জিয়া হক।। জন্মহার একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার নীচে নামলে সভ্যতা বিকশিত হয় না। – – – – ইতিহাসে কোন সভ্যতা পরিবারপ্রতি ১.৯ জন্মহার নিয়ে বিকশিত হয়েছে, সে প্রমাণ নেই। আর জন্মহার কমতে কমতে যখন ১.৩ জনে ঠেকে, তখন সে সভ্যতার টিকে থাকাটা অসম্ভব। কারণ, এরকম সভ্যতায় এ জন্মহার নিয়ে প্রতিটি নারী পুরুষকে গড়ে ৮০ থেকে ১০০ বৎসর পর্যন্ত প্রজননক্ষম হতে হবে সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, যেটা সম্ভবপর নয়।
অতএব তাকে বিলীন হতেই হবে। তোমাদের সভ্যতা আজ এই অসম্ভবের মুখোমুখি, বাঁচার পথ নেই। – – – – – – ব্রিটেনে পরিবারপ্রতি জন্মহার হল ১.৬ জন মাত্র। বিলুপ্তির হার ২.১১ এর নীচে, টিকে থাকবে কী ভাবে? এখানে তোমরা যে ক’জন আছ, তার মধ্যে এক সুষমা ছাড়া কারোরই সংসার নেই, সন্তান নেই। ‘পার্টনার’ আছে! উদাহারণ তো তোমরা নিজেরাই!
অথচ দেখ, তোমাদের আশে পাশে যেসব দেশী-বিদেশী মুসলমান আছে তাদের প্রত্যেকেরই সংসার আছে, দু’চারজন সন্তানও আছে। তাদের জন্মহার পরিবারপ্রতি গড়ে ৪.৬ জন। ফলে তারা বাড়ছে সংখ্যায়। তারা বাড়ছে মানে মুসলমান বাড়ছে, তাদের সংস্কৃতি বাড়ছে। বাজারে হালাল খাবারের দোকান বাড়ছে, রাস্তায় ইসলামি পোষাকে মুসলিম নারী পুরুষ দেখছ। ভাষা, কৃষ্টি, আর শিক্ষা, সংস্কৃতিতে তার প্রভাব দেখছ। তিরিশ বৎসর আগে ব্রিটেনে মুসলমান ছিল ৮২০০০ (বিরাশি হাজার)। তিরিশ বৎসর পরে ২০১০ সালে সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫০০০০০(পচিশ লক্ষ)তে।
অর্থাৎ গত তিরিশ বৎসরে মুসলমান বেড়েছে তিরিশ গুণেরও বেশী! সারা ব্রিটেনে মসজিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩০০ তে! এর কি কোনই প্রভাব পড়বে না সমাজে? একবার কেবল ভাবো ফারিহার কথা। তিনি তোমাদেরই একজন। ক’দিন আগেও তিনিও পাব বা পানশালায় গিয়ে এক পাইন্ট ড্রিংকস্ নিয়ে বসেছেন, তোমাদের মত তাঁরও বয়ফ্রেন্ড ছিল, তিনিও শর্ট স্কার্ট পরে উদোম মাথায় ঘুরেছেন।
আজ তিনি ওসব ছেড়েছেন, তোমাদের সামনেই চলাফেরা করেন, তোমাদেরই একজন, কিন্তু তাঁর আর তোমাদের চলা ফেরার মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান। সেই একই মানুষ, কিন্তু তাঁর ভেতরের দর্শন বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তনের কারণে তাঁর পোষাক বদলেছে, চাল চলনও বদলেছে। বদলেছে পুরো জীবনাচার। – – — – – তিনি তোমাদের একজন হয়েও ভিন্ন। এ ভিন্নতা চোখের সামনেই দেখছ।
এটাই পরিবর্তন। সমাজ পরিবর্তন হচ্ছে, ব্রিটেন বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে ইউরোপ! – – – – – – – পরিবর্তনটা আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক। ক্ষয়ীষ্ণূ নয়, বর্ধিষ্ণূ। আগে ছিল নীরবে, — – — যে, কারো নজরই এড়ায় না। ঘরে বসেও টের পাওয়া যায় !
ফ্রান্সে তো এক বিপ্লবই ঘটে যাচ্ছে। ফ্রান্সের অবিসংবাদিত নেতা, যাঁকে ফরাসীরা একরকম পুজা করে — – -, সেই নেপোলিয়ান বোনাপোর্ট কুরআনের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে এক বৈশ্বিক ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই ১৯১৪ সালে ফ্রান্সে এক সমাবেশে বলেছিলেন;
“I hope the time is not far off when I shall be able to unite all the wise and educated men of all the countries and establish a uniform regime based on the principles of Qur’an which alone are true and which alone can lead men to happiness (Quoted in CHRISTIAN CHERFILS’ BONAPARTE ET ISLAM (PARIS 1914) ”
কিন্তু ফ্রান্সের ভাগ্যলীপি কোন পথে যাচ্ছে, সে প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। যাঁরা আশপশের খবর রাখেন, তারা নিশ্চিত জানছেন ফ্রান্সের মঞ্জিল কোন দিকে। – – – -! সে এখন ইসলামের পথে ঝড়ের গতীতে ধেয়ে চলেছে। ফ্রান্সে যেখানে মূল ফরাসি পরিবার প্রতি জন্মহার ১.৮ জন মাত্র, সেখানে মুসলিম পরিবারগুলোয় এ হার অবিশ্বাস্য, গড়ে ৮.১ জন! আরও রয়েছে ক্রমবর্ধমাণ ধর্মান্তরিত হবার ঘটনা। সরকারি হিসেবে একমাত্র ২০০৯ সালেই সত্তর হাজার ফরাসী খৃষ্টান ইসলাম গ্রহণ করেছে!
দক্ষিণ ফ্রান্স একসময় ছিল —- – — – জনগোষ্ঠির শতকরা ৩০ ভাগই মুসলমান। নিস, মার্সেই ও প্যারিস শহরে এ হার শতকরা ৪৫ জন। সা¤প্রতিক হিসেবে ২০২৭ সালে ফ্রান্সে মোট জনসংখ্যার প্রতি চারজনের একজন হবে মুসলমান। অর্থাৎ শতকরা ২৫ ভাগই হবে মুসলমান। অর্থাৎ ১৫ বৎসর পরে সিকিভাগ ফরাসী নাগরিক হবে মুসলমান। এদের – – – – ২০ থেকে ২৫ বৎসরেই ফ্রান্সে অর্ধেকেরও বেশী হবে মুসলমান।
অর্থাৎ ২০৫০ সাল নাগাদ ফ্রান্স হবে মুসলমান প্রধান দেশ। সে – – – তাই না? – – — – – – – অতএব অপেক্ষা কর, আর মাত্র দুই বা তিনটি দশক, তার পরেই দেখবে ফ্রান্স একটি ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বকে নিজেদের অবস্থান জানান দেবে! আজকের – – – দিচ্ছে।
তোমাদের আর এক প্রতিবেশী জার্মানি, তার অবস্থাও ভিন্ন কিছু নয়। সেখানে পরিবারপ্রতি জন্মহার ১.৩ জন মাত্র। একটা সভ্যতাকে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন জন্মহার, পরিবার প্রতি ২.১১ জন, – – – – – । সরকার নিজেই স্বীকার করছে, ২০৫০ সালে জার্মানী হবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ।
তখনও কী জার্মানীর আদালতে বোরকা পরে বিচার প্রার্থি মুসলিম নারীকে কেউ ছুরিকাঘাতে হত্যা করতে পারবে? – – – – ‘গণতান্ত্রিক’ ‘পশ্চিমা’ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা যখন শরীয়া আঈনের পক্ষে ভোট দেবে, তখন কী বলে তাদের রুখবে? তোমাদের আশে পাশে – – – – একই পরিবর্তন সবখানে। তোমাদের পশ্চিমা খৃষ্টবাদী সমাজটা পরিবর্তিত হচ্ছে একটা ইসলামি সমাজে। আর তা হচ্ছে তোমাদের নাকের ডগায়, — –!
জানো, ১৯৯০ এর পর ইউরোপজুড়ে যত জনস্যংখা বৃদ্ধি পেয়েছে তার শতকরা ৯০ ভাগই মুসলমান। – – – – আর ২০২৮ সাল নাগাদ পুরো ইউরোপ ব্যাপি মুসলমানের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে দশ কোটির বেশী!
গ্রীসে জন্মহার ১.৩ জন। ইটালিতে ১.২ জান মাত্র। স্পেনে পরিবারপ্রতি মাত্র ১.১ জন! আর পুরো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ৩১ টি দেশের গড় হার ১.৩৮ জন মাত্র। ইতিহাসের কোন পর্যায়েই এ জন্মহার নিয়ে কোন সমাজ, সভ্যতা টিকে থাকতে পারেনি। অতএব – – – – – এ সমাজ পরিবর্তিত হয়ে হবে মুসলিম সমাজ। আর ইউরোপের আগামি পরিচিতি হবে ‘ইসলামিক ইউরোপ’ বলে!
নেদারল্যান্ডসে বর্তমানে যত নবজাতক জন্মে, তার অর্ধেকই মুসলিম দম্পতির সন্তান, মুসলিম শিশু। আগামি ১৫ বৎসরের মধ্যে নেদারল্যন্ডসের অর্ধেক জনসংখ্যা হবে মুসলমান। এটা – – নেদারল্যান্ডস সরকারের নিজস্ব পরিসংখ্যান! ক’দিন আগে বেলজিয়ামও – – — – সেখানে মোট জনসংখ্যার শতকরা পচিশ জনই মুসলমান। বর্তমানে জন্ম নেয়া প্রতি একশত শিশুর মধ্যে পঞ্চাশ জনই হলো মুসলিম বাবা মা’র সন্তান।
—— বেলজিয়াম সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য আর পরিসংখ্যানই তা বলছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী আগামি ২০২৫ নাগাদ বেলজিয়ামে মুসলিম জনসংখা দাঁড়াবে দেশের মোট জনসংখার এক তৃতিয়াংশ। শতকরা তেত্রিশ জনে। – – – – প্রকৃতপক্ষে এ হার শতকরা চল্লি¬শজনে দাঁড়াবে। এক তৃতিয়াংশ মুসলমান নিয়ে পরবর্তি সিকি শতাব্দীতে —–।
২০৫০ সাল নাগাদ বেলজিয়ামের সংখাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠি হবে মুসলমান। – – – – এতক্ষণ চুপচাপ বসে বসে শুনেছেন মেলেনি জনসন। এবারে তিনি নড়ে চড়ে বসলেন। তাঁর সাথে চোখাচোখি হতেই ——-।’
বললাম; কেবল তোমাদের কানাডাতেই নয়, বরং সারা বিশ্বেই একই ধারা। কানাডায় পরিবার প্রতি জন্ম হার হলো ১.৬ জন মাত্র। সভ্যতা টিকে থাকার জন্য কাম্য সর্বনিম্ন হার ২’১১ এর চেয়ে কম। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশটির জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১.৬মিলিয়ন বা ষোল লক্ষ।
– – – -, এই ষোল লক্ষ বর্ধিত জনসংখ্যার বারো লক্ষই হলো ইমিগ্র্যন্ট বা অভিবাসী, যাদের বেশীরভাগই মুসলিম ইমিগ্র্যন্ট! তারা এখন তোমাদের দেশ আর সমাজের অংশ – – – -। তোমাদের পড়শী আমেরিকার বর্তমান জন্ম্হার ১.৬ জন। – – – -। এর সাথে যদি লাতিন আমেরিকা থেকে আগত অভিবাসীদের হার ধরা হয়, তা হলে সে হার দাঁড়ায় ২.১১ এ।
জিয়া হক।। ১৯৭০ সালে আমেরিকায় মুসলমান ছিল মাত্র এক লক্ষ, আজ চল্লিশ বৎসর পরে এসে মুসলমানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সরকারি হিসেবে নব্বই লক্ষ’তে। অর্থাৎ চল্লি¬শ বৎসরে —-, বৈধ অবৈধভাবে অবস্থানরত —-এক কোটি ছাব্বিশ লক্ষের কাছাকাছি!
গেল বৎসর অর্থাৎ ২০০৯ সালে আমেরিকাতে নব্বই হাজার (অপর এক হিসেবে এক লক্ষ কুড়ি হাজার) আমেরিকান ইসলাম গ্রহণ করেছে। অথচ ক’দিন আগেও মাত্র কুড়ি হাজার আমেরিকান ইসলাম গ্রহণ করত বৎসরে। ২০০৭ সালে এ সংখা ছিল সত্তর হাজার। এ ধারা —-হারে!
ক’দিন আগে ক্যাথলিক চার্চ ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্বে মোট জনসংখার দিক বিচারে তারা মুসলমানদের পিছনে পড়ে গেছে। —- না।
তোমরা স্বীকার করো বা না করো, তোমাদের চারিপাশ বদলে যাচ্ছে। তোমাদের — – ধ্যান-ধারণা সব। এইসব —- ক্ষেত্রেই।
আমার কথা তাঁরা শুনলেন, কিন্তু কিছুই বললেন না। বলবেনই বা কি? আমি তাদের সমাজ, দেশ, আশ পাশ থেকে বাস্তব তথ্য, সরকারি উপাত্ত নিয়েই কথাগুলো বলেছি। এসবের বিপরিতে একবিংশ শতাব্দীর সচেতন নারীগুলোর বলার মত কোন বক্তব্যই বাঁকি ছিল না।প্রতিবাদের কোন যুক্তিই তাদের ছিল না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন