এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মাঝে ১ হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়া। পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রটির রাজধানীর নাম জাকার্তা। দেশটি জাতিগত বৈচিত্র্যপূর্ণ। সারাদেশে ৩০০টির বেশি স্থানীয় ভাষা রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ যেখানে ২৫ কোটির বেশি মানুষ বাস করে।
সেই ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছে ‘কোরআনুল আকবার’ নামে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা কোরআন শরিফ। এটি দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শক ইন্দোনেশিয়ার পালেমবঙ্গে (Palembang) জড়ো হয়। কোরআন শরিফের কপিটির বিশেষত্ব হলো- এটা কাঠের ওপর খোদাই করে লেখা এবং এটি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা কাঠে খোদাইকৃত কোরআন।
বিশ্বের প্রসিদ্ধ লিপিকর্মী, শিল্পকর্মী, আর্টিস্ট ও শিল্পীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ২০০২ সালে এহসানিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার তত্ত্বাবধানে ট্যাম্পু নামের এক প্রকার বিশেষ কাঠের ওপর এই কোরআন শরিফ লেখার কাজ শুরু হয়। উইপোকা কিংবা ঘূণ এ কাঠের ক্ষতি করতে পারে না। এ ছাড়া কাঠটি পানি শোষণে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন।
কোরআন শরিফটি লিখে শেষ করতে ১ লাখ ৭০ হাজারের কিছু বেশি মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে এবং সময় লেগেছে সাত বছর। তবে এখনও কোরআনের পুরো অংশ লিখে শেষ করা হয়নি। মাত্র ১৫ পারা পর্যন্ত লেখা হয়েছে।
কোরআন লেখার কাজে ২.৫৯ মিটার পুরো ও ১৭৭ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৪০ সেন্টিমিটার প্রস্থ কাঠের তক্তার দু’দিকই ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে মোট ৩১৫টি কাঠের তক্তায় ১৫ পারা পর্যন্ত লেখা হয়েছে।
পাঁচতলা ভবনের সমতুল্য উচ্চতায় কোরআন শরিফটি ১৬ থেকে ৩০ পারা পর্যন্ত লেখা হয়েছে। বাকি ১৫ পারা লেখার প্রস্তুতি চলছে। বাদামি রঙের ট্যাম্পু কাঠের তক্তার মাঝখানে কোরআন লেখা হয়েছে। পৃষ্ঠার চারপাশে বিভিন্ন নকশা ও দোয়া লেখা রয়েছে।
দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে লিখিত কোরআনের অংশগুলো দর্শনার্থীদের জন্য পালেমবঙ্গ গ্র্যান্ড মসজিদের সামনে স্থাপন করা হয়েছে। ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইয়োধোয়োনো আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থা ওআইসির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে এটি উদ্বোধন করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন