বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের সূচনা নিয়ে যে যেই ইতিহাস প্রকাশ করুক না কেন, সার কথা হচ্ছে বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ পালনের সুচনা হয় ১৯৬৭ সালে। এর আগে বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখ থাকতে পারে, তবে সেটা ছিলো হিন্দুদের পূজা পার্বন বা মেলা হিসেবে। কিন্তু ১৯৬৭ থেকে সেটা জাতীয়ভাবে চালু করার চেষ্টা করা হয়।
পহেলা বৈশাখকে বাংলাদেশের কথিত জাতীয় উৎসব রূপে চালুর করার পেছনে মূল ভূমিকা ছিলো ছায়ানট নামক সংগঠনটির। উল্লেখ্য, ছায়ানট চালু হয় ১৯৬১ সালে। ছায়ানটের চালুর পেছনে মূল উস্কানি ছিলো ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালন। এই রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালনের মূল নেতৃত্বে ছিলো অধ্যাপক খান সরওয়ার মুর্শিদ। উল্লেখ্য এই খান সরওয়ার মুর্শিদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে ১৫ জন রিট আবেদনকারীর একজন। সে সময় সুফিয়া কামাল (সেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে ১৫ জন রিটকারীর একজন) কে সভাপতি করে ছায়ানট তৈরী হয়। মূলত ছায়ানট ছিলো ভারতের শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশী ভার্সন। ভারতীয় হিন্দুয়ানী কালচারকে বাঙালী কালচার বলে পুশিং করাই ছিলো এর উদ্দেশ্য। এ কারণে দেখবেন ছায়ানটের মূল মূল ব্যক্তিরা ট্রেনিং পেয়ে থাকে ভারতের ঐ শান্তিনিকেতন থেকে। সনজিদা খাতুন, মিতা হক সবাই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতন থেকে বিশেষভাবে ট্রেনিং প্রাপ্ত।
মূলত শান্তি নিকেতন কালচার হচ্ছে ভারতীয় জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের কালচার, ভারতীয় জাতীয়তাবাদের কালচার, এ কারণে পাকিস্তানী শাসকরা তা বাংলাদেশের আমদানির বিরুদ্ধচারণ করে। কিন্তু অনেকটা জোর করেই ছায়ানট গোষ্ঠীটি নিজ স্বার্থে এদেশে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী কালচার আমদানি করে। বলাবাহুল্য এতে মোটেও বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের মত ছিলো না, বরং ঐ গোষ্ঠীটি বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে বাংলাদেশে সেই কালচার পুুশ করতে থাকে। এটা অস্বীকার করার কোন অবকাশ নাই, ১৯৭১ সালের পচিশে মার্চ গণহত্যার জণ্য শুধু পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী দায়ি ছিলো না, বরং সেই গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কথিত ছায়ানট গোষ্ঠীও অনেকাংশে দায়ি ছিলো। কারণ পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের আমদানি নিষিদ্ধ করেছিলো। বাংলাদেশের মানুষের রবীন্দ্রনাথ না হলেও চলতো। কিন্তু ঐ গোষ্ঠীটি জোর করে বাংলাদেশের রবীন্দ্র কালচার নিয়ে আসে। আর এতেই পশ্চিমা গোবর মাথার শাসকগোষ্ঠী মনে করে-বাংলাদেশের সকল জনগণ মনে হয় ভারতের দালাল হয়ে গেছে, হিন্দু হয়ে গেছে। এতেই চলে ২৫ মার্চ এর গণহত্যা। তাই ২৫ মার্চের গণহত্যার জন্য শুধু পাকিস্তানী শাসক নয়, কথিক রবীন্দ্রপূজারী সংষ্কৃতিকর্মীরাও দায়ি।
যাই হোক, এটা সবাইকে মানতেই হবে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ পুশিং করার সবচেয়ে বড় উপলক্ষ হচ্ছে এ পহেলা বৈশাখ, যা সনজিদা খাতুন, মিতা হকের মত ভারতীয় এজেন্ট দ্বারা বাংলাদেশের পরিচালিত হচ্ছে। আসলে এটা ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের এক বিরাট র’প্রজেক্ট, এটা পুশিং হবে ৫০-৬০ বছর, এরপর বাংলাদেশের মানুষ নিজ মুখেই বলবে - “দাও দুই বাংলা এক করে দাও”- অর্থাৎ বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য হলেই ভালো হয়।
আমার মনে হয়, বাংলাদেশীরা যদি চায়- বাংলাদেশ ভারতের অন্তর্ভূক্ত না হোক, ভারতীয় জাতীয়তাবাদ বাংলাদেশীদের মধ্যে আর প্রবেশ না করুক, তবে অবশ্যই অবশ্যই উচিত হবে বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ নিষিদ্ধ করা। মনে রাখতে হবে “দাও দুই বাংলা এক করে দাও”- এ থিউরী ঠেকাতে পহেলা বৈশাখ নিষিদ্ধ করা ছাড়া ভিন্ন আর কোন্ উপায় নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন