আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা জামাত, অথবা তাবলীগ, চরমোনাই বা জিহাদ- আপনি যে কোনও ধরণের যে কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর যদি ভাবেন, আপনার সংগঠন এবং আপনার কর্মপন্থাই সবার চেয়ে সেরা, বাকি সবাই ভুয়া- এর অর্থ, আপনার ভেতর জীবাণু সংক্রমণ করেছে। ধীরে ধীরে আপনার চিন্তা ভাবনা, আচার-আচরণ এবং কথা ও লেখার সর্বত্র কেবলই অন্যদের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং নিজেদের নিয়ে আত্মতুষ্টি প্রকাশ পাবে। জাগতিক কাজে নিয়োজিত সংগঠন কিংবা পারলৌকিক পূণ্যে নিবেদিত সংগঠন, যে কোনও সংগঠনের স্থায়ীত্ব বা মৌলিকত্ব প্রকাশ পায় এর নেতা-কর্মীদের চিন্তা ও কাজের মধ্য দিয়ে। কর্মীসংখ্যা বা প্রচার প্রচারণা দিয়ে নয়। জিকিরের মাহফিলে অথবা জিহাদের মাঠে কিংবা তাবলিগের বয়ানে- যে কোনও জায়গায় বসে আপনি যখন অনুভব করবেন, নিজেকে অন্য দল বা সংগঠনের লোকদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং ভাগ্যবান মনে হচ্ছে, এর অর্থ, শয়তান পরম আদরে ওয়াসওয়াসার চাদরে আপনাকে জড়িয়ে নিচ্ছে। আমাদের দেশে রাজনীতিতে কিংবা ইসলামী জগতে নিজের কর্মপন্থা ও মতবাদকে বড় ভেবে আত্মবিভোর হওয়ার এই প্রবণতা আছে বলেই দিনদিন বাড়ছে সংগঠন ও দলের সংখ্যা, কিন্তু কাক্সিক্ষত পরিবর্তন আসছে না কোথাও। নইলে এতো বাঘা রাজনীতিবিদ, গবেষক, সুশীল, পীর, আলেমেদ্বীন থাকার পরও গোটা বাংলাদেশ কেন ডুবে আছে নৈতিক অধঃপতনের অতলে? ব্যাংকে বসে যারা গ্রাহকদের একাউন্টে অর্থজালিয়াতির পরিকল্পনা করেন, ধর্মের আবরণে যারা খুন ও হত্যার ছক আঁকেন, অথবা প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত যারা শিশুদের হত্যা করে পুঁতে রাখেন, এই সবাই একই অধঃপতনের সূত্রে গাঁথা। এই অধঃপতনের মূল সূত্র কোথায়, সেটা অনেকেই খোঁজেন না, যারা খোঁজে তারা বোঝে না। যারা বোঝেন, তারা বলেন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন