জেরুজালেম নগরী যখন মুসলিমদের দখলে আসে তখন সেখানকার খ্রিস্টান প্রধান “আমিরুল মুমিনীন” বা মুমিনদের নেতা উমর (রা) ব্যতীত অন্যের নিকট বায়তুল মাকদাস মসজিদের চাবি হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে উমর (রা) তার এক ভৃত্যকে সাথে নিয়ে জেরুজালেমের পথে রওনা দেন। তাদের যানবাহন হিসেবে ছিল একটি মাত্র উট। তাই পালা করে উমর (রা) এবং ভৃত্যটি উটে চড়তেন। উমর (রা) যখন উটে চড়তেন তখন ভৃত্যটির নিকট থাকত উটের দড়ি আর ভৃত্যটি যখন উটে চড়তেন তখন উমর (রা) এর নিকট থাকত উটের দড়ি। এভাবেই যখন তারা জেরুজালেমের নিকটবর্তী হন তখন ভৃত্যের পালা থাকে উটে চড়ার আর উমর (রা) উটের আগে আগে উটের দড়ি নিয়ে হেটে চলছেন। এই ঘটনা দেখে সবাই অভিভূত হয়ে যায়।
উমর (রা) জেরুজালেম শহরের একদম দাড়প্রান্তে, তার হাটে উটের দড়ি, উটের উপর বসে আছেন তার ভৃত্য, উমর (রা) এর গায়ে একটি অতি সাধারণ জামা যাতে রয়েছে চৌদ্দটি ‘তালি’! মুসলিম বাহিনীর সেনাপতি আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা) আগেই বেড় হয়ে এসেছেন উমর (রা) এর সাথে দেখা করার জন্যে। আবু উবাইদা (রা) উমর (রা) এর অতি সাধারণ, চৌদ্দটি তালিযুক্ত জামা, আর উটের দড়ি ধরে আসছেন আর ভৃত্য বসে আছেন উটের উপর এটা দেখে রোমানরা কি মনে করবে, তাই তিনি বললেন, হে আমিরুল মুমিনীন! আমরা এমন এক জায়গায় আছি যেখানকার মানুষজন চাকচিক্য পছন্দ করে, তারা মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য্য দেখে মানুষকে বিচার করে, সম্মান করে তাই আপনি যদি একটু ভালো পোষাক পড়তেন তাহলে তা খুবই উত্তম হতো। উমর (রা) আবু উবাইদা (রা) এর কথায় খুশি হতে পারলেন না, তিনি আবু উবাইদা (রা) এর বুকে আঘাত করলেন, আর বললেন, আমি ধারণা করেছিলাম কেউ একজন এই কথাগুলো আমাকে বলবে কিন্তু আমি তোমার পক্ষ থেকে এই কথাগুলো আশা করিনি। এরপর উমর (রা) বললেন,
“আমরা হচ্ছি সেই জাতি যাদের আল্লাহ তাআলা ইসলাম দ্বারা সম্মানিত করেছেন, আমরা যদি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে সম্মান খুজি তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদের অসম্মানিত করবেন।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন