বুধবার, ৮ জুন, ২০১৬

মহিলাদের নামাজের জন্য মসজিদে গমন

মহিলাদের নামাজের জন্য মসজিদে গমন নাজায়িয , বরং হাদীস শরীফে আছে মহিলাদের নামাজের উত্তম জায়গা হচ্ছে নিজের ঘরের গোপন প্রকোষ্ঠ। অথচ এক শ্রেনীর অজ্ঞ লোক সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের ইজমা কে অবজ্ঞা করে মহিলা মসজিদে নামাজকে বৈধ বানানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে এই পোষ্টের অবতারনা।
১. হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর সুত্রে বর্ণিত –
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ صَلاَةُ الْمَرْأَةِ فِى بَيْتِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلاَتِهَا فِى حُجْرَتِهَا وَصَلاَتُهَا فِى مَخْدَعِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلاَتِهَا فِى بَيْتِهَا (رواه ابو داود : ৫৭০)
হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মহিলাদের ঘরের অভ্যন্তরে আদায়কৃত নামায ঘরের আঙ্গিনায় আদায়কৃত নামাযের তুলনায় উত্তম। ঘরের ভেতরের ছোট কামরায় আদায়কৃত নামায ঘরের অভ্যন্তরে আদায়কৃত নামাযের তুলনায় উত্তম। [আবু দাউদ : ৫৭০]

২. হযরত উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা. থেকে বর্ণিত –
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ خَيْرُ مَسَاجِدِ النِّسَاءِ قَعْرُ بُيُوتِهِنَّ. (مسند احمد : ২৬৫৪২)
হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম. ইরশাদ করেন-মহিলাদের উত্তম মসজিদ তাদের ঘরের অন্দরমহল। [মুসনাদে আহমদ : ২৬৫৪২]

৩. হযরত উম্মে হুমায়দ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত –
عَنْ أُمِّ حُمَيْدٍ امْرَأَةِ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهَا جَاءَتْ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُحِبُّ الصَّلَاةَ مَعَكَ قَالَ قَدْ عَلِمْتُ أَنَّكِ تُحِبِّينَ الصَّلَاةَ مَعِي وَصَلَاتُكِ فِي بَيْتِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي حُجْرَتِكِ وَصَلَاتُكِ فِي حُجْرَتِكِ خَيْرٌ مِنْ صَلَاتِكِ فِي دَارِكِ وَصَلَاتُكِ فِي دَارِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ وَصَلَاتُكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي مَسْجِدِي قَالَ فَأَمَرَتْ فَبُنِيَ لَهَا مَسْجِدٌ فِي أَقْصَى شَيْءٍ مِنْ بَيْتِهَا وَأَظْلَمِهِ فَكَانَتْ تُصَلِّي فِيهِ حَتَّى لَقِيَتْ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ. (رواه احمد ورجاله رجال الصحيح وقال الشيخ حمزة أحمد الزين اسناده صحيح : ২৭০৯০)
তিনি হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর দরবারে হাযির হয়ে আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার পিছনে নামায আদায় করা আমার প্রবল ইচ্ছা। হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি জানি আমার পিছনে নামায আদায় করতে তুমি বড়ই আগ্রহী। অথচ তোমার জন্য তোমার ঘরের ছোট কামরায় নামায বড় কামরার নামাযের চেয়ে উত্তম। বড় কামরার নামায ঘরের আঙ্গিনার নামাযের চেয়ে উত্তম। ঘরের আঙ্গিনার নামায মহল্লা মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম। মহল্লা মসজিদের নামায আমার মসজিদের নামায অপেক্ষা উত্তম। বর্ণনাকারী বলেন, উম্মে হুমায়েদ ঘরের অভ্যন্তরে নামাযের স্থান বানাতে নির্দেশ দেন। সে মতে ভেতরের এক অন্ধকার কোঠায় নামাযের স্থান বানানো হলো এবং তিনি জীবনভর সে স্থানে নামায আদায় করতে থাকেন। আর এ অবস্থায় তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে গেলেন। [মুসনাদে আহমাদ : ২৭০৯০]

৪. হযরত উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
عن أم سلمة زوج النبي صلى الله عليه و سلم قالت قال رسول الله صلى الله عليه و سلم صلاة المرأة في بيتها خير من صلاتها في حجرتها وصلاتها في حجرتها خير من صلاتها في دارها وصلاتها في دارها خير من صلاتها خارج. (رواه الطبراني في الاوسط ورجاله رجال الصحيح : ৯১০১)

অর্থঃ হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন ‘মহিলাদের জন্য নিজের ছোট কামরার নামায বড় কামরার নামাযের চেয়ে উত্তম। বড় কামরার নামায ঘরের আঙ্গিনার নামায থেকে উত্তম। বাড়ির নামায বাড়ির বাইরের নামায থেকে উত্তম। [আল মুজামুল আওসাত : ৯১০১]
৫. হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
عن عائشة قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم “صلاة المرأة في بيتها خير من صلاتها في حجرتها وصلاتها في حجرتها خير من صلاتها في دارها وصلاتها في دارها خير من صلاتها فيما وراء ذلك” .(التمهيد لابن عبد البر : ৪০১/২৩)

মহিলাদের ছোট কামরার নামায বড় কামরার নামাযের চেয়ে উত্তম। বড় কামরায় নামায ঘরে আঙ্গিনার নামাযের চেয়ে উত্তম। আর ঘরের আঙ্গিনার নামায অন্যান্য জায়গায় নামাযের তুলনায় উত্তম। [আত তামহীদ : খ.২৩ পৃ.৪০১]
৬. হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু. থেকে বর্ণিত-
عن ابن عمر عن النبي صلي الله عليه وسلم قال : صلاة المرأة وحدها تفضل على صلاتها في الجمع بخمس وعشرين درجة.(الجامع الصغير :২২৩/৪)
হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘মহিলাদের একাকী নামায জামাতের সাথে আদায়কৃত নামাযের থেকে পঁচিশগুণ বেশী ফযিলতপূর্ণ। [জামেউস সগীর : খ.৪ পৃ.২২৩]
৭. হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم صلوة الـمرأة تفضل على صلاتـها فى الـجمع خـمسا وعشرين درجة.
অর্থ : “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, মহিলাদের জামায়াতে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে একা নামায পড়ার মধ্যে পঁচিশগুণ ফযীলত বেশি রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ২য় খ- ৩৮৯ পৃষ্ঠা)

৮. হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু. থেকে বর্ণিত-
عن عبد الله بن مسعود عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : إن أحب صلاة تصليها المرأة إلى الله في أشد مكان في بيتها ظلمة. (رواه ابن خزيمة في صحيحه : ১৬৯১)
হযরত হাবীবুল্লাহ হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহর নিকট মহিলাদের ঐ নামায সবচেয়ে প্রিয় যা ঘরের বেশী অন্ধকারময় কামরায় আদায় করা হয়। [সহীহ ইবনে খুযায়মা : ১৬৯১]

৯. আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু. থেকে বর্ণিত-
وعن عبد الله بن مسعود قال : إنما النساء عورة وإن المرأة لتخرج من بيتها وما بها من بأس فيستشرفها الشيطان فيقول : إنك لا تمرين بأحد إلا أعجبتيه وإن المرأة لتلبس ثيابها فيقال : أين تريدين ؟ فتقول : أعود مريضا أو أشهد جنازة أو أصلي في مسجد وما عبدت امرأة ربها مثل أن تعبده في بيته
তিনি বলেন, মহিলারা আপাদমস্তক পর্দায় থাকার বস্তু। নি:সন্দেহে মহিলারা নির্দোষ অবস্থায় ঘর থেকে বের হয়। অতঃপর শয়তান তার প্রতি কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে, তুমি যার সামনে দিয়েই অতিক্রম করবে তার কাছেই পছন্দনীয় হবে। মহিলারা যখন কাপড় পরিধান করে তখন পরিবারের লোকজন জিজ্ঞেস করে, কোথায় যেতে চাচ্ছ ? তখন সে বলে, কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাচ্ছি। অথবা মাইয়্যেতের জানাযা পড়তে যাচ্ছি। অথবা মসজিদে নামায পড়তে যাচ্ছি। বস্তুত: মহিলাদের অন্দর মহলে ইবাদতের চাইতে কোন ইবাদাতই উত্তম নয়। আল্লামা তবরানী রহ. হাদীসটিকে নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী দ্বারা বর্ণনা করেছেন। (আল-মু‘জামুল কাবীর: খ: ৪ পৃ: ৫৮৭ হাদীস নং ৯৩৬৭)

১০. ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর আমল-
وعنه أيضا أنه كان يحلف فيبلغ في اليمين : ما من مصلى للمرأة خير من بيتها إلا في حج أو عمرة إلا امرأة قد يئست من البعولة وهي في منقليها . قلت : ما منقليها ؟ قال : امرأة عجوز قد تقارب خطوها (رواه الطبراني في الكبير ورجاله موثقون)
অর্থঃ তিনি কসম কাটতেন এবং দৃঢ়ভাবে কসম কাটতেন যে, মহিলাদের জন্য তার অন্দর মহল থেকে উত্তম নামাযের কোন স্থান নেই। তবে দুই ধরণের মহিলা ব্যতীত।
ক. হজ এবং ওমরায় গমনকারিনী।
খ. ঐ মহিলা যে তার স্বামী থেকে নিরাশ হয়ে গেছে এবং নিজের মুনকালীন এ আছে। বর্ণনাকারী জিজ্ঞেস করলেন, মুনকালীন-এ থাকার অর্থ কী? তিনি বললেন, এমন বৃদ্ধা হয়ে যাওয়া যে, অতিরিক্ত দুর্বলতার কারণে কাছে কাছে পা পড়ে। আল্লামা তবারানী আল-মু’জামূল কাবীরে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এর প্রত্যেকটি বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য। (আল-মু’জামূল কাবীর: ৪/৫৮৬,হাদীস নং ৯৩৬১-৯৩৬২)

১১. হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর ‘ফাতওয়া’
عن عبد الله بن عباس أن امرأة سألته عن الصلاة في المسجد يوم الجمعة فقال صلاتك في مخدعك أفضل من صلاتك في بيتك وصلاتك في بيتك أفضل من صلاتك في حجرتك وصلاتك في حجرتك أفضل من صلاتك في مسجد قومك .(رواه ابن ابي شيب: ৭৬৯৭)
অর্থঃ এক মহিলা ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু জুমার দিন মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তোমাদের শোয়ার ঘরে নামায আদায় করা ঘরে নামায পড়া থেকে উত্তম। ঘরে নামায পড়া আঙ্গিনার নামায থেকে । মহল্লার মসজিদে নামায আদায় করার চেয়ে। [মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা : ৭৬৯৭]

আরেক প্রকারের হাদীস হচ্ছে মহিলাদের মসজিদ গমন নিষিদ্ধ বিষয়ক। হাদীসগ্রন্থে অনেক হাদীস পাওয়া যায় যা দ্বারা মহিলাদের মসজিদে গমন নিষিদ্ধ প্রমাণিত হয়।
১২. বুখারী শরীফে আছে-
عن عائشة رضى الله تعالى عنها قالت لو رأى رسول الله صلى الله عليه وسلم ما أحدث النساء لمنعهن المسجد كما منعت نساء بني إسرائيل.فقلت لعمرة او منعهن؟ قالت نعم. (رواه البخاري في صحيحه : ৮৬৯)
হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, মহিলারা যেরূপ (সাজসজ্জা) সহ কিছু বিষয় বর্তমানে উদ্ভাবন শুরু করেছে তা যদি রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যক্ষ করতেন; তাহলে অবশ্যই তাদের মসজিদে গমন করতে নিষেধ করতেন। যেমন বনী ইসরাঈলের মহিলাদের নিষেধ করা হয়েছিলো। [বুখারী : ৮৬৯, আবু দাউদ ৫৬৯, মুসলিম শরীফ ৪৪৫, মুয়াত্তা মালেক ৪৭২]

১৩. হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত-
عن عائشة قالت كان نساء بني إسرائيل يتخذن أرجلا من خشب يتشرفن للرجال في المساجد فحرم الله عليهن المساجد وسلطت عليهن الحيضة.(اخرجه عبد الرزاق في مصنفه : ৫১২৮)
অর্থঃ বনী ইসরাঈলের মহিলারা উঁচু উঁচু কাঠের পা বানিয়ে নিতো। যাতে মসজিদে গিয়ে এগুলো ব্যবহার করে উঁকি মেরে পুরুষদের দেখতে পায়। এ কারণে আল্লাহ তায়ালা অসুন্তুষ্ট হয়ে তাদের মসজিদে যাওয়া হারাম করে দিয়েছেন এবং তাদের উপর ঋতুস্রাবের সমস্যা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক : ৫১২৮]

১৪. আবু আমর শাইবানী রহমতুল্লাহি আলাইহ বর্ণনা করেন-
أنه رأى ابن مسعود يخرج النساء من المسجد يوم الجمعة ويقول : اخرجن إلى بيوتكن خير لكن. (رواه الطبراني في الكبير : ৯৪৭৫)

তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু. কে দেখেছি, তিনি জুমার দিন মহিলাদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দিচ্ছেন এবং বলছেন, তোমরা ঘরে চলে যাও ওটাই তোমাদের জন্য উত্তম। [মুজামুল কাবীর : ৯৪৭৫]
১৫. ইবনে উমর রা.-এর আমল-
وَكَانَ ابْن عمر، رَضِي الله تَعَالَى عَنْهُمَا، يقوم يحصب النِّسَاء يَوْم الْجُمُعَة يخرجهن من الْمَسْجِد.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু জুমার দিন দাড়িয়ে ছোট ছোট কঙ্কর নিক্ষেপ করে মহিলাদের মসজিদ থেকে বের করে দিতেন। [উমদাতুল কারী : খ.৪ পৃ.৬৪৭]

এসব হাদীসসমূহ থেকে যা প্রমাণিত,
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা উম্মতে মুসলিমার করণীয় নির্ধারণ করে দিয়ে বলেছেন, মুসলিম রমনীদের চারিত্রক পবিত্রতা, উৎকষর্তা এবং ইজ্জত -সম্মান হেফাজতের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়ার যেসব শর্তাবলী আরোপ করা হয়েছে। বর্তমানে সেগুলোর দিকে তারা ততোটা ভ্রুক্ষেপ করছেন না। মার্জিত ও উন্নত চরিত্রের যে অনুপম নমুনা তাদের মধ্যে রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে বিদ্ধমান ছিলো তা এখন পূর্বের মতো উপস্থিত নেই।
অতএব এ ধরনের চারিত্রিক অবক্ষয়ের কারণে এখন আর মসজিদে গমনের অনুমতি দেয়া যায় না। তাই তিনি এ ভাষায় মসজিদ গমনকে নারীর জন্য নিষেধ করলেন যে স্বয়ং হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি থাকতেন আর মহিলাদের এ পরিবর্তন লক্ষ করতেন তাহলে তিনিই তাদেরকে মসজিদ গমনের বৈধতার বিধান স্থগিত করে অবৈধ হওয়ার বিধান চালু করতেন। এবং মসজিদে যেতে বারণ করতেন। হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা তার এ সিদ্ধান্তের সমর্থনে বনী ইসরাঈলের মহিলাদের যেসব কারণে মসজিদে যাওয়া হারাম করা হয়েছিলো তাও সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই জানতেন যে, একসময় ফেতনার দ্বারা উম্মুক্ত হবেই । কিন্তু রাসুলের যুগে তার প্রেক্ষাপট তৈরী না হওয়ায় মসজিদে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা সুস্পষ্টভাবে অগ্রিম ঘোষণা দেননি। কিন্তু বনী ইসরাঈলের মহিলাদের মসজিদের যাওয়া হারাম করার বিষয়টি রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উম্মতকে জানিয়ে দিয়ে এ দিকে ইশারা করেছেন যে, ফেতনার দ্বার উম্মুখ হলে –এ উম্মতের মহিলাদের ব্যাপারেও অনুরূপ বিধান আরোপ হবে।
হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা সিদ্ধান্তের সাথে একমত হয়ে হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু মহিলাদের মসজিদে গমন নিষিদ্ধ করেছিলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু , ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সহ অনেক সাহাবী কঙ্কর নিক্ষেপ করেও এ বিধান বাস্তবায়ন করছেন।
হযরত উমররদ্বিয়াল্লাহু আনহু -এর এ সিদ্ধান্তকে সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম মেনে নিয়ে ইজমায়ে সাহাবা সংঘটিত হলো। আর যেখানে গৃহে নামাজ পড়া মসজিদে নামাজ পড়ার চাইতে বেশি সাওয়াব ফযিলতের কারন হয় তবে কোন আশায় এখনকার মহিলারা সেই গৃহ ছেড়ে মসজিদে আগমন করতে চায়? 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন