বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫

দেশবিরোধী বুদ্ধিজীবী শ্রেণী নিয়ে আলোচনা এক পাশে রাখতে চাই।

দাসত্বমনা's photo.
দেশবিরোধী বুদ্ধিজীবী শ্রেণী নিয়ে আলোচনা এক পাশে রাখতে চাই। এখন আসলে ডানপন্থী/ইসলামপন্থী/জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীদের প্রশ্ন করার সময় এসেছে আপনারা এতো বিশদ রাজনৈতিক বিশ্লেষণ *কি কারনে* করে থাকেন? ফেসবুকে ইস্লামিস্ট বা ডানপন্থী ধারার সেলিব্রিটিদের অনেককেই ব্যক্তিগতভাবে চিনি অথবা এটা জানি বাস্তব জীবনে সমাজ পরিবর্তনে তাদের কতটুকু ভূমিকা আছে (বা আদৌ আছে কিনা)। যখনই কোন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর আবির্ভাব হয়, সাথে সাথে ওনাদের চমৎকার বিশ্লেষণ পেয়ে যাই। এটা অস্বীকার করবো না বিশ্লেষণগুলো উপকারী না, সমস্যা হল সেগুলোতে কোন সমাধান থাকে না। এই প্রো-ইসলামিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভাইদের সিন্সিয়ারলি প্রশ্ন করা উচিৎ আপনাদের এই বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য কি? কেন এতো বই পড়েন? কেন সবসময় চলমান খবর নিয়ে এতো আপডেটেড থাকেন? ইতিহাস সচেতন কেন হতে চান? কেন আপনাদের জ্ঞান দ্বারা আমাদের উপকৃত করতে চান? প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়াটা জরুরি। যদি শুধু বিশ্লেষণের খাতিরে বিশ্লেষণ আর জ্ঞান আহরনের খাতিরেই জ্ঞানী হওয়াটা আপনাদের উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সেটা একদিকে যেমন ইসলামিক ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ না আর অন্যদিকে আপনাদের এই বিশ্লেষণধর্মী সমাধানহীন জ্ঞান সমাজ পরিবর্তনে কোন ভূমিকাও রাখবে না। আর যদি সমাজ পরিবর্তন আপনাদের উদ্দেশ্য না হয়ে থাকে, তাহলে দেশবিরোধী চক্রের সমালোচনা করার জন্য যে নৈতিক ভিত্তি থাকা দরকার সেটাও আপনারা খুইয়েছেন। আর যদি পরিবর্তন উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাহলে আপনাদের লেখায় তার প্রমাণ কই? আপনারা আপনাদের বিশ্লেষণে যদি পরিবর্তনের কোন সুস্পষ্ট রূপরেখা ও পদ্ধতি না দেখাতে পারেন এবং বিকল্প শাসন ব্যবস্থা (alternative model) নিয়েও যদি আলোচনায় রাজি না হন, তাহলে কিন্তু আপনারা প্রকারান্তরে বর্তমান এস্ট্যাব্লিসমেন্টকেই সহায়তা করছেন passive ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে, আপনারা সহায়তা করছেন পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের তৈরি status-quo কে জিইয়ে রাখতে। আপনাদের এতো এতো স্ট্যাটাস আর জ্ঞান বিতরন শুধু ভার্চুয়াল জগতে হাজারো লাইক আর ফলোয়ার ছাড়া কিছুই দিবে না, হয়তো হাজারো লাইক পেয়ে আপনারা আত্মতৃপ্তিতেই ভুগবেন যা শুধু আপনাদের অহংবোধই বৃদ্ধি করে যাবে।
গ্রিক ফিলসফির প্রভাব এখনো আমাদের মাঝে রয়ে গেছে যেটা অতীতে মুসলমানদের পতনকে তরান্বিত করেছিল। এরকম একটি গ্রিক প্রভাব হলঃ একশন (কাজ) থেকে জ্ঞানকে আলাদা করে ফেলা যার পরিণতি হচ্ছে **জ্ঞানের বোঝা বহনকারী একশন-বিমুখী আঁতেল ও বিশ্লেষক প্রজন্ম**। শুধু জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেই যাবেন কিন্তু কিভাবে জ্ঞান কে ম্যাটেরিয়ালাইয করতে হবে সেটার কোন আলোচনা যদি নাই করেন, তাহলে গ্রিক সেন্সের এমন পন্ডিত এ জাতির দরকার নেই। রাসুলুল্লাহকে (সা) এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলঃ "হে আল্লাহ্‌র রাসুল! কোন বিষয়টা আমাকে অজ্ঞতার বোঝা থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করবে?", তিনি (সা) বলেছিলেনঃ "জ্ঞান"। ব্যক্তিটি তারপর জিজ্ঞেস করেছিলঃ "তাহলে কোন বিষয়টা এই জ্ঞানের বোঝাকেই আবার বাতিল করে দিতে পারে?" রাসুল (সা) বলেছিলেনঃ "আমল" (কাজ) অর্থাৎ জ্ঞান আহরণ করে সে অনুযায়ী একশন না করলে আপনার সেই জ্ঞান আল্লাহ্‌র চোখে বাতিল। [রেফারেন্সঃ ইকতিদা উল 'ইলম আল-আমল, আল খতিব আল বাগদাদি]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন