বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫

জামাতে সালাত আদায় ও জুমাআর দিনের ফযিলত মাওঃ আবু সুফিয়ান,

আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য সকল প্রশংসা, যিনি সালাতকে ইসলাম ধর্মের খুটি হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। পাশাপাশি তা যথা সময়ে আদায় করাকে মু‘মিনের জন্য ফরয করে দিয়েছেন। আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে তাঁর প্রশংসা জ্ঞাপন করছি এবং স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি ব্যতীত সত্যিকারের আর কোন মা‘বুদ নেই। তিনি একক তাঁর কোন অংশিদার নেই। আমরা আরো স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সা.আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তিনি তাঁর উম্মতকে এ সালাত আদায়ের পদ্ধতি শিক্ষা দিয়ে ঘোষণা করেছেন :
صلواكما رأيتموني أصلي অর্থ ঃ তোমরা আমাকে যেমনিভাবে সালাত আদায় করতে দেখ, ঠিক তেমনিভাবে সালাত আদায় কর। তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম, তাঁর সকল সাহাবায়ে কেরাম, পরিবার-পরিজন এবং কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর সকল অনুসারীদের প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক।

জামাতে সালাতে আদায়ের গুরুত্ব
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে আদায় করা সুস্থ-সক্ষম, মুকিম কিংবা মুসাফির সকল বালেগ বা প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য অবশ্য কর্তব্য। এর স্বপক্ষে কুরআনের আয়াত, বিশুদ্ধ হাদীস, সাহাবা ও ওলামায়ে কেরামের অকাট্য দলীল ও অভিমত রয়েছে। যথাঃ
১. জামাতবদ্ধ হয়ে সালাত আদায়ের নির্দেশ : আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
وأقيموا الصلاة وآتوا الزكاة واركعوا مع الراكعين. (بقرة-৪৩)
অর্থঃ তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর। (বাকারা ৪৩)
এখানে রুকু অর্থ সালাত। অর্থাৎ জামাতের সাথে সালাত আদায় কর।
২. মুয়াজ্জিনের ডাকে সাড়া দেয়া ঃ যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের ডাকে সাড়া দেয় না, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সিজদা দিতে পারবে না, যা তার জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হয়ে যাবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঃ
و يوم يكشف عن ساق وّيدعون إلى السجود فلا يستطيعون. خاشعة أبصارهم ترهقهم ذلة وقد كانوا يدعون إلى السجود وهم سالمون. ( القلم-৪২-৪৩)
অর্থঃ সে দিন পায়ের গোছা উম্মোচন করা হবে। আর তাদেরকে সিজদা করার জন্য আহ্বান জানানো হবে, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না। তাদের দৃষ্টিসমূহ অবনত অবস্থায় থাকবে, অপমান তাদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখবে। অথচ তাদেরকে তো নিরাপদ অবস্থায় সিজদা করার জন্য আহ্বান করা হত(তখন তারা সিজদা করেনি)। (কলম-৪২-৪৩)
ওলামায়েকেরামগণের অভিমত, এখানে সেজদার জন্য আহ্বানের অর্থ, জামাতের সাথে সালাত আদায়ের আহ্বান। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মুয়াজ্জিনের ডাকে সাড়া দিয়ে জামাতের সাথে সালাত আদায় করা ওয়াজিব।
৩. জামাতের সাথে সালাত আদায় করার জন্য রাসূলের নির্দেশঃ মসজিদ থেকে দূরে অবস্থানকারী অন্ধ সাহাবী আবদুল্লাহ বিন উম্মে মাকতুম (রা) কে রাসূল সা. অনুমতি দেননি। আবু হুরায়রা (রা) বলেনঃ একজন অন্ধ ব্যক্তি এসে রাসূল কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল!সা. মসজিদে নিয়ে আসার মত আমার কোন লোক নেই, অতঃপর সে ঘরে সালাত আদায় করার অনুমতি চায়, রাসূল সা. তাকে অনুমতি দেন। যখন সে চলে যাচ্ছিল, পুনরায় তিনি তাকে ডেকে বলেন, তুমি কি আজান শুনতে পাও, সে বলল হ্যাঁ। তিনি বললেন, তবে জামাতে হাজির হও। (মুসলিম-৬৫৩)
এর দ্বারা প্রমাণিত হল যে, আজান শ্রবণকারী ব্যক্তির জামাত ত্যাগ করার কোন সুযোগ নেই। যদি থাকত তবে এ অন্ধ সাহাবী তার উপযুক্ত পাত্র ছিলেন।
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেনঃ যে ব্যক্তি আজান শুনল, আর কোন কারণ ছাড়াই জামাত ত্যাগ করল, তার সালাত হয় না।
৪. যুদ্ধের ময়দানে জামাতের সঙ্গে সালাত আদায় করার নির্দেশ রয়েছে ঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঃ
وإذا كنت فيهم فأقمت لهم الصلاة فلتقم طائفة منهم معك وليأخذوا أسلحتهم فإذا سجدوا فليكونوا من ورائكم ولتأت طائفة أخرى لم يصلوا فليصلوا معك وليأخذواحذرهم وأسلحتهم. (نساء -১০২)
অর্থঃ “যখন তুমি তাদের মধ্যে থাকবে, অতঃপর তাদের নিয়ে সালাত কায়েম করবে, তখন যেন তাদের মধ্য থেকে একদল তোমার সাথে দাঁড়ায় এবং অপর দল শত্রুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে। অতঃপর যখন তারা সেজদা করবে, তখন তারা যেন তোমাদের পেছনে অবস্থান নেয়। আর অপর এক দল যারা সালাত আদায় করেনি তারা যেন তোমার সাথে এসে সালাত আদায় করে এবং তারা যেন সতর্কতা অবলম্বন ও অস্ত্র ধারণ করে”। (আন-নিসা ঃ ১০২)
অত্র আয়াতে যুদ্ধের ময়দানে মুজাহিদদের দু‘দলকে পালাক্রমে জামাতের সঙ্গে সালাত আদায়ের পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে। একদল শত্রুর মোকাবিলায় অবস্থান করবে, অপর দল রাসূলের সঙ্গে সালাত আদায় করবে। এভাবে প্রথম রাকাতের সিজদা শেষ হলে দ্বিতীয় দল এসে জামাতে শরীক হবে, প্রথম দল শত্রুর মোকাবিলায় অবস্থান নিবে। এ আয়াতের প্রেক্ষিতে একদল আলেম বলেছেন, জামাতের সাথে সালাত আদায় করা প্রত্যেকের জন্য অবশ্য কর্তব্য। কারণ, এ আয়াতে যুদ্ধের মত ভয়াবহ অবস্থায়ও জামাতের সঙ্গে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যা দ্বারা প্রতীয়মান হয় জামাতে সালাত আদায় করা ফরজ। (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)
৫. যারা জামাতের সাথে সালাত আদায় করেনা রাসূল সা. তাদের ঘর জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছেনঃ
রাসূল সা. বলেনঃ “আমার ইচ্ছা হয় একজনকে মানুষদের নিয়ে সালাত আদায় করার নির্দেশ দেই, অতঃপর তাদের উদ্দেশ্যে বের হই, যারা জামাতে শরীক হয় না, তাদেরসহ তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেই।”

জামাতে সালাত আদায়ের ফযিলত
জামাতে সালাত আদায়ের অনেক মর্যাদা ও শুভ ফলাফল রয়েছে। জামাত তরককারীদের জন্য সে গুলো বর্ণনা করছি, যাতে করে এগুলো তাদের নসীহত এবং গুরুত্ব অনুধাবনে সহায়ক হয়।
১.সালাত পাপ মোচন ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ ঃ এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ বলেন ঃ
ألا أدلكم على ما يمحو الله به الخطايا ويرفع به الدرجات؟ قالوا: بلى يا رسول الله! قال: إسباغ الوضوء على المكاره وكثرة الخطا إلى المساجد وانتظار الصلاة بعد الصلاة فذلكم الرباط.
অর্থঃ আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয় জানাব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ গুনাহসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন? সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বলেনঃ তা হচ্ছে কষ্টের সময়ে যথাযথভাবে অযু করা, মসজিদের দিকে বেশি বেশি পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং এক সালাতের পর আর এক সালাতের জন্য অপেক্ষা করা। ইহাই হচ্ছে সীমান্ত প্রহরা। (মুসলিম)

আবদুল্লাহ বিন আমর (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেনঃ
من راح إلى مسجد الجماعة فخطوة تمحو سيئة وخطوة تكتب له حسنة ذاهبا وراجعا. (أحمد)
অর্থঃ যে ব্যক্তি জামাতের সাথে সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে যায়, তার আসা-যাওয়ায় প্রতি পদক্ষেপে গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং নেকী লেখা হয়। (আহমদ)
২.জামাতে সালাত আদায় বান্দাকে শয়তান থেকে হিফাযত করে এবং তার প্ররোচনা থেকে নিরাপদে রাখে ঃ আবু দারদা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেন ঃ
ما من ثلاثة في قرية ولا بدو لا تقام فيهم الصلاة إلا قد استحوذ عليهم الشيطان فعليكم بالجماعة فإنما يأكل الذنب قاصية. ( أبو داود)
অর্থঃ যে গ্রামে বা প্রান্তরে তিনজন লোক অবস্থান করে অথচ তারা জামাতের সাথে সালাত আদায় করে না, তাদের উপর শয়তান প্রভাব বিস্তার করে। কাজেই তোমরা জামাতের সাথে সালাত আদায় করাকে অপরিহার্য মনে কর। কারণ দলছুট বকরীকেই বাঘে খায়। (আবু দাউদ)
তিনি আরো বলেনঃ
من صلى لله أربعين يوما في جماعة يدرك التكبيرة الأولى كتب له براءتان براءة من النار وبراءة من النفاق. (ترمذي)
অর্থঃ যে ব্যক্তি একাধারে চল্লিশ দিন পর্যন্ত প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে সালাত আদায় করে, তার জন্য দু‘টি মুক্তি রয়েছে। একটি জাহান্নাম থেকে মুক্তি অপরটি মোনাফেকি থেকে মুক্তি।
৩. জামাতে সালাত আদায়কারী আল্লাহর হিফাযতে থাকবে ঃ এ প্রসঙ্গে উমামা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল বলেন ঃ
ثلاثة كلهم ضامن على الله عز وجل ومنهم رجل راح إلى المسجد فهو ضامن على الله حتى يتوفاه فيدخل الجنة أو يرده بما نال من أجر وغنيمة. ( أبوداود)
অর্থঃ তিন ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মায় থাকে, তন্মধ্যে ঐ ব্যক্তি যে মসজিদে যায়, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকে, এমনকি তার মৃত্যু হলে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা তাকে সাওয়াব বা গনীমত প্রদান করে (বাড়িতে) ফিরিয়ে দিবেন। (আবু দাউদ)
তিনি আরো বলেন ঃ
من غدا إلى المسجد أو راح أعد الله له فى الجنة نزلا كلما غدا أو راح. (متفق عليه)
অর্থঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধায় মসজিদে যায় (জামাতে সালাত আদায়ের জন্য) আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারীর ব্যবস্থা করবেন, যতবার সে সকাল সন্ধায় যায়। ( বুখারী ও মুসলিম)
৪. জামাতে সালাত আদায়ের মাধ্যমে একাগ্রতা অর্জন ও অন্তর বিগলিত হয় ঃ কোন মুসলিম যখন মসজিদে প্রবেশ করে, তখন দুনিয়ার সকল ব্যস্ততা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে। আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হয়। অতঃপর সে মসজিদে আগত মুসল্লিদের আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান রুকু সিজদারত দেখে, যিকর এবং কুরআন তিলাওয়াত করতে দেখে, এমনিভাবে সে আল্লাহর কালামও নিজে শুনে। এর দ্বারা সে বুঝতে পারে এ ময়দান হল আল্লাহ ও তদীয় জান্নাত লাভের প্রতিযোগিতার ময়দান। আর এসব প্রতিযোগীরাই আন্তরিকতা ও একগ্রতার সাথে আল্লাহর দিকে অগ্রসর হয়।
৫. আল্লাহ তা‘আলা জামাতে সালাত আদায়ে সন্তুষ্ট হন ঃ আবদুল্লাহ বিন উমর (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল বলেন ঃ
إن الله ليعجب من الصلاة فى الجمع. (أحمد)
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা জামাতে সালাত আদায় করাত সন্তুষ্ট হন। (মুসলিম)
জামাতের সাথে সালাত আদায় করা মঙ্গলময় জীবন যাপন ও কল্যাণকর মৃত্যুর নিশ্চয়তা প্রদান করে। এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেন ঃ
آتاني الليلة ربي تبارك وتعالى في أحسن صورة قال: أحسبه فى المنام فقال يامحمد هل تدري فيم يختصم الملأ الأعلى؟ قلت لا قال: فوضع يده بين كتفيّ حتى وجدت بردها بين ثدي أو قال : في نحري فعلمت ما فى السماوات وما فى الأرض قال: يامحمد هل تدري فيم يختصم الملأ الأعلى؟ قلت نعم فى الكفارات والكفارات المكث فى المساجد بعد الصلوات المشيّ على الأقدام إلى الجماعات وإسباغا الوضوء على المكاره ومن فعل ذلك عاش بخيرومات بخير وكان من خطيئته كيوم ولدته أمه.
অর্থঃ একরাতে আল্লাহ তা‘আলা এক জ্যোতির্ময় অবস্থায় আমার নিকট এলেন। তিনি বলেন, সম্ভবত তা নিদ্রায় হবে। অতঃপর বললেন ঃ হে মুহাম্মদ ! উর্ধ্বজগতের ফেরেশতারা কি নিয়ে বিতর্ক করে তুমি জান? আমি বললাম ঃ না। তিনি বলেন, অতঃপর তিনি তাঁর হাত আমার কাঁধে রাখলেন এমনকি আমি এর শীতলতা আমার বুকে অনুভব করলাম অথবা বললেন আমার গলায়। তখন আমি বুঝতে পারলাম আসমান ও যমীনের মাঝে কি হচ্ছে। তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ ! তুমি কি জান উর্ধ্ব জগতের ফেরেশতারা কি নিয়ে বিতর্ক করে? আমি বললাম ঃ হ্যাঁ, কাফ্ফারা সম্পর্কে । কাফ্ফারা হলঃ সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করা। পায়ে হেঁটে জামাতের জন্য গমন করা, কষ্টের সময় পুরোপুরি অযু করা। যে ব্যক্তি এটা করবে সে মঙ্গলময় জীবন যাপন করবে এবং তার মঙ্গলময় মৃত্যু হবে। তার গুনাহগুলো মিটে এমন হবে যেন সে সদ্য মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হয়েছে, এমন নিষ্পাপ হয়ে যাবে। (তিরমিযী)
এমনিভাবে জামাতে সালাত আদায় একজন মুসলিমকে নফল সালাত আদায়েও অভ্যস্ত করে তোলে যদ্দারা সে আল্লাহর ভালবাসা অর্জন করে তাঁর প্রিয় বান্দাদের মধ্যে গণ্য হতে পারে। যে ব্যক্তি সালাত কায়েমের পূর্বে মসজিদে আসে, সে দু‘রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ে। সময় বেশি পেলে সুন্নাত পড়ে, কুরআন তিলাওয়াত করে, দুু‘আ ইস্তেগফার করে। আর কিছু না করলেও অন্ততঃ সালাতের অপেক্ষায় চুপ করে বসে থাকে। তার জন্য ফেরেশতাগণ দু‘আ করতে থাকে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে রক্ষা কর, তার প্রতি রহম কর। যেমন আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেনঃ
أحدكم ما قعد ينتظر الصلاة في صلاة مالم يحدث تدعوله الملائكة اللهم اغفرله اللهم ارحمه.
অর্থঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন সালাতের জন্য নিজের মুসল্লায় অপেক্ষা করতে থাকে, তখন ফেরেশতাগণ তার জন্য দো‘আ করতে থাকে, যতক্ষন তার অযু ভঙ্গ না হয়। ফেরেশতাগণ বলতে থাকেন হে আল্লাহ! তুমি তাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ! তুমি তার উপর রহম কর। (মুসলিম)
জুমুআর দিনের ফযিলত
মুসলমানদের ঐক্য, সংহতি ও পারস্পরিক সাপ্তাহিক খোজ খবর নেয়ার নিমিত্তে জুমুআর মাধ্যমে মুসলিম সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমবেত মুসলিম জনতাকে লক্ষ করে ইসলামি সরকারের রাষ্ট্র প্রধান বা তদীয় প্রতিনিধি প্রয়োজনীয় ভাষন দেন এবং সাথে দু‘রাকাত সালাত আদায় করত মুসলিম জনতার শান্তি ও উন্নতি কামনা করে প্রভুর নিকট প্রার্থনা করা হয়। এ দিনের ফযিলত ও মর্যাদা বর্ণনা করতে গিয়ে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা স্বতন্ত্র একটি সূরাই অবতীর্ণ করেন। যার নাম সূরাতুল জুমুআ। রাসূল (সা) এর পক্ষ থেকেও এ দিনের মর্যাদা বর্ণনা করে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল বলেনঃ
خير يوم طلعت فيه الشمس يوم جمعة، فيه خلق آدم وفيه أدخل الجنة وفيه أخرج منها ولا تقوم الساعة إلا في يوم الجمعة. وفيه ساعة لا يوافقها عبد مسلم يسأل الله خيرا إلا أعطاه إياه .
অর্থঃ যতদিন এ পৃথিবীতে সূর্য উদিত হতে থাকবে তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হল জুমুআর দিন। এ পবিত্র জুমুআর দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে আদম আঃ কে এবং এ দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল। এদিনেই তাকে জান্নাত থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। আর এ জুমুআর দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। এদিনে এমন একটি সময় আছে যে, বান্দা আল্লাহর নিকট যে কোন কল্যাণের দোয়া করবে আল্লাহ তাই দান করবেন। (তিরমিযী ও মুসলিম)
১.এদিনে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন এবং তাঁর নেয়ামতরাজিকে পূর্ণ করেছেন ঃ
এ প্রসঙ্গে তারেক বিন শিহাব (রা) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে ঃ
جاء يهودي إلى عمر بن الخطاب رضي الله عنه فقا ل يا أمير المؤمنين آية تقرؤنهاعلينا معشر في في كتابكم لوعلينا معشر اليهود نزلت ونعلم ذلك اليوم الذي نزلت فيه لاتخذناه عيدا ، قال: أي آية ؟ قال : \" اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي وضيت لكم الإسلام دينا\" فقال عمربن الخطاب: إني لأعلم اليوم الذي نزلت فيه والمكان الذي نزلت فيه، نزلت على رسول الله صلى الله عليه وسلم بعرفة يوم الجمعة . ونحن واقفون معه بعرفة. (بخاري)
অর্থঃ এক ইয়াহুদী এসে উমর বিন খাত্তাব (রা) কে বললঃ হে আমীরুল মু‘মিনীন তোমাদের কিতাবে এমন এক খানা আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, আমরা যদি জানতাম এটা কোন দিনে অবতীর্ণ হয়েছে তাহলে আমরা সেদিনকে আমাদের জন্য “ঈদ” হিসাবে গ্রহণ করতাম। উমর (রা) জিজ্ঞেস করলেন, কোন আয়াত? ইয়াহুদী তখন সূরা মায়েদার আয়াতখানা বলল, যার অর্থঃ “ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামতের পূর্ণঙ্গতা দান করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবনবিধান হিসাবে মনোনীত করলাম। (মায়েদা-৩)
এটা শুনে উমর (রা) বললেনঃ আমি জানি সে আয়াতখানা কোন দিন এবং কি বারে রাসূল এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। ঐদিন ছিল আরাফাতের দিন শুক্রবার, আমরা তখন রাসূলুল্লাহর এর সাথে আরাফার ময়দানে দন্ডায়মান অবস্থায় ছিলাম। (বুখারী)
২. এ দিন হচ্ছে জান্নাতে আল্লাহর দর্শন বা দীদার লাভের দিন ঃ সেদিন জান্নাতের একটা উদ্ধানে সকল জান্নাতিদেরকে একত্রিত করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঃ
لهم ما يشاءون فيها ولدينا مزيد. (ق - ৩৫)
অর্থঃ তথায় তারা যা চাইবে, তাই পাবে এবং আমার কাছে রয়েছে আরো অনেক। (ক্বাফ- ৩৫)
এ আয়াতের তাফসীরে আনাস (রা) ও জাবের (রা) বলেনঃ এ বাড়তি নিয়ামত হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার দীদার তথা তাঁর সাক্ষাত লাভ, যা জান্নাতীরা লাভ করবে।
সুহাইব (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল বলেনঃ
إذا دخل أهل الجنة الجنة يقول الله تبارك وتعالى : تريد شيئا أزيد ؟ فيقولون : ألم تبيض وجوهنا ؟ ألم تدخلنا الجنة وتنجنا من النار؟ فيكشف الحجاب، فما أعطوا شيئا أحب إليهم من النظر إلى ربهم. (مسلم)
অর্থঃ যখন জান্নাতের অদিবাসিরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা বলবেনঃ তোমরা কি চাও আমি তোমাদের উপর আমার নিয়ামত আরো বৃদ্ধি করি? জান্নাতীরা বলবেনঃ আপনি কি আমাদের চেহারাকে উজ্জল করে দেননি? আপনি কি আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিস্কৃতি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাননি? তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর পর্দা সরিয়ে নিবেন এবং জান্নাতীরা তাঁকে প্রান খুলে দেখতে থাকবেন। তখন তাদের নিকট এ আল্লাহর দর্শনটাই সবচাইতে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত বলে মনে হবে।
সে দিনটি হবে শুক্রবার অতএব কারো যদি সে দিনে আল্লাহর দীদার লাভের তীব্র আকাঙ্খা থাকে তাহলে তারা যেন বেশি বেশি মসজিদে জামাতে সালাত আদায়ের জন্য যাতায়াত করে বিশেষ করে শুক্রবার জুমুআর সালাত আদায়ে মনযোগী হয়।
৩. জুমুআর দিনে এমন একটি সময় আছে যখন আল্লাহ তা‘আলা যে কোন দোআ কবুল করেন ঃ কেউ কেউ বলেনঃ সে সময়টা হচ্ছে, যখন ইমাম সাহেব খোৎবা দেন তখন। আবার অধিকাংশ ওলামাগণের মতামত হচ্ছে, আছরের সালাতের পরে মাগরিবের পূর্বে একঘন্টা।
এ ছাড়াও জুমুআর দিনের অনেক ফযিলত ও মর্যদা রয়েছে, যা এ স্বল্প পরিসরে বর্ণনা করা সম্ভব হচ্ছে না। অতএব আমাদের উচিত এ দিনকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা। এ দিনে যাবতীয় অন্যায় অপকর্ম থেকে নিজেকে বিরত রেখে এ দিনের বিশেষ আকর্ষন জুমুআর সালাত আদায়সহ নিজেকে বেশি বেশি নেক আমল করার জন্য নিজের মানষিকতা তৈয়ার করা।
এ দিনের করনীয় আমল সমূহ
এ দিনে অনেক করনীয় নেক আমল রয়েছে যা দ্বারা অনেক পূণ্য অর্জন করা যায়। তার মধ্য থেকে নিম্নে কিছু মৌলিক করণীয় আমল তুলে ধরা হল ঃ
১. এ দিনে জুমুআর সালাত আদায়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন করা ঃ এ দিনটি মুসলমানদের সমাবেশের দিন। তাই এ দিনের একটি মৌলিক ইবাদত হচ্ছে আজান দেয়ার সাথে সাথে সকল কাজকর্ম, বেচাকেনা ও দুনিয়াবী সকল জামেলা থেকে বিরত থেকে জুমুআর সালাত আদায়ের মানষে তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
يا أيها الذين آمنوا إذا نودي للصلاة من يوم الجمعة فاسعوا إلى ذكر الله وذروا البيع ذلكم خير لكم إن كنتم تعلمون . فإذا قضيت الصلاة فانتشروا فى الأرض وابتغوا من فضل الله واذكرواالله كثيرا لعلكم تفلحون . وإذا رأوا تجارة أو لهو انفضوا إليها وتركوك قائما قل ما عند الله خير من اللهو ومن التجارة والله خير الرازقين . الجمعة - (الجمعة৯-১১)
অর্থঃ মুমিনগণ! জুমুআর দিনে যখন তোমাদেরকে আজান দেয়ার মাধ্যমে সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে দ্রুত ধাবিত হও এবং বেচাকেন বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতঃপর সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (রিযিক) অন্বেষন কর ও আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুনঃ আল্লাহর নিকট যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসা অপেক্ষা উত্তম। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম রিযিকদাতা। (জুমুআ ঃ ৯-১১)
২. এ দিনে রাসূল এর উপর বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করা ঃ এ প্রসঙ্গে আউস বিন আউস (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল বলেনঃ
إن من أفضل أيامكم يوم الجمعة فيه خلق آدم عليه السلام وفيه قبض وفيه النفخة وفيه الصعقة فأكثروا من الصلاة فإن صلاتكم معروضة عليّ قالوا يارسول الله ! وكيف تعرض صلاتنا عليك وقد أرمت أي يقولون قد بليت قال إن الله عزّ وجلّ قد حرّم على الأرض أن تأكل أجسام الأنبياء عليهم السلام . (ابن ماجة)
অর্থঃ নিশ্চয়ই দিন সমূহের মাঝে জুমুআর দিন হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিন আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে, আবার এ দিনেই তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এ দিনেই সিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে এবং কেয়ামত সংঘঠিত হবে। অতএব তোমরা এ দিনে আমার উপর বেশি বেশি দুরূদ পাঠ কর। কেননা তোমাদের দুরূদ আমার নিকট পেশ করা হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে আমাদের দুরূদ আপনার নিকট পেশ করা হবে অথচ আপনি মাটির সাথে মিশে যাবেন বা মাটি আপনাকে খেয়ে ফেলবে? রাসূল উত্তরে বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা নবীগণের দেহ ভক্ষণ করাকে মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন। ( ইবনে মাজাহ)
৩. এ দিনে সূরায়ে কাহ্ফ তিলাওয়াত করা ঃ হাদীসে এসেছে , যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহ্ফ তিলাওয়াত করে, তার পা থেকে আকাশের উচ্ছতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কিয়ামতের দিন তার জন্য আলো দিবে এবং বিগত জুমুআ থেকে এই জুমুআ পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
হাফেজ জিয়া মুকাদ্দাসী ‘মুখতারাহ’ গ্রন্থে আলী (রা) এর রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ বলেন ঃ যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহ্ফ তিলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে তার ফেৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে। (মাআরেফুল কুরআন)
এ ছাড়াও এ দিনে আরো অনেক করনীয় বিষয় রয়েছে। যথাঃ গোসল করা, খুসবু ব্যবহার করা, মিসওয়াক করা ও সুন্দর পাক পবিত্র জামা কাপড় পরিধান করে জুমার সালাত আদায় করার জন্য মসজিদে গমন করা ইত্যাদি।
জুমুআর খোৎবা শুনার গুরুত্ব
জুমুআর খোৎবা শুনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং মুসলমানদের আমলী জিন্দিগী গঠন করার এক পাথেয়। কেননা যদি জুমুআর দিনে ইমামের খোৎবা না শুনার ব্যবস্থা থাকত তাহলে মানুষ আরো গোমরাহ বা পথভ্রষ্ঠ হয়ে যেত। সকল মাজহাবের ইমামগণ জুমুআর খোৎবা শুনা জুমুআর সালাত আদায়ের শর্ত হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন। তারা দলীল হিসেবে বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলার বানী ঃ فاسعوا إلى ذكر الله তোমরা আল্লাহর স্মরণের জন্য দ্রুত ধাবিত হও। এখানে আল্লাহর যিকির দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে সালাত ও খোৎবা উভয়টাই শামিল। রাসূল সা, ও চার খলিফা এবং তাঁদের পরে সকল ওলামায়ে কেরামগণ জুমুআর খোৎবা ব্যতীত নামায পড়িছেন এমন প্রমাণ নেই। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের সাথে বলতে হচ্ছে যে, আমাদের দেশে মানুষ জুমুআর দিন খোৎবা শুনার প্রতি তেমন কোন আগ্রহ প্রকাশ করে না। বরং যখন নামায শুরু হবে তার একটু আগে আসে। অথচ শুক্রবারে জুমুআর খোৎবা শুনা একটি বড় ইবাদত ও আগামী এক সপ্তাহের জন্য চলার পাথেয়। তাই আমাদেরকে এ বিষয়ে অত্যান্ত যতœবান হতে হবে।
উপরোক্ত আলোচনার সার সংক্ষেপ
উপরোক্ত আলোচনা থেকে যে বিষয়টি আমাদের জন্য স্পষ্ট হলো তা হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের হিফাজত করা আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঃ حافظوا على الصلوات والصلاة الوسطى তোমরা সালাত সমূহের হিফাজত কর বিশেষ করে আছরের সালাত। আর সালাতের সব চেয়ে উত্তম হিফাজত হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে আদায়ের জন্য সচেষ্ট হওয়া। কেননা হাদীসে এসেছে যে ইচ্ছে করে জামাতে সালাত আদায় না করে বাসা বাড়িতে একা একা সালাত আদায় করে তার সালাতই কবুল হয় না। এ ছাড়া জুমুআর সালাত আদায় করার ব্যাপারে অত্যান্ত যতœবান হওয়া এবং জুমআর দিন করনীয় আমলগুলো নিজের হায়াতি জিন্দিগীতে বাস্তবায়ন করার জন্য মানুষিকভাবে তৈরী হওয়া অত্যন্ত জরুরী। জুমুআর দিন খোৎবা শুনার ব্যাপারে যেন আমরা অমনোযোগী না হই। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে উপরোক্ত আলোচনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের আমলী জিন্দিগী গঠন করার তাওফীক দান করুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন