লেখক- মুনাজিরে ইসলাম মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর ওকাড়বী রহঃ
অনুবাদঃ লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
আল্লাহ তায়ালা মানুষের হিদায়াতের জন্য আম্বিয়ায়ে আলাইহিস সালামের সিলসিলা জারী করেছেন। সর্ব প্রথম নবী আবুল বাশার আদম আঃ ছিলেন। আর সর্বশেষ নবী সাইয়্যিদুর রাসূল খাতামুন নাবিয়্যীন, হযরত মুহাম্মদ সাঃ ছিলেন। হযরত আদম আঃ থেকে নিয়ে হযরত ঈসা আঃ পর্যন্ত যত শরীয়ত বিশিষ্ট নবী এসেছেন, তাদের উপমা মৌসুমী ফুলের মত। যেমন গরম মৌসুমের ফূলতো গরমকালে খুব সুন্দর দেখা যায়। কিন্তু শীতকাল আসলে তা শুকিয়ে যায়। আর ঝরে পরে শীতকালের ফুলের জন্য যায়গা খালি করে দেয়। আর রাসূল সাঃ এর শরীয়ত ও দ্বীন হল বার মাসি ফুলের মত। যা প্রতিটি সিজনে প্রতিটি এলাকায় আর প্রতিটি কালেই তার জ্বাজল্যতা আর রুপ শুধু বাড়েই। আর কিয়ামত পর্যন্ত তা বেড়েই চলবে। এটা এমন ফুল ,যা শুকিয়ে যাবেনা আর কখনো ঝরেও পড়বেনা।
এমনিভাবে আম্বিয়ায়ে কিরাম একেকটি এলাকার নবী ছিলেন। কিন্তু নবীজী সাঃ কোন নির্দিষ্ট এলাকার নবী ছিলেন না। তিনি হলেন বিশ্বনবী। যেন প্রথম আম্বিয়ায়ে কিরামের উপমা মোমবাতির মত। যা একটি গলি বা একটি এলাকা আলোকিত করতে পারে। কিন্তু সারা দুনিয়াকে কেবল সূর্যই আলোকিত করতে পারে। সুতরাং সূর্য যখন উদিত হয় তখন রাতের মোমবাতির কোন প্রয়োজন থাকেনা। নবীজী সাঃ এর সূর্যের আলোকময় নবুয়াত আসার পর তাওরাত ও যবুরের আলো নিষ্প্রোয়জনীয় হয়ে যায়।
নবীজী সা. এর দ্বীন বিশ্বব্যাপী। আর কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এই জন্যই এতে নতুন উদ্ভুত শাখাগত মাসআলার জন্য ইজতিহাদের সুযোগ রাখা হয়েছে। ইজতিহাদী মাসায়েলের মাঝে যে ব্যক্তি কুরআন হাদিস থেকে উদ্ভাবন ও ইজতিহাদের যোগ্যতা রাখেন না, তারা মুজতাহিদদের পথ প্রদর্শন অনুযায়ী কুরআন সুন্নাহ থেকে উদ্ভাবন করা মাসায়েলের উপর আমল করবে। তাকে বলা হয় মুকাল্লিদ। আর যদি সে ইজতিহাদের যোগ্য ও নয়, আবার ইজতিহাদী মাসায়েলে মুজতাহিদের তাকলীদও করেনা, তাকে গায়রে মুকাল্লিদ বলা হয়।
নবুয়াতকাল
নবীজী সা. এর মুবারক জমানায় শাখাগত মাসআলা সমাধান করার পদ্ধতি ছিল তিনটি। যথা-
১. যে ব্যক্তি নবীজী সা. এর খিদমতে উপস্থিত হতে পারতো, তিনি নবীজী সা. থেকে উক্ত মাসআলাটি জিজ্ঞেস করে নিতেন।
২. যে লোকেরা হযরত সা. থেকে দূরে থাকতেন, তাদের মাঝে কেউ কেউ হলেন মুজতাহিদ। তখন তিনি নতুন বিষয়ে ইজতিহাদ করে সমাধান দিয়ে দিতেন।
৩. তিনি যদি মুজতাহিদ না হতেন, তাহলে নিজের এলাকার কোন মুজতাহিদের তাকলীদ করে নিতেন। যেমন ইয়ামেনে হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রা. ইজতিহাদ করতেন। আর বাকি সকল ইয়ামানবাসী তার তাকলীদে শখসী করতেন। অথচ ইয়ামানবাসী নিজেরা আরবীভাষী। কিন্তু ইজতিহাদি মাসআলায় মুয়াজ বিন জাবাল রা. এর তাকলীদে শখসী বা একক অনুসরণ করতেন। নবুয়তের জমানায় এমন একজন ব্যক্তির নামও পাওয়া যাবেনা, যার ব্যাপারে এটা প্রমাণ করা যাবে যে, তিনি ইজতিহাদের যোগ্য নয় তাই ইজতিহাদ করতেন না, আবার কারো অনুসরণও করতেননা। সে সময় একজনও গায়রে মুকাল্লিদ ছিলনা।
সাহাবাদের আমল
নবীজী সা. এর মৃত্যু হল ১১ হিজরীতে। সে সময় থেকে সাহাবাদের নবীজী সা. থেকে প্রশ্ন করে সমাধান পাবার পদ্ধতীটি বন্ধ হয়ে যায়। এখনতো আর নবীজীকে প্রশ্ন করার কোন সুযোগ নেই। তাই এখন শাখাগত মাসআলা সমাধানকল্পে দু’টি পদ্ধতি রয়ে গেল। মুজতাহিদ ইজতিহাদ করবে, আর সাধারণ লোকেরা তাকলীদ করবে। সুতরাং সাহাবাদের আমলে মক্কা মুকার্রমায় হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা., আর মদীনা মুনাওয়ারায় হযরত জায়েদ বিন সাবিত রা., আর কুফায় হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. এর তাকলীদে শখসী বা একক অনুসরণ হচ্ছিল। আর সাহাবাদের হাজারো ফতোয়া দলিল ছাড়া হাদিসের কিতাবে বিদ্যমান আছে। আর সকল লোকেরা দলিল জিজ্ঞেস করা ছাড়াই এসবের উপর আমল করেছেন। এটাকেই বলে তাকলীদ। সাহাবীদের আমল, তাবেয়ীদের আমল, তাবে তাবেয়ীদের আমলে একজন ব্যক্তিও ছিলনা যে, আহলে সুন্নাত, আবার গায়রে মুকাল্লিদ। কারো ব্যাপারে এটা বলা যাবেনা যে, তিনি মুজতাহিদও ছিলেন না, আবার মুকাল্লিদ ও নন। বরং তিনি গায়রে মুকাল্লিদ ছিলেন। যেমনিভাবে খাইরুল কুরুনে কোন ব্যক্তি আহলে কুরআন নামে হাদিস অস্বিকারকারী ছিলনা। এমনিভাবে কোন ব্যক্তি আহলে হাদিস নামে ফিক্বহ ও তাকলীদ অস্বিকারকারীও ছিলনা।
বিশ্বজনীনতা
যেহেতো নবীজী সা. এর ধর্ম ছিল বিশ্বব্যাপী। এইজন্যই তিনি কায়সার ও কিসরাকে চিঠি লিখেছিলেন। রোম আর সিরিয়া আর ইয়ামান ইত্যাদির বিজয়ের ভবিষ্যতবাণী করেছেন। আর তা বাস্তবায়িতও হয়েছে। এমনিভাবে নবীজী সা. এই ভবিষ্যতবাণীও করেছেন যে, يكون هذه الأمة بعث إلى السند والهند (مسند احمد-2/369)অর্থাৎ এই উম্মত হিন্দ ও সিন্ধেও হামলা করবে (মুসনাদে আহমাদ-২/৩৬৯) তাইতো ৯২ হিজরীতে মুহাম্মদ বিন কাসেম রহ. এর নেতৃত্বে ইসলামী বাহিনী সিন্ধুতে হামলা করেছে। আর ৯৫ হিজরী পর্যন্ত সিন্ধু মুসলমানদের কাছে পদানত ছিল। মুহাম্মদ বিন কাসেম এসেছিলেন বসরা থেকে। আর বসরায় তখন ইমাম হাসান বসরী রাহ. এর তাকলীদ হত। তারপর যখন ইমাম যুফার বসরা আসেন তখন সকল লোক হানাফী হয়ে যায়। মোদ্দাকথা এই সিন্ধ বিজয়ীদের মাঝে একজনও গায়রে মুকাল্লিদ ছিলনা। আর নবীজী সা. গাজওয়ায়ে হিন্দের ব্যাপারে বলেছেন যে, عصابتان من امتى احرزهما الله من النار، عصبة تغزو الهند وعصبة تكون مع عيسى بن مريم، (مسند احمد-2/229 و نسائى-2/63)অর্থাৎ আমার উম্মতের মাঝে দুই দলকে আল্লাহ তায়ালা আগুন থেকে হিফাযত করবেন। এক দল হল যারা হিন্দে জিহাদ করবে, আর দ্বিতীয় দল হল যারা ঈসা আ. এর সাথে থাকবে।(মুসনাদে আহমাদ-২/২২৯, নাসায়ী শরীফ-২/৬৩) সুতরাং এই ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী ৩৯২ হিজরীতে সুলতান মাহমুদ গজনবী রহ. হিন্দুস্তান বিজয় করেন। আর এখানে ইসলামী খিলাফত কায়েম করেন।
এখানে যত মুসলিম হাকিম বংশীয়, যত গোলাম বংশীয় আর যত ঘুরি বংশীয়, আর যত খিলজী বংশীয়, সাদাত বংশীয়, তুঘলোক বংশীয়, আর সুরী অথবা মোগল বংশীয়, সবাই ছিলেন সুন্নী হানাফী। এই দেশে ইসলাম, কুরআন হাদিস আনয়নের ভাগ্য কেবল হানাফীদেরই ললাটেই আছে। সুতরাং নওয়াব সিদ্দীক হাসান খানও একথা স্বীকার করে লিখেন যে, “যখন থেকে ইসলাম এ এলাকায় আসে, তখন থেকে হিন্দুস্তানের মুসলমানদের সার্বিক অবস্থা হল এই যে, যেহেতো অধিকাংশ লোক বাদশার মত-পথ এবং মাযহাবের অনুসরণকেই পছন্দ করে, একারণেই সূচনা থেকে এখন পর্যন্ত তারা হানাফী মাযহাবেই প্রতিষ্ঠিত। আর এখানে এই মাযহাবের আলেম এবং ফারেগীনরাই বিচারক আর মুফতী ও হাকিম হয়ে থাকে”। (তরজুমানে ওহাবিয়্যাহ-১০)
সুতরাং একথাটি একটি অকাট্যভাবে ঐতিহাসিক সত্য যে, এই দেশে ইসলাম ইংরেজদের রাজত্বের পূর্বে একজন গায়রে মুকাল্লিদের নামও উপস্থাপন করা যাবেনা, যারা ইজতিহাদকে ইবলীশী কাজ আর মুজতাহিদকে মুশরিক বলেছে। দাতাগঞ্জ বখশ নামে প্রসিদ্ধ সায়্যিদ আলী হাজয়িরী সাহেব রহ.(মৃত্যু-৪৬৫ হি.)
তিনি যেদিন লাহোরে পৌঁছেন, যেদিন হযরত সাইয়্যিদ হুসাইন জানঝানবী রহ. এর জানাযা প্রস্তুত করা হয়। তিনি তার নিজের লিখায় লাহোর আগমণের কারণ লিখেন এভাবে যে, “আমি আলী বিন উসমান জালালী হই। আল্লাহ তায়ালা আমাকে কল্যাণ দান করুন। আমি একদা সিরিয়ার দামেস্ক শহরে রাসূল সা. এর মুয়াজ্জিন হযরত বেলাল রা. এর কবরের শিয়রের কাছে ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন স্বপ্নে দেখছিলাম যে, আমি মক্কা মুকার্রমার মাঝে আছি। আর নবীজী সা. বাবে বনী শাইবা থেকে এক বৃদ্ধ লোককে নিজের কোলে নিয়ে এমনভাবে ভিতরে ঢুকছিলেন, যেমন কোন বাচ্চাকে মোহাব্বতের সাথে কোলে নেয়া হয়। আমি দৌড়ে নবীজীর খিদমতে উপস্থিত হলাম। আর নবীজী সা. এর হাত ও পায়ে চুম্বন করতে লাগলাম। আর আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করলাম। কোলের লোকটি কে? আর তার এই সৌভাগ্যপূর্ণ অবস্থা কেন? রাসূল সা. এর কাছে আমার ভিতরগত অবস্থা প্রকাশিত হয়ে গেল। তিনি বললেন যে, ওনি আবু হানীফা রহ.। যিনি তোমাদেরও ইমাম। আবার তোমাদের রাষ্ট্রের অধিবাসীদেরও ইমাম।
আমার এই স্বপ্নের ব্যাপারে নিজেরও অনেক আশা আছে, সেই সাথে আমার দেশবাসীর জন্যও অনেক আশা-ভরসা নিহিত। (তাইতো এই আশা পূর্ণ হয়েছে। এই দেশ হানাফীদের কেন্দ্র হয়েছে।) আর আমার এই স্বপ্নের কথাও প্রমাণিত হয়েছে যে, ইমাম আজম রহ. ঐ সকল হযরতদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত, যারা নিজের চারিত্রিক গুণাবলীর দিক থেকে নবী আদর্শে উৎসর্গিত। আর শরয়ী বিধানের ক্ষেত্রে বাতি। যারা নববী আলোতে আলোকিত। তাইতো তাকে নিয়ে নবীজী সা. চলছেন। যদি তিনি নিজে নিজে চলতেন, তাহলে তখন তিনি স্বীয় গুণে গুনান্বিত হতেন। আর নিজ গুনে যারা ফায়সালা দেয়, তারা ভুল ফায়সালাও দিতে পারে, বা সঠিক ফায়সালাও দিতে পারে। আর যখন তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে স্বয়ং নবী সা. তখন নবীজী সা. এর স্বীয় গুণাবলীর কারণে তার গুণাবলী উৎসর্গিত হয়ে গেছে। আর নবীজী সা. যেহেতো কোন ভুল ফায়সালা দেবার কোন সুযোগ নেই। শুনে রাখ! এটি একটি বড় রহস্যময় বিষয়”। (কাশফুল মাহযুব-৮৬)
মোটকথা ৫৮৯ হিজরীতে সুলতান মুয়িজুদ্দীন সাম ঘুরী আসলেন। আর দিল্লী পর্যন্ত পদানত করেন। সে সময় থেকে নিয়ে ১২৭৩ হিজরী পর্যন্ত আপনারা এই দেশের ইতিহাস পড়ে দেখুন। মাহমুদ গজনবী রহ. থেকে নিয়ে আওরঙ্গজেব পর্যন্ত, এমনকি সাইয়্যিদ আহমাদ শহীদ বেরলবী রহ. পর্যন্ত কোন গায়রে হানাফী গাজী, বিজেতা অথবা মুজাহিদ পাওয়া যাবেনা।
কাশ্মীরের ব্যাপারে ঐতিহাসিক ফেরেস্তা লিখেন-“আমি দেখেছি এই দেশের সবাই ছিলেন হানাফী মাযহাবপন্থী”।(তারীখে ফেরেস্তা-৩৩৭)
আর এর পূর্বে রাশেদী এর বরাতে তিনি লিখেন-“হযরত শায়েখ আব্দুল হক সাহেব মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. বলেন-“اهل الروم وما وراء النهر والهند كلهم حنفيون،ط” অর্থাৎ মা ওরাউন নাহার এবং হিন্দের সবাই ছিলেন হানাফী”। (তাহসীলুত তায়াররুফ-৪৬)
আর হযরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহ. বলেন-“আহলে ইসলামের বড় অংশ ইমাম আবু হানীফা রহ. এর অনুসারী ছিল”। (মাকতুবাত-২/৫৫)
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. বলেন-“সকল শহরের আর সকল দেশের বাদশা ছিল হানাফী। আর কাযী, অধিকাংশ শিক্ষক ও অধিকাংশ সাধারণ মানুষ ছিল হানাফী” (কালিমাতে তায়্যিবাত-১৭৭)
এছাড়াও তিনি লিখেন যে, অধিকাংশ দেশ এবং প্রায় শহরেই আবু হানীফা রহ. এর মাযহাব অনুসারী ছিল। (তাফহীমাতে ইলাহিয়া-১/২১২) অর্থাৎ অধিকাংশ ইসলামী রাষ্ট্র এবং দুনিয়াব্যাপী অধিকাংশ মুসলমান ছিল হানাফী। ইসলামী দুনিয়ার অধিকাংশ অংশ হানাফী অনুসারী ছিল। আর এই মাযহাবের বদৌলতে কমপক্ষে হাজার বছর পর্যন্ত সমগ্র ইসলামী দুনিয়ায় বিধান প্রয়োগিত হত।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. সত্য মাযহাবের পরিচয় এভাবে দিয়েছেন যে, “দ্বীন ইসলামের প্রসারের সাথে দ্বীনে ইসলামের উপর হামলা এবং ফিতনার প্রতিরোধ করা হবে”।
এটাইতো স্পষ্ট যে, পাক ও হিন্দে দ্বীনে ইসলামের প্রসারে হানাফীদের সাথে শরীক কেউ নাই। সারা দেশের মাঝে ইসলাম হানাফীরাই ছড়িয়েছে। আর কাফেররা ইসলামে প্রবিষ্ট হয়ে হানাফীই হয়েছে। এই দেশে ইসলামের উপর দু’টি কঠিন সময় এসেছে। একটি হল সম্রাট আকবরের নাস্তিকতার ফিতনা। দ্বিতীয় হল ইংরেজদের শাসন ও শোষণ।
আকবর যখন ইমামে আজমের অনুসরণ ছেড়ে দিয়ে নাস্তিকতার দাওয়াত দিতে শুরু করে, তখন মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহ. এবং শাইখ আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহলবী রহ. এর প্রতিরোধে এই নাস্তিকতার ফিতনা মিটে যায়। আর ইংরেজদের শোষণের প্রতিরোধে হানাফীরাই এগিয়ে আসে।
গায়রে মুকাল্লিদ নওয়াব সিদ্দীক হাসান লিখেন-“কেউ শোনেনি যে, কোন একেশ্বরবাদী, কুরআন ও সুন্নাতের অনুসারী ব্যক্তি ইংরেজদের সাথে বিদ্রোহ করার অপরাধে অপরাধী হয়েছে। অথবা ইবলীসী ফিতনা আর বিদ্রোহের উপর অগ্রসর হয়েছে। যত লোক খারাপ ও মন্দ করেছে, আর ইংরেজ ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, তারা সবাই হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিল। (তরজুমানে ওহাবিয়া-২৫)
মোটকথা আপনি ভারতবর্ষের ইসলামী ইতিহাস পড়ুন, সেখানে ইসলামী শক্তির মৌল প্রণোদনা হানাফীদের থেকেই পাবেন।
কোন হাদিস অস্বিকারকারী অথবা ফিক্বহ অস্বিকারকারী এক ইঞ্চি জমিনও কাফেরদের থেকে ছিনিয়ে এনে ইসলামী হুকুমতে প্রবিষ্ট করায়নি। তাদের যুদ্ধতো কেবল এটাই যে, হানাফীদের ইসলাম সঠিক নয়। তাদের নামায সহীহ নয়। আল্লাহ তায়ালা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত হানাফীদের উভয় জাহানে কামিয়াবী দান করুন। আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন