তাবলীগ জামা‘আতের বিরুদ্ধে কিছু লোক যে সকল ফালতু অভিযোগ করে, তার মধ্যে একটি হলো, মসজিদে ঘুমানো। আর মসজিদে ঘুমানোর অভিযোগ করে তারা যেসকল প্রশ্ন করে, তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো, মসজিদে ঘুমালে তো স্বপ্নদোষ তথা ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হতে পারে, তদুপরিও তারা মসজিদে ঘুমায় কেন?
.
বুঝি না, এই সকল ভাইয়েরা নিজেদের আহলে হাদীস বলে দাবী করেন, অথচ হাদীস কতটুকু জানেন, তা নিয়ে আমার সংশয় জাগে! এ প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর তো হাদীসেই দেয়া আছে।
.
আশ্চর্যের বিষয়, সহীহ হাদীস পড়লে জানা যায়, মসজিদে ঘুমানোর বিধান সম্পর্কে তাবেয়ীদের প্রশ্ন করা হলে, তাঁরা অবাক হয়ে যেতেন। বলতেন, এ বিষয়ে প্রশ্ন কেন? যেমন এক বিখ্যাত তাবেয়ী, যিনি মদীনার প্রসিদ্ধ ৭ ফকীহের অন্যতম ছিলেন আবূ আইয়্যুব সুলাইমান ইবনে ইয়াসার (রহ.) বলেন, ‘‘কাইফা তাসআলূন ‘আন হাযা?’’ (তোমরা কিভাবে এ প্রশ্ন করতে পারো?)। এছাড়াও তাবেয়ী সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রহ.)ও এরকম প্রশ্ন অবাক হয়ে যান। যাহোক! ‘‘মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা’’র ‘কিতাবুস সালাত’ এর ‘মসজিদে ঘুমানোর অনুচ্ছেদ’ দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
.
এবার আসি, প্রশ্নের উত্তরে ...
.
হাদীসঃ
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻭﻛﻴﻊ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻧﺠﻴﺢ ﻗﺎﻝ ﻧﻤﺖ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻓﺎﺣﺘﻠﻤﺖ ﻓﻴﻪ ﻓﺴﺄﻟﺖ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟﺒﻴﺮ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺫﻫﺐ ﻭﺍﻏﺘﺴﻞ ﻳﻌﻨﻲ ﻭﻟﻢ ﻳﻨﻬﻪ
.
অর্থাৎ ওয়াকী’ বর্ণনা করেন, সুফইয়ান থেকে, তিনি ইবনে আবী নাজীহ থেকে, তিনি বলেন- ‘‘আমি মসজিদুল হারামে (মক্কা) ঘুমিয়েছিলাম। আমার স্বপ্নদোষ হলো। (বিখ্যাত তাবেয়ী) সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘এখন আমি কি করবো?’ তিনি বললেন, ‘গিয়ে গোসল করে আসো।’’ অর্থাৎ তিনি তাঁকে নিষেধ করলেন না।
.
[মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ‘সালাত’ অধ্যায়; মসজিদে ঘুমানোর অনুচ্ছেদ। হা. ৪৯২৩]
.
হাদীসটির সনদঃ
.
এটির সনদ বিষয়ে আর কি বলবো? সম্পূর্ণ সহীহ।
.
ওয়াকী’ (রহ.) হলেন বিখ্যাত তাবে-তাবেয়ী ওয়াকী’ ইবনুল জাররাহ (রহ.)। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ইমাম, মুহাদ্দিস। তাঁর ব্যাপারে কারো বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। তবুও তাঁর ব্যাপারে ইমামদের মন্তব্য উল্লেখ করছি,
.
ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রহ.) বলেন,
.
ﻭﻛﻴﻊ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻧﻪ ﻛﺎﻷﻭﺯﺍﻋﻲ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻧﻪ
.
অর্থাৎ ‘‘ওয়াকী’ ছিলেন তাঁর সময়কার ইমাম আওযায়ী (রহ.)।’’
.
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) বলেন,
.
ﻣﺎ ﺭﺃﻳﺖ ﺃﺣﺪﺍ ﺃﻭﻋﻰ ﻟﻠﻌﻠﻢ ﻭﻻ ﺃﺣﻔﻆ ﻣﻦ ﻭﻛﻴﻊ
.
অর্থাৎ ‘‘আমি ইমাম ওয়াকী’ (রহ.)'র চেয়ে বড় কোনো আলেম এবং হাদীসের হাফেয দেখি নি।’’
.
ওয়াকী’ বর্ণনা করেছেন, তাঁর উস্তাদ সুফইয়ান থেকে।
.
ইমাম, মুজতাহিদ সুফইয়ান বিন সাঈদ সাওরী (রহ.)। তাঁর সম্পর্কে কি বলতে হবে? বয়সে ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)'র চেয়ে ১৭ বছরের ছোট। হাদীস শাস্ত্রে তিনি ছিলেন, আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীস।
.
সুতরাং এ অগ্রহণযোগ্য, আক্রমনাত্মক অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
.
আর তাবলীগ জামা‘আত সর্বদা মসজিদের পাক ও পবিত্রতা রক্ষায় একটু বেশি নজর রাখে।
.
আমার জীবনে যেবার প্রথম ৩ দিনের জন্য তাবলীগী সফরে বের হয়েছিলাম, সেইবার আমাদের উক্ত জামা‘আতের আমীর সাহেব রাতের মুযাকারায় আমাদের সকল সাথীদের বলেছিলেন,
.
‘‘সর্বদা মসজিদে মোটা বিছানা পেতে ঘুমাতে হবে, কেননা স্বপ্নদোষ যদি হয় তাহলে সামান্য নাপাকীও যেন মসজিদের মেঝেতে না পড়ে।
ঘুমানোর সময় মাথার কাছে লুঙ্গি আর গামছা রেখে ঘুমানো উচিত, যাতে স্বপ্নদোষ হয়ে গেলে, সাথে সাথে তা নিয়ে গোসল করতে চলে যাওয়া যায়…’’
.
হাদীসের উপর আমল করছে তাবলীগ জামা‘আত। তাই অযথা এই মাকবূল জামা‘আতের বিরুদ্ধে অযথা মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা বন্ধ করুন।
.
বুঝি না, এই সকল ভাইয়েরা নিজেদের আহলে হাদীস বলে দাবী করেন, অথচ হাদীস কতটুকু জানেন, তা নিয়ে আমার সংশয় জাগে! এ প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর তো হাদীসেই দেয়া আছে।
.
আশ্চর্যের বিষয়, সহীহ হাদীস পড়লে জানা যায়, মসজিদে ঘুমানোর বিধান সম্পর্কে তাবেয়ীদের প্রশ্ন করা হলে, তাঁরা অবাক হয়ে যেতেন। বলতেন, এ বিষয়ে প্রশ্ন কেন? যেমন এক বিখ্যাত তাবেয়ী, যিনি মদীনার প্রসিদ্ধ ৭ ফকীহের অন্যতম ছিলেন আবূ আইয়্যুব সুলাইমান ইবনে ইয়াসার (রহ.) বলেন, ‘‘কাইফা তাসআলূন ‘আন হাযা?’’ (তোমরা কিভাবে এ প্রশ্ন করতে পারো?)। এছাড়াও তাবেয়ী সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রহ.)ও এরকম প্রশ্ন অবাক হয়ে যান। যাহোক! ‘‘মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা’’র ‘কিতাবুস সালাত’ এর ‘মসজিদে ঘুমানোর অনুচ্ছেদ’ দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
.
এবার আসি, প্রশ্নের উত্তরে ...
.
হাদীসঃ
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻭﻛﻴﻊ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻧﺠﻴﺢ ﻗﺎﻝ ﻧﻤﺖ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻓﺎﺣﺘﻠﻤﺖ ﻓﻴﻪ ﻓﺴﺄﻟﺖ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟﺒﻴﺮ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺫﻫﺐ ﻭﺍﻏﺘﺴﻞ ﻳﻌﻨﻲ ﻭﻟﻢ ﻳﻨﻬﻪ
.
অর্থাৎ ওয়াকী’ বর্ণনা করেন, সুফইয়ান থেকে, তিনি ইবনে আবী নাজীহ থেকে, তিনি বলেন- ‘‘আমি মসজিদুল হারামে (মক্কা) ঘুমিয়েছিলাম। আমার স্বপ্নদোষ হলো। (বিখ্যাত তাবেয়ী) সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘এখন আমি কি করবো?’ তিনি বললেন, ‘গিয়ে গোসল করে আসো।’’ অর্থাৎ তিনি তাঁকে নিষেধ করলেন না।
.
[মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ‘সালাত’ অধ্যায়; মসজিদে ঘুমানোর অনুচ্ছেদ। হা. ৪৯২৩]
.
হাদীসটির সনদঃ
.
এটির সনদ বিষয়ে আর কি বলবো? সম্পূর্ণ সহীহ।
.
ওয়াকী’ (রহ.) হলেন বিখ্যাত তাবে-তাবেয়ী ওয়াকী’ ইবনুল জাররাহ (রহ.)। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ইমাম, মুহাদ্দিস। তাঁর ব্যাপারে কারো বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। তবুও তাঁর ব্যাপারে ইমামদের মন্তব্য উল্লেখ করছি,
.
ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রহ.) বলেন,
.
ﻭﻛﻴﻊ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻧﻪ ﻛﺎﻷﻭﺯﺍﻋﻲ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻧﻪ
.
অর্থাৎ ‘‘ওয়াকী’ ছিলেন তাঁর সময়কার ইমাম আওযায়ী (রহ.)।’’
.
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) বলেন,
.
ﻣﺎ ﺭﺃﻳﺖ ﺃﺣﺪﺍ ﺃﻭﻋﻰ ﻟﻠﻌﻠﻢ ﻭﻻ ﺃﺣﻔﻆ ﻣﻦ ﻭﻛﻴﻊ
.
অর্থাৎ ‘‘আমি ইমাম ওয়াকী’ (রহ.)'র চেয়ে বড় কোনো আলেম এবং হাদীসের হাফেয দেখি নি।’’
.
ওয়াকী’ বর্ণনা করেছেন, তাঁর উস্তাদ সুফইয়ান থেকে।
.
ইমাম, মুজতাহিদ সুফইয়ান বিন সাঈদ সাওরী (রহ.)। তাঁর সম্পর্কে কি বলতে হবে? বয়সে ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)'র চেয়ে ১৭ বছরের ছোট। হাদীস শাস্ত্রে তিনি ছিলেন, আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীস।
.
সুতরাং এ অগ্রহণযোগ্য, আক্রমনাত্মক অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
.
আর তাবলীগ জামা‘আত সর্বদা মসজিদের পাক ও পবিত্রতা রক্ষায় একটু বেশি নজর রাখে।
.
আমার জীবনে যেবার প্রথম ৩ দিনের জন্য তাবলীগী সফরে বের হয়েছিলাম, সেইবার আমাদের উক্ত জামা‘আতের আমীর সাহেব রাতের মুযাকারায় আমাদের সকল সাথীদের বলেছিলেন,
.
‘‘সর্বদা মসজিদে মোটা বিছানা পেতে ঘুমাতে হবে, কেননা স্বপ্নদোষ যদি হয় তাহলে সামান্য নাপাকীও যেন মসজিদের মেঝেতে না পড়ে।
ঘুমানোর সময় মাথার কাছে লুঙ্গি আর গামছা রেখে ঘুমানো উচিত, যাতে স্বপ্নদোষ হয়ে গেলে, সাথে সাথে তা নিয়ে গোসল করতে চলে যাওয়া যায়…’’
.
হাদীসের উপর আমল করছে তাবলীগ জামা‘আত। তাই অযথা এই মাকবূল জামা‘আতের বিরুদ্ধে অযথা মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা বন্ধ করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন