হে হাফিজ তোমার বাণী চিরন্তনের মত মহান। কেননা, তার জন্য আদি ও অন্ত নেই। তোমার ভাষাআসমানের গম্বুজের মত একাকী নিজের ওপরই স্থিত। তোমার গজলের অর্ধেকটায় বা প্রথম কলিতেকিংবা অন্য কোন অংশের মধ্যে মোটেও পার্থক্য করা যায় না। কেননা এর সবটাই সৌন্দর্য্ ও পূর্ণতারনিদর্শন। একদিন যদি পৃথিবীর আয়ু ফুরিয়ে যায়, হে আসমানী হাফিজ! আমার প্রত্যাশা যে, একমাত্রতোমার সাথে ও তোমার পাশে থাকবো। তোমার সঙ্গে শরাব পান করব। তোমার মতই প্রেমেআত্মহারা হব। কেননা এটাই আমার জীবনের গৌরব ও বেঁচে থাকার পাথেয়।” (ওয়ালফ গঙ্গ গ্যেটে)
যার সম্বন্ধে মহাকবি গ্যেটে একথা বলেছেন তিনি হলেন বিশ্বের কবিকুল শিরোমনি হাফিজ শিরাজি। তাঁর পুরো নাম হলো খাজা শামসুদ্দীন মুহাম্মদ হাফিজ শিরাজী। বিশ্বের বিরল কবি ব্যক্তিত্ব হাফিজ শিরাজি। ৭১০ হতে ৭৩০ হিজরী সনের মধ্যে ইরানের শিরাজ নগরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম বাহাউদ্দীন সুলগারী। কবি শিরাজ ছিলেন পিতা সুলগারীর কনিষ্ঠ পুত্র। কবির দাদা ছিলেন ইরানের ইস্পাহান প্রদেশের ‘কুপাই’ নামক স্থানের অধিবাসী। আতাবক শাসন আমলে তিনি সপরিবারে কুপাই ত্যাগ করে ফারছ এর রাজধানী শিরাজ নগরীর রুকনাবাদ নামক মহল্লায় বসবাস শুরু করেন। কবির মায়ের জন্মস্থান ছিল ‘কাজেরুণ’ নামক স্থানে।
হাফিজ শিরাজী অত্যন্ত অল্প বয়সে পিতৃহারা হন। যে কারণে পাঠশালায় গমনের পরিবর্তে রুটি রুজির তাগিদে তিনি একটি রুটির দোকানে কাজ নেন। এখানে তাঁকে শেষ রাত পর্যন্ত কঠোর শ্রম দিতে হত। এক্ষেত্রে আমরা আমাদের বাংলার বুলবুল কবি কাজী নজরুলের জীবনের সাথে একান্ত মিল দেখতে পাই। কাজী নজরুল ইসলামও শিশুকালে ইয়াতিম হন এবং জীবিকার জন্য রুটির দোকানে কাজ নেন। কবি শিরাজী যে পথ দিয়ে রুটির দোকানে যেতেন ঐ পথেই ছিল একটি মক্তব। আসা-যাওয়ার পথে তাঁর মনে কোরআন শিক্ষার ইচ্ছা জাগে। তিনি মক্তবে ভর্তি হন এবং রুটির দোকানে কাজের পাশাপাশি লেখাপড়ার কাজও চালিয়ে যেতে থাকেন। অল্পদিনের মধ্যেই শিরাজী সমস্ত কুরআন কন্ঠস্থ করেন ও লেখাপড়ায় অশেষ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তোমরা শুনলে বিস্মিত হবে যে, তিনি চৌদ্দটি পদ্ধতিতে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে পারতেন। তিনি এ সম্বন্ধে বলেছেন,
‘হে হাফেজানে জাহান ছুবন্দে জাম না কারদ
লতায়েফে হুকমী বা নেকাতে কোরআনী।’
অর্থাৎ, ‘জগতের মাঝে এমন হাফেজ পাবে নাকো খুঁজে,
আমার মত যে কুরআনের তত্ত্বে দর্শন বুঝে’।
জানা যায় তিনি রুটির দোকানে কাজ করে যে কাজ করতেন তা চার ভাগে ভাগ করে নিয়ে একভাগ তাঁর মায়ের জন্য, দ্বিতীয় ভাগ শিক্ষকদের জন্য, তৃতীয় ভাগ ফকীর মিসকীনদের জন্য এবং চতুর্থভাগ রাখতেন নিজের হাত খরচের জন্য। কবির দিওয়ানে ই হাফিজসহ অন্যান্য গ্রন্থ থেকে জানা যায় তিনি তাঁর যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ আলেম ছিলেন। তিনি ইসলামী আইন শাস্ত্র (ফিকহ), হাদীস, ন্যায়শাস্ত্র (কালাম), তাফসীর, ফার্সী সাহিত্য ইত্যাদিতে সুপন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। এমনকি তিনি জ্যোতিষ বিজ্ঞানের জ্ঞানও আয়ত্ব করেছিলেন।
কবি শিরাজী তাঁর যৌবনকালেই লেখালেখিতে হাত পাকিয়েছিলেন বলে জানা যায়। যতদূর সম্ভব তিনি শাহ শেখ আবু ইছহাকের প্রশংসা কীর্তন আছে। অবশ্য তাঁর জীবদ্দশাই তিনি মুজাফফর বংশীয়দের শাসনকালও অবলোকন করেন। যাই হোক কবি তাঁর জীবদ্দশাতেই খ্যাতি ও প্রসিদ্ধি অর্জনে সক্ষম হন। যদিও তাঁর সময়টা ছিল সাহিত্য ও কাব্যচর্চার জন্য খুবই খারাপ সময়। কারণ এ সময়টাতে তাঁর দেশে নানা রকম হানাহানি, যুদ্ধ বিগ্রহ বিরাজমান ছিল।
কবি খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভক্তবৃন্দ তাঁকে নিজেদের মধ্যে পাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে থাকে। বাগদাদের সর্বগুণান্বিত সুলতান আহমদ বিন আবেস কবি হাফিজকে বাগদাদে পাওয়ার জন্য বারবার আমন্ত্রণ পাঠাতে থাকেন কিন্তু কবি প্রিয় জন্মভূমি ছেড়ে ঐ সময় কোথাও যেতে রাযী ছিলেন না। তাই সম্রাটের আহবানকেও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
ইস্পাহানের শাসনকর্তার মন্ত্রী উম্মাদ বিন মাহমুদ কবিকে দাওয়াত করেছিলেন। কিন্তু কবি এ দাওয়াতও কবুল করেন নি। দাক্ষিণাত্যের বাহমনী সুলতান শাহ মাহমুদ কবি সাহিত্যিকদের অসম্ভব সম্মান করতেন। দেশ বিদেশের কবি সাহিত্যিকদের তিনি নানা সম্মানে সম্মানিত করতেন। এ সময়ে কবি হাফিজ দাক্ষিণাত্যে আসার জন্য ইরাদা করেছিলেন কিন্তু নানা কারণে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।
বাঙালীদের জন্য গর্বের বিষয় হল, সে সময়কাল বাংলার শাসনকর্তা গিয়াসউদ্দীন আযম শাহ কবি শিরাজীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কবি না আসতে পারলেও সে কথা তার কবিতায় লিখে গেছেন। কথিত আছে গিয়াসউদ্দীনের তিনজন প্রিয় দাসী ছিলেন – এদের নাম সরব, গুল ও লালা।
সুলতান একদিন এ চরণটি ফাঁদলেন—
‘সাকী হাদীসে সারবো গোলো লালা মিরওয়াদ’ কিন্তু আর পরবর্তী চরণটি পূরণ করতে পারলেন না। সভাকবিরাও সুলতানের মনপুত কিছু দিতে পারলেন না। তখন সুলতান উক্ত লাইনটি কবি হাফিজ শিরাজীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। কবি হাফিজ শিরাজী এর উত্তরে কবিতাটি পূর্ণ করে সুলতানের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। কবিতাটি এ রকম-
‘সাকী হাদীসে সারবো গোলো লালা মিরওয়াদ
ওইন বাহাস বা সালাসায় গোসালা মিরওয়াদ।
…………………………………………….
হাফিজ যে শওকে মজলেসে সুলতান গিয়াছোদ্দিন
খামুশ মালো কে কারে তু আজ লালা মিরওয়াদ।
কবিতাটির শেষ দু’লাইনের অর্থ হলো-‘হে হাফিজ সুলতান গিয়াসউদ্দীনের মজলিসে চুপ করে থেকোনা, কেননা তাঁর কাজ কান্নার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।’
কবি শিরাজী সুলতান গিয়াসউদ্দীনের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর বাংলায় আসার জন্য মনস্থির করেছিলেন বলে জানা যায়, কিন্তু সাইক্লোন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে আসতে পারেন নি। আমাদের গর্ব হল কবিকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে বাংলা ও বাংলার সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহ ইরানের সাহিত্যে অমর হয়ে আছেন।
কবি হাফিজ শিরাজী কাব্য প্রতিভা ও দর্শন সারা পৃথিবীর কাব্যা মোদী ও চিন্তাশীল মনকে যুগে যুগে নাড়া দিয়ে আসছে। পাশ্চাত্য দুনিয়ার মহান কবি ও চিন্তাবিদ গ্যেটে(১৭৩৯-১৮৩২)বলেন, ‘হঠাৎ প্রাচ্যের আসমানী খুশবু এবং ইরানের পথ-প্রান্তর হতে প্রবাহিত চিরন্তন প্রাণ সঞ্জীবণী সমীরণের সাথে পরিচিত হলাম। আমি এমন এক অলৌকিক ব্যক্তিকে চিনতে পারলাম, যার বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব আমাকে আপাদমস্তক তার জন্য পাগল করেছে।’ মহাকবি গ্যেটে হাফিজের প্রতি এতই অনুরক্ত হয়ে পড়েন যে, ‘একটি সময়ের জন্য সবকিছুকে এবং সবাইকে ভুলে যান এবং নিজেকে ফার্সী ভাষার এই কবির ক্ষুদ্র ভক্ত বলে অনুভব করেন।’ এমন কি তিনি হাফিজের প্রেমানুভূতি ও আধ্যাত্মিক চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর বিশ্ববিখ্যাত নাট্যকাব্য ফাউস্ট (FAUST) রচনা করেন। যেটাকে পাশ্চাত্য দিওয়ান বলা হয়।
বাংলা ভাষাভাষী কবি সাহিত্যিকদেরও তিনি দারুণভাবে নাড়া দিয়েছেন। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরতো নিজে ১৯৩২ সালে ইরানের শিরাজ নগরে কবির মাজারে উপস্থিত হয়ে ম্রদ্ধা নিবেদন করে এসেছেন। এমনকি কবির পিতা মহর্ষি দেবন্দ্রনাথ ঠাকুর কবির অসম্ভব ভক্ত ছিলেন। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে এই ব্যাপারে লিখেছেন, ‘আমি জানি যে হাফিজের ধর্মীয় দর্শন ও কবিতা আমার পিতাকে যতখানি অভিভূত করত, বৈষ্ঞবদের দর্শন ও সঙ্গীত ততখানি করতে পারত না। হাফিজ ছিলেন তাঁর ঐশ্বরিক আনন্দ। তিনি নিজে কবিতা লিকতেন না। হাফিজের কবিতাই তাঁর সৃষ্টির আকাঙ্খাকে পূরণ করতো। উপনিষদ তার ক্ষুধা নিবারণ করত এবং হাফিজ তাঁর তৃষ্ঞা মিটাত।’ জানা যায় মহর্ষি দেবন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুরো দিওয়ান মুখস্ত ছিল।
গিরিশচন্দ্র সেন, কৃষ্ঞচন্দ্র মজুমদার, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, মোহিতলাল মজুমদার, যতীন্দ্রমোহন বাগচী, কান্তিচান্দ্র ঘোষ, হরেন্দ্র নাথ দেব প্রমুখ বিখ্যাত কবিরা কবি হাফিজের বহু রুবাইয়াৎ ও গযল অনুবাদ করেছেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম হাফিজকে এত মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন যে, তাঁর পুত্র বুলবুলের মৃত্যুশয্যায় বসেও তাঁর রুবাইয়াৎ অনুবাদ করেছেন। তিনি ফার্সী থেকে মোট ৭৩ টি রুবাই সরাসরি বাংলায় অনুবাদ করেন। তিনি যেদিন অনুবাদ শেষ করেন সেদিন কবি পুত্র বুলবুল ইন্তিকাল করেন। কবি তাই বেদনার সাথে লিখেছেন, ‘আমি আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান ও সবচেয়ে প্রিয় সম্পদকে উপঢৌকন দিয়ে শিরাজের বুলবুল কবিকে বাংলাদশে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ইরানের কবি সম্রাট হাফিজ বাংলার সুলতান গিয়াসউদ্দিনের আমন্ত্রণে সাড়া দেননি। কিন্তু তিনি আমার আমন্ত্রণে সাড়া না দিয়ে পারতেন না।’
ফার্সী সাহিত্যের আলোচনা করে লেখা গ্রন্থটি হচ্ছে মোহাম্মদ বরকতুল্লাহর ‘পারস্য প্রতিভা’। এ গ্রন্থে কবি হাফিজের ওপর একটি চমৎকার প্রবন্ধ আছে। মুহাম্মদ মনসুর উদ্দীন লিখেছেন, ‘ইরানের কবি’। অবশ্য এ গ্রন্থে ‘শামসুদ্দিন হাফিজ’ নামে যে নিবন্ধটি আছে তা তেমন তথ্যবহুল নয়।
বাংলা ভাষায় দিওয়ানে হাফিজের বহু অনুবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর অনুবাদ কর্মটি বাংলা ভাষার এক অসামান্য প্রকাশনা। এ বইয়ের দীর্ঘ উপক্রমিনাতে তিনি হাফিজকে বাংলা ভাষাভাষির কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে কাজী আকরাম হোসেনের অনুবাদটিও চমৎকার। সম্প্রতি পশ্চিম বাংলার দু’জন আধুনিক কবি যারা প্রগতিবাদী হিসেবেও পরিচিত, শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও সুবাশ মুখোপাধ্যায় কবি হাফিজের সাহিত্যকর্ম অনুবাদ করেছেন।
কবির ৬০০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত এক সম্মেলনে জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান বলেন, ‘কবি হাফিজ আমাদের চিন্তায় ও মননে বহুকাল বিদ্যমান ছিলেন। বাংলা কবিতায় আবার তিনি নতুন করে জাগ্রত হচ্ছেন। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকের বাঙ্গালী মনীষায় হাফিজ ছিলেন অনেক বড় প্রতিভা, অনেক বড় কবি এবং প্রেমিক। কবির কুরআনের ওপর দক্ষতা দেখে সমকালীন একজন পীর মুর্শিদ তাঁকে হাফিজ উপাধিতে ভূষিত করেন। এ ব্যাপার কবি নিজেই লিখেছেন-
‘হাফিজ! তোমার চেয়ে সুন্দর গান আর দেখিনাই আর কারো
তোমার মুখের লুকানো কোরান সে তো সুন্দর আরো।’
কবি ছিলেন একজন সুন্দর প্রেমিক। তিনি তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে লিখেছেন-
‘প্রেয়সী মোর ছিল যে হায় পরীর মত অপসরী
পা থেকে তার কেশাগ্রতক নিটোল যেন ঠিক পরী।’
কবি তাঁর আদরের সন্তানের মৃত্যুতে শোকাতুর হয়ে লিখেছেন-
‘মোর নয়ন মণি দীলের মেওয়া তাহার তরে কাঁদে প্রাণ
হাসতে হাসতে চলে গেল, শোকে আমি ম্যূহমান।’
যদিও এখানে আপন সন্তানের জন্য কবি হাফিজ এ আর্তি ফুটিয়ে তুলেছেন কিন্তু এ শোক বাণী জগতের সব পুত্রহারা পিতৃ হৃদয়কে নাড়া না দিয়ে পারে না।
ও যাহ! একটি কথা বলতে ভুলেই গেছি। দিগ্বিজয়ী মঙ্গল বীর তৈমুর লঙ কবির একটি কবিতা বুঝতে না পেরে কবিকে তলব করেন। কবিতাটি ছিল-
সেই শিরাজী প্রেমিক যদি জয় করে মোরে এই হিয়ারে
তার গালের তিলে বিলিয়ে দেব সমরকন্দ আর বুখারারে। (দিওয়ানে হাফিজ-গজল নং ৩)।
তৈমুর লঙ কবির কাজে জানতে চাইলেন, এ কবিতা কার? কবি যখন স্বীকার করলেন এ তারই কবিতা, তখন তৈমুর লং বললেন, ‘আমি হাজার হাজার সৈন্যের রক্তের বিনিময়ে হাজারো ত্যাগের বিনিময়ে যা দখল করেছি, হাজারো লক্ষ ধন সম্পদ রত্নরাজির বিনিময়ে যা গড়ে তুলেছি, আর তুমি নারীর গালের কালো তিলের বিনিময়ে তা বিলিয়ে দিতে চাচ্ছ?
কবি বুঝলেন, যুদ্ধবাজ তৈমুরের মাথায় কাব্যের মহিমা ঢোকার কথা নয়। কবি তাই বিনীতভাবে বললেন, ‘মহামান্য বাদশাহ। এভাবে দান খয়রাত করতে গিয়েই তো আমার আজ এ দীন হীন অবস্থা। আপনি আমার মত করেন নি বলেই তো আপনি আজ জগদ্বিখ্যাত সম্রাট।’
কবি হাফিজের উপস্থিত চমৎকার উত্তরে তৈমুর লং খুশি হলেন। তিনি কবিকে সোনার আশরাফী উপহার দিয়ে বিদায় করলেন।
বিশ্বখ্যাত এই মহান কবি খাজা সামশুদ্দীন মুহাম্মদ হাফিজ শিরাজী ৭৯১ হিজরী সালে শিরাজ নগরীতে মৃত্যুবরণ করেন। কবির মাজার শিরাজ নগরেই অবস্থিত। এখন এলাকাটি ‘হাফেজিয়া’ নামে প্রসিদ্ধ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন