহীহ, ড. হিকমত ইবনে বাশীর ৩/৪৬৩-৪৬৪
সুতরাং বাইরে বের হওয়ার সময় নারীরা মুখমন্ডল খোলা রাখবেন-এ দাবি ইবনে আববাস রা.-এর উক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তিন. অন্যদিকে বায়হাকী, ইবনে রুশদ প্রমুখ মনীষীর মতে, এটি সাধারণ অবস্থার বিধান নয়, শরীয়তসম্মত প্রয়োজন ও অপারগতার ক্ষেত্রের বিধান।-আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৭/৮৫; আন নাযার ফী আহকামিন নাযার, আবুল হাসান ইবনুল কাত্তান পৃ. ৪১০
সুতরাং এ প্রসঙ্গে শায়খ আবু হিশাম আনসারীর বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য-‘যারা এই আয়াত দ্বারা চেহারা ও দুই হাতের পাতা খোলা রাখার বৈধতা প্রমাণে সচেষ্ট তাদের পতেৃপ্তি ও প্রশান্তিদায়ক কোনো দলীল নেই। ইবনে আববাস রা. ও তাঁর সঙ্গীদের কিছু উক্তির উপর ভর করে আয়াতের বক্তব্য অন্য দিকে নেওয়াই তাদের সকল প্রচেষ্টার সারকথা। তাদের ভিত্তিহীন দাবির সাথে ইবনে আববাস রা.-এর বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই।’-মাজাল্লাতুল জামিয়াতিস সালাফিয়্যা-আদিল্লাতুল হিজাব, শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে আহমদ ইসমাঈল আলমুকাদ্দিম পৃ. ৩০১
আলোচিত নিবন্ধে সুনানে আবু দাউদের উদ্ধৃতিতে দু’ টো বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে : ‘‘হে আসমা! কোনো মেয়ে যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয় তখন এ অঙ্গ এবং এ অঙ্গ ব্যতীত আর কিছুই পরিদর্শন (!) বৈধ নয়। একথা বলে তিনি নিজের চেহারা আর করতলের দিকে ইঙ্গিত করেন। (সুনানে আবু দাউদ ৪/৬২)
‘‘তারপর মারাসিল গ্রন্থে রয়েছে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো কিশোরী যখন ঋতুস্রাবের মধ্য দিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হয় তখন তার চেহারা এবং কব্জি পর্যন্ত দুই হাত ছাড়া অন্য কিছু পরিদর্শন (!) বৈধ নয়।’ (আবু দাউদ, আলমারাসিল ৩১০ পৃ.)’’
এ দু’ বর্ণনার একটিও সহীহ নয়। প্রথম বর্ণনার সাথেই আবু দাউদ রাহ.-এর মন্তব্যও আছে, যা নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘এর সূত্র (সনদ) বিচ্ছিন্ন।’
তাছাড়া এতে ‘সায়ীদ ইবনে বাশীর’ নামক একজন অগ্রহণযোগ্য রাবী আছে। বিশেষত কাতাদা রাহ. থেকে তার যে বর্ণনাগুলো, তা পরীক্ষা করে হাদীস বিশারদগণ বলেছেন, ‘এই ব্যক্তি কাতাদা থেকে অগ্রহণযোগ্য কথা বর্ণনা করে।’ আলোচ্য বর্ণনাও ঐসব বর্ণনারই একটি।
এর মতন (বক্তব্য) ‘নাকারাত’ দোষে এবং সনদ (সূত্র) ‘ইযতিরাব’ দোষেও দুষ্ট। দেখুন : কিতাবুল ইলাল, ইবনে আবী হাতিম ১৪৬৩; আলকামিল, ইবনে আদী ৩/১২০৯; আন নাযার ফী আহকামিন নাযার, ইবনুল কাত্তান ১৬৭-১৬৮; তাফসীরুল কুরআনিল আজীম, ইবনে কাছীর ৩/৩১২; আলজাওহারুন নাকী, (সুনানে কুবরা বাইহাকীর সাথে মুদ্রিত) ৭/৮৬; আননাকদুল বান্না,
আবু মুয়ায তারিক ইবনে আউযুল্লাহ পৃ. ২৮-৪০;
দ্বিতীয় বর্ণনারও সনদ বিচ্ছিন্ন; বরং তা ‘মুদাল’। অর্থাৎ এ সনদে অন্তত দু’জন রাবী উহ্য রয়েছে। (দ্র. আননাযার, ইবনুল কাত্তান পৃ. ১৬৮-১৬৯; আদ দিরায়া, ইবনে হাজার ১২৩)
তো এ জাতীয় দুর্বল ও পরিত্যাজ্য বর্ণনার ভিত্তিতে কোনো কথা আল্লাহর রাসূলের সাথে যুক্ত করা কি চরম
অন্যায় নয়?
এরপর আয়েশা রা.-এর যে উক্তি ইবনে আবী শাইবার উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, (‘নারীর যা প্রকাশিত থাকে তা হল তার চেহারা এবং করতলদ্বয়’) তা বায়হাকীতে আছে, কিন্তু তারও সনদ দুর্বল। (দ্র : আল জাওহারুন নাকী, সুনানে বায়হাকীর সাথে মুদ্রিত ২/২২৫-২২৬)
ইবনে আবী শাইবার উদ্ধৃত স্থানে এ বর্ণনা আমরা পাইনি। যা পেয়েছি তাতে চেহারার কথা নেই। (দ্র. আলমুসান্নাফ, নিকাহ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ ১৪৩, হাদীস : ১৭২৮৭)
এর বিপরীতে একাধিক সহীহ হাদীসে উম্মুল মুমিনীন থেকে মুখমন্ডল আবৃত রাখার বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
আর ফযল ইবনে আববাস রা.-এর হাদীস দ্বারা সাধারণ অবস্থায় মুখ খোলা রাখার বিধান কীভাবে প্রমাণিত হয়? একে তো সেটা হজের সময়ের ঘটনা। দ্বিতীয়ত ঐ মেয়ে সম্পর্কে ঐ হাদীসেরই অন্যান্য বর্ণনায় আছে যে, তিনি ছিলেন বেদুঈন-তনয়া। উম্মুল মুমিনীন ও অন্যান্য বিজ্ঞ সাহাবিয়া, যারা আল্লাহর রাসূলের দীর্ঘ সান্নিধ্য পেয়েছেন এবং কুরআন-সুন্নাহর বিধান তাঁর নিকট থেকে গ্রহণ করেছেন তাঁরা তো হজ্বের সময়ও পরপুরুষের সামনে মুখমন্ডল আবৃত রাখতেন! তো কুরআনের আয়াত, সহীহ হাদীস এবং উম্মুল মুমিনীন ও বড় বড় সাহাবিয়ার কর্মের বিপরীতে এরূপ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দ্বারা, যার বিভিন্ন ব্যাখ্যা হতে পারে, একটি স্বীকৃত ও স্বতঃসিদ্ধ বিধানকে প্রত্যাখ্যান করা কীভাবে যুক্তিসঙ্গত হতে পারে?
এরপর প্রচলিত চার মাযহাব সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘... শাফেয়ী, হাম্বলী এবং মালেকীদের মতে নারীরা চেহারা অনাবৃত রাখবে-এটাই সিদ্ধান্ত। বাকি আছে হানাফি মতাদর্শ। আমাদের উপমহাদেশের প্রায় সব মুসলমানই
হানাফী মতাদর্শের অনুসারী। এ হানাফি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে বলে থাকে, আমাদের এ মতাদর্শ অনুযায়ী অবশ্যক হল, নারীরা চেহারা ঢেকে ঘর থেকে বের হবে। অথচ এ বক্তব্যটির কোনো সত্যতা নেই। একটা বানোয়াট কথা। কিছু প্রমাণ হাজির করছি। ...’
প্রমাণ হিসেবে হানাফী মাযহাবের বাদাইউস সানায়ে, আলমাবসূত ইমাম মুহাম্মাদ ও আলমাবসূত সারাখসী উদ্ধৃত করা হয়েছে।
আগেও বলেছি, এ তথ্য সম্পূর্ণ অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। বাস্তবে নিবন্ধের দাবির সাথে উদ্ধৃত গ্রন্থসমূহের আলোচনার কোনো সম্পর্ক নেই। ঐসব গ্রন্থের কোথাও বলা হয়নি, অশ্লীলতা ও পাপাচারের ব্যাপক বিস্তারের যুগেও পাড়া-মহল্লা, বাজার-ঘাট, অফিস-আদালত সর্বত্র নারীরা মুখ খুলে বের হবেন, যেখানে ভালো-মন্দ, ভদ্র-বখাটে সব ধরনের লোকের অবাধ বিচরণ। ঐসব গ্রন্থে তো পর্দা-নেই এমন আত্মীয়ের ক্ষেত্রেও কামভাব সহকারে দৃষ্টিপাত অবৈধ বলা হয়েছে।
এখানে চার মাযহাবের কিছু বিখ্যাত গ্রন্থের নাম উল্লেখ করছি, যেগুলোতে চেহারা আবৃত রাখার বিধান পরিষ্কার ভাষায় উল্লেখিত হয়েছে।
হানাফী মাযহাব : আহকামুল কুরআন, আলজাসসাস ৩/৩৭১-৩৭২; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৪০৭; আদ্দুররুল মুখতার (রদ্দুল মুহতারের সাথে), ৬/৩৭০; রদ্দুল মুহতার (ফতওয়া শামী) ১/৪০৬; আলবাহরুর রাইক ২/২৭০
মালেকী মাযহাব : আহকামুল কুরআন, ইবনুল আরাবী ৩/১৫৭৯; আলজামি লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী ১২/১১৫; আকরাবুল মাসালিক, আহমদ দরদীর ১/২৮৯; আরিজাতুল আহওয়াযী, ইবনুল আরাবী ৪/৫৬; মাওয়াহিবুল জলীল, হাত্তাব ২/১৮১; হাশিয়াতুদ দুসূকী, মুহাম্মাদ আদ দুসূকী ১/২১৪
শাফেয়ী মাযহাব : রওযাতুত তালেবীন ৭/২১; হাওয়াশিশ শিরওয়ানী ২/৩৩৩
হাম্বলী মাযহাব : আল আদাবুশ শরইয়্যা, ইবনু মুফলিহ ১/২৯৭; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ২/৩২৮; আলইনসাফ, মারদাভী ১/৪৫২
সর্বশেষ নিবেদন এই যে, শরীয়তের কোনো স্বীকৃত বিধান সম্পর্কে এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর পরিণাম খুবই ভয়াবহ। কিন্তু এ ভয়াবহ কাজই এখন ব্যাপকভাবে হচ্ছে। এজন্য দ্বীনদান ভাই-বোনের অবশ্য কর্তব্য, মিডিয়া ও প্রচার মাধ্যমগুলোর প্রচারিত যেকোনো কথায় প্রভাবিত না হওয়া। যেখানেই সংশয় জাগে সেখানেই কোনো বিজ্ঞ ও খোদভীরু আলিমের শরণাপন্ন হওয়া। আমাদের সকলকে আল্লাহর দরবারে হাজির হতে হবে এবং সকল কথা ও কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে।
লেখকদ্বয়ের জন্য শুভকামনা, আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করুন। ষ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন