মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬

দুনিয়ার মহব্বত ও আল্লাহর মহব্বত

Raihan Khairullah
আল্লাহ তায়ালাকে এ কারণেও ভালোবাসা উচিত যে, দুনিয়ার যত প্রিয় মানুষ রয়েছে, একদিন না একদিন তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। দুনিয়াকে যে ভালোবাসবে, সে একদিন না একদিন দুনিয়া ত্যাগ করবে। আর যে আল্লাহকে ভালোবাসবে সে কোনো একদিন আল্লাহকে পাবে।
একবার রাসূল সা. এর কাছে জিবরাইল আ. এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল,
وأحبب من شئت، فإنك مفارقه.
‘যাকে ইচ্ছা আপনি ভালোবাসুন; কিন্তু একদিন আপনাকে তার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে।’
(শুআবুল ঈমান : নং ১০৫৪)
পৃথিবীতে পরস্পরকে মহব্বতকারী দুইজন থাকলে তারা সবসময় একসঙ্গে থাকতে পারে না। স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার কথাই ধরুন, তারাও সর্বদা একসাথে থাকতে পারে না। কখনো



 স্বামী সফরে যায়, কখনো স্ত্রী বাপের বাড়ি যায়। অর্থাৎ দুনিয়াতেও অস্থায়ী বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। আর কারো মৃত্যু হলে তো বিচ্ছেদ হয়েই যায়। যত তীব্র ভালোবাসাই থাকুক না কেন, একজনের মৃত্যু হলে ভালোবাসার সম্পর্ক চিরতরে শেষ হয়ে যায়। সুতরাং দুনিয়ার প্রেমাস্পদ পরিশেষে বিচ্ছিন্ন হয়েই যায়। এটা কখনো সম্ভব নয় যে, তারা সর্বদা একসঙ্গে থাকবে। 
.
সুতরাং দুনিয়ার যত মহব্বত রয়েছে তার শেষ পরিণতি হলো বিচ্ছেদ। শুধু একজন প্রেমাস্পদ এমন আছেন, যাঁর মহব্বত লাভ হলে তিনি কখনো বিচ্ছিন্ন হন না। দিন-রাত, সুস্থতা-অসুস্থতা, আনন্দ-বেদনা, সর্বাবস্থায় তিনি মানুষের সঙ্গে থাকেন। মানুষ পর্বতচূড়ায় চলে যাক, জমিনের নিম্নাঞ্চলে চলে যাক অথবা সমুদ্রের গভীরে অবগাহন করুক, তবুও এ প্রেমাস্পদ কোনো অবস্থাতেই পৃথক হন না। তিনি কুরআন মাজীদে বলে দিয়েছেন-
وَ هُوَ مَعَكُمْ اَیْنَ مَا كُنْتُمْ
‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকেন।’
(সূরা হাদীদ : ৪)
এটা এমন বিষয়, যার কারণে অন্তর এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, ভালোবাসলে আপন স্রষ্টাকেই ভালোবাসা উচিত।
.
* খাঁটি ভালোবাসা
বান্দার প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা সম্পূর্ণ খাঁটি ও নির্ভেজাল। কারণ তিনি স্রষ্টা ও অধিকর্তা। হাদীসে কুদসীতে আছে-
يا ابن آدم، إن ذكرتني ذكرتك وإن نسيتني ذكرتك.
‘হে আদম সন্তান, তুমি আমাকে স্মরণ করলে আমি তোমাকে স্মরণ করি। তুমি আমাকে ভুলে গেলেও আমি তোমাকে স্মরণ করি।’
অর্থাৎ তুমি আমাকে ভুলে গেলেও আমি তোমার কথা মনে রাখি এবং আমি আমার রহমত বণ্টন করে তোমার প্রতি রহমত প্রেরণ করি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন