বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫

ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে পড়া একটি বাসে.........)

মুক্তমনাঃ শালার মানুষ আর মানুষ! মানুষে গিজগিজ করছে। এই হুজুরগুলা যত বদমাইশ! বলে যে মুখ দিবেন যিনি, আহার দিবেন তিনি। এখন বুঝো ঠ্যালা! বেকুব ধর্মান্ধগুলা একটার পর একটা পয়দা করে, আর দেশের যত সমস্যা!
মোল্লাঃ ভাই, আপনি বলতে চাচ্ছেন, জনসংখ্যা বেড়ে গেছে, এর জন্য ইসলাম দায়ী?
মুক্তমনাঃ তা নয়ত কি?
মোল্লাঃ কিন্তু......... আপনার কথা সত্য হলে ত আরবের লোকসংখ্যা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি হওয়ার কথা। কারণ ইসলাম ত প্রথম ঐদেশেই শুরু হয়েছে। অথচ দেখেন, বাংলাদেশের চেয়ে ১০ গুনের বেশি বড় হওয়া সত্ত্বেও, সউদি আরবের লোকসংখ্যা ৩ কোটিও নয়। অন্য আরবদেশগুলোর অবস্থাও তাই!
(ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন মুক্তমনা............ PUBLIC এর কান খাড়া!)
মোল্লাঃ আমি বলি কি, এই উপমহাদেশে ত হিন্দু ধর্মের প্রভাব ছিল দীর্ঘদিনের। হিন্দুদের মূর্তিগুলোই কিংবা মন্দিরের ভাস্কর্যগুলোই দেখেন! মা কালীর মূর্তি অর্ধউলঙ্গ। আর কৃষ্ণের মামীকে পটানোর কথাও ভুলবার নয়। ধর্মের কোন প্রভাব থাকলে সেটা হিন্দু ধর্মের হতে পারে, ইসলামের নয়। কামাসুত্রের প্রভাবেই এ অঞ্চলের মানুষরা অবাধ যৌনাচার করে বেশি মানুষ পয়দা করেছে, কি বলেন?
মুক্তমনাঃ আপনাদের মোল্লাদের এই এক সমস্যা। ইসলামের কোন সমালোচনাই শুনতে পারেননা। অন্য ধর্মকে গালাগালি করেন।
মোল্লাঃ গালাগালি করলাম কই, আপনি ধর্মের প্রভাব খুঁজলেন, আমি শুধু কোন ধর্মটার প্রভাব থাকতে পারে সেটা খোঁজার চেষ্টা করলাম।
মুক্তমনাঃ আচ্ছা বলেন, ইসলামে বলা আছেনা, সবাইর রিযিক আল্লাহর হাতে?
মোল্লাঃ হ্যাঁ।
মুক্তমনাঃ তাহলে বাংলাদেশের মানুষ, আফ্রিকার মানুষ না খেয়ে মরে কেন?
(PUBLIC এবার নড়েচড়ে বসল)
মোল্লাঃ আচ্ছা আপনি কখনও শুনেছেন, একটা কাক না খেয়ে মারা গেছে, বা দেখেছেন কোন প্রাণী না খেয়ে মারা গেছে, বাঘ, পিঁপড়া? দুর্ভিক্ষের কথা আলাদা।
মুক্তমনাঃ কখনও শুনিনি অবশ্য।
মোল্লাঃ অনেক প্রাণী মানুষের চেয়ে সংখ্যায় বেশি, তারপরেও এদেরকে ক্ষুধায় কষ্ট পেতে হয়না, তাইলে মানুষ না খেয়ে মরে কেন, বলুন ত?
মুক্তমনাঃ সেটাই তো আপনাকে জিগ্যাস করছি। (pinch মেরে) কোরানে না সব উত্তর দেয়া আছে??
(তার কথায় কান না দিয়ে)
মোল্লাঃ মানুষ যে অভুক্ত থাকছে এর কারণ এই না যে, আল্লাহ রিযিক দেয়নাই, কিংবা কম দিছে, বরং আল্লাহ প্রয়জনের চেয়ে অতিরিক্ত রিযিক দিছেন। মানুষের কাছে খাবার পৌছায়না SYSTEM এর অব্যবস্থাপনার কারণে। ফখরুদ্দিনের সময় বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল, কিন্তু সেই বছরই বাংলাদেশ পাকিস্তানে চাল রপ্তানি করেছিল, অথচ দেশের মানুষ চাল পায়না। ভারত চাল নিয়া চালবাজি করল। সে বছর সোমালিয়ার মানুষ মাটির পিঠা খেয়ে ক্ষুধা মিটিয়েছিল। ২০০৭ সালে বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল, ২.১৩ বিলিয়ন টন, আর চাহিদা ছিল ১.০১ বিলিয়ন টন। তাও মানুষ না খেয়ে ছিল কেন??? কারণ বড় বড় কোম্পানি গাড়ির বিকল্প জ্বালানি তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্য শস্য সরিয়ে ফেলেছিল, আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, ঐ সময় তেলের দাম বেড়ে গিয়েছিল? আর ২০০৮ সালে ধারনা করা হয়েছিল যে খাদ্য উৎপাদন হবে ২.৩ বিলিয়ন টন যেখানে চাহিদা ছিল মাত্র ১.৫ বিলিয়ন টন। জাতিসংঘের FAO এর তথ্যমতে পৃথিবীতে যে পরিমাণ মাটি, পানি, বায়ু আছে, তা সঠিকভাবে কাজে লাগালে এখনকার জনসংখ্যার ১০ গুণ মানুষের খাদ্য উৎপাদন সম্ভব। এই হল কাহিনী। এবার বলেন এটা কি আল্লাহর দোষ, না মানুষের? আল্লাহ তো ঠিকই মানব্জাতির জন্য পর্যাপ্ত খাবার দিয়েছেন, সে খাবার সঠিকভাবে বণ্টনের জন্য ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও দিয়েছেন, কিন্তু মানুষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার কারণে খাবার না পেয়ে স্রষ্টাকে দোষ দেয়। লোভী পুঁজিবাদী মানুষগুলার কারণে এবং ক্ষমতাশীলরা নিজের স্বার্থের জন্য এই হতভাগা মানুষগুলার মৃত্যুর জন্য দায়ী। ইসলামী ব্যবস্থা থাকলে কোন মানুষকে না খেয়ে মরতে হতনা।
(ব্যঙ্গ করে)
মুক্তমনাঃ তাই নাকি? ইসলামী ব্যবস্থায় মনে হয় সবাই শান শওকতে থাকবে??
মোল্লাঃ তা থাকবে না হয়ত, কিন্তু at least না খেয়ে মরবে না। যেমন খলীফা উমর ইবন আব্দুল আযিয যাকে ২য় ওমর বলা হয়, তার সময়ে যাকাত নেয়ার মত লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মুক্তমনাঃ ঐ সময় মানুষ কম ছিল, তাই খাওয়ার সমস্যা হয়নি, এই যুগে মানুষ বেশি, জমি কম।
মোল্লাঃ মানুষ কোন সমস্যা না! এই যুগে আল্লাহ technology দিয়েছেন, যার ফলে মানুষ ১ মনের জায়গায় ১০ মন উৎপাদন করতে পারে। প্রত্যেক যুগেই তো আগের যুগের চেয়ে লোক বেশি ছিল। শায়েস্তা খাঁর গল্প আমরা শুনি। তো তার যুগের লোক ও তো আগের যুগের চেয়ে বেশি ছিল, তাহলে? আসল ব্যপার হচ্ছে ব্যবস্থা। আর তাছাড়া আরবে তো কৃষিজমির চেয়ে মরুভুমি বেশি, তাহলে? ওরা তো ঠিকই রিযিক পাইত, আজকে আফ্রিকার মানুষ এই উপমহাদেশের চেয়ে কম, জমিও আমাদের চেয়ে বেশি, সম্পদও বেশি, কিন্তু আমাদের অবস্থা তো তাদের চেয়ে ভাল।সুতরাং জনসংখ্যা কোন factor না। আসল ব্যপার হল, ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দেয়। পুঁজিবাদী আর সমাজতন্ত্র মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করে।
মুক্তমনা (রেগেমেগে)ঃ আরবের কথা বাদ দেন! বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা Islam দিয়ে সমাধান করবেন ক্যামনে?
মোল্লাঃ আল্লাহ কি ‘বাংলাদেশ’ নামক কোন রাষ্ট্র কাউকে রেজিস্ট্রি করে দিছে?
(ভ্যবাচ্যাকা খেয়ে)মুক্তমনাঃ মানে?
মোল্লাঃ মানে, আল্লাহ কি বলছেন যে, ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিমির এই জায়গা বাংলাদেশ নামে উমুককে দেয়া হল, যার জনগণ হতে হবে ১৬ কোটি, এর বেশি হওয়া যাবেনা?
মুক্তমনাঃ কি বলতে চান?
মোল্লাঃ বলতে চাই, আল্লাহ এ পৃথিবী মানবজাতির জন্য বানিয়েছেন। তিনি কাউকে ভাগজোখ করে কোন দেশ দেন নাই। পৃথিবীতে অনেক খালি জায়গা পড়ে আছে। আজ যদি মুসলিম দেশগুলাই সব এক থাকত আর ইসলামী ব্যবস্থা থাকত, যেরকম পুর্বে সাহাবী এবং খলিফাদের শাসনের সময় ছিল, চিন্তা করেন একবার, মরক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া, তাহলে তো মনে হয়, আমি আপনি কয়েক বিঘা জমির মালিক থাকতাম। জনসংখ্যা নিয়ে tension করতে হতনা।
মুক্তমনাঃ আপনি কি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে? রাষ্ট্রদ্রোহের মত কথা বলছেন!
মোল্লাঃ আপনি সমাধান চাইলেন দিলাম, এখন এ কথা বলছেন ক্যান? আমাদের সমাধান দরকার। অন্ধ আবেগ নয়। আবেগ দিয়ে গত ৪০ বছর অনেক ধোঁকাবাজি হয়েছে। এবার বাস্তবতা অনুধাবন করুন।
মুক্তমনাঃ আপনি বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস না করলে এই দেশে আছেন ক্যান? আরবে চইল্লা যান। (বিড়বিড় করে) মেজাজটাই খারাপ করে ......
মোল্লাঃ জি চলে যাব, যদি আপনি এমন জায়গায় যান, যেটা আল্লাহর তৈরি করা নয়।
মুক্তমনাঃ মানে?
মোল্লাঃ আপনি তো ইসলাম মানেননা। অথচ এই জমিন আল্লাহর। উনার জমিনে থাইকা যদি উনার বিদ্রোহ করতে পারেন, আমিও বাংলাদেশে থেকে রাষ্ট্রদ্রোহী কথা বলতেই পারি। এখন আপনি যদি এমন জায়গায় যেতে পারেন যেটা আল্লাহর তৈরি করা নয়, তাহলে কথা দিচ্ছি আমিও এই দেশ ছেড়ে চলে যাব............
মোল্লাঃ আল্লাহ সবকিছু পারেন না। তিনি ঘুমাতে পারেন না, খেতে পারেন না, মিথ্যা কথা বলতে পারেন না, অবিচার করতে পারেন না। কারণ এ কাজগুলো যদি তিনি করেন, তবে তিনি আর স্রষ্টা থাকেন না। এ কাজগুলো যদি তিনি পারেন, তবে তিনিও আমাদের মত ঘুম, খাওয়া দাওয়া স্বার্থপরতা এইসবের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। আর স্রষ্টার পক্ষে এই ধরনের কাজ সাজেনা। সব কিছু যদি উনি পারেন, তাহলে উনার পক্ষে স্রষ্টা হিসেবে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে, আমি আপনি না হয় স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যা বলি, ক্লান্ত হলে ঘুমাই, কিন্তু স্রষ্টার মিথ্যা বলার দরকার কি? ঘুমানোর দরকার কি? তিনি এসব দুর্বলতা থেকে মুক্ত বলেই তিনি স্রষ্টা। এই ব্যপারে কুরআনে আয়াতুল কুরসিতে বলা আছে। এইসব কাজ স্রষ্টার বৈশিষ্ট্যের সাথে সাঙ্ঘর্শিক। তিনি এই ধরনের Ungodly কাজ করতে পারেন না। আর আল্লাহ নিজেও কখনও দাবি করেন নি যে, তিনি “সব পারেন” বরং তিনি বলেছেন, “সবকিছুর উপর তিনি ক্ষমতাবান।’’ মানে সবকিছুকে control করার, destroy করার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে।
(একটু ইতঃস্তত ভাব যেন দেখা গেলো মাঝবয়সী বাবুর মাঝে, তবে হার মানতে নারাজ তিনি)
মাঝবয়সী বাবুঃ কিন্তু আমার প্রশ্নের সাথে তো আপনার উত্তরের কোন মিলই নাই। আমি কি জিজ্ঞাসা করলাম, আর আপনি কি উত্তর দিলেন?
মোল্লাঃ আমি ভেবেছিলাম, আপনি জ্ঞানী, বুঝে নিবেন। (দুইপাশে হাত ছড়িয়ে) যাই হোক, ঐ যে বলছিলাম, প্রশ্নটার premise ভুল। এই প্রশ্নে ধরা হয়েছে যে, “স্রষ্টা সবকিছু পারে”। এই ভিত্তিতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, “স্রষ্টা কি এমন কোন পাথর বানাতে পারে যা তিনি ধ্বংস করতে পারেন না?’’ premise ভুল এই কারনে যে, আমি একটু আগেই বললাম, স্রষ্টা আসলে সবকিছু পারেনা, উনি Ungodly জিনিস করতে পারেন না। দ্বিতীয়ত, এই প্রশ্নটার structure এও ভুল আছে। এই প্রশ্নটা logical প্রশ্ন। একটা Universal truth কে base ধরে এই method এ logic দাঁড় করান হয়। এই method কে বলা হয় logical deduction method। কিন্তু এই প্রশ্নটায় universal truth কে base ধরে করা হয়নি।
(একটু চিন্তা করে)
যেমন ধরুন, ‘মানুষ মরনশীল’ এটা একটা সার্বজনীন সত্য। এটাকে premise ধরে প্রশ্ন করা হল, ‘রহিম একজন মানুষ, রহিম কি মরণশীল?’............ কিন্তু আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তাতে বলা হয়েছে, এমন কোন বস্তু তৈরি করা যাবে কিনা, যা স্রষ্টা ধ্বংস করতে পারেনা? আমাদের আশপাশে এমন কোন উদাহরন নাই যেখানে কেউ কোন কিছু বানাল অথচ তা নষ্ট করতে পারেনা। আপনি যদি একটা গ্লাস বানান, আপনি জানেন, কত জোরে আঘাত করলে তা ভেঙ্গে যাবে। আপনি একটা কম্পিউটার বানালে জানেন যে, পানিতে চুবাইলে এইটা শেষ। এটা কখনই সম্ভব না যে, কেউ কোন একটা জিনিসকে তৈরি করেছে অথচ তা ধ্বংস করতে পারছেনা। তৈরি করার সাথে সাথেই ঐ জিনিষটার দুর্বলতা এবং নাড়ী নক্ষত্র স্রষ্টার জানা হয়ে যায়, যেভাবে আপনি জানেন আপনার তৈরি করা মেশিনটা কয়দিন সার্ভ করবে, কি করলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। এটা স্রষ্টার দুর্বলতা নয়, বরং সৃষ্টির, স্রষ্টাকে অতিক্রম করতে না পারার অক্ষমতা!
(ফাটা বেলুনের মত চুপসে গেলেন মাঝবয়সী বাবু। এ প্রশ্নের এরকম উত্তর তিনি জীবনেও শুনেন নি। মোল্লা যেভাবে প্রশ্নটার সার্জারি করে আবর্জনার স্তূপে ছুঁড়ে ফেলল, তাতে তিনি স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। অথচ এ প্রশ্ন দিয়েই তিনি কত তরুণকে নাস্তিক বানিয়েছেন, কত হুজুরকে ঘোল খাইয়েছেন, অপমান করেছেন!)
ফ্যাকাসে হাসি হাসলেন বাবু।
মাঝবয়সী বাবুঃ বুঝলাম, কিন্তু স্রষ্টা থাকলেই যে, তাকে মানতে হবে, এমন কোন কথা নেই।
মোল্লাঃ তারমানে, আপনি বলতে চাচ্ছেন, এ মহাবিশ্ব তৈরির পেছনে কোন objective নেই?
মাঝবয়সী বাবুঃ না কোন objective নাই।
মোল্লাঃ কেন আপনার এরকম মনে হল?
মাঝবয়সী বাবুঃ Objective থাকলে কি আর মানবজাতির মধ্যে এত হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি হত? যে যার মত খুশি, চলে। Objective থাকলে কি আর এরকম হত?
মোল্লাঃ (কৌতুকপূর্ণ ভঙ্গীতে) তাহলে তো নাস্তিকরা মানবজাতির জন্য বড় উপকার করে যেতে পারে!
মাঝবয়সী বাবুঃ কিভাবে? (সন্দেহপূর্ণ দৃষ্টি)
মোল্লাঃ যেহেতু নাস্তিকদের জীবনের কোন অবজেক্টিভ নাই, সেহেতু আপনারা এক কাজ করলেই পারেন। গণহারে সবাই গলায় দড়ি দিতে পারেন। এতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার সমস্যার সমাধান হবে।, আপনারা মরে গিয়ে তেল, গ্যাস হবেন, আমাদের জ্বালানী সমস্যার সমাধান হবে। পৃথিবীতে আস্তিক নাস্তিকের মারামারিও থাকবেনা।
...... তো আপনারা মানবজাতির বিশাআআআআআআল উপকার সাধন করতে পারেন।
( এ কথা শুনে সবাই দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগল। চা দোকানদারের পান খাওয়া লাল দাঁত ও বেরিয়ে পড়ল)
মোল্লাঃ কি মামু? তোমার দোকানে না হয় দুই কাপ চা কম বিক্রি হবে, মাইন্ড কইরনা।
(দাঁত ৩২ টাই বের হল এবার)
(ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলেন মাঝবয়সী বাবু)
মাঝবয়সী বাবুঃ ওরে বাপরে! সাড়ে এগারটা বেজে গেল। এবার উঠতে হয়, ভাই...
(সবাই মোচড় দেয়া শুরু করল)
মোল্লাঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমাকেও উঠতে হবে......... তা আপনি স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস করছেন?
মাঝবয়সী বাবুঃ না, আমি সংশয়বাদী, কোনদিন clear cut প্রমাণ পেলে করব।
মোল্লাঃ দেইখেন আবার, নিজের সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে সংশয়ে থাইকেন না আবার! (বলেই বুঝল খোঁচাটা মারা ঠিক হয়নি)
মাঝবয়সী বাবুঃ তা আজ আসি। (বলেই ঘুরলেন, কি যেন মনে পড়ে গেলো মোল্লার, ডাক দিলেন.........পেছন ফিরে তাকাল বাবু)
মোল্লাঃ ভাই, আপনার জন্য একটা সুসংবাদ আছে।
মাঝবয়সী বাবুঃ (সন্দেহপূর্ন দৃষ্টি) কি?
(তার চুলের দিকেই কিনা ঠিক বোঝা গেলনা, শাহাদাত আঙ্গুল তাক করল মোল্লা)
মোল্লাঃ আপনাকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ সুসংবাদ দিয়েছেন, “ সাবধান! সে যদি নিবৃত্ত না হয়, তাহলে আমি তাকে অবশ্যই হেচড়িয়ে নিয়ে যাব, মাথার সামনের চুল ধরে। মিথ্যাবাদী পাপিষ্ঠের চুল!...... অপরাধীর পরিচয় পাওয়া যাবে তাদের চেহারা দেখে, তাদের পাকড়াও করা হবে পা ও মাথার ঝুঁটি ধরে”
(কথাটা বলেই ঘুরল মোল্লা...... রাগে কাঁপতে লাগলেন মাঝবয়সী বাবু, মোল্লার সাহস দেখে, ব্যাটা আঙ্গুল তাক করেছে তার চোখের দিকে, চড়াত করে মাথায় রক্ত উঠে গেলো, গায়ে আগুন ধরে গেল, একইসাথে ভয় ও পেলেন, তার এতদিনের সাজানো গোছানো যুক্তির দুনিয়াটা ভেঙ্গে গেল বলে)
পকেট থেকে টাকা বের করল মোল্লা। তা দেখে দোকানদার বলে উঠল,
দোকানদারঃ মামু, আন্নেতুন অ্যাঁই টিয়া রাইখলে আল্লাহ্‌ও বেরাজি অই যাইব। অ্যাঁরে মাফ করেন, অ্যাঁই রাইকতাম হাইত্তান্নো।
(হেঁসে বাসার পথে রওনা হল মোল্লা...... আবেগে চোখে পানি এসে গেল তার। ইসলামের জন্য এ উম্মাহ sacrifice করবে নাতো কে করবে? তার মনে পড়ে গেল, ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময়, তারা কয়েকজন মিলে শেখেরটেক ১০ নং মসজিদ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছিল। যতগুলো ভিক্ষুক সেখানে ছিল, প্রত্যেকে নিজের ভিক্ষার টাকা থেকে দান করে গিয়েছিল...... এ উম্মাহ জাগবে নাতো কে জাগবে? এ উম্মাহ আল্লাহর ডাকে সাড়া দিবে নাতো কে দিবে?)
তিনদিন পর......
সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল মোল্লা। পকেট থেকে মোবাইল বের করতেই ভ্রু কুঁচকে উঠল। পরক্ষনেই হাসি ফুটল মুখে...
মোল্লাঃ আসসালামু আলাইকুম!
অপরপ্রান্তঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম,......... হ্যালো, ভাই, ...... চিনতে পারছেন আমাকে?
মোল্লাঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ, পারছি...... বলেন।
অপর প্রান্তঃ আপনি কি ফ্রী আছেন ভাই?
মোল্লাঃ আ.........হ, মোটামুটি, বলেন।
অপরপ্রান্তঃ না, তাহলে একটু কথা বলতাম আর কি!
মোল্লাঃ আপনি কই আছেন?
অপর প্রান্তঃ তাজমহল রোড।
মোল্লাঃ এক কাজ করেন, মেগা সিটির পিছনের মাঠে চলে আসেন। আমি আসতেছি, ১০ মিনিট।
”রব্বিশ রহলী সোয়াদরী ওয়া ইয়াসসিরলী আমরি, ওয়াহলুল উকদাতাম মিল্লিসানী ওয়াফক্বহু ক্বলী”
(শেষ)
আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুআল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবারওয়া লিল্লাহিল হামদ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন