বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

স্বামীর ব্যাপারে একজন আদর্শ স্ত্রী'র আচরণ কেমন হওয়া উচিত

লিখেছেন ফাহমিদা মুন্নী


আজকে নিজের অর্জিত সামান্য কিছু অর্থ দিয়ে আমার স্বামীর জন্য উপহার স্বরূপ প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনে দিয়েছি। কিনে দেবার পর, মনটা স্বাভাবিক ভাবেই খুব ভাল লাগছিল। কেনাকাটা শেষ করে বৃষ্টি ভেজা বিকেলে দু’জন মিলে রিক্সা করে যখন বাসায় আসছিলাম, মনে মনে ভাবছিলাম, আমাদের সুদীর্ঘ বিবাহিত জীবনে আমার স্বামী আমার সমস্ত চাহিদা আর প্রয়োজন অবলীলায়, কোন প্রশ্ন ছাড়া পালন করেছে। সত্যি বলতে, আমার কোন প্রয়োজন বা ইচ্ছাই বলতে গেলে অপূর্ণ রাখেনি। কিন্তু, তার জন্য আমি সত্যিকার অর্থে, কতটুকু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি? কতটুকু সন্তুষ্টি আর শুকরিয়া আদায় করেছি? 

আমরা মেয়েরা বেশীর ভাগ সময়ই আমাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে কারণে অকারণে অনেক অভিযোগ উত্থাপন করি। আমি সবসময় দেখেছি, দু’জন বিবাহিত নারী একত্রিত হলে, তাদের সমালোচনার প্রথম বস্তু হয়, তাদের স্বামী। এটাই আমাদের সমাজের করুণতম বাস্তবতা। আর রেগে গেলে তো কথাই নেই, কত কুফরী কথা যে তখন স্ত্রীদের মুখ থেকে বের হয় তার কোন হিসাব নিকেশ নেই। আমাদের স্বামীরা তাদের কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে আমাদের জন্য বছরের পর বছর ধরে যা করেন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তারা আমাদের সুখের জন্য বছরের পর বছর যে গাধার খাটুনি খাটেন, তা এক মূহুর্তের মধ্যে অস্বীকার করে আমরা ধূলোয় মিশিয়ে দেই। দু:খজনক হলেও সত্য, এর মধ্যে হিজাব, নিকাব কিংবা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং বিভিন্ন ইসলামী সেমিনার কিংবা আলোচনা অনুষ্ঠানে নিয়মিত গমনকারী নারীরাও অন্তভূক্ত। 
“তুমি তো জীবনভর আমার জন্য কিছুই করনি।” “তুমি তো আমার কোন শখই পূরণ করোনি।” “তোমার সাথে বিয়ে হয়ে আমার জীবনটাই বরবাদ হয়ে গেল।” ”আমার চাওয়া-পাওয়ার তো কোন মূল্যই নেই তোমার কাছে।” ”তোমার কাছ থেকে কোনদিন ভাল ব্যবহার পেলাম না।”---- ইত্যাদি ইত্যাদি শত সহস্র অভিযোগ। বস্তত: এগুলো আমাদের সমাজের বাঙ্গালী মুসলিম নারীদের মুখের খুব কমন ডায়লগ। কিন্তু, আমরা অনেকেই জানি না, স্বামীদের প্রতি আমাদের এই চরম অকৃতজ্ঞতার প্রকাশ আমাদের জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হয়ে যেতে পারে। 

রাসুল (সা) বলেছেন: ”আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়েছে এবং এর থেকে ভয়ঙ্কর কোন জিনিস আমি আর দেখিনি। আমি জাহান্নামে মানুষের মধ্যে অধিকাংশ নারীদের দেখতে পেয়েছি।” তারা (সাহাবীরা) জিজ্ঞেস করলেন: “কেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ?” তিনি উত্তর দিলেন: “কারণ, তাদের অকৃতজ্ঞতা (কুফরী)”। তারা জিজ্ঞেস করলেন: “তাদের আল্লাহ’র প্রতি অকৃতজ্ঞতা?” তিনি (সা) বললেন: “তাদের স্বামীদের সাথে তাদের অকৃতজ্ঞতা এবং তাদের ভাল ব্যবহারের বিনিময়ে অকৃতজ্ঞতা। কারণ, তোমরা যদি সারাজীবন তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করো, তোমাদের ভেতর একটি অপছন্দনীয় জিনিস আবিস্কার করার পর সে বলে: “আমি তোমার কাছ থেকে কখনও ভাল কিছু পাইনি।” (বুখারী, হাদিস নং: ১০৫২) 

তাই, বোনেরা চলুন সময় থাকতে নিজেদের শুধরে নেই। আর, নিজেদের জাহান্নামের ভয়ঙ্করতম আযাব থেকে রক্ষা করি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন