বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬

জান্নাতের দরজাসমূহ

(পরকালীন জীবন, চূড়ান্ত গন্তব্য জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে শায়খ আনওয়ার আল আওলাকী রহ. -এর ঐতিহাসিক আলোচনার গ্রন্থিত রূপ- জান্নাত ও জাহান্নাম বই থেকে)
আল্লাহ বলেন,
﴿ جَنَّاتِ عَدْنٍ مُفَتَّحَةً لَهُمُ الْأَبْوَابُ ﴾
অর্থ: “(সে উত্তম আবাস হচ্ছে) চিরস্থায়ী এক জান্নাত, যার দরজা (হামেশাই) তাঁদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।” (সূরা সদ, আয়াত ৫০)
আল্লাহ আরো বলেছেন,
﴿ وَسِيقَ الَّذِينَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ إِلَى الْجَنَّةِ زُمَرًا حَتَّى إِذَا جَاءُوهَا وَفُتِحَتْ أَبْوَابُهَا وَقَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَا سَلامٌ عَلَيْكُمْ طِبْتُمْ فَادْخُلُوهَا خَالِدِينَ ﴾
অর্থ: “(অপরদিকে) যারা তাদের মালিককে ভয় করেছে তাদের সবাইকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে; এমনি করে যখন সেখানে (জান্নাতের দোর গোড়ায়) তারা এসে হাজির হবে (তখন তারা দেখতে পাবে) তার দরজাসমূহ তাদের অভিবাদনের জন্য খুলে রাখা হয়েছে, (উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে) তার রক্ষী (ফেরেশতা) তাদের বলবে, তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা সুখে থাকো। চিরন্তন জীবন কাটানোর জন্য এখানে প্রবেশ করো।” (সূরা ঝুমার, আয়াত ৭৩)
এই অভিনন্দনকে তুলনা করুন সেই কঠোর তিরস্কার এর সাথে, জাহান্নামীরা জাহান্নামের দরজায় পৌঁছে যা গ্রহণ করবে। জান্নাতীদেরকে সুন্দর সব অভিবাদনে ফেরেশতারা স্বাগত জানাবে। আপনি সেই তীব্র আনন্দের দৃশ্যটি কল্পনা করুন, জান্নাতীরা দ্রুত গতিতে ধাবিত হচ্ছে জান্নাতের দরজাগুলোর দিকে এবং সেই সাথে তাদের কানে ভেসে আসছে ফেরেশতাদের প্রীতিকর সব স্বাগত সম্ভাষণ।
জান্নাতে মোট ৮ টি দরজা :
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন 
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ. أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ فِي اِلْجَنَّةِ ثَمَانِيَةَ أَبْوَابٍ ، فِيهَا بَابٌ يُسَمَّى الرَّيَّانُ لا يَدْخُلُهُ إِلَّا الصَّائِمُونَ.
অর্থ: হযরত সাহল ইবনে সা’দ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতের ৮টি দরজা আছে। তার একটির নাম হল রাইয়ান। সেখান দিয়ে শুধু রোযাদার ব্যক্তিগণই প্রবেশ করবে। আর কেউ ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।” (বুখারী, হাদীস ৩০৮৪)
সাহাবারা সাওমের মর্যাদা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। সাহাবাদের একজন বলেন “আমার এই দুনিয়াতে বাস করার কোন আকাঙ্খা নেই -কয়েকটি আকাঙ্খিত বস্তু ছাড়া (এই দুনিয়ায় আমার প্রিয় বিষয় হচ্ছে)-
গ্রীষ্মের দীর্ঘ দিনগুলোতে সাওম পালন করা, শীতের দীর্ঘ রাত্রিগুলোতে ইবাদত করা এবং সেই ভাইদের সাথে সময় কাটানো, যারা কথা বলার সময় বেছে নেয় সর্বোত্তম শব্দগুলোকে অনেকটা ফলের ঝুড়ি থেকে ফল বেছে নেয়ার মতো করে, তাদের কথায় কোন ধরণের অশ্লীলতা থাকবে না, অভিসম্পাত থাকবে না এবং তারা কোন অপ্রয়োজনীয় কথা বার্তাও বলবে না। তিনি বলেন, এই দুনিয়াতে এই কয়েকটি বিষয় ছাড়া আমার কাছে এমন কোনো বিষয় নেই, যার জন্য বেঁচে থাকার আকাঙ্খা জাগতে পারে।

চলবে ইনশাআল্লাহ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন